আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-২৪ || ফেলে আসা জীবনের বন্ধুত্বের স্মৃতি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি ও ভালো আছি ইনশাআল্লাহ। বন্ধুরা আমার আজকের পোস্টের বিষয় হচ্ছে- ফেলে আসা জীবনের বন্ধুত্বের স্মৃতি। ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি তো অনেক আছে, যেগুলো আসলে বলে শেষ করা যাবে না। তারপর ও যেহেতু আমাকে এই বিষয়টা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তাই আমি আমার ফেলে আসা বন্ধুত্বের কিছু স্মৃতির আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরলামঃ
স্মৃতি এমন একটা জিনিস যেটা মানুষকে সারাজীবন দৌড়ের ওপরে রাখে। হোক সেটা অথবা খারাপ। ভালো স্মৃতিগুলো সব সময়ই মানুষকে সুখকর সময় উপহার দেয় অপরদিকে দুঃস্মৃতি বা খারাপ স্মৃতিগুলো একটা মানুষকে পুরনো দিনের সেই কষ্টগুলোকেই মনে করিয়ে দেয়। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে ভালো এবং খারাপ দুইটা দিক থাকে।

image.png
Copyright free image source:pixabay

পোস্ট ক্যাটাগরিঃ স্মৃতিময় পোস্ট।
পোস্টের শিরোনামঃ ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি।
তারিখঃ ২৮ শে আশ্বিন, ১৪২৯ খ্রিস্টাব্দ বাংলা।
ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি-আসলেই স্কুল জীবনের বন্ধুত্ব স্মৃতিগুলো যে কত মধুর ছিল সেগুলো আসলে বলে শেষ করা যাবে না। স্কুল জীবনের সব বন্ধুদের সাথে স্মৃতিগুলোই সমান গুরুত্ব বহন করে। এখানে এখন কে বাদ দিয়ে অন্য জনের স্মৃতি তুলে ধরা আসলেই অনেক কষ্টকর একটি ব্যাপার। তারপরও যেহেতু আজকের বিষয় হচ্ছে ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি, সুতরাং আমার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কিছু নির্দিষ্ট বন্ধুর সাথে ফেলে আসা স্মৃতি গুলো এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করছি-

ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি তুলে ধরতে আজ আমি আমার হাই স্কুল জীবনের কয়েকজন বন্ধুর সাথে সুখময় স্মৃতিগুলো কাটানোর কিছু সময় এখানে তুলে ধরছি, হাই স্কুলে ক্লাস সেভেনে গিয়ে আমার রোল হল চার। ক্লাস সেভেনের রোল নং চার হওয়া মানে মোটামুটি ভাল ছাত্রের মধ্যেই পরে সম্ভবত। যেহেতু আমি প্রথমদিকে স্টুডেন্ট ছিলাম সেক্ষেত্রে বন্ধুত্বের সম্পর্ক সবার সাথে মোটামুটি ভালোই ছিল।

আমার বন্ধুত্বের তালিকায় প্রথমেই যারা ছিল তাদের নাম হলো দিদার জলিল এবং স্বপন। যদিও এরা কেউ ভালো ছাত্র ছিল না এদের মধ্যে কেবলমাত্র স্বপনের রোল নং ছিল এক থেকে দশের মধ্যে। তবুও এদের সাথে আমার বন্ধুত্ব হওয়ার মূল কারণ ছিল এদের বাড়ি ছিল আমাদের বাড়ির পাশাপাশি এবং আমরা একসাথে স্কুলে যাও আসা করতাম। আরো স্পষ্ট করে বললে বলতে হয় যে আমাদের বাড়ির সামনে দিয়েই ওরা স্কুলে যাওয়া আসা করতো। কখনো যদি আমার স্কুলে যেতে রেডি হতে দেরি হতো তাহলে ওরা আমার জন্য আমার রাস্তার সামনে অপেক্ষা করতো। তারপর আমরা একসাথে স্কুলে যেতাম।

স্কুলে যাওয়ার পথে নৌকায় উঠা, নৌকা চালানো ইত্যাদি ছিল খুবই মজার বিষয়। কিংবা সেই সময় পায়ে হেঁটে স্কুলে যাওয়া অথবা কাঁচা রাস্তায় দিয়ে ভ্যানে করে স্কুলে যাওয়া সেটাও ছিল অন্যরকম কিছু মজার বিষয়। স্কুল জীবনের বাইরে ও আমার অনেক বন্ধু ছিল। তারাও ছিল আমার খুবই আপন এবং খুবই কাছের। এ সকল বন্ধুদের মধ্যে খুব কাছের ছিল শাহিন, মেরুন, আজিজুর, নাসির, জিয়াদসহ আরো অনেকেই। এরা সবাই ছিল আমার এলাকার বন্ধু।

সবাই আমরা একসাথে ক্রিকেট খেলতাম, নৌকা বাইতাম, মাছ ধরতে যাইতাম, গোসল করতে যেতাম,
একসাথে সিনেমা দেখতাম, এমনকি একসাথে মানুষের গাছের খেজুরের রস চুরি করে খাওয়া ও ছিলো আমাদের বন্ধুত্বের প্রধান একটি কাজ। জাউ(আঞ্চলিক ভাষা) ইত্যাদি ছিলো আমাদের প্রতিদিনের রুটিন মাফিক কাজ। সে সময় আমরা প্রতিটি মুহূর্ত একে অন্যের সাথে কাটাতাম।

ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি যদি বলতে হয় তাহলে একটি ঘটনা না বললেই নয় সেটি হলোঃ একবার আমরা সবাই মিলে ছবি দেখতে যাবো সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরা যারা সমবয়সী আছি সবাই সবার সাথে আলাপ করলাম ছবি দেখতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে, সবাই ছবি দেখতে যেতে রাজি হয়েছে কিন্তু সিডিউল নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। তো কি আর করার সবাই মিলে ডিসিশন নিলাম আমরা রাত বারোটার শো-তে আমরা সবাই মিলে চরমুগরিয়া মুক্তা সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখবো।

যেই কথা সেই কাজ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমি বাড়ি থেকে কিভাবে যাবো। যাই হোক আগে তো সবার সাথে সিনেমা দেখা হোক তারপর না হয় যা হবার হবে। তো আমরা সবাই সালাউদ্দিন ভাইয়ের ভ্যান গাড়িতে করে রাত দশটায় দিকে সিনেমা দেখার উদ্দেশ্যে রওনা করলাম, সংখ্যায় আমরা মানুষ ছিলাম ১১ জন এবং ১১ জন একটি ভ্যানে করেই গিয়েছিলাম। আমাদের এলাকা থেকে চরমুগরিয়া সিনেমা হলের দুরত্ব ছিল।
যাওয়াটা খুব মজার ই ছিলো।

তারপর আমরা সিনেমার শো- শেষ করে ফিরতে ফিরতে রাত সাড়ে তিনটা বেজে গেল, ফেরার পথে দেখলাম রাস্তার পাশে একটি বাড়িতে ভিসিয়ার চলতেছে, আর ডান বাম চিন্তা না করে আমরা সবাই ঔই বাড়িতেঢুকে পড়লাম ভিসিয়ার দেখার জন্য। সেদিন সারাটারাত ভিসিয়ার দেখে সকালে বাড়িতে ফিরেছিলাম। বাড়িতে ফেরার পর যা হয়ে সেটা আর এখানে না বলাই ভালো। কারণ আমার পোস্টের বিষয়টা যেহেতু ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি নিয়ে লেখা। আসলে সে সময়ের সুখস্মৃতিগুলো যে কতটা সুখময় ছিল সেটা বলে বোঝানো যাবে না।

আসলে বন্ধুত্বের স্মৃতি নিয়ে লিখতে গেলে কয়েক দিন লিখলে ও শেষ হবেনা। কারণ বন্ধুত্ব এমন একটা সম্পর্ক যার শুরু আছে কিন্তু শেষ নাই। আর এই সম্পর্কের শেষ নাই বলেই একে লিখে প্রকাশ করে ও শেষ করা যাবে না। তো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা এই ছিল আমার ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতির মধুময় দিনগুলোর বিস্তারিত। ধন্যবাদ সবাইকে।

HFcFmHBiAeR2oP8xXotf9GhVZ2UVLfizAkm26SLD9Ksq63dTYvrrycGbUPAEdikxGD2cqVMH8heE8DJW36AaZjZ4fD6Yt6w5ks6jyrVJqR...SPKhpaGF3R77N6UCcw6tHuYvyw7YjLACEvtraNkFm1AbXaoof2ZWppk6CphcwuiCL9iHDNMmYZX8Bq4y4gXniUDWXhBKVWevHte3V4qsJQhXhen8d6ttKVvadL.png

আমি আজিজুল মিয়াঁ, আমার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর। আমি জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে বর্তমানে একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে ম্যানেজার পদে কর্মরত আছি। লিখতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি ছোট বেলা থেকেই কম-বেশি লেখা-লেখি করতাম। লেখা-লেখির পাশা-পাশি আমি ঘুরতে এবং খেলা-ধুলা করতে অনেক পছন্দ করি। সময় পেলেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে বের হই। অতিরিক্ত কথা বলা এবং মিথ্যা কথা বলা আমি সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করি।

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNz8uuU7jNdUdZcqn6h7peG3CH7HW4Dj4EnjdfKn9T6S1nX92sULZRaFUhpFmzY87Rh7WVkoNuC.png

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeSsa63mzHQexuvWRDgxAQmHZjMKhFaYGe2ubQmiC33SnsVy3TGA7BbZJiqfXWxLCKhiShcGVU.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQXhYEttnX1KKh1bDpnfJQ9XE52hBiZnn6J1QrQxWt34Vv6BDtNXArCZWNiRA18nt5eQYaA3Kmg.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNpz9rrJ7XyVNTSa1iNMV1HLEdGN9BVzpqr9qD8n9c6Cnsw4ig5kmwCUdZ2cXfBkqCk6bnMVXsU.png

ধন্যবাদ সবাইকে
Sort:  
 2 years ago 

আমি মনে করি বন্ধুত্বের স্মৃতি মানুষ কখনো ভুলতে পারে না হয়তো আপনিও আপনার বন্ধুত্বের স্মৃতি কখনো ভুলতে পারবেন না। ঠিক বলেছেন ভাই আপনি বন্ধুত্বের স্মৃতি নিয়ে কয়েকদিন ধরে লিখলেও হয়তো শেষ হবে না। ছবি দেখার বিষয়টিও আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে ।

 2 years ago 

বন্ধুদের সাথে অনেকের এমন মধুর স্মৃতি রয়েছে। তবে ক্লাসের ভালো মন্দ ছাত্র বিষয় নিয়ে বন্ধুত্ব হয় না একত্রে মনের মিল থেকে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়। ঠিক তেমনি আমারও অনেক বন্ধু ছিল। আর বন্ধুদের সাথে এটা সেটা চুরি করে খাওয়ার প্রবণতা অন্ধকারের মধ্যেই দেখা যায়। আমার অবশ্য এমন কোন স্মৃতি নেই খেজুরের রস খাওয়ার। আর আমাদের এলাকায় কোন সিনেমা হল নেই। সব মিলিয়ে দারুন লিখেছেন আপনি। বেশ ভালো লাগলো আপনার আজকের এই সুন্দর পোস্ট পড়ে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60836.32
ETH 2449.94
USDT 1.00
SBD 2.65