জীবনের প্রথম বিমান ভ্রমণ ঢাকা টু কক্সবাজার(শেষ খন্ড ):
আসসালামু আলাইকুম |
---|
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন, আমিও ভালো আছি ইনশাআল্লাহ। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো জীবনের প্রথম বিমান ভ্রমণ ঢাকা টু কক্সবাজার এর দ্বিতীয় বা শেষ খন্ড। বন্ধুরা এই খন্ডে বিমান ভ্রমণ এর খুশির অভিজ্ঞতার পাশাপাশি যে তিক্ত অভিজ্ঞতা লাভ করেছি, সেই অভিজ্ঞতাটাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। আশা করি সবার ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক- |
---|
পোস্টে ক্যাটাগরিঃ ভ্রমণ কাহিনী। |
---|
পোস্টের শিরোনামঃ জীবনের প্রথম বিমান ভ্রমণ ঢাকা টু কক্সবাজার। |
---|
তারিখঃ ৩রা কার্তিক ১৪২৯ খ্রিস্টাব্দ (বাংলা)। |
---|
Copyright free image source:pixabay
বিমান যখন ল্যান্ড থেকে আকাশে উঠলো তখন বুঝতে পারছিলাম যে বিমান এখন উপরে উঠতেছে। ভালোই লাগছিলো তখন। বিমানটি ল্যান্ড থেকে কতফুট উপরে ছিল আমি জানি না, তবে সর্বোচ্চ উপরে উঠার পরে বিমানটি যে মেঘের উপর দিয়ে যাচ্ছে সেটা ভালো ভাবেই বোঝা যাচ্ছিল। তখন নিচের দিকে তাকিয়ে মেঘ ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাইনি। তখন কিন্তু খুব ভয় লাগছিলো আবার বিমানে চড়ে আকাশের আছি এইটা ভেবে ভয়ের মধ্যে ও একটা ভালো লাগা কাজ করছিল।
যাই হোক এভাবে আমাদের বিমান দুপুর ১.৪৫ মিনিটের সময় কক্সবাজার এয়ারর্পোটে অবতরণ করে। মানে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেতে আমাদের সময় লেগেছিল ৪৫ মিনিট। আমরা কক্সবাজার বিমানবন্দরে নেমে সেখান থেকে অটোতে করে হোটেলে উঠলাম। আমাদের হোটেলের নাম ছিলো হোটেল মিডিয়া। কেউ যদি হোটেল মিডিয়াতে অবস্থান করে থাকেন, তাহলে হয়তো জেনে থাকবেন যে, হোটেল মিডিয়া একেবারে কক্সবাজার বীচের পাশেই। এখান থেকে বীচে যেতে সর্বোচ্চ ৫ মিনিট সময় লাগে। আমি যেহেতু বিমান ভ্রমণ নিয়ে লিখছি তাই অন্যদিকে আর না যাই।
এরপর মাঝখানে একদিন থাকার পরে আমরা আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। এবার ও বিমানে করেই আমরা সবাই ঢাকা আসব। যথারীতি আমরা সবাই কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছালাম। আমরা আগেই একসাথে যাওয়া এবং আসার টিকিট করে রেখেছিলাম।
Copyright free image source:pixabay
বিকেল তিনটায় আমাদের ফ্লাইট কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় উদ্দেশ্যে ছাড়ে। সে হিসেবে বিকেল ৪ টার মধ্যেই আমাদের বিমান ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু আমাদের বিমান যখন ঢাকা বিমানবন্দরের কাছাকাছি আসলো তখনই আমরা ঝড়ের কবলে পড়ে গেলাম। কিন্তু প্রথমে আমরা বুঝতেই পারিনি বা বিমানে কর্মরত কেউ ও আমাদের অবগত করেনি। হয়তো এমনটাই নিয়ম কারণ তখন যদি ঝড়ের কথা বিমান যাত্রীদের বলা হতো তাহলে সবাই হয়তো ভয়ে অস্থির হয়ে বিমানের মধ্যে একটা ঝামেলা পাকিয়ে বসতো।
কিন্তু আমাদের অনুমান অনুযায়ী এতক্ষণ বিমান ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে ল্যান্ড করার কথা, কিন্তু সেটা হয়নি, আমরা বুঝতেছি যে বিমানটা আকাশে একটা নির্দিষ্ট জায়গা দিয়ে ঘুরতেছে। এর মধ্যে বাতাসের প্রবল ধাক্কায় বিমানটা কেঁপে ওঠে। তখন আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারি, যে আমাদের বিমানটা ঝড়ের কবলে পড়েছে। এবার তো আমাদের সবার মধ্যে ভূমিকম্প শুরু হয়ে গেল, ভয়ে আমাদের সবার গলা শুকিয়ে আসছিলো। আমরা সবাই আল্লাহকে ডাকতেছিলাম, সেটা মনে মনে নয় খুবই উচ্চস্বরে।
এবার আর ও কয়েকবার প্রবল বাতাসের ধাক্কায় বিমানটা কেঁপে উঠল। আমাদের ভয়ের পরিমানটা আরও বেড়ে গেল। সবাই শুধু আল্লাহ আল্লাহ করছি আর আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। এভাবে কতক্ষণ যাওয়ার পর মনে হলো ঝড়ের গতি কিছুটা কমেছে। এরপর আমাদের বিমান ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে ল্যান্ড করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন এনাউন্সমেন্ট করা হলো যে আমাদের বিমান এখন ঢাকা বিমানবন্দরে ল্যান্ড করবে সাথে এই ঘোষণা ও দেওয়া হলো যে আমাদের বিমান ঝড়ের কবলে পড়ায় আমাদের ২০ মিনিট সময় লেট হয়েছে। পরে আমি বুঝতে পারলাম যে আমরা ২০ মিনিট ধরে ঝড়ের মধ্যে ছিলাম।
বিমান ঢাকা বিমানবন্দরে ল্যান্ড করার কথা শুনে আমি আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করলাম এবং মনে মনে এই ডিসিশন নিলাম যে আর কোনদিন বিমানে উঠব না। এভাবেই আমি কিছু খুশি এবং কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে সেদিনের ঢাকা থেকে কক্সবাজার এবং কক্সবাজার থেকে ঢাকা বিমান ভ্রমণ শেষ করেছিলাম।
Copyright free image source:pixabay
সত্যি সেদিন প্রথমে বিমান উঠার যে আনন্দ বা মজা আমি পেয়েছিলাম, ফেরার সময় সেই আনন্দটা আমার ফিকে হয়ে গিয়েছিল। সেদিন আমি বুঝতে পেরেছি যে কেউ যদি আকাশের উপরে বিমানে কোন সমস্যায় পড়ে তাহলে তাদের কি অবস্থা হয়। আল্লাহ যেন এমন বিপদে কাউকে না ফালায়।
ধন্যবাদ সবাইকে।
শুনেই আমার পুরো শরীর শিউরে উঠেছে। প্রথমে পড়ে খুশি হলেও ঝড় তুফানের কথা শুনে একটু ভয় লেগেছে। ঠিক বলেছেন আপনার প্রথম অনুভূতিটা ভালো হলেও শেষে একটু তিক্ততা রয়েছে। তবে হ্যাঁ বিমান বালারা প্রথমে সবাইকে ঝড়ের কথা বা কোন বিপদ আপদ হলে শোনায় না। তা না হলে বিমানের ভিতরে যাত্রীরা একটি ঝড় তুলে ফেলবে 😊। যাইহোক তাও তো আপনি একবার হলেও বিমানে উঠতে পেরেছেন।
আপু ঠিকই বলেছেন বিমানে বিপদে পড়লে যে কতটা টেনশন হয় সেটা যে পরে একমাত্র সেই জানে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।