আমাদের স্কুলের শামীম স্যারের জীবন কাহিনী।
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মতো আজকেও একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। আমাদের চারপাশে অসংখ্য ঘটনা ঘটে থাকে। আমি চেষ্টা করি সেই ঘটনাগুলোর কিছুটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে। বাস্তবিক ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছুই রয়েছে। আজকেও আসলাম আপনাদের সামনে একটি বাস্তবিক ঘটনা শেয়ার করতে।
আমাদের এলাকায় স্কুলের একটি শিক্ষক, নাম হচ্ছে সামিম স্যার। সামিম স্যারের ছোট কালে বাবা মারা যায়। ফ্যামিলিতে দুটি সন্তান ও চারটি বোন ছিল। সামিম স্যার ফ্যামিলির সবার ছোট তার বড় ভাইটি ফ্যামিলির সবাই বড়। সামিম স্যার যখন ক্লাস ফাইভে পড়ে তখন তার লেখাপড়া বন্ধ করেদে। ফ্যামিলি এত গরিব ছিল যে তার পড়ালেখা চালানো কোনমতে সম্ভব না। এমন সময় তার বড় ভাই বলল যেভাবে হোক সে তার ছোট ভাইয়ের লেখা পড়া করাবে। তার বড় ভাই অন্যের বাড়িতে এবং যেই সময় যে কাজ পায়, সেগুলো করে । ফ্যামিলির সবার খাওয়া দাওয়া হইতে সব কিছু তার বড় ভাই দেখে। এভাবে আস্তে আস্তে তার চারটি বোনের বিয়ে দিলেন তার বড় ভাই।
সামিম স্যারের বড় ভাই খুব ভালো মানুষ। সে অনেক কষ্ট করে সামিম স্যারের পড়ার খরচ চালায়। এবং সামিম স্যারের বড় ভাই যখন বিয়ে করে তার ফ্যামিলি ও একসাথে থাকে। সামিম স্যার যখন এসএসসি পরীক্ষা দেয় খুব ভালো রেজাল্ট করে। এরপর সে ইন্টার ভর্তি হলেন। এরপর তার বড় ভাই অনেক কষ্ট করে বিদেশ গেলেন। বিদেশ থেকে টাকা ইনকাম করে সামিম স্যারের হাতে দেন। সামিম স্যার খুব সুন্দর করে ফ্যামিলি চালায় এবং লেখাপড়া করে। এভাবে সামিম স্যার ইন্টার ও পাশ করেন। তখন তার বড় ভাই বলতে লাগলো লেখা পড়া বন্ধ না করার জন্য। সামিম স্যার চাইলো লেখাপড়া বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। এরপর সামিম স্যার বিএ ভর্তি হলেন।
এদিকে সামিম স্যারের বড় ভাইয়ের ওয়াইফ একসাথে থাকবে না, সে আলাদা হয়ে যাবে। এরপর তাদের ফ্যামিলিতে মাঝেমধ্যে ঝগড়া হয় সামিম স্যারের মায়ের সাথে তার ভাবির। তারপর তার বড় ভাই তার ওয়াইফ কে নিয়ে আলাদা হয়ে গেলেন কিন্তু মা এবং ভাইয়ের খরচ গুলো ঠিকমতো দিতেন। পড়ালেখা করে সামিম স্যার বিএসইও কমপ্লিট করেন। এরপর আমাদের এলাকায় হাইস্কুলে চাকরি পেয়ে যান। সামিম স্যারের মা অনেক কষ্ট করে এবং বড় ভাইও অনেক কষ্ট করে তাকে এতটুক লেখাপড়া করিয়েছেন। যখন সামিম স্যার চাকরিতে জয়েন করেন তখন সেই স্কুলে সব সময় প্রাইভেট পড়াতেন। প্রাইভেট পড়াতে পড়াতে একটি ছাত্রীকে সে পছন্দ করে ফেলেন।
কখনো কাউকে কিছুই বলে নাই কিন্তু ছাত্রীর দিকে কখনো পড়া না পারলে মারধর করতেন না এবং তার সাথে হাসিখুশি কথা বলতেন। সাথে ছাত্র-ছাত্রীরা কিছুটা আন্দাজ করতে লাগলো। এর কিছুদিন পর সে সাথে বিউটি কে বলতে লাগলো তাকে সেই পছন্দ করে বিয়ে করবে। বিউটি ও শিক্ষকের কথা শুনে এক প্রকার রাজি হয়ে গেলেন। এদিকে সামিম স্যারের মা এবং বড় ভাই ব্যাপারটি জানতে পারেন। তারা এই মেয়েকে কখনো বিয়ে করাবে না। এই নিয়ে তাদের ফ্যামিলিতে সামিম স্যারের সাথে কথাবার্তা কাটাকাটি হয়। সামিম স্যার বলতে লাগলো সে এই মেয়েটিকে বিয়ে করবে। সামিম স্যারের বড় ভাই তাকে অনেক সুন্দর করে বুঝিয়ে বললেন তুমি আমার আদরের ছোট ভাই তোমাকে আমি আরো ভালো জায়গাতে বিয়ে করাবো।
সামিম স্যারের একটি কথা সে এই ছাত্রীকে বিয়ে করবেন। একদিন ঈদের রাতে ছাত্রীকে চুরি করে নিয়ে বিয়ে করে ফেলেন। এই কথা শুনে তার মা এবং বড় ভাই অনেক কষ্ট পায়। সামিম স্যারের ওয়াইফ যখন বাড়িতে আসলো। তখন থেকে তার ওয়াইফ সামিম স্যারের মাকে দেখতে পারে না। সব সময় সামিম স্যারের মার সাথে ঝগড়া করে এবং সামিম স্যার কে বলতে লাগে । তোমার মা আমাকে দেখতে পারেনা। এভাবে অনেকদিন যাওয়ার পর সামিম স্যার ও তার মায়ের সাথে সবসময় বাজে ব্যবহার করে। এক সময় সামিম স্যারের মা তার বড় ছেলের কাছে চলে যান। সামিম স্যার কখনো তার মাকে জিজ্ঞেস করতেন না কেমন আছেন। সামিম স্যারের ওয়াইফের কথা এমন ভাবে শুনে আর কারো কথা বিশ্বাস করে না।
কিছুদিন পর সামিম স্যারের মা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু সামিম স্যার কখনো তার মাকে দেখতে তার ভাইয়ের ঘরে যাইনি। কিন্তু সামিম স্যারের মা তার মুখ একবার দেখার জন্য কত বাড়বে তাকে দেখার জন্য বললেন। কিন্তু সামিম স্যার কখনো যায়নি। এর কিছুদিন পর সামিম স্যারের মা মারা যান। এর কিছুদিন পর শামিম স্যারের ওয়াইফ অন্য আরেকটি ছেলের সাথে পালিয়ে যায়। তার টাকা পয়সা নিয়ে। এরপর শামীম স্যার বুঝতে পারলে তার ওয়াইফ তার মায়ের সাথে যা ঘটেছে সবগুলো তার সাজানো ছিল। এখন শামিম স্যারের মনের মধ্যে কোন শান্তি নেই। পাগলের মত মানুষের সাথে আজেবাজে কথা বলে। এই হল শামিম স্যারের গল্প।
আমার নাম আকলিমা আক্তার মুনিয়া। আর আমার ইউজার নাম @bdwomen। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। বাংলা ভাষা হল আমাদের মাতৃভাষা আর আমি মাতৃভাষা বলতে পারি বলেই অনেক গর্বিত। আমি বিভিন্ন ধরনের ছবি এবং পেইন্টিং আঁকতে খুবই পছন্দ করি। আমি প্রায় সময় বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং এঁকে থাকি। আবার রঙিন পেপার এবং বিভিন্ন রকমের জিনিস দিয়ে নানা ধরনের কারুকাজ তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আবার নিজের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছবি তুলতে খুবই ভালো লাগে। আমি চেষ্টা করি সব ধরনের জিনিস কখনো না কখনো একবার করে করার জন্য। আবার বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া মাথায় আসলে সেগুলো ও করার চেষ্টা করি।
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
আপনার আজকের পোষ্টের মাধ্যমে শামীম স্যারের জীবন কাহিনী সম্পর্কে জানতে পারলাম। আসলে আপনি যদি আজকে আমাদের মাঝে এভাবে তুলে না ধরতেন তাহলে তার কথা হয়তো অজানাই থেকে যেত। যাই হোক সব সময় কাউকে অন্ধবিশ্বাস করা উচিত নয় হয়তোবা এটাই বুঝাতে চেয়েছেন। একদমই ঠিক অন্ধ বিশ্বাস কারো প্রতি করা উচিত না। সবসময় ভেবেচিন্তে বিবেক বিচার দিয়ে কাজ করা উচিত।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।
আসলে এই ঘটনা গুলো আমাদের সমাজে এখন অহরহ ঘটে।যে বড় ভাই এত কষ্ট করে তাদের পড়াশোনা করালো, সেই বড় ভাই এবং মায়ের অমতে বিয়ে করলো।তারপর আবার মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার।আসলে মা কে কষ্ট দিয়ে কখনো সুখি হওয়া যায় না।ভালো ছিলো আপনার সামিম স্যারের গল্পটা।ধন্যবাদ
সত্যি মাকে কষ্ট দিয়ে কেউ কখনো সুখী হতে পারে নাই। অনেক সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শামীম স্যারের মা এবং বড় ভাইয়ের জন্য খুবই খারাপ লাগলো। যে বড় ভাই অনেক কষ্ট করে নিজের ছোট ভাইকে পড়ালেখা করিয়েছে এবং মানুষের মত মানুষ করিয়েছে সেই ছোট ভাই কিনা শেষে প্রতারণা করলো একটি মেয়ের জন্য তাদের সাথে। মা অসুস্থ থাকার ফলেও মাকে দেখতে আসেনি শামীম স্যার। সত্যি ই ভাই এবং মায়ের জন্য একটুও চিন্তা করল না। সত্যিই শেষের দিকে যখন শামীম স্যারের ওয়াইফ যখন ওনাকে ছেড়ে চলে যায় তখন উনি বুঝতে পারেন কি রকম ব্যবহার করেছিল তার ভাই এবং মার সাথে। কখনো কাউকে অন্ধের মত বিশ্বাস করা ঠিক না। সে কি রকম হতে পারে তা অবশ্যই বোঝা লাগে আগে। ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
শামীম স্যারের ওয়াইফ যখন তাকে ছেড়ে চলে গেলেন। সেই সময় সে অনেক একাকীত্ব অনুভব করলেন। অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সত্যি স্যারের পরিবার অনেক বুঝি সে তাকে। সে কারো কথা শুনলেন না। আপনার মন্তব্য শুনে খুব ভালই লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।
আমাদের সমাজে এরকম অনেক শামীম স্যার আছে যারা অতীত ভুলে যায়। শামীম স্যারের ছোটকালে বাবা মারা গেলেন কিন্তু বড় ভাইয়ের এত কষ্ট করে তাকে লালন পালন করলে এবং তার মাও। শেষ পর্যন্ত তিনি তার একটি ছাত্রীকে বিয়ে করে মায়ের সাথে তার স্ত্রীর কথা শুনে খারাপ ব্যবহার করলেন। তার মা মারা যাওয়ার সময় তাকে দেখতেও আসলেন না। অথচ তার সেই ওয়াইফ কিছুদিন পরে অন্য আরেকটি ছেলের সাথে পালিয়ে গেলেন। আসলে এটি শামীম স্যারের কর্মের ফল। আপনার পোস্টটি পড়ে খুব খারাপ লাগলো শামীম স্যারের মায়ের জন্য ভাইয়ের জন্য। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
শামীম স্যার তার মায়ের মৃত্যুর সময় তাকে দেখার জন্য আসে নাই। এই কারণে শামীম স্যারকে এলাকার লোকজন অনেক ধরনের কথা বললেন। সুন্দর করে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপু সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করলেন। আপনার গল্পের মাধ্যমে শামীম স্যারের যে চরিত্র তা আমাদের কাছে প্রকাশ হয়ে গেল। আসলেস পরিবারের আপনজন দের কে কষ্ট দিলে তো তার কিছু খেসারত দিতেই হবে। আর ভালবাসা ভাল তবে অন্ধ ভালবাসা নয়।
একদম ঠিক বলেছেন ভালোবাসা ভালো তবে অন্ধ ভালোবাসা ভালো নয়। অসাধারণ ভাবে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
শামীম স্যারের গল্পটি পড়ে আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে তার বড় ভাইয়ের জন্য। তার বড় ভাই অনেক কষ্ট করে তাকে মানুষ করেছে। এবং তাকে পড়ালেখা করিয়ে অনেক শিক্ষিত করেছে। এটা শামীম স্যারের কখনো উচিৎ হয়নি বউয়ের কথা শুনে মাকে কষ্ট দেওয়া আর মাকে কষ্ট দিয়ে কেউ কখনো সুখী হতে পারেনি। তাই শামীম স্যার জীবনে সুখী হতে পারেনি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
খুব সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। মন্তব্য শুনে খুব ভালো লাগলো।