টাকা মানুষকে পরিবর্তন করে ফেলে।

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করব। ঘটনাটি হচ্ছে আমার স্বামীর এক আত্মীয়র ঘটনা আমার স্বামীর মুখ থেকে শুনলাম। আসলে আশেপাশের এসব ঘটনা থেকে শিক্ষনীয় অনেক বিষয় থাকে। এইজন্য ঘটনাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

ঘটনাটি হচ্ছে এক ফ্যামিলির। ফ্যামিলিতে মা-বাবা আর ছেলে ও দুইটি মেয়ে আছে। ছেলেটি ঠিকমতো লেখাপড়া করতো না। ছেলেটি বাজে ধরনের আড্ডাতে জড়িয়ে যাচ্ছে। এমন সময় ছেলের মা বাবা দুইজনেই বলতে লাগলো ছেলেটিকে বিয়ে দিবে। না হলে ছেলেটি আরো অনেক খারাপ হয়ে যাবে। ছেলেটির নাম হচ্ছে মঞ্জু। তারপর ছেলেটির মা বাবা ছেলেটির জন্য অনেক মেয়ে দেখতে লাগলো।ছেলেকে বিয়ে দেবার জন্য। বেশিরভাগ মেয়েদের ফ্যামিলির লোকগুলো মঞ্জুর কাছে বিয়ে দিতে রাজি না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর একটি মেয়ে তারা পছন্দ করলো। মেয়েটি কালো কিন্তু অনেক ভদ্র ও নামাজি ছিল।

এরপর দুই ফ্যামিলি কথা বলে ছেলে আর মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার জন্য রাজি হল। এবং ছেলেটিকে বাহিরে যাবার জন্য কিছু টাকা দেবেন মেয়ের মা বাবা। এই বলে তাদের বিয়ে হল। মঞ্জু এবং তার স্ত্রী খুব ভালোভাবে দিন কাটতে লাগলো। এক বছর পর তাদের ফ্যামিলিতে একটি মেয়ে জন্মগ্রহণ করল। এদিকে মঞ্জুর মা সব সময় মঞ্জুর স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করতে লাগলো। এমন সময় এলাকার কিছু লোককে মঞ্জুর মা বাবা ডাকলো। সবাই তাদের শাশুড়ি এবং বউয়ের কথা শুনলো। এক পর্যায়ে তাদেরকে আর ঝগড়া না করার জন্য বললেন।

এদিকে মঞ্জু কোন কাজ কাম করতো না। শুধু বসে বসে খেতো। এর কিছুদিন পর মঞ্জুর বাবার বিদেশ যাওয়ার জন্য লাইন দিলেন। তখন মঞ্জুর বিয়ে সময় যে টাকাগুলো দিয়েছিল সেই টাকাগুলো মঞ্জু তার বাবাকে এনে দিলো। তারপর তার বাবা বিদেশ গেলেন। এদিকে মঞ্জুর মেয়েটি আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলো। মঞ্জুর স্ত্রী তাদের বাড়ি থেকে বাচ্চাটির খরচের টাকাগুলো নিয়ে আসেতো। কারণ মঞ্জু কোন রোজগার করতেছিল না। এইভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর একদিন মঞ্জুকে তার মা তাদের থেকে আলাদা করে দিলো। এবং মঞ্জুর বাবা বিদেশ যাওয়ার পর ছেলের খোঁজ খবর ও নিতেন না। ছেলের বিয়ের টাকাগুলো দিয়ে তার বাবা বিদেশ গেলেন। অথচ মঞ্জুর মা-বাবা তাদেরকে আলাদা করে দিলো। তারপর থেকে মঞ্জু তার মায়ের সাথে সব সময় ঝগড়া করত যেন তাকেও তারা বিদেশ পাঠায়।

এভাবে সব সময় সেই ঝগড়া করে এবং বাড়িতে ঠিকমতো আসে না। মঞ্জুর স্ত্রী কালো কিন্তু তার শিক্ষা ছিল। এরপর মঞ্জুর স্ত্রী তার মা-বাবার সাথে কথা বললো। মঞ্জুকে বিদেশ পাঠানোর জন্য। এইদিকে মঞ্জুর ছোট বোন স্বামীর বাড়ি থেকে ঝগড়া করে বাপের বাড়িতে চলে আসলো। এইদিকে মঞ্জুর শশুর এবং শাশুড়ি মেয়ের কথা চিন্তা করে মঞ্জকে বিদেশ পরানো সিদ্ধান্ত নিলেন।এর কয়েক মাস পর মঞ্জুর বিদেশ যাওয়া ঠিক হলো। কারণ মঞ্জুর শশুরের অনেক টাকা। এর কিছুদিন পর মঞ্জু ওমান চলে গেলো। মঞ্জু ওমান যাওয়ার কয়েক মাস পর তাদের আরও একটি মেয়ে জন্মগ্রহণ করলো।

এরপর মঞ্জু এবং তার স্ত্রী খুব সুন্দর করে দিন কাটাতে লাগলো। এবং ওমান থেকে সে ভালো টাকাও পাঠাতে লাগলেন দেশে। এদিকে মঞ্জুর ছোট বোনটি স্বামীর বাড়ি থেকে একদম সম্পর্ক ছিন্ন করে বাপের বাড়িতে চলে আসলো। সেই প্রতিদিন কোন না কোন জিনিস নিয়ে মঞ্জুর ফ্যামিলিতে জামিলা করতে লাগলো। এবং মঞ্জুকে তার ছোট বোন ও তার মা বলতে লাগলো তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার জন্য। তারা বলতেছিল তার স্ত্রী কালো এবং কারো সাথে কথা বলতে থাকে। প্রথমে মঞ্জু কথাগুলোতে তেমন একটা কান দিতো না। এরপর আস্তে আস্তে মঞ্জুর ফ্যামিলিতে নেমে আসতে লাগল অন্ধকারের ছায়া। এবং মঞ্জু সব সময় তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করতে লাগলো এবং তাকে আর রাখবে না এই বলে ধমক দিতে লাগলো।

এদিকে মঞ্জুর স্ত্রী কথাগুলো তার মা-বাবা এবং তার শ্বশুরকে জানালেন। এক পর্যায়ে একদিন তার স্বামীর ছোট বোনটি তার সাথে ঝগড়া করতে লাগলো। এমন সময় তার শাশুড়ি ও তার সাথে বিভিন্ন ধরনের খারাপ ব্যবহার করতে লাগলো। এই ব্যাপারটি মঞ্জুর স্ত্রী মঞ্জুকে জানালা। মঞ্জু তার ছোট বোন ও মাকে কিছুই বলল না। এদিকে মঞ্জু ঠিকমতে বাড়িতে টাকাও পাঠাতো না। এরপর তার স্ত্রী তাদের বাড়িতে বাচ্চা দুটি নিয়ে চলে আসলো। এইভাবে তার স্ত্রী তাদের বাড়িতে কয়েক বছর পরে রইলো।

কিছুদিন আগে মঞ্জুর তার স্ত্রীকে বলতে লাগলো সেই আরেকটা বিয়ে করবে এবং তার স্ত্রীকে বলল তুমি কালো তোমাকে আমার পছন্দ না। এরপর তার স্ত্রী তাকে বলল যখন বিয়ে করলে তখন আমাকে দেখো নি। তখন কেন তোমার ফ্যামিলিকে বললে না আমাকে বিয়ে করতে পারবে না। তখন মঞ্জুর স্ত্রী তাকে বলতে লাগলো তোমার মা বাবা তোমাকে তাদের থেকে আলাদা করে দিলো। আমি আমার মা-বাবাকে বলে তোমাকে বিদেশ পাঠিয়েছি।

এখন তোমার টাকা পয়সা আছে সেজন্য আমাকে এখন আর তোমার ভালো লাগে না। আমার বিয়ের সময় যে টাকা দেওয়ার কথা ছিল সেই টাকা গুলো দিয়ে তোমার বাবা বিদেশ গেলেন। এরপর আমার মা বাবা আবার টাকা দিয়ে তোমাকে বিদেশ পাঠিয়েছে। আমি তো কখনো এই টাকাগুলোর কথাও বললাম না তোমাকে কেন তুমি এখন আমাকে বলতে লাগলে আমাকে তোমার ভালো লাগেনা।এভাবে তাদের দুজনের মধ্যে অনেক কথা কাটাকাটি হলো। কিছুদিন আগে মঞ্জু ওমান থেকে তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে দিলেন। মঞ্জুর স্ত্রী কথাটি শুনে বিশ্বাস করতে পারছে না। যে লোকটি দেশ থাকা সময় এত ভালো ছিল। এই কয়দিনের মধ্যে সে এতটা চেঞ্জ হয়ে যাবে সে কল্পনা করতে পারতেছিল না। মঞ্জু টাকার কারণে তার বউয়ের সাথে আজকে অনেক বড় গাদ্দারি করলো। মঞ্জুর স্ত্রী বলতে লাগলো টাকা হলে মানুষ এত বড় স্বার্থপর হতে পারে সত্যি এটা আগে তার জানা ছিল না। আজকে হয়তো মঞ্জু স্ত্রীর সাথে অনেক বড় একটি অন্যায় করল। কিন্তু একদিন সে ঠিকই বুঝতে পারবে টাকার জন্য কাকে হারিয়ে ফেলল।

ধন্যবাদ সবাইকে