দূর থেকে দূরে !! বাংলা নাটকের রিভিউ

in আমার বাংলা ব্লগlast year

দূর থেকে দূরে বাংলা নাটকের রিভিউ

হ্যালো বন্ধুরা।
সবাই কেমন আছেন ? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আবারো একটি বাংলা নাটককে রিভিও করার চেষ্টা করেছি ও আপনাদের সাথে নাটকের সম্পূর্ণ কাহিনী সুন্দর ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

Screenshot_2023-07-09-15-40-02-84.jpg

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

সম্পূর্ণ ভিন্ন রকম একটি গল্প নিয়ে তৈরি করা হয়েছে দূর থেকে দূরে এই বাংলা নাটকটি। আমি সবসময় প্রেমকাহিনী যুক্ত বাংলা নাটক গুলোই একটু বেশি দেখি। তবে প্রেম ভালোবাসা যতটা সুন্দর আবার ততটাই দুঃখজনক যখন তাদের সম্পর্কটা নিজেদের দুষের কারণেই কিংবা নিজেদের ভুলের কারণেই নষ্ট হয়ে যায়। প্রিয় মানুষকে ভালোবাসা থেকে যদি নিজের প্রয়োজনটা বেশি হয় তাহলে সেটাকে ভালোবাসা বলে কিনা আমার জানা নেই। আজকে এমনই একটি গল্প নিয়ে এই নাটকের পুরো কাহিনী। আমি আমার পোষ্টের মাধ্যমে আমার নিজের মতো করে দূর থেকে দূরে এই বাংলা নাটকের রিভিউ করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।


নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য
নাটকের নামদূর থেকে দূরে
প্লাটফর্মইউটিউব
পরিচালকঅনন্য ইমন
অভিনয়েজিয়াউল ফারুক অপূর্ব, কেয়া পায়েল ও আরো অনেকেই।
প্রকাশিত৮ জুলাই ২০২৩
সময়৪৯:৫৪ মিনিট
নাটকের মূল কাহিনী শুরু
একটি ছোট সুন্দর পরিবার। বাবা-মা ছেলে ও ছেলের বউ এই নিয়েই সুন্দর সুখের একটি পরিবার। পরিবারের বাবা-মা মুভি দেখতে খুবই পছন্দ করে। তাই ছেলের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে কখন ছেলে অফিস থেকে বাসায় আসবে আর মুভি দেখবে। এভাবেই চলছে দিন। হটাৎ একদিন বাবা-মা আবদার করে বসলো যদি ছোট ছোট বাচ্চারা বাসায় খেলাধুলা করতো তাহলে এই মুভি দেখার অভ্যাস চলে যেত। হঠাৎ করেই ছেলের কাছে আবদার করে বসলো তাদের নাতি নাতনি প্রয়োজন। ছেলের বউ তাদের কথায় লজ্জা পেলেও ভিতরে ভিতরে বাচ্চা নেয়ার বেশ আগ্রহ প্রকাশ করে।

Screenshot_2023-07-09-15-41-02-26.jpg

Screenshot_2023-07-09-15-41-28-89.jpg

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

এরপর একটা সময় বুঝতে পারল মেয়ের গর্ভে বাচ্চা কনসেপ্ট হচ্ছে না। তারা ডাক্তারের সাথে দেখা করে ও ডাক্তার বেশ কিছু পরীক্ষা দেয়। দুদিন পর রিপোর্ট আনতে গিয়ে ছেলেটির মন ভীষণ খারাপ হয়ে যায় আর সেই রিপোর্ট ছিড়ে ফেলে দেয়। বাসায় এসে চুপচাপ থাকে, কারো সাথে কোন কথা বলে না। বাবা মায়ের সাথে মুভিও দেখতে বসে না। বউয়ের সাথেও তেমন কথা বলে না। বউ জিজ্ঞাসা করেছিল রিপোর্ট আনবে কখন ?সে বলে রিপোর্ট সময় হলে আনবো এটা নিয়ে তোমার মাথা ঘামাতে হবে না। তবে বউয়ের অনেক বেশি আগ্রহ সেই রিপোর্ট দেখার জন্য। এই জন্য সে নিজেই প্রস্তুতি নেই রিপোর্ট নিয়ে আসার।তখন স্বামী বলে তোমার রিপোর্ট আনতে যেতে হবে না রিপোর্ট আমি ছিড়ে ফেলেছি কারণ সেই রিপোর্টে লেখা আছে তুমি আর আমি কখনো বাবা-মা হতে পারব না। কারণ সমস্যাটা আমার। এই সমস্যা কোন সমাধান হবে না ডাক্তার এটাই বলে দিয়েছে।

Screenshot_2023-07-09-15-41-54-69.jpg

Screenshot_2023-07-09-15-42-26-90.jpg

Screenshot_2023-07-09-15-42-43-35.jpg

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

এই কথা শোনার পর থেকে মেয়েটি অনেক মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে যায়। ছোট ছোট জামা কাপড় ধরে কান্না করতে থাকে ও দরজা বন্ধ করে কারো সাথে কথা না বলে শুধু কান্নাই করতে থাকে। মন খারাপ করে থাকে সারাদিন। এদিকে বাবা মা অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু মেয়েটি কোনভাবেই স্বাভাবিক হতে পারছিল না। স্বামীর এই অসুস্থতার কথা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিল না। এরপর মেয়েটির বাবার বাড়ি চলে যায় সেখানে গিয়ে স্বামীর সাথে কিংবা স্বামীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে না। আর এভাবেই চলে যায় প্রায় একমাস।

Screenshot_2023-07-09-15-43-26-45.jpg

Screenshot_2023-07-09-15-44-02-24.jpg

Screenshot_2023-07-09-15-44-55-37.jpg

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

বাবার বাড়ি গিয়ে মেয়েটি তার মাকে বলে তুমি আমার জন্য অন্য একটি ছেলে দেখো আমি আগের সংসারটি আর করব না। এই কথা বলে ছেলের সমস্যার কথা বাবা মায়ের সাথে শেয়ার করে। এরপর বাবা মাও সিদ্ধান্ত নেই যে সেই ছেলের সাথে ডিভোর্স করিয়ে নতুন আরেকটি বিয়ে করিয়ে দিবে। তাহলে হয়তো মেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে ফিরে আসবে। না হয় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাবে।

Screenshot_2023-07-09-15-45-43-53.jpg

Screenshot_2023-07-09-15-46-04-60.jpg

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

প্রায় এক মাস পর ছেলেটি আসে তার বউকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে কিন্তু বাবা-মায়ের প্লান অনুযায়ী বলা হয় মেয়েটি বাসায় নেই। আর এই ফাঁকে মেয়েটির অসুস্থতার কথা বলে ডিভোর্স লেটারে একটি সাইন করিয়ে নেয়। ছেলেটি বুঝতেও পারে না। এরপর মেয়েটিকে অন্য আরেকটি ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে।

Screenshot_2023-07-09-15-46-31-92.jpg

Screenshot_2023-07-09-15-47-25-13.jpg

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

একটা সময় সেই ছেলে হসপিটাল থেকে তাদের রিপোর্ট তুলে আনে এবং চিৎকার চেঁচামেচি করে বাসায় বলতে থাকে যে আপনারা কেন আমার সাথে এত বড় একটি অন্যায় কাজ করতে যাচ্ছিলেন ? আমি আপনার মেয়ের আগের হাজবেন্ডের মেডিকেল রিপোর্ট সংগ্রহ করেছি। আপনারা নিজেই দেখুন সেই মেডিকেল রিপোর্টএ কি লেখা আছে। আপনার মেয়ে নিজে কোনদিন মা হতে পারবেনা। সেই ছেলে ছিল সম্পূর্ণ সুস্থ। কিন্তু আপনারা আমাকে মিথ্যা কথা বলে আপনার মেয়েকে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছিলেন।

Screenshot_2023-07-09-15-47-54-19.jpg

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

আর এই কথা শুনে মেয়ে এবং মেয়ের বাবা-মা স্তব্দ হয়ে গিয়েছে কারণ তারা এটা কখনোই বুঝতে পারেনি যে সমস্যাটি মেয়ের ছিল। কিন্তু মেয়েকে আঘাত না করার জন্য কিংবা কষ্ট না দেয়ার জন্য সেই সমস্যাটা নিজের কাঁধে তুলে নেয়। একটা সময় ভুল বুঝতে পেরে মেয়েটি আবার ছুটে যায় ছেলেটির কাছে। গিয়ে তখন বলে আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে আসিনি, কারণ আমি জানি আমি ক্ষমা চাওয়ার যোগ্য না, তবে তুমি কেন আমাকে এই মিথ্যে কথাটা বলেছিলে সেদিন। সমস্যাটা ছিল আমার তাহলে তুমি কেন তোমার বলে ছিলে সেদিন ? উত্তরে ছেলেটির মুখ থেকে কথা এসেছিল ভালবাসার মানুষকে আঘাত দিতে শিখিনি আমি। ভালোবাসার মানুষকে কখনো কষ্ট দিতে শিখিনি।

Screenshot_2023-07-09-15-48-23-76.jpg

Screenshot_2023-07-09-15-48-46-28.jpg

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

তুমি আমাকে হয়তো ভালোবেসে ছিলে ঠিকই, তবে তোমার ভালোবাসার থেকে তোমার প্রয়োজনটা ছিল বেশি। আমরা তো সুখে থাকতে চেয়েছিলাম, ভালো থাকতে চেয়েছিলাম, ভালোবেসে কি দুজন একা একা কাটিয়ে দিতে পারতাম না? কিন্তু তুমি তোমার প্রয়োজনের জন্যই আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে অন্য কারো কাছে। এখন তোমার আর আমার রাস্তা দুইটা। তোমার বাবা-মা আমাকে দিয়ে ডিভোর্স লেটারের সাইন নিয়ে নিয়েছে। এখন চাইলেও হয়তো এক হতে পারব না। আমাদের দুজনের রাস্তা দুদিকে চলে গেছে আমি কখনো জানি না এই রাস্তার কখনো মিল হবে কিনা। আর এখানেই সমাপ্ত ঘটে এই নাটকের কাহিনী।
ব্যক্তিগত মতামত
আমি সবসময় বলি ভালোবাসা সব সময় সুন্দর। তবে ভালোবাসার মধ্যে নিজের প্রয়োজনটাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া মোটেও ঠিক নয়। ভালোবাসা এমনই হয়, কখনো কখনো অন্যের অপরাধ নিজের কাধে তুলে নিয়ে ভালবাসাকে টিকিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু অপর মানুষটির কাছে সেই অপরাধ যেন হয়ে যায় কাল। সে বুঝতেই পারেনা যে অপরাধে অপরাধী বানানো হয়েছে সেই অপরাধ সে নিজেই করেছে। যখন পরিশেষে গিয়ে বুঝতে পারে তখন পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটাও যেন দায়ী হয়ে যায় তার জন্য। আমরা ভালোবাসাকে সম্মান করব। কখনোই ভালোবাসা থেকে নিজের প্রয়োজনকে বেশি মনে করব না। কারণ ভালোবাসায় সকল সুখের মূল।
নাটকটির ইউটিউব লিংক

ব্যক্তিগত রেটিং
9/10

সমাপ্ত

1.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

_

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

খুব ভালো লাগলো আপু নাটকের রিভিউ পোস্ট পড়ে। দারুন বলেছেন,কখনো ভালোবাসা থেকে নিজের প্রয়োজনকে বেশী মনে করা ঠিক নয়।নাটকটি দেখা হয়নি। আপনার নাটকের রিভিউটি পড়ে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। সময় করে দেখবো আশাকরি। ধন্যবাদ আপু নাটকের রিভিউ পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last year 

অপূর্বের নাটক আমার কাছে সবসময়ই চমৎকার লাগে। কারণ সে অভিনয়ের ভিতরে খুব চমৎকার ভাবে মিশে যেতে পারে। তবে এই নাটকটি সম্পর্কে এখনো আমি অজ্ঞাত। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরে খুব ইন্টারেস্টিং লাগছে নাটকটি আমি এখনই দেখে নেব।

 last year 

"দূর থেকে দূরে" নাটকটি আমার দেখা হয়নি আপু। তবে নাটকের রিভিউ পড়ে খুব খারাপ লাগলো। কেননা ভালোবাসার মানুষকে আঘাত না দেয়ার জন্য, মেয়েটির দোষ ছেলেটি নিজেই কাঁধে নিয়েছিল। অথচ মেয়েটি ছেলেটিকে ভুল বুঝে অন্যত্র বিয়ে করতেও রাজি হয়েছিল। মেয়েটির কাছে ভালোবাসার কোন মূল্যই ছিল না। যার কারনে সে ছেলেটিকে ছেড়ে এভাবে চলে যেতে পেরেছিল। আর ছেলেটি ভালবাসার মানুষকে ফিরে পাবার জন্য তার কাছে ছুটে গিয়েছিল। যাক অবশেষে মেয়েটি তো তার সমস্যার কথা জানতে পেরেছে, আর ছেলেটির সাথে হওয়া অন্যায় উপলব্ধি করতে পেরেছে। নাটকের শেষ দৃশ্য এসে, ছেলেটি জানিয়ে দিয়েছে তাদের দুজনের রাস্তা আলাদা। আর এই বিষয়টি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। বিশ্বাসহীন ভালোবাসা থাকার চেয়ে না থাকাই শ্রেয়। আপু খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ দিয়েছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

একটা সময় অপূর্বর নাটক মিস করতাম না। তবে এখন সময় সল্পতার কারণে নাটক দেখা হয় না। আপনার আজকের নাটকের রিভিউটা দেখে খুব ভালো লাগলো। আশা করছি খুব শীঘ্রই নাটকটি দেখবো ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56949.15
ETH 2401.26
USDT 1.00
SBD 2.33