হঠাৎ বিপদ।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

jpg_20230522_235658_0000.jpg

হ্যালো বন্ধুরা

হ্যালো বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজ ২-১ দিন খুবই হতাশায় ভুগতেছি। আমাদের উপর দিয়ে অনেক বেশি বিপদ যাচ্ছিল। আজ আমি আমাদের একটি বিপদের কথা আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আসলে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি আমার একটা পরিবার। পরিবারের সাথে যেমনে হাসি খুশি মুহূর্ত শেয়ার করি, তেমনি বিপদ এর কথার শেয়ার করা উচিত। এজন্য ছোট একটি বিপদের কথা শেয়ার করলাম। পরিবারের কেউ যদি অসুস্থ হয় তাহলে সময়টা ভালো যায় না। কেউ যদি অসুস্থ থাকে তাহলে খাওয়া দাওয়া খাওয়া যেভাবে কষ্টকর হয়ে যায়, তেমনি যেকোনো ধরনের কাজ করতেও অনেক বেশি সমস্যা হয়।

আজ দীর্ঘদিন যাবত আমার শ্বশুর খুব অসুস্থ । আমি আমার শ্বশুর এবং শাশুড়িকে খুবই ভালোবাসি। কারণ তারা আমাকে অনেক বেশী আদর স্নেহ করেন। আমি সব সময় চেষ্টা করে তাদেরকে ভালো রাখার জন্য। আমার শ্বশুর একজন আলেম মানুষ। আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় এক বছর এর মধ্যে কখনো শশুর এবং শাশুড়ি, কোন খারাপ কথা বলে নাই, যে কথা আমার মনে কষ্ট আসতে পারে। শুরু থেকেই তাদের সাথে থেকে জীবন যাপন করার চেষ্টা করতেছি। সব সময় তাদের সেবা যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করতেছি।

আমার মেয়ে মাইসুন এর জন্মদিনের দিন থেকে আমার শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন । তার আগে মোটামুটি ভালো ছিল। আমরা পরিবারের সবাই তাকে সারাক্ষণ দেখাশোনা করে রাখি। এতজনের দেখাশোনা করা সত্ত্বেও মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিপদ হয়ে যায়। কিছুদিন আগে হঠাৎ করে বিছানা থেকে পড়ে পায়ের অনেকটুকু অংশ কেটে ফেলেছিল। আজ অনেকদিন পর তা মোটামুটি ভালো হয়েছে। মাঝে মাঝে সবাই থাকা সত্ত্বেও পড়ে যায়। এরপরেও সবাই অনেক যত্নের তাকে দেখাশোনা করতেছিল। পরিবারের মধ্যে আমি আমার হাজব্যান্ড এবং আমার শাশুড়ি রয়েছে।

পুরো রাত শ্বশুরের পাশে একজন বসে থাকতে হয়। বিশেষ করে আমার হাজব্যান্ড সারাক্ষণ তার পাশে থাকার চেষ্টা করে। যখন আমার হাজব্যান্ড থাকে না তখন আমার শাশুড়ি থাকে। আর সংসারের বাকি সব কাজ আমাকে দেখতে হয়। সব কাজ শেষ করার পর আমার মেয়েকে নিয়েও আমার শ্বশুরের সাথে সময় কাটাতে হয়। কারণ তার হঠাৎ করে মাথার চেঞ্জ চলে যায়। এজন্য পড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

গত পরশু সন্ধ্যার সময় আমার হাজব্যান্ড নামাজ পড়তে এসেছিল। আমি এবং আমার শাশুড়ি নামাজ পড়তে ছিলাম। নামাজ শেষে আমার হাজব্যান্ড বাবার থেকে একটু দূরে বসে ছিল। হঠাৎ করে বাবা বিছানা থেকে উঠে বসলো। দুই এক কদম পা সামনে দিয়ে, হঠাৎ করে পিছনে পড়ে গেল। তখন খাটের সাথে বাড়ি খেয়েছিল। বাড়ি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার কান কেটে গিয়েছিল। পরিবারের সবাই হঠাৎ করে চিৎকার চেঁচামেচি করতে শুরু করল। আমার শাশুড়ি এসব দেখে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। হাসবেন্ড রক্ত দেখে অবস্থা একদম খারাপ। অনেক কষ্টের বিনিময়ে তার কান থেকে রক্ত বন্ধ করেছে।

বাড়ির পাশে একজন ডাক্তার রয়েছে তাকে এনে, তার কান দেখালো। ডাক্তার বলল তাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সঙ্গে সঙ্গে আমার হাজব্যান্ড এবং তার একজন মামাতো ভাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল। প্রথম যে হাসপাতালে নিয়েছে সেখানে তাকে রাখে নাই, ওরা বলতেছে এখানে তার চিকিৎসা নাকি নাই। সঙ্গে সঙ্গে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। তখন রাতের প্রায় ১১ঃ টা। সেখানে অসংখ্য রোগীর রয়েছে। রোগীর জন্য সেখানে ডাক্তারের সাথে ভালোভাবে কথা বলতে পারে নাই। এরপর সঙ্গে সঙ্গে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। সেখানে ডাক্তারকে যখন তার কান দেখাইছে, ডাক্তার বললেন তার কান কেটে ফালায় দিতে হবে। কারণ কান কাটার সময় প্রায় কানের বেশিরভাগ অংশ কেটে গিয়েছে।

তখন গত পরশু রাত দুইটা তার কানের অপারেশন হলো। রাতে ডাক্তার তার কান কেটে ফেলেছে। পরদিন বিকেল বেলা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসলো। হসপিটালে প্রায় ৩০ হাজার টাকার উপরে শুধু হসপিটাল গেলে এসেছে। শুধু অপারেশনের ডাক্তারকে পনের হাজার টাকা দিয়েছিল। এর বাহিরে থাকা অন্যান্য খরচ সহ হসপিটাল এর খরচ প্রায় ৩০ হাজার টাকা হল। বর্তমানে টাকা-পয়সার এত সংকটের মধ্যেও হঠাৎ এই বিপদ এসে আমাদের কে দেখা দিল। বাবার অনেক কষ্ট হচ্ছে বুঝতেছি। কিন্তু আমাদের সবার এই বিষয়টা মানতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। সবাই থাকা সত্ত্বেও, হঠাৎ বিপদটা এসে এত বড় দুর্ঘটনা হলো। আমার শ্বশুরের জন্য সবাই দোয়া করবেন। যেন তিনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG-20211226-WA0000.jpg

আমার নাম আকলিমা আক্তার মুনিয়া। আর আমার ইউজার নাম @bdwomen। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। বাংলা ভাষা হল আমাদের মাতৃভাষা আর আমি মাতৃভাষা বলতে পারি বলেই অনেক গর্বিত। আমি বিভিন্ন ধরনের ছবি এবং পেইন্টিং আঁকতে খুবই পছন্দ করি। আমি প্রায় সময় বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং এঁকে থাকি। আবার রঙিন পেপার এবং বিভিন্ন রকমের জিনিস দিয়ে নানা ধরনের কারুকাজ তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আবার নিজের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছবি তুলতে খুবই ভালো লাগে। আমি চেষ্টা করি সব ধরনের জিনিস কখনো না কখনো একবার করে করার জন্য। আবার বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া মাথায় আসলে সেগুলো ও করার চেষ্টা করি।

35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

🥰 ধন্যবাদ সবাইকে 🥰

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPyYtysqh4AAKfFe2PjLrs9yQRDk8uu33U6mEQUawZfzwZRYHVdfBKjFEY9bHU...rKYsVvSJ5cLMN6F1MDoTYB9sbZTry4Gk1FMDMADUBUpmCn99Roaxp8rXJb2eC5PoQwkZVhzif52ME79WDArQnyqeDztM45wH4rnBUqqX43DwMEvnLB38AXvxAS.png

Sort:  
 last year 

আসলে আপু বিপদ কখন কিভাবে আসে বুঝা মুশকিল। সতর্ক থাকলেও বিপদ যখন আসার ঠিক আসবে।যাইহোক অবশেষে আপনার শশুরের কান অপারেশন করা হয়েছে। সে তারতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক সেই কামনায় করি।আর আপু মানুষের জীবন এমনি কখন কি হয় বুঝা মুশকিল। ধন্যবাদ আপু পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

কখন মানুষের জীবনে কি হয় কেউ বলতে পারে না। আমার শ্বশুরের জন্য দোয়া করবেন ধন্যবাদ।

 last year 

আপনার শ্বশুরের কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো। আসলে বয়স হলে মানুষের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়। তাছাড়া যাদের এই পরে যাওয়ার সমস্যা আছে তাদেরকে অনেক চোখে চোখে রাখতে হয়। তারপরও চোখের আড়ালেই এরকম দুর্ঘটনা ঘটে যায়। টাকা লাগলেও অপারেশনটা ভালো মতো হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আপনার শ্বশুরের খেয়াল রাখবেন। এরকম পরে যাওয়ার সমস্যা আমার আব্বুরও ছিল। বিষয়টি বুঝতে পারছি কতটা কষ্টকর। দোয়া রইল আপনার শ্বশুরের জন্য।

 last year 

আমার হাজব্যান্ড সারাক্ষণ তার পাশে থাকে। সারারাত বসে বসে তাকে পাহারা দে। আমিন তাকে যেন সুস্থ করে দেয়।

 last year 

অনেক খারাপ লাগলো আপু আপনার শেয়ার করা বিষয়টি পড়ে। এই বয়সে যদি কান কেটে ফেলতে হয় তাহলে তো খুব মারাত্মকভাবে আঘাত পেয়েছে। বিষয়টি খুব খারাপ লাগার মত। একদিকে আপনাদের ঘরে ছোট একটা শিশুর জন্ম হলো অন্যদিকে বয়স্ক লোক অসুস্থ সবকিছু মিলে বেশ টানাপোড়নের মধ্যে আছেন বোঝা যাচ্ছে। সৃষ্টিকর্তা যা করেন আপু ভালোর জন্যই করেন। আশা করি সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং পারিবারিক অবস্থা ভালোই হবে দোয়া করি।

 last year 

আমরা ঠিক মত ঘুমাতেও পারি না কাজও করতে পারি না। দোয়া করবেন আপু যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।

 last year 

আপু আপনার শ্বশুরের ঘটনাটি পড়ে সত্যি ভীষণ খারাপ লাগলো । আসলে পরিবারে এধরনের কেউ থাকলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। হঠাৎ করে আমাদের বিপদে পড়তে হয়েছে দেখে বেশ খারাপ লাগলো । আসলে এধনের রোগীদেরকে একটু সাবধানে রাখতে হয় ।হঠাৎ ভুলে যাওয়া এবং পড়ে যাওয়া এ দুটোর সঙ্গে আমরা বেশ পরিচিত ।যাই হোক আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো ।

 last year 

আমার শ্বশুর একজন আলেম মানুষ। সে সব সময় মানুষের ভালো কাজ করতো। আল্লাহ তাআলা যেন তাকে মাফ করে আমিন।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76470.55
ETH 3079.00
USDT 1.00
SBD 2.62