বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে ধারাবাহিক গল্প -দালাল(শেষ খন্ড)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি ও ভালো আছি ইনশাআল্লাহ। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সামনে শেয়ার করবো আমার দালাল গল্পের শেষ খন্ড। গল্পটা পড়লেই আপনারা বুঝতে পারবেন যে জাহিদের সুন্দর সাজানো গুছানো একটা সংসার কিভাবে শেষ হয়ে গেল। তাহলে চলুন শুরু করা যাক-
পোস্টর ধরনঃ ধারাবাহিক গল্প।
পোস্টের শিরোনামঃ বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে একটি গল্প দালাল।
পোস্টের তারিখঃ ৭ ই কার্তিক ১৪২৯ খ্রিস্টাব্দ (বাংলা)

Screenshot_20221014-122428_1.png

ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত ছবি
-----সেদিনের পর থেকে জাহিদের সাথে আর কারো কোন কথা হয়নি। জাহিদকে মাফিয়ারা ধরে নিয়ে গেছে বা জাহিদ কেমন আছেন তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে জাহিদের বাড়ির কি অবস্থা সেটা নিয়ে।

এবার তো জাহিদের পাওনাদারেরা জাহিদের বাড়িতে চাপ দিতে লাগলো হয় আমাদের ছেলেদের ইতালিতে পাঠানো হোক না হয় আমাদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক। কিন্তু জাহিদের টাকা তো তার বড় ভাই মনিরুজ্জামান এর কাছে। এবং বাড়িতে জাহিদের মা একা। আগেই বলেছিলাম যে জাহিদের বড় ভাই মনিরুজ্জামান জাহিদের সাথে চিট করেছিল।

এবার ও তার ব্যতিক্রম হয় নি। জাহিদের মা যেই মনিরুজ্জামান ভাইয়ের কাছে টাকা চাইলেন এবং বললেন যে তোর কাছে যে টাকা আছে সেই টাকাগুলো আমাকে দে, আমি সব পাওনাদারদেরকে কিছু কিছু টাকা দিয়ে তাদেরকে অন্তত একটা বুঝ দেই। কিন্তু মনিরুজ্জামান ভাই একটা টাকা ও পাওনাদারদের কে দেয় না। এদিকে পাওনাদারেরা জাহিদের বাড়িতে এসে জাহিদের আম্মার সাথে রাগারাগি করে যায়। কিন্তু জাহিদের আম্মা কি করবে, তার কাছে তো করার কিছুই নাই।

এভাবে কয়েকদিন যাওয়ার পরে পাওনাদারেরা খুব বেশিই সমস্যা করতেছিলেন। এত বেশি সমস্যা করতেছিল যে তাদের বাড়িতে থাকাটাই দায় হয়ে যাচ্ছিল। পাওনাদারদের যন্ত্রণা সইতে না পেরে জাহিদের আগের জমানো টাকা থেকে জাহিদের শালা প্রায় বিশ লাখ টাকা ওদের চেয়ারম্যান এর নিকট দিয়ে আসে, যেন চেয়ারম্যান প্রত্যেক পাওনাদারকে কিছু কিছু টাকা দিয়ে একটু শান্ত করে রাখেন। চেয়ারম্যান এর কাছে দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল যে, সে যদি টাকাগুলো পাওনাদারদের দেয় তাহলে হয়তো, পাওনাদারেরা খুব বেশি সমস্যা করবে না। কিন্তু চেয়ারম্যান এই টাকাগুলো আত্মসাৎ করে ফেলে। চেয়ারম্যানের কাছে টাকা দেওয়ার সময় কোন স্টাম্প বা সাক্ষী রাখা হয়নি।

এবার আর পাওনাদারদের হাত থেকে রক্ষা পেলেন না। তারা বাড়িতে এসে জাহিদের বাড়ি ঘর ভাংচুর করতে লাগলো এবং মনিরুজ্জামান ভাই এতে পরোক্ষভাবে মদদ দিতে থাকে।

এক পর্যায় খালা(জাহিদের মামা) বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে আসে তার মেয়ের কাছে। কিন্তু সেখানে এসে ও রেহাই পাচ্ছে না। কারণ জাহিদের এক আত্নীয় আগে থেকেই জাহিদের বোনের বাসা চিনতো, সেই সুত্রে সে ঢাকায় এসে জাহিদের বোন এবং দুলাভাইয়ের নামে মামলা করে এবং সেই মামলার রেফারেন্সে পুলিশ জাহিদের বোন এবং দুলাভাইকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তারা এখনো জেলেই আছে।

একমাত্র মনিরুজ্জামান ভাই ছাড়া আর কেউ বাড়িতে থাকতে পারেনি। এ থেকেই বোঝা যায় যে এই ঘটনার পেছনে মনিরুজ্জামান ভাইয়ের কতটা হাত রয়েছে।জাহিদের আম্মা মানে আমার খালা মাঝে মাঝেই জাহিদের কথা চিন্তা করে অজ্ঞান হয়ে যায়। সর্বশেষ আসাদুজ্জামান ভাইয়ের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম যে এখন খালাকে কেউ একটা টাকা ও দেয় না। খালা এখন খুব খারাপ অবস্থায় আছে। যে কোন সময় আল্লাহ তাকে ডাক দিতে পারেন। আর জাহিদের মেয়ে এবং স্ত্রীর ও কোন খবর নাই।

আসলে টাকা আমাদের জীবনে দরকার আছে, তাই বলে অতিরিক্ত টাকার লোভ করা কখনোই কাম্য নয়। অতিরিক্ত লোভ করা কখনোই উচিৎ না। আমাদের সবার উচিৎ অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকা।

HFcFmHBiAeR2oP8xXotf9GhVZ2UVLfizAkm26SLD9Ksq63dTYvrrycGbUPAEdikxGD2cqVMH8heE8DJW36AaZjZ4fD6Yt6w5ks6jyrVJqR...SPKhpaGF3R77N6UCcw6tHuYvyw7YjLACEvtraNkFm1AbXaoof2ZWppk6CphcwuiCL9iHDNMmYZX8Bq4y4gXniUDWXhBKVWevHte3V4qsJQhXhen8d6ttKVvadL.png

আমি আজিজুল মিয়াঁ, আমার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর। আমি জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে বর্তমানে একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে ম্যানেজার পদে কর্মরত আছি। লিখতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি ছোট বেলা থেকেই কম-বেশি লেখা-লেখি করতাম। লেখা-লেখির পাশা-পাশি আমি ঘুরতে এবং খেলা-ধুলা করতে অনেক পছন্দ করি। সময় পেলেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে বের হই। অতিরিক্ত কথা বলা এবং মিথ্যা কথা বলা আমি সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করি।

99pyU5Ga1kwqSXWA2evTexn6YzPHotJF8R85JZsErvtTWYdPtSc8EULbM3UqC8Tu7zGcuE4UeJxUj6qARdfmE1hZT5w6orYBsMxwQZ3YLx7m9kWcdqaz5x69BVL9Ly3x7Y.jpeg

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPjVagCKakAuSTsQyj2bkd5a1qGy627tazWyRR8KvSGF5XUzUYGAJxbEm1Wagp...MHv3w7VxjkyjsCq93AGBRKdJvUDckiCn5Bi4X9PoVnE5EWdAdzbeVkhbJeoNBCvJeVxgXn64VKXqDqc5zAtEYcjVCpDPqNwqmJzcR62ny1kmLqJAK3qWzkMesp.png

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeSsa63mzHQexuvWRDgxAQmHZjMKhFaYGe2ubQmiC33SnsVy3TGA7BbZJiqfXWxLCKhiShcGVU.png

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7jpbMNKdA1Swxiey857mvDu4v9YQGGGa7u8o3aSuH2T9hohoCpGA4xjXECnmqJUuaGBR4n9tutUQsJX8FzZckBvZL (1).png

ধন্যবাদ সবাইকে
Sort:  
 2 years ago 

আপনার গল্পটির আগের খণ্ড আমি পড়িনি তবে আজকের খণ্ড থেকে বুঝতে পারলাম যে জাহিদের ভাই জাহিদের সাথে চিট করেছে। আসলে টাকার লোভে ভাইরা অনেক সময় ভাইদের সাথে এমন করে কিন্তু মা তো তার নিজের ছিল মায়ের সাথেও এরকম করল। চেয়ারম্যান এর কাছে টাকা দেয়ার সময় অবশ্যই তাদের স্টাম্পে সই করে দেওয়া উচিত ছিল এরকম ভুল কি কেউ করে। শেষ পর্যন্ত বোন ও হাজব্যান্ড কেউ কষ্ট পোহাতে হলো। এরকম ভাই দুনিয়াতে থাকার থেকে না থাকাই ভালো। জাহিদের কি হয়েছিল এটা আমার জানার ইচ্ছা?

 2 years ago 

আপু জাহিদ বেঁচে আছে নাকি নাই তা কেউ জানে না। ধন্যবাদ আপু আমার গল্পটা পড়ার জন্য।

 2 years ago 

আসলে এখন ভাই ভাইয়ের সাথে এরকম এভেলেবেল করে থাকে। জাহিদের ভাই ওর সাথে এত বড় চিট করল কিন্তু নিজের মায়ের সাথে এরকম করলো। আমি আসলে বুঝতে পারিনা মানুষগুলো কেন এরকম। যে বিষয়গুলো আমরা ভাবতেও পারি না সেগুলো একজন মানুষ হিসেবে কিভাবে করে। আর একটা কথা ঠিকই বলেছেন টাকা আমাদের দরকার আছে। কিন্তু এই টাকা যদি জীবনকে ধ্বংসের পথে ডেকে আনে তাহলে কি লাভ।

 2 years ago 

আপু আমাদের সমাজটা যে কোনদিকে যাচ্ছে আমরা বুঝতে পারছি না। মানুষ টাকার জন্য সব কিছুই করতে পারে। আপনজনেরা আমাদের কাছে থেকে দূরে সরে যায়।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64105.03
ETH 2757.74
USDT 1.00
SBD 2.66