স্কুল ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখতে যাওয়া এবং তার পরিনাম (প্রথম অংশ) :

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আজকে আমি এমন একটি ঘটনা আমার জীবনের বাস্তব ঘটনা) আমার বাংলা ব্লগের সকলের সাথে শেয়ার করবো যেটা, আমার কাছে একদিকে কষ্টের এবং অন্যদিকে মজাদার একটি স্মৃতি বিজড়িত ঘটনা। আমার বিশ্বাস আমার বাংলা ব্লগের অনেকেই হয়তো কমবেশি এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন।

আচ্ছা সিনেমা দেখতে কে না পছন্দ করে বলেন তো?আর সেটা যদি হয় ১৭ বা ১৮ বয়সের সময় তাহলে তো কোন কথাই নাই।

image.png

Copyright free image:pixabay

আমার যতটুকু মনে, পড়ে আমি তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি। ওই বয়সটায় আমার সিনেমা দেখার প্রচণ্ড মাত্রায় ঝোক ছিলো। সিনেমা হলে নতুন কোন সিনেমা আসলেই আমাকে দেখতে হবে এমনটাই যেন আইন ছিলো। আর এই কাজে আমার সহসাথী ছিল আমার ভাগিনা শাহিন। সহসাথী বললে ভুল হবে কারণ সেই ছিল প্রধান। আমি তখন ক্লাস সেভেন এ পড়তাম এবং ভাগিনা শাহিন পড়তো ক্লাস নাইনে। বয়সে ছিল আমার বড়। কিন্তু সম্পর্ক ছিল বন্ধুর মতো।

প্রায় সময়ই আমরা দুইজন স্কুল ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখতে চলে যেতাম। দুজনের কাছে ৩৪ টাকা হলেই সিনেমা দেখতে চলে যেতাম। এর জন্য আমাদের অনেকটা পথ হাঁটতে হতো এবং বাকিটা পথ দুজন ১০ টাকা গাড়ি ভাড়া দিতাম। সেক্ষেত্রে হিসাব হলো- গাড়িভাড়া যাওয়া আসা=১০+১০=২০ টাকা এবং সিনেমার টকেটের দাম=৭+৭=১৪ টাকা।

যাই হোক, একদিন আমরা দুজন স্কুল ফাঁকি দিয়ে আমাদের মাদারীপুর শহরের একটি সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে গেলাম। বলে রাখা ভালো যে, স্কুল পালানোটা ও ছিল আমাদের জন্য অনেক রিস্কের, কারন, আমার আপন সেজো চাচা ছিল আমার হাই স্কুলের শিক্ষক এবং আমার বাংলা শিক্ষক। তার পর ও আমরা অনেক রিস্ক নিয়েই চলে যেতাম, কারণ নতুন ছবি আসলে কোন ভাবেই আমরা মিস করবো না।

বলে রাখা ভালো যে, নতুন কোন ছবি আসলেই একটা রিক্সার সাথে ছবির পোস্টার লাগিয়ে আমাদের স্কুলের সামনে দিয়ে মাইকিং করে দিত। আর পোষ্টার দেখলে আরো বেশি পাগল হয়ে যেতাম ছবিটি দেখার জন্য।

কোন দিন বাড়িতে আসলে বুঝতে পারতো কোনদিন বুঝতে পারতো না। তবে না বুঝতে পারার জন্য বাড়িতে আমাদের অনেক মিথ্যে কথা বানিয়ে বলতে হতো এবং সেটার উপর অটল থাকতে হতো।

মাদারীপুর শহরের বাদামতলায় মিলন সিনেমা হলে আমরা ১২ টার শো দেখতে ঢুকলাম। সিনামার নাম ছিল ডন। নায়ক ছিল রুবেল। আর ৯০ দশকে নায়ক রুবেলের ছবি মানে সবাই বেহুস। একশনধর্মী ছবি মানেই রুবেল। যাই হোক আমরা দুই মামু-ভাগিনা ছবি দেখতেছি আর প্লান করতেছি যে, বাড়িতে গিয়ে কি বলবো। ভিতরে অনেক ভয় কাজ করতেছে। দেখতে দেখতে ছবির অর্ধেক শেষ হয়ে গেল এবং সাথে সাথে লাইট জ্বালিয়ে দেয়া হলো। সবাই একটু দাঁড়ায়, কিছু খায়, আবার কেউ বাহিরে যায়। আমরা কিন্তু বাহিরে যাইনি, কারণ বাহিরে গেলে পরিচিত কেউ যদি দেখে ফেলে এই জন্য। তো দুজনে একসাথে দাঁড়ালাম, দাঁড়িয়ে আশে পাশে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম।

image.png

Copyright free image:pixabay

কিন্ত আসল ঘটনা ঘটলো যখন পিছনে তাকালাম, পিছনে তাকিয়ে দেখি আমার আপন চাচাতো ভাই সাজিদুর (তার নাম) দাঁড়িয়ে আছে, তাৎক্ষণিক আমরা মুখটা সামনের দিকে ফিরিয়ে আনলাম। ভাবলাম সে হয়তো আমাদের দেখে নাই, আমরাই শুধু দেখেছি, আবার মনে করলাম দেখলে ও হয়তো বাড়িতে এসে কিছু বলবে না।(অসামাপ্ত)

ঘটনাটা অনেক বড় তাই এই পর্যন্ত প্রথম অংশে শেষ করলাম। আআগামীকাল আবার দ্বিতীয় অংশ নিয়ে আমার বাংলা ব্লগের সকলের সামনে হাজির হব ইনশাআল্লাহ, আশা করি ঘটনাটা সবার ভালো লাগবে। সবাই ভালো থাকবেন এবং ঘটনাটা পড়বেন আশা রাখি।

Sort:  
 2 years ago 

আপনার স্কুল পালিয়ে সিনেমা দেখার গল্পটা পড়ে বেশ মজা পেলাম। পরবর্তী পর্বে দেখি কি হয়। তবে মনে হচ্ছে পিঠে মার পড়বে। যেহেতু চাচাতো ভাই দেখে ফেলেছে বাড়িতে গিয়ে সম্ভবত সে বলে দেবে। ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ভাইয়া, ধন্যবাদ আপনাকে, আমার লেখাটা পড়ার জন্য।আশা করি বাকি অংশটা ও পড়বেন। হয়তো আপনার ধারনা ঠিক ও হতে পারে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 68394.30
ETH 2644.71
USDT 1.00
SBD 2.69