কবর || বাংলা নাটকের রিভিউ
কবর বাংলা নাটকের রিভিউ
সবাই কেমন আছেন ? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আবারো একটি বাংলা নাটককে রিভিও করার চেষ্টা করেছি ও আপনাদের সাথে নাটকের সম্পূর্ণ কাহিনী সুন্দর ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
কবর নাটকের কবর নামটাই কেমন যেন একটা রহস্যময়। জোভান ও তাসনিয়া ফারিন এই জনের নাটক ভালো কিছু হবে বলেই আমার মনে হলো। অবশ্যই উপর থেকে মনে হচ্ছে যেন রহস্যময় কোনো কাহিনী এখানে রয়েছে। এরপর আমি শুরু করলাম কবর নাটকের কাহিনীটি দেখতে। এই নাটকের মাধ্যমে মানুষের জীবনের পুরো বাস্তব ঘটনাকে তুলে ধরা হয়েছে। আর যা বুঝতে পারলাম সৃষ্টিকর্তা চাইলে মানুষকে অনেক কিছু দিতে পারে, আবার চাইলে অনেক কিছু মানুষের কাছ থেকে ছিনিয়েও নিতে পারে। আমি আমার নিজের মতো করে এই নাটকের রিভিউ করা চেষ্টা করলাম। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য |
---|
নাটকের নাম | কবর |
---|---|
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
পরিচালক | মজুমদার শিমুল |
অভিনয়ে | ফরহাদ আহমেদ জোভান, তাসনিয়া ফারিন ও আরো অনেকেই। |
প্রকাশিত | ৬ জুলাই ২০২৩ |
সময় | ৪৮:১১ মিনিট |
নাটকের মূল কাহিনী শুরু |
---|
এই নাটকে তাসনিয়া ফারিন দুইটি চরিত্রে কাজ করেছে। একটা হচ্ছে বড়লোক বউ ও গরিব একজন সাধারণ ড্রাইভারের বউ হিসেবে। এখানে মজার বিষয় হচ্ছে বড়লোকের বউ ও গরিবের বউ একসাথে প্রেগন্যান্ট হয়। নাটকের শুরু থেকেই কিছুক্ষণ বড়লোকের বউয়ের ঘটনা দেখানো হচ্ছে ও কিছুক্ষণ গরিবের ঘটনা দেখানো হচ্ছে। প্রেগনেন্সি অবস্থায় বড়লোকের বউয়ের জীবন ধারা চলাচল ও তাদের সকল কর্মকান্ড তুলে ধরেছে এবং সেই সাথে প্রেগনেন্সি অবস্থায় গরিবের সকল কর্মকান্ড তুলে ধরেছে এখানে।
নাটকের শুরু থেকেই আমরা দেখতে পাই মালিকের বউ প্রেগন্যান্ট হয়েছে, আর এই শুনে মালিক ও মালিকের পরিবার সকলেই অনেক বেশি খুশি হয়েছে। একই সাথে মালিকের যে ড্রাইভার সে ড্রাইভার এর বউ প্রেগন্যান্ট হয়েছে। তার মা বাসা থেকে ফোন দিয়ে বলেছে মিষ্টি নিয়ে আসতে। প্রথমে সে বুঝতে না পারলেও বাসায় যাওয়ার পর সেও বুঝতে পারে যে তার বউ প্রেগন্যান্ট।
এদিকে মালিক তার বউকে সাবধান করে বলে দিয়েছে সে যেন কোনরকম কোন কাজ না করে, কারণ সে এখন প্রেগন্যান্ট। বারবার তাকে একথাগুলো মনে করিয়ে দিচ্ছে। আর বেশি বেশি খাবার দাবার খাওয়ার জন্য বলছে, কিন্তু এদিকে গরিবের বউ সে যতই অসুস্থ হোক না কেন কাজ না করলে তার যেন ঘরে কোন খাবার জোটে না। তাকে প্রেগনেন্সি নিয়েই কাজ করতে হয়েছে অনবরত। সে বড়লোকের মতো বেশি বেশি খাবারও খেতে পারে না। কিন্তু স্বামী যতটুকু সম্ভব সে তার সাধ্যমত মালিকের বাসা কাছ থেকে চুরি করে হলেও খাবার নিয়ে স্ত্রীকে খাওয়ানোর চেষ্টা করে এবং মালিক তার স্ত্রীর সাথে কিরূপ আচরণ করে ও কিরূপ ব্যবহার করে সেখান থেকে দেখে এসে সেও তার স্ত্রীর সাথে একই রকম আচরণ ও ব্যবহার করার চেষ্টা করে।
একদিন মালিকের গাড়ি থেকে তেল চুরি করে বিক্রি করে কারণ তার স্ত্রীর গর্ভে এখন তার সন্তান। খরচ একটু বেড়ে গেছে ,সেসব চিন্তা করে গাড়ি থেকে তেল বিক্রি করতে গিয়ে তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় আর এই ভিডিও মালিকের হাতে গেলে মালিক তখন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দেয়।
এরপর দুজনেরই বাচ্চা হওয়ার সময় হয়েছে। মালিক মালিকের স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছে অনেক দামি হসপিটালে, আর গরিব ছেলেটি তার স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছে সরকারি হসপিটালে। যেখানে গিয়ে সে ডাক্তার খুঁজে পাচ্ছে না। একটি কেবিন পাচ্ছে না, অনেক কষ্ট করে ছোটাছুটি করে তার বাচ্চা মৃত অবস্থায় পেট থেকে বের করে। আর এদিকে মালিকের সন্তান খুব সুন্দরভাবে দামি হসপিটালে জন্ম হয়েছে। বাচ্চাকে দেখে সকলেই অনেক বেশি খুশি হয়ে গেছে। একদিকে আনন্দের জোয়ার আর অন্যদিকে যেন ভেঙ্গে পড়েছে পরিবারের প্রতিটি মানুষ।
এর মধ্যে হঠাৎ করেই মালিকের সন্তান মুখের মধ্যে কেমন লাল লাল হয়ে আসছে। ডাক্তার কে জানালে ডাক্তার বলে পেট থেকেই অনেক বড় একটি রোগ নিয়ে সে জন্ম হয়েছে। ডাক্তার জরুরিভাবে তার চিকিৎসা করতে গিয়েও ব্যর্থ হয় ও কিছুক্ষণের মধ্যে মালিকের সন্তানটি মারা যায়। আর এদিকে গরিবের সন্তানকে কবর দেওয়ার জন্য তার পকেটে টাকা নেই, তাই সে সস্তা কোন কবরস্থানে গিয়ে কবর দেওয়ার কথা চিন্তা করে এবং সেখানে গিয়ে কবর খুঁড়ে এবং সেই কবরে রাখার সাথে সাথেই তার বাচ্চা চিৎকার দিয়ে ওঠে। আর এই চিৎকার শুনে বাবা খুব খুশি হয়ে ছেলেকে আবার কবর থেকে উঠে নিয়ে বাসায় নিয়ে আসে। আর কিছুখোর পর মালিকের মৃত বাচ্চাকে একই কবরস্থানে আনলে হুজুরা বলে এখানে একটা কখন খুড়া হয়েছে মাত্র। আপনারা চাইলে এখানে আপনার বাচ্চার কবর দিতে পারেন। এরপর বাচ্চাটিকে এই কবরেই কবর দেয়া হয়। আর এখানেই শেষ হয় নাটকের গল্প।
ব্যক্তিগত মতামত |
---|
এই গল্পে আপনি শুধু একটু চিন্তা করুন যে সৃষ্টিকর্তা চাইলে কাউকে জীবন দান করতে পারে আবার চাইলে জীবিত জিবটিকেও মৃত্যু দিতে পারে কারণ তিনি সর্বশক্তিমান ও অদ্বিতীয়। বাস্তব জীবন থেকেই নেয়া হয়েছে এই নাটকের গল্প। কার কবরে কে ঢুকেছে এটা ভাবতেই যেন অবাক লাগে। একটি মৃত বাচ্চাকে কবরে রাখার সাথে সাথেই যেন তার জীবন ফিরে আসে আর যার জীবন ছিল সে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়েছে আর সেই কবরেই তাকে কবর দেওয়া হয়েছে। আমরা সব সময় মৃত্যুকে স্মরণ রেখেই সামনের দিকে আগাবো তাহলে আমাদের জীবনে পাপ করতে আমাদের বাধা সৃষ্টি করবে।
নাটকটির ইউটিউব লিংক |
---|
আসলে আমি এই নাটকটার সম্পূর্ণ রিভিউ পড়েই বুঝতে পেরেছি এই নাটকটার সম্পূর্ণ কাহিনীটা বাস্তব কাহিনী থেকে নেওয়া হয়েছে। আসলে একটা বাচ্চা জীবিত জন্মগ্রহণ করেছিলে কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে সে মারা গিয়েছিল এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে।আবার একটা বাচ্চা মৃত জন্মগ্রহণ করলেও কবরে রাখার সময় সে আবার জীবিত হয়ে যায়। আসলে আল্লাহ চাইলে সবকিছুই সম্ভব। অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে আপনার লেখা নাটকের রিভিউটা পড়ে।
বাংলা নাটক গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি। আর সেই নাটকগুলোর মধ্যে যদি বাস্তবিক বিষয়গুলো তুলে ধরা হয় তখন আরো বেশি ভালো লাগে। যেমন এই নাটকটির মাধ্যমে বাস্তবিক কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বড়লোক এবং গরিব পরিবারের বউদের প্রেগনেন্সির ব্যাপারটা। শেষে যে এরকম কিছু হবে এটা একেবারেই ভাবতে পারিনি। আসলে আল্লাহ সবকিছুই করতে পারে, চাইলে ক্ষনিকের মধ্যে আমাদের জীবনটাকে একেবারে বদলে দিতে পারে। সময় পেলে নাটকটা দেখার চেষ্টা করব আমি।
নাটক দেখতে আমার কাছে ভালো লাগে। কিছুদিন আগে কবর নাটকটি দেখেছিলাম। নাটকটি দেখে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আসলে রাখে আল্লাহ মারে কে। এই শিশুটির বেলাতেও এটি হয়েছিল। আল্লাহর মৃত্যুকে জীবিত করতে পারে আবার জীবিত কে মৃত্যু করতে পারেন। এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ভিন্ন রকম একটি নাটকের রিভিউ দেখতে পেলাম আপু। আসলে সময়ের কারণে যদিও নাটক দেখা হয় না। তবে এরকম রিভিউ পড়ে কিছুটা হলেও নাটক দেখার স্বাদ নিতে পারি। ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন।
বাস্তবতার এক বিশেষ দৃষ্টান্ত খুঁজে পেয়েছি আপনার রিভিউ করা এই নাটকের মধ্যে। অনেক সময় অনেকের বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে মৃত হিসেবে যা মেনে নেওয়া কঠিন। আর্থিক অভাবের কারণে হয়তো অনেকে দামি ক্লিনিকগুলোতে নিতে পারেনা। তাই সরকারি হাসপাতালের দিকে চেয়ে থাকতে হয়। আর এই ভাবেই পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয় গরিব মানুষদের। তবুও নাটকের মধ্যে দারুন ভাবে ঘটনাটির বিপরীত পর্যন্ত ঘটিয়ে হয়তো বিশেষ সচেতন ও সজাগ দৃষ্টিভঙ্গিমূলক চিন্তাধারার শিক্ষা প্রদান করার চেষ্টা করেছে দর্শকের জন্য। তাই ভালো লাগলো আপনার এই নাটক রিভিউ দেখে।