ভালোবাসার মৃত্যু (শেষ পর্ব )

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

ভালোবাসার মৃত্যু

image.png

image source

গল্পের প্রথম পর্ব

গ্রাম ফেরিয়ে বাজারে গেলেও তার মন থেকে এই মেয়ের নিষ্পাপ মুখ খানা যেন কোনোভাবেই মুছতে চাইছে না। কে এই মেয়ে ?কোথাই থাকে ? আর কেনই বা সে তো কান্না করছিল ? কি এত কষ্ট তার ? সেদিন আর দেরি না করে বাড়ি ফিরে আসে শিমুল। রাতের খাবার শেষ করে বিছানায় গিয়ে ভাবতে থাকে কিভাবে মেয়েটির খবর পাবে। কিভাবে নিবে তার খোঁজখবর। এক পলকেই যেন তার মনে জায়গা করে নিয়েছে মেয়েটি। হঠাৎ মনে হল তার এক বন্ধুর কথায়। সেও ঠিক ওই গ্রামেই থাকে। ভেবেচিন্তে ঠিক করল সে কাল তার বন্ধুর বাড়ি যাবে। আর সেখান থেকেই খবর নেবে মেয়েটির।

যেই কথা সেই কাজ। সকাল হতে না হতেই শিমুল চলে যাই তার বন্ধুর বাড়ি। তার বন্ধু শিমুলকে দেখে নাস্তার প্লেট বাড়িয়ে দেই আর বলতে থাকে কিরে আইজ সকাল সকাল আমার বাড়ি ?চাকরির কোন খবর টবর আছে নাকি ?কিছুই তো আগে কইলি না। তার কথা শুনে শিমুল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, না রে এখনো কোন খবর পাই নাই। এই জনমে আমার আর চাকরি হইবো না। তবে তোর কাছে আইছি একটা কামে, বলে সব কথা খুলে বল শিমূল। শিমূলের কথা শুনে তার বন্ধু সেই মেয়েটার খোঁজ খবর নেবে বলে সম্মতিতে দেয় তাকে।

তবুও তার মাথা থেকে মেয়েটির চিন্তা কোনভাবে যাচ্ছিল না। পরদিন সকাল হতেই শিমুলের বন্ধু চলে আসলো শিমুলের ঘরে, আর এক এক করে সব কিছু বলতে থাকলো। মাইয়াডার নাম হইলো কিরণ, এতিম মাইয়া। দুনিয়াতে তার কেউ নাই। আর এইডা হইলো জামাইয়ের বাড়ি। জাইমাইদা এক নাম্বারে হারামি। সারাদিন ধইরা মারে মাইয়াডারে। আর কথায় কথায় হুডা দিয়া কয় তোর বাপে আমারে বিয়ার সময় কইছিলো দুই লাক টাহা দিবো কিন্তু টাহা তো দিলোইনা উল্টা তোরে আমার ঘরের অন্য ধ্বংস করতে দিয়া গেছে। তোর বাপতো মইরা গেছেই লগে আমার টাহাও লইয়া গেছে।

শিমুলের বন্ধুর মুখে শিমুল এই কথা শোনার পর আর যেন চোখের জল আটকে রাখতে পারল না। সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলল যে মেয়েটাকে যেভাবেই হোক সেখান থেকে মুক্ত করে নিয়ে এসে নিজের স্বপ্নের ঘরে মেয়েটিকে জায়গা দিবে। তাই এখন থেকে প্রতিদিন শিমুর সেই গ্রামের ভিতর দিয়েই বাজারে যায় শুধুমাত্র মেয়েটিকে একটিবার দেখার জন্য। একদিন দুইদিন করতে করতে এখন মেয়েটির প্রতি প্রায় আসক্ত হয়ে গিয়েছে শিমুল। হঠাৎই একদিন বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হতেই গ্রামের ভিতরে যেতেই দেখল অনেক মানুষের ভিড়। এই দৃশ্য দেখে আঁতকে গেল শিমুল। মানুষের ভিড় ঠেলে ভিতরে গিয়ে দেখতে পেল, প্রথম দিন যে গাছটির নিচে মেয়েটি বসে কান্না করছিল সেই গাছের মধ্যে ঝুলে আছে মেয়েটির লাশ। আর মেয়েটির এই অবস্থা দেখে কোনভাবেই নিজেকে আর আটকে রাখতে পারছিল না, হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়েছিল শিমুল। আর সেখানেই সমাপ্ত হয়েছিল তার মনে থাকা সেই মেয়েটির প্রতি ভালোবাসা গল্প।

সমাপ্ত

1.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

_

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

বাস্তবতার নির্মমতার কাছে অনেকে জীবন দিয়ে দেয়। তাই তো সেই মেয়েটি স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে পারেনি এবং অপমান মেনে নিতে পারেনি। নিজের জীবন দিয়ে দিয়েছে। সত্যি আপু গল্পের শেষটা পড়ে অনেক কষ্ট লাগলো। শিমুল অনেক কষ্ট পেয়েছে। শিমুলের স্বপ্ন যেন এক নিমিষেই ভেঙে গেল। এভাবেই হয়তো কিরণের মতো মেয়েরা নিজের জীবন দিয়ে দেয়।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 68228.03
ETH 2645.06
USDT 1.00
SBD 2.69