প্রথমবার শ্বশুরবাড়িতে মাটির চুলা মেরামত করার অভিজ্ঞতা
হ্যালো বন্ধুরা
সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে খুবই ভাল আছি। কিছুদিন ধরে লেখালেখি করতে ভীষণ ভালোই লাগে। আজকে আবারো নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। আশা করি আমার ব্লগটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।
আমার বিয়ে হয়েছে যে প্রায় ১১ মাস হয়ে গিয়েছে। কিছুদিন পরে এক বছর পূর্ণ হবে। আমি আমার শ্বশুর বাড়িতে আমার হাজব্যান্ড আর শশুর শাশুড়ির সাথে থাকি। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। উনাদেরকে অনেক দেখাশোনা করতে হয়। কারণ বাড়িতে আমি আর আমার হাজব্যান্ড ছাড়া উনাদের দেখাশোনা করার মত কেউ নেই। তাই আমরা দুজন আমাদের সাধ্যমত ওনাদের খেয়াল রাখার চেষ্টা করি। কারন আমরা জানি কোন একদিন আমরাও তাদের মত বৃদ্ধ হয়ে যাব। তাই আমি আমার যতটুকু সামর্থক আছে ততটুক দিয়ে ওনাদের খুশি রাখার চেষ্টা করি। ঠিক একই রকম ভাবে আমার হাসবেন্ডও ওনাদেরকে খুশি রাখার ততটুকু চেষ্টা করে। বর্তমানে আমার হাজব্যান্ড কোথাও কাজ করে না। আগে উনি বিদেশ ছিলেন। বিদেশ থেকে চলে এসেছেন প্রায় দু বছর হয়ে যাচ্ছে।
এখন উনি আমাদের সাথেই বাড়িতে থাকে। আমার সাথে উনিও আমার বাংলা ব্লগে কাজ করার চেষ্টা করে। কারণ বাহিরে কোথাও কাজ করতে গেলে আমাদেরকে দেখার মত তেমন কেউ নেই। তাই উনি অনেক ভেবে চিন্তে বিদেশ যাওয়া ক্যান্সেল করে দিয়েছে। কারণ বাড়িতে শুধু আমি আর আমার শ্বশুর শাশুড়ি থাকি। তাই আমরা সবাই উনাকে বারণ করেছি বিদেশ না যাওয়ার জন্য। এখন আমরা চারজনেই মিলে খুব হাসি খুশি ভাবে জীবন যাপন করি। তার পাশাপাশি আমার শ্বশুর-শাশুড়ির যত্ন এবং খেয়াল রাখারও চেষ্টা করি। আবার তার পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করি আমার বাংলা ব্লগে আমাদের কাজটা সুন্দরভাবে বজায় রাখার জন্য। আমার শাশুড়ি অনেক বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। ঘরের কাজ কাম এখন ঠিকমত তিনি করতে পারেন না। তাই সব কাজ আমাকেই সুন্দরভাবে গুছিয়ে করতে হয়। আমার বিয়ে হবার পর থেকেই আমি চেষ্টা করি ওনাকে কোন কাজ না করানোর জন্য। আমি পরিবারের সব কাজ একাই সামলানোর চেষ্টা করি।
তারপর এই প্ল্যাটফর্মে আমার কাজটাও ঠিক একই ভাবে বজায় রাখার চেষ্টা করি। পরিবারের নানা ধরনের কাজ থাকে যেগুলো আমাদেরকে গুছিয়ে করতে হয়। আমার বিয়ে হবার আগে আমি তো কিছু কিছু কাজ কখনো করিনি। কিন্তু এখন একা হবার কারণে সব কাজ নিজেকেই করতে হয়। আমাদের বাড়িতে থাকার সময়কালীন আমি কখনো মাটির চুলা ভেঙে যাওয়ার পরে ওটা ঠিক করিনি। কিন্তু এই প্রথম আমি আমার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার পরে মাটির চুলা মেরামত করেছি। প্রথম প্রথম আমার শাশুড়ি একবার দুবার আমাকে কিভাবে চুলা ঠিক করেই ওইটা দেখিয়ে দিয়েছে। আবার তাদের বাড়িতে একটি মহিলা ছিল যিনি বাড়ির কাজ কাম করে থাকে। কিছুদিন তো আমি ওই মহিলাকে টাকা দিয়ে আমাদের মাটির চুলাটা ঠিক করে নিয়েছিলাম।কিন্তু সেই মহিলা প্রচুর কথা বলে এবং খারাপ আচরণ করে।
তাই আমি ঠিক করেছি এবার থেকে আমি নিজেই চেষ্টা করব মাটির চুলাটা মেরামত করার জন্য। তাই আমার শাশুড়ির সাহায্য নিয়ে আমি প্রথমবারের মত আমাদের এই মাটির চুলাটা ঠিক করে নিয়েছিলাম। অনেকদিন হয়ে গিয়েছিল মাটির চুলাটা মেরামত করা হয়নি। দুপাশে ফাটল ধরে গিয়েছিল। তাই আমি কাদা মাটি আর পানি দিয়ে আমাদের মাটির চুলাটা ঠিক করে নিয়েছিলাম। হয়তোবা তেমন সুন্দরভাবে মেরামত করতে পারিনি। কিন্তু আমার শাশুড়ি আমাকে বলেছে ধীরে ধীরে করতে করতে একদিন সুন্দরভাবে করতে পারব। আমি তো তখন খুবই খুশি হয়ে গিয়েছিলাম আমার শাশুড়ির কথা শুনে। তারপর থেকে আমি চিন্তা করতে লাগলাম এবার থেকে আমি নিজেই চেষ্টা করব ঘরের প্রত্যেকটি কাজ এক হাতে সামলানোর জন্য। কারণ নিজের ঘরের কাজ করতে কোন দ্বিধা করার ঠিক না। নিজের কাজ নিজেকেই সব সময় গুছিয়ে করতে হবে।
এখন হয়তো অনেকেই বলতে পারেন আমাদের হয়তোবা গ্যাসের চুলা নেই। আমাদের ঘরে গ্যাসের চুলা ও আছে। কিন্তু গ্রামের দিকে বেশিরভাগ মানুষ মাটির চুলায় ভাত রান্না করার চেষ্টা করে। ঠিক একইভাবে আমরাও মাটির চুলায় ভাত রান্না করার চেষ্টা করি। কারণ মাটির চুলায় রান্না করলে সেই রান্নাগুলো খেতে ভীষণ মজা হয়। বাকি কাজগুলো আমরা দেশে গ্যাসে করার চেষ্টা করি। শুধুমাত্র আমাদের দুপুরের খাবারটা আমরা মাটির চুলায় তৈরি করে। আমি কিন্তু প্রথমে কাদামাটি দিয়ে চুলা মেরামত করার সময় অনেকটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি যদি ঠিকভাবে মেরামত করতে না পারি তাই। কিন্তু আমার শাশুড়ির উৎসাহ পেয়ে আমি চেষ্টা করলাম সুন্দরভাবে মেরামত করার জন্য। অনেকেই ভাবে হয়তো শাশুড়িরা তাদেরকে খারাপ মতলব দেয়। কিন্তু আমি মনে করি তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করলে তারাও নিজের মায়ের মত হয়ে যেতে পারে। আমার শাশুড়ি আমার প্রত্যেকটি কাজে আমাকে অনেকটাই উৎসাহিত করে। তাই আমিও চেষ্টা করি আমার শাশুড়ির মুখে হাসি সব সময় ফোটানোর জন্য। আজকে আমি আমার প্রথমবারের মতো মাটির চুলা মেরামত করার অভিজ্ঞতাটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। আশা করি আমার এই প্রথমবার অভিজ্ঞতার কথা শুনে আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | সুন্দর মুহূর্ত |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy a7 |
ফটোগ্রাফার | @bdwomen |
লোকেশন | চট্টগ্রাম |
আপু আপনার শ্বশুরবাড়িতে মাটির চুলা মেরামত করার অভিজ্ঞতার পোস্টে পড়ে আমার নিজের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। ঠিক বলেছেন আপু আপনি গ্রামের মানুষের বাড়িতে গ্যাসের চুলাও আছে। কিন্তু গ্রামের মানুষ চেষ্টা করে মাটির চুলায় সবকিছু রান্না করার। ঠিক বলেছেন আপু আপনি গ্রামের মানুষকে টাকা দিলেও কখনো ঠিকমতো কাজ করে দেয় না। নিজের কাজ নিজে করাই ভালো আমি মনে করি। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপনি নিজের কাজ আমরা যেভাবে বুঝিয়ে করতে পারি অন্য কাউকে দিলে ঠিক সেভাবে গুছিয়ে করতে পারে না।
https://twitter.com/bdwomen2/status/1623694046249246720?t=uNBUrxsqD5Qy0UwOAgaYxg&s=19
আপু একটা জিনিস অনেক ভালো লাগলো যে শশুড় শাশুড়িকে যত টুকু সম্ভব যত্ন করতেছেন ৷ আসলে এটা আমাদের দায়িত্ব ৷ কারন বাবা মা কি চায় ৷ যে একদিন আমি বৃদ্ধ হবো তখন সন্তান আমাদের দেখবে ৷ এটা প্রতিটি বৃদ্ধ বাবা মা চায় ৷
যা হোক আপনি মাটির চুলা মেরামত করছেন ৷ আসলে গ্রামে মাটির চুলা রান্না করে বেশি ৷ সত্যি আমি তো এখনো গ্যাসের চুলার রান্না খেতে পারি না ৷
আপু একদিন মাটির চুলায় রান্নার রেসিপি শেয়ার করবেন ৷ কেমন
ভাইয়া আমি যেই রেসিপিগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করি ওই রেসিপিগুলো এই চুলার মধ্যেই তৈরি করেছি আমি।
প্রথমবার শ্বশুরবাড়িতে মাটির চুলা মেরামত করার অভিজ্ঞতা পড়ে ভালো লাগলো। অনেক দিন পর মাটির চুলা দেখলাম। আপু আপনি শাশুড়ির মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সব সময়ই চেষ্ঠা করেন জেনে খুশি হলাম। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।
আমরা পরিবারে শুধু চারজন মানুষ তাই আমরা চারজনেই চেষ্টা করি চারজনের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য।
আপু আপনি এবং আপনার হাজব্যান্ড মিলে আপনার শ্বশুর শাশুড়ির সাথে ভালো আছেন এবং তাদের খেয়াল রাখার চেষ্টা করছেন দেখে ভালো লাগলো। আসলে বাসায় যদি তাদের দেখাশোনা করার মত কেউ না থাকে তাহলে ভীষণ সমস্যা। ভাইয়া দেশের বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ক্যানসেল করেছে জেনে ভালো লাগলো। যাইহোক মাটির চুলা এভাবে মেরামত করার অভিজ্ঞতা আমার নেই। মনে হচ্ছে এই কাজগুলো করা অনেকটা কঠিন।
আমিও প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো মাটির চুলা মেরামত করতে গেলে উল্টো মাটির চুলাটা ভেঙ্গে যাবে। পরে আমার শাশুড়ি দেখিয়ে দেওয়ার পরে ঠিকঠাকভাবে মেরামত করতে পারলাম।
আসলে মাটির চুলাতে রান্না করে খাওয়ার অনুভূতি সত্যি খুবই অন্যরকম হয়ে থাকে। তবে রান্না করতে অনেক কষ্ট হয়। সমস্যা হল চুলার কালী সহজে উঠতে চায় না। গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে মাটির চুলা রয়েছে। আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। চুলা মেরামতের অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
যদি মাথা খাটিয়ে পাতিল পরিষ্কার করা হয় তাহলে কালি এক দমি থাকে না। আমি তো প্রথমে পাতিলের চারপাশে মাটি লাগিয়ে দি। তাই পরিষ্কার করার সময় তাড়াতাড়ি পরিষ্কার হয়ে যায়।
আপনি শ্বশুর বাড়িতে আছেন শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে বেশ খুশিতে আছেন অনেক জমিয়ে সংসার করতেছেন এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাওয়া।আপু নিজের কাজ নিজে করাই অনেক ভালো তাতে নিজেকে একটু পিট রাখা যায়।আপনি অনেক ভালো কাজ করেছেন নিজে মেরামত করেছেন মাটির চুলা।আপনার ভবিষ্যত জীবন সুন্দর হোক এই কামনা করি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপু এত সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য। আপনার জন্যও অনেক অনেক শুভকামনা রইল।