দুই বন্ধুর মাঝে ফাটল। আর এক বন্ধুর মৃত্যু ( শেষ পর্ব)steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। দুই বন্ধুর কাহিনীর পরের পর্ব নিয়ে আসলাম।

IMG_20221004_212048.jpg

এরপর রফিক কে তারা দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। রফিকের বাবা মাকে এবং এলাকার চেয়ারম্যান কে তারা খবর দিলেন। রফিকের বাবা এবং এলাকার চেয়ারম্যান দুইজনে গেলেন তাদের বাড়িতে। তারপর এলাকার চেয়ারম্যান তার বাবার সামনে তাকে থাপ্পড় মারলেন । এবং অনেক গালাগালিও করলেন রফিককে। তারপর রফিককে তার বাবা ওখান থেকে বের করে নিয়ে আসলেন। রফিক ব্যাপারটি সহজভাবে নিতে পারলেন না। এরপর রফিক বাড়ির সামনে একটি বাজার আছে ওখানে আসলেন। এবং রফিকের বন্ধুবান্ধব সবাইকে কল দিয়ে একটি দোকানের সামনে আসার জন্য বলে। কিছু কিছু বন্ধু দোকানের সামনে একসাথে হয়েছেন।

এরপর রফিক বন্ধুদের বলতে লাগলেন। আকাশের মা এবং বাড়ির লোক গুলো তার সাথে কি ব্যবহার করলেন। আবার রফিকের বন্ধুগুলো আকাশেরও বন্ধু এবং ক্লাসমেট। এই বিদায় সবাই রফিককে বুঝাতে চেষ্টা করে। ভেজাল না করার জন্য। এমন সময় রফিকের এক বন্ধু আকাশের বোনকে একটি কল দিলেন। সে লিপিকে জিজ্ঞেস করলেন তুমি রফিককে ভালোবাসো কিনা। লিপি উত্তরে বলল আমি রফিককে ভালো বাসি। তাহলে তোমার এখন অন্য জায়গাতে বিয়ে ঠিক করতেছে, তুমি রাজি কিভাবে হলে। লিপি এইভাবে বলতে লাগলো আমার মা বাবা আমাকে যেখানে বিয়ে দেবে আমি সেখানে বিয়ে করবো। কথাগুলো মোবাইলে লাউড স্পিকার চালু থাকায় রফিক কথাগুলো শুনতে লাগল।

এরপর রফিকের বন্ধু তাকে আরও জিজ্ঞেস করল। তুমি যদি রাজি থাকো তাহলে তোমাদের দুজনকে আমরা কোর্টে গিয়ে বিয়ে দিয়ে দেব। কিন্তু লিপি বলে দিলেন রফিকের সাথে সে বিয়ে করবে না। তার মা বাবা যেখানে তাকে বিয়ে ঠিক করেছে সে সেখানে বিয়ে করবে। রফিক কথাটা শুনে কেঁদে দিলেন। ও লিপিকে ফোনে বলতে লাগলো আমি যদি তোমাকে না পাই। তাহলে আমার এই জীবন আমি রাখবো না। রফিকের এই কথা শুনে লিপি তাড়াতাড়ি ফোনটি কেটে দিলেন। ওই সময় আমার হাজবেন্ড ও ওখানে উপস্থিত ছিলেন। এরপর রফিক সবাইকে বলতে লাগলো মেয়েটিকে উঠিয়ে নিয়ে আসার জন্য। রফিকের কোনো বন্ধু এটি সাড়া দিলেন না। সবাই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন কিন্তু সে কোন মতে বুঝলেন না।

এরপর রফিক বন্ধুদেরকে অনেক কথা বলে রাগান্বিত হয়ে ওখান থেকে চলে গেলেন। তারপর আধাঘন্টা পর খবর আসলেন রফিক বিষ পান করেছেন। তার ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে। রফিকের বাড়ি বাজারের সাথে বাজার থেকে দুই তিন মিনিটের রাস্তা। এরপর খবর পেয়ে বন্ধু-বান্ধব সবাই ছুটে গেলেন তার বাড়িতে। কিন্তু রফিক ঘরের দরজা বন্ধ করে বিষ পান করাতে। দরজা খুলতে একটু টাইম লেগে গেল। এরপর দরজা ভেঙে রফিককে বের করে তাড়াতাড়ি বাজারে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন। ডাক্তার দেখে তাকে সবাইকে বলতে লাগলো জলদি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

এরপর দুই তিনজন বন্ধু মিলে জলদি বড় হাসপাতালে নিয়ে যেতে লাগলো। কিছুদূর যাওয়াতে রফিক আর নড়াচড়া করতেছে না। রফিক দের বাড়ি থেকে হাসপাতাল ৬-৭ কিলোমিটার দূরে। বিপদের সময় গাড়ি পাওয়াটাই বড় কষ্টকর। এরপর বড় হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার দেখে তাকে মৃত ঘোষণা করলেন। এরপর চারদিকে হই চই পড়ে গেলেন। ঘটনাটি মেয়ের মা শুনতে পেয়ে লিপিকে নিয়ে তার মা পালিয়ে গেলেন। এদিকে থানা পুলিশ একসাথে হয়ে অনেক ঝামেলা করতে লাগলেন। কি আর করবে রফিকের তো জীবন এখানে শেষ হয়ে গেল। রফিকের মৃত্যুর শুনে রফিকের মার সাথে সাথে স্টক করেন। এবং রফিকের লাশ যখন এলাকায় নিয়ে আসলেন। অনেকের রফিকের লাশ মাটি দিতে চাইলেন না। কারণ রফিক বিষ পান করে মারা গেছেন। অনেক সময়ের পর তাকে সামাজিকভাবে তাকে দাফন করলে সবাই মিলে। এর কিছুদিন পরে খবর পাওয়া গেল লিপিকে তার মা কোর্টে নিয়ে বিয়ে দিলেন ওই ছেলের সাথে।

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG-20211226-WA0000.jpg

আমার নাম আকলিমা আক্তার মুনিয়া। আর আমার ইউজার নাম @bdwomen। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। বাংলা ভাষা হল আমাদের মাতৃভাষা আর আমি মাতৃভাষা বলতে পারি বলেই অনেক গর্বিত। আমি বিভিন্ন ধরনের ছবি এবং পেইন্টিং আঁকতে খুবই পছন্দ করি। আমি প্রায় সময় বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং এঁকে থাকি। আবার রঙিন পেপার এবং বিভিন্ন রকমের জিনিস দিয়ে নানা ধরনের কারুকাজ তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আবার নিজের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছবি তুলতে খুবই ভালো লাগে। আমি চেষ্টা করি সব ধরনের জিনিস কখনো না কখনো একবার করে করার জন্য। আবার বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া মাথায় আসলে সেগুলো ও করার চেষ্টা করি।

35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 2 years ago 

রফিক লিপিকে ভালোবাসতো তাই বলে ভালোবাসার জন্য বিষপান করে নিজের জীবন দিতে হবে, এটা ভালোবাসা বলেনা। এটা একটা আবেগ। আর আবেগের জন্য আজ পৃথিবীতে অহরহ ধরনের ঘটনা ঘটছে।

 2 years ago 

সত্যি এরকম আবেগের প্রয়োজন কোন প্রয়োজন নেই। রফিক তার জীবন দিয়ে ভালোবাসায় বুঝতে চেয়ে চেন। মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

দুঃখিত রফিক কখনোই রিয়েল বন্ধু নয়।বন্ধুত্বের একটি অলিখিত নিয়ম হলো বন্ধুর বোন মানে নিজের বোন।রফিক এই নিয়ম মানতে পারে নি। তবে তার মৃত্যু দুঃখজনক।

 2 years ago 

তবে রফিকের মৃত্যু দুঃখজনক। প্রেম তো অনেক কিছুই মানে না। মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Loading...
 2 years ago 

অন্যের জন্য নিজের জীবনটাই দিয়ে দিলেন রফিক। যে ভালোবাসার দাম দিতে জানে না তার জন্য জীবন দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। রফিকের মৃত্যুটি খুবই দুঃখজনক। আপনি অনেক সুন্দর করে ঘটনাটি সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করেছেন। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

সত্যি যে ভালবাসার দাম দিতে পারে না। তার জন্য রফিক জীবনটা দেওয়ার কোন মানেই হয় না। আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য।

 2 years ago 

রফিকের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। সে অন্যের জন্য নিজের প্রাণ দিয়ে দিলেন। যদি কেউ আত্মহত্যা করে অন্যের জন্য মারা যায় তখন আমার কাছে ভীষণ খারাপ লাগে। এটা কিন্তু একদমই ঠিক বিপদের সময় কোন গাড়ি পাওয়া যায় না। এভাবে বন্ধুত্বের মধ্যে বিভিন্নভাবে ফাটল ধরে যায়। আমাদের দেশে আত্নহত্যা খুবই বেড়েই চলেছে।

 2 years ago 

সত্যি বিপদের সময় গাড়ি পাওয়া যায় না। আর রফিক সে আত্মহত্যা করে তার জীবনটাই নষ্ট করলে। আর মেয়েটি তার স্বামীর কাছে কত সুখে আছেন। আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

রফিকের মৃত্যুটা সত্যি অনেক দুঃখজনক। আসলে রফিকের প্রথম বিষয়টি ভালো ছিল না সে নিজের বন্ধুর বোনকে বোন ভাবা উচিত ছিল। তাহলেই এত সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না। কিন্তু তারপরেও ওর মা বাবা প্রথমে রাজি হয়ে বিষয়টা উল্টে গেছে এটাও বেশ খারাপ হলো। রফিক তো সত্যি কারের ভালবেসে ছিল। কিন্তু লিপি রফিককে সত্যিকারের ভালবাসতে পারেন। শেষ পর্যন্ত ভালোবাসার জন্য নিজের জীবন দিয়ে দিলো রফিক।

 2 years ago 

রফিক যদি নিজের মন মনে করতেন তাহলে এত সমস্যা হতোনা। কিন্তু প্রেমের কারণে তার জীবনটাই শেষ হয়ে গেল। রফিকের মা বাবার রফিককে জীবন থেকে হারিয়ে ফেলল। মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59131.70
ETH 2599.11
USDT 1.00
SBD 2.40