বিষাদময় সংসার - শেষ পর্ব
বিষাদময় সংসার
মেয়েটি এত অত্যাচারের পরেও সব কষ্ট নিজের ভিতরে রেখে নিজের সংসারকে সুন্দর ভাবে ঘুচিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে সবসময়। বাবার সেদিন অপমানের পর বাবা আর মেয়েকে দেখতে আসিনি কারণ সেদিন মেয়েকে বাবার সাথে নিয়ে আসার কথা বলার কারণে ছেলেটি তার নিজের শশুরকে এমন ভাবে অপমান করলো যে আর কোনোদিন এই মুখ নিয়ে মেয়ের বাড়িতে যাওটাও অপমানের মনে করছে। এভাবেই চলতে লাগলো দিন আর রাত। শত কষ্ট আর যন্ত্রনা মনের মধ্যে জমা করে সংসার করছে মেয়েটি। কিছুদিনের মধ্যে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে গেলো। মেয়েটি এই সন্তানের জন্য হলেও এখন সংসার করতে চাই। সে তার স্বামীকে অনেক ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করে যে এই সন্তানের জন্য তার বেঁচে থাকা প্রয়োজন তাকে যেন আর অত্যাচার আর নির্যাতন না করে।
কথায় আছে কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না। এখানে বিষয়টা এমনি হচ্ছে।ছেলেটি যেহেতু একজন মাদক সেবক ও সে নিজেই একজন মাদক বিক্রেতা তো তার কাছ থেকে আর ভালো কি আশা করা যায়। সে প্রতিদিনের মতো প্রতি রাতে নেশা করে এসে স্ত্রীর গায়ে হাত তুলে ও জঘন্য ভাষায় গালমন্দ করে। সহ্য করতে না পেরে আবারো যখন মেয়েটি বাবার কাছে ফোন দিতে যাই তখন তার ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে ও কারো সাথে কোনো রকম যোগাযোগ করার মাধ্যম রাখেনা। একটা সময় মেয়েটিকে একটি রুমের মধ্যে বন্ধি করে রাখে। মেয়েটির তখন বেঁচে থাকার আর কোনো ইচ্ছায় থাকে না। এমন কালো ও অন্ধকার জগৎ থেকে সে বেরিয়ে আসতে চাই। নিজেকে শেষ করে দেয়ার চিন্তা করতে থাকে।
পরিবারে ছেলেটির মা-বাবা ও আশেপাশের পাড়া-প্রতিবেশীরা সবকিছু দেখে যাচ্ছে, কিন্তু ভয়ে কেউ কিচ্ছু বলার সাহস পাই না। সে যেকোনো সময় যে কাউকেও হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করবে না কারণ সে সবসময় নেশাগ্রস্ত থাকে। পাপ কখনো বাপকেও ছাড়েনা এই কথাটা সত্যের থেকেও সত্য। তাই তার এই পাপের ফল একদিন ভোগ করতে হবে। একটা সময় মেয়েটি রুম বন্ধি অবস্থায় কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ফেনের সাথে উড়না বেঁধে আত্মহত্যা করে আর এতে করে দুইটি প্রাণ নিঃশ্বেস হয়ে যায়। এই কথা সব জায়গায় ছড়িয়ে গেলে পুলিশ আসে ও এই কারণে মানুষ নামে হিংস্র পশুটিকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এদিকে মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বৃদ্ধ অসুস্থ বাবা স্ট্রোক করে মারা যায়, এতে করে মেয়ের পুরো পরিবার এক বিষাদময় পরিস্থিতে পরিণত হয়।
মেয়েটির আত্মহত্যা করার কারন ও মাদক ব্যবসার কারণে ছেলেটির যাবৎজীবন কারাদণ্ড হয়। এতে করে ছেলের পরিবার, পাড়া-প্রতিবেশী ও মেয়ের পরিবার আনন্দিত হয়। নেশা কখনো মানুষকে ভালো কিছু দিতে পারে না। নেশা শুধু দিতে পারে কালো এক অন্ধকার জগৎ। আর আমাদের বাবাদের উচিৎ ছেলের টাকা-পয়সা ও সম্পদের দিকে না দেখে ছেলের ভালো গুন ও ভালো ব্যবহার ও উদারতা দেখে মেয়েকে বিয়ে দেয়া সে হোক গরিব কিংবা দেখতে কালো।
সমাপ্ত
VOTE @bangla.witness as witness
OR

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
_

এরকম ঘটনা আমাদের দেশে ঘটে চলেছে আপু। আমার এলাকায় এধরনের একটি লোক ছিল যে একমাত্র নেশার কারণে তার লেখাপড়া করতে পারেনি। তার বাবা দুবার জেলে দিয়ে এসেছিল, তবুও ভালো হয়নি। শেষে একটি মেয়ের সাথে বিয়ে দেয় কিন্তু বেশিদিন সংসার টিকিয়ে রাখতে পারেনি তার স্বভাবের কারণে।
যাক লেখনী পড়ে খুব খারাপ লাগলো মেয়েটার জন্য।
ঘটনাটি পড়ে অনেক খারাপ লেগেছে আপু আসলে এর আগের পর্ব পড়ি নাই।তবে যতটুকু পড়েছি বেশ বুঝতে পেরেছি এমন মাদকাসক্ত ছেলেগুলোর কারণে হাজার হাজার নারীর জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অনেক বাবার স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার প্রিয় মেয়েকে এ্মন একটি অসৎ ছেলের কাছে তুলে দেওয়ার কারনে।অবশেষে নিঃশেষ হয়ে গেল তাজা প্রাণ।সেই ছেলেটির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলেও কি আর হবে মেয়ের জীবন কি ফিরে পাওয়া যাবে।তারপরেও ওই মেয়ের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অন্তত একটু শান্তি পাবে যে অপরাধের শাস্তি ভোগ করতে হয়।
আপু গল্পটি পড়লাম মেয়েটির জন্য খুব খারাপ লাগলো। খারাপ কাজের শাস্তি একদিন ঠিকই হয়।কিন্তু মেয়েটিকে তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। মা- বাবা টাকা পয়সা না দেখে সৎ ছেলে কর্মঠ ছেলে দেখে বিয়ে দিলে আর এমনটা হতো না। মেয়েটির পরিবার আজ বিষাদময় হয়ে গেলো।মেয়েটির বাবা ও মারা গেলো। খুবই দুঃখজনক ঘটনা।তবে আমাদের সমাজে এমনটা অহরহ ই হচ্ছে। ধন্যবাদ আপু গল্পটি শেয়ার করার জন্য।
মেয়েটির জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে আপু। হ্যা আপু নেশা আমাদের অবশ্যই ভাল কিছু দিতে পারে না। কি হলো গল্পটিতে একটি অবলা নারীর জীবন তো শেষ হয়ে গেল। যদিও ছেলেটির যাবৎজীবন জেল হয়েছে। বেশ ভাল লেখেছেন আপু। একটি শিক্ষা মূলক গল্প আমাদের উপহার দিলেন।