আশা করি ভালো আছেন সবাই। আলহামদুলিল্লাহ আমিও অনেক ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের শেয়ার করতে যাচ্ছি আমার চট্টগ্রাম ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। আশা করি সবাইকে ভালো লাগবে। তো চলুন শুরু করা যাক।

২০১৯ সালের শুরুর দিকে আমরা অর্থাৎ পরিবারসহ আমরা চট্টগ্রাম ভ্রমণে যাই। এটি আমার জীবনের অন্যতম অভিজ্ঞতার মধ্যে একটি। আমরা প্রথমে নীলফামারি থেকে ঢাকা যাই ট্রেনে করে। রাত ৯ টায় ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দেয়। সকাল ৭ টার মধ্যে আমরা ঢাকায় পৌঁছাই। তারপর আমার এক আত্মীয়র বাসায় উঠি। সেখানে দুপুরের খাওয়া করি। বিকালে রেষ্ট নিয়ে সন্ধ্যায় বের হই কারণ রাত ৮ টায় আমাদের বাস ছিলো। যথাসময়ে বাস রওনা দেয় গন্তব্য ছিলো চট্রগ্রাম। প্রায় ৫-৬ ঘন্টার মধ্যে আমরা চট্রগ্রাম পৌঁছে যাই। সেখানে গিয়ে সর্বপ্রথম একটি হোটেল বুক করি। সকালে নাস্তা করার পর আমরা চট্টগ্রাম শহর ঘুরতে বের হই।

আমরা জানি, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের বৃহত বন্দর শহর। চট্টগ্রামের জনসংখ্যা ৬০ লক্ষের বেশি, এবং ক্রমবর্ধমান অব্যাহত রয়েছে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম পরিষ্কার শহর হিসাবে পরিচিত। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।

আমরা প্রথমেই চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় যাই। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা বাংলাদেশের চট্টগ্রামের একটি চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানাটি অনেক সুন্দর ছিলো। এই চিড়িয়াখানায় প্রায় ২৫ ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। চিড়িয়াখানায় আমরা প্রায় ৪ প্রজাতির সরীসৃপ দেখেছি। চিড়িয়াখানায় ২৫ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। চট্রগ্রামের চিড়িয়াখানায় ঘুরে অনেক ভালো লেগেছে আমাদের।

চিড়িয়াখানা ঘুরার পর আমরা একটি হোটেলে দুপুরের খাওয়া করি। খাওয়া শেষ করে আমরা চট্রগ্রাম এর অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ফয়েজ লেক ঘুরতে যাই। চট্রগ্রাম চিড়িয়াখানার পাশেই ফয়েজ লেক অবস্থিত। এখানে টিকিট কেটে নিতে হয় রাইড সহ। এখানে টিকিটের অনেকগুলো প্যাকেজ ছিলো। আমরা জন প্রতি সব রাইড একবার করে ৫৫০ টাকার টাকার প্যাকেজটি নিয়েছিলাম। টিকিট কেটে আমরা ফয়েজ লেকে প্রবেশ করি। এ যেন এক আলাদা পৃথিবীর মতন। ফয়েজ লেক বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একটি মানবসৃষ্ট লেক।

এখানে প্রতিদিন অনেক পর্যটক ঘুরতে আসে। ফয়েজ লেক এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের কোন তুলনাই হয়না। এছাড়াও ফয়েজ লেকের মধ্যে রয়েছে অনেক ধরনের রাইড। আমি ৩ টি রাইডে উঠি। আমি এর আগে কখনো এইগুলা রাইডে উঠিনি তাই একটু ভয় সাথে এক্সসাইটমেন্ট ও ছিলো প্রচুর। ৩ টি রাইডের মধ্যে আমি ওয়াটার কোস্টার রাইডটি সবথেকে বেশি ইনজয় করেছি। ওয়াটার কোস্টার একটি রোয়ারে জল স্লাইডের রিফ্রেশ স্প্ল্যাশগুলির সাথে একটি রোলার কোস্টারটির রোমাঞ্চকর গতি এবং চড়াই উতরূপকে একত্রিত করে। ফয়েজ লেক ঘুরা শেষ করে সন্ধ্যায় আমারা হোটেলে ফিরি। ফ্রেশ হয়ে রেষ্ট নিয়ে রাতের খাবার খাই।

পরের দিন সকালে উঠে নাস্তা করি। তারপর ব্যাগ গুছায় রাখি কারণ আজকেই আমাদের চট্রগ্রাম এ শেষ দিন ছিলো। আমরা দুপুরের খাওয়া করে বিকালে একেবারে ব্যাগ নিয়ে বের হই। বিকেলে আমরা বায়েজিদ বোস্তামির মাজার দেখতে যাই। আমরা জানি, বায়েজিদ বোস্তামি ছিলেন ইসলামের প্রচারক। তিনি আমাদের উপমহাদেশের একটি অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। তিনি তাঁর মায়ের সেবা করার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এই মাজারে আমরা কিছুক্ষণ ঘুরে ঘুরে দেখি। এই মাজারে একটি পুকুর রয়েছে। যেখানে আমরা কচ্ছপ দেখেছিলাম। তারপর সম্পূর্ণ মাজার ভালোভাবে পরিদর্শন করি। এটি আমার কাছে একটু নতুন অভিজ্ঞতা।

মাজার দেখার পর সন্ধ্যায় নাস্তা করে বাস কাউন্টার এ যাই। আমাদের বাস ছিলো রাত ৮ টায়। রাত ৮ টায় আমরা রওনা দেই নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে।

এই ছিলো আমার চট্রগ্রাম ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। আশা করি সবার ভালো লেগেছে। আমাকে এই শহরটিকে অনেক ভালো লেগেছে। এই শহরে অনেকগুলো পর্যটন শহর রয়েছে যেগুলো আমাদের নতুন নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।
ধন্যবাদ আমার পোস্টটি এত মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।