ঈর্ষা নাটকের রিভিউ
ঈর্ষা নাটকের রিভিউ
সবাই কেমন আছেন ? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আবারো একটি বাংলা নাটককে রিভিও করার চেষ্টা করেছি ও আপনাদের সাথে নাটকের সম্পূর্ণ কাহিনী সুন্দর ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
বাংলা নাটক বাংলাদেশের সকলের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এই ঈদ কে কেন্দ্র করে অনেক সুন্দর সুন্দর ও ভালো কিছু বাংলা নাটক বের হয়েছে যা দেখলে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আমার বাংলা নাটক দেখার প্রতি আগ্রহ ছিল না কখনোই। তবে এখন অনেক বেশি আগ্রহ নিয়ে নাটক গুলো দেখি। প্রতিদিন একটা করে নাটক দেখার চেষ্টা করি ও রিভিও করার চেষ্টা করি কিন্তু একটা নাটকের এত বড় কাহিনী লিখতেও বেশ সময় লাগে যায়। আজকে আমি ঈর্ষা নাটকটি দেখলাম। আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো তাই নাটকের পুরো কাহিনী সুন্দর ভাবে নিজের মতো করে রিভিউ করার চেষ্টা করলাম।
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য |
---|
নাটকের নাম | ঈর্ষা |
---|---|
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
পরিচালক | সায়েদ শাকিল |
অভিনয়ে | জিয়াউল ফারুক অপূর্ব,কেয়া পায়েল, সমু চৌধুরী, সামান্তা পারভেজ ইত্যাদি। |
প্রকাশিত | ২৩ এপ্রিল ২০২৩ |
সময় | ৪২:১৮ মিনিট |
নাটকের মূল কাহিনী শুরু। |
---|
নাটকের শুরুতেই আমরা দেখতে পাই স্বামী স্ত্রী দুইজনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া। স্ত্রী সে তার বাপের বাড়ি থেকে যা যা এনেছে সবকিছু নিয়ে চলে যাওয়ার কথা বলছে বাপের বাড়ি। ঝগড়া দেখে মনে হচ্ছে স্বামী নিজে থেকে ঝগড়া করতে না চাইলেও স্ত্রী বেশি আগ্রহ দিয়ে ঝগড়া করছে। ঘরে স্ত্রীর কিনা কি কি আছে ও তার বাপের বাড়ি থেকে কি কি এনেছে এগুলো সব কিছু নিয়ে সে চলে যাবে। এমন সময় সে ড্রয়ার থেকে একটা শাড়ি বের করলো বেগ গুছানোর জন্য আর তখন স্বামী বলে আরে এই শাড়ীটাতো আমার কিনে দেয়া এটা তুমি কেন নিয়ে যাচ্ছ ? এখানেও মহা ঝামেলা হয়ে গেলো। শাড়িটা ছিল দুইজনের টাকায় কিনা তাই কেচি দিয়ে শাড়িটাকে দুইভাগ করে স্বামীকে অর্ধেক দেয় আর নিজে অর্ধেক নেই। তাদের কাছে বিষয়টা খুব সিরিয়াস হলেও আমাদের জন্য নাটকের এই অঙ্কটা বেশ মজাই লাগলো।
এক কথা দুই কথা আরো অনেক বিষয় নিয়ে ঝগড়া করতে করতে স্ত্রী কিছু একটা হাতে নিয়ে ছুড়ে মারলো দরজার দিকে আর এমনি স্ত্রীর বেস্ট ফ্রেইন্ড বান্ধবি এসে হাজির। আর ওই ছুড়ে মারা জিনিসটা ঠাস করে তার কপালে লেগে গেলো। বেচারি ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই একটা ব্যাথা পেয়ে কপাল ধরে ঘরে ঢুকলো। আর এদিকে দুইজনই তার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে আবারো কপালে লাগা নিয়ে তর্ক করা শুরু করলো এর পর স্ত্রী স্বামীকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বললো।
এরপর বান্ধবী রুমের চারদিকে তাকিয়ে বলে রুমের এই অবস্থা কেন ? আবারো ভাইয়ার সাথে ঝগড়া হয়েছে। স্ত্রী বলে ঝগড়া করবোনা তো কি করবো ? ওকে এখন আমার কোনো ভাবেই সহ্য হয় না। কারণ সে হচ্ছে একটা বড় রকমের গাধা। সে তার জীবনে কোনো রকম কোনো উন্নতি করতে পারেনি। তাই সে বাপের বাড়ি চলে যাবে। এরপর বান্ধবী তাকে একটা বুদ্ধি শিখিয়ে দিলো বার বার মরার থেকে একবারে মরে যাওয়া ভালো। স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়ার কথা বলে ও একটা ভালো উকিল আছে তার পরিচিত সেটা বলে। কিন্তু স্ত্রী সে যতই ঝগড়া করুক না কেন ডিভোর্স দেয়ার কথা কখনো ভাবেনি এই ভাবে, তাই এই কথা শুনে কিছুটা অবাক হয়ে যায়।
এরপর দুই বান্ধবী মিলে উকিলের কাছে যাই ও ডিভোর্সের কারণ জানতে চাইলে বলে সে তার জীবনের কোনো উন্নতি করতে পারে না। ওর বন্ধুরা একেক জনে বাড়ি-গাড়ি করে ফেলছে , তার বান্ধবীর জামাই এটা করছে ওটা করছে , আশেপাশে সবাই অনেক বড় হচ্ছে কিন্তু সে কোনো দিন কোনো উন্নতি করতে পারে না। সে শুধু দিন দিন নিচের দিকেই নামছে তাই সে তাকে ডিভোর্স দিতে চাই। তখন উকিল বলে এটা কোনো ডিভোর্সের কারণ হতে পারে না। ডিভোর্স দেয়ার জন্য ভালো কোনো কারণ লাগবে। যেমন - স্ত্রীকে মারধর করে, পরকীয়া প্রেম করে ইত্যাদি। তখন সে বেশ চিন্তায় পরে সে কিভাবে তাকে অপরাধী বানাবে।
এরপর তারা বাসায় আসে ও বুদ্ধি করতে থাকে একটা মেয়েকে তার কাছে পাঠিয়ে একসাথে কিছু ছবি নিবে ও সেই ছবি গুলো উকিলকে দেখিয়ে ডিভোর্স নিবে। একটা সময় অফিস শেষ করে স্বামী একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে ও তার বন্ধুকে কল করে আসার জন্য এমন সময় একটা অপরিচিত মেয়ে আসে তার সাথে কথা বলতে চাই ও এটা সেটা বলতে থাকে ঠিক তখনি স্ত্রী এসে তাদেরকে সামনে সামনি ধরে। এরপর স্বামী অনেক ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছে যে সে এই মেয়েকে চিনে না ওই মেয়ে তাকে এসে ডিস্ট্রাব করছে। একটা সময় মেয়ের হাত ধরে বলে চলো পুলিশের কাছে যাই আমি কি তোমাকে চিনি না চিনিনা সেখানে গেলেই প্রমান হবে। আর তখন মেয়েটি পালিয়ে যায়। আর এখানেই তাদের প্ল্যান সব শেষ হয়ে যায়। জায়গাটা সত্যি অনেক মজার ছিল।
এর কয়েক দিন পর স্ত্রীর ফোনে একটা কল আসে তার বান্ধবী সিঁড়ি থেকে পরে হাত ভেঙ্গে ফেলেছে। আর এই কথা শুনে ওরা দুইজন হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নিয়ে আসে। এরপর স্ত্রীর মাথায় একটা বুদ্ধি আসে যে তার বান্ধবীকে দিয়েই তার স্বামীর সাথে পরকীয়ায় প্রেম করিয়ে দেয়ার। আর এই কথা বান্ধবীকে বললে বান্ধবী কোনো ভাবেই রাজি হচ্ছিলো না। এরপর অনেক কষ্ট করে অনেক কিছু বলে স্বামীর সাথে পরকীয়া প্রেম করার কথা রাজি করায়।
এরপর আর কি সেই বান্ধবী কিছু একটা বাহানা করে বার বার বান্ধবীর স্বামীর কাছে যায় ও কথা বলার চেষ্টা করে কিন্তু সে হচ্ছে একটা সৎ ও ভালো মানুষ। দেখে মনে হচ্ছে না কোনো ভাবে তাকে পরকীয়া প্রেমে পালানো যাবে। তবুও সে অনেক ভাবেই চেষ্টা করে। এরপর মিথ্যা কথা বলে বাহিরে ঘুরতে যাই। এক রিক্সায় উঠে, ফুচকা খাই এই সবকিছুতেই সে অনেক বিরক্ত হলেও স্ত্রীর বান্ধবী বলেছে বলে কিছু বলতেও পারছিলো না। আর এই সবকিছু ফলো করতে থাকে তার স্ত্রী। একটা সময় নিজের বান্ধবী তার স্বামীর সাথে এসব দেখে মনের মধ্যে অনেক হিংসা হতে লাগলো ও স্বামীর প্রতি ভালোবাসা তৈরি কোনো লাগলো। নিজের বান্ধবীকে সে কি ভাবে পারছে নিজের স্বামীর সাথে এভাবে ঘুরতে দিতে। এই সবকিছু যেন আর সে মেনে নিতে পারছে না।
এরপর ঘুরাঘুরি করে বান্ধবী বাসায় এসে স্ত্রীকে বলে এবার তোদের ডিভোর্সটা হয়েই যাবে। ভাইয়ার সাথে ঘুরতে গিয়ে এত এত ক্লোজ ছবি তুলেছি যে এই ছবি গুলো উকিলকে দেখলে ডিভোর্স করিয়েই দিবে। তখন স্ত্রী অনেক রেগে যায় ও বলে সে কোনো ভাবেই তাকে ডিভোর্স দিতে পারবে না। একপর্যায়ে দুই বান্ধবী পুরোপুরো ঝগড়া লেগে যায় আর তখনি উকিল ও স্বামী দুইজন হাজির হয়ে যায়। আর তখন ঘটনা কি জানতে চাইলে উকিল বলে তার স্বামীও সেই উকিলের কাছে গিয়েছিলো কি করলে তাদের দুইজনের মধ্যে ঝগড়া না হয় সেই উপায় জানতে। আর উকিল প্ল্যান শিখিয়ে দেয় যে স্ত্রীর মনের মধ্যে যদি হিংসা তৈরি করা যায় তাহলেই সে তাকে ভালোবাসতে শুরু করবে ও ঝগড়া করবে না। আর এখানেই নাটকের সমাপ্তি ঘটে।
ব্যক্তিগত মতামত |
---|
নাটকের শুরু থেকেই ছিল তাদের মধ্যে ঝগড়া।যে ঝগড়ার কোনো কারণ নেই। আমার মতে সংসার জীবনে সুখী হওয়াটা হচ্ছে বড় একটা বিষয়। স্বামী ভালো মানুষ ও ভালো মনমানুষিকতার মানুষ এটা হচ্ছে বড় একটা বিষয়। অন্যের কি আছে , অন্যরা কি করছে সেটা দেখলে নিজের সংসারে সুখ কখনোই খুঁজে পাওয়া যাবে না। হয়তো অনেকের অনেক কিছু আছে কিন্তু অনেক কিছু থাকার পরেই সুখ নামের পাখিটা তাদের ঘরে নেই তাহলে সেই ঘরে টাকা কিংবা ধন-দৌলত থেকেওনা কি লাভ। অন্যের দিকে না তাকিয়ে নিজের যা আছে তাই নিয়ে সুখে থাকাটাই হচ্ছে জীবনের বড় একটা পাওয়া। এই নাটকে এটাই বুঝানো হয়েছে যে নিজের ঘরে টাকার চেয়ে সুখে থাকা ও ভালো থাকাটা হচ্ছে বড় একটা বিষয়। আর ভালোবাসার মানুষকে অন্যের সাথে কখনোই কেউ মেনে নিতে পারে না সে যতই খারাপ হোক না কেন।
নাটকটির ইউটিউব লিংক |
---|
বাংলা নাটক আমার কাছে দেখতে ভালই লাগে। আমি প্রায় মাঝে মাঝেই অনেক নাটক দেখি তবে ওই যে বললেন অনেক কিছু লিখতে হয় দেখে নাটকের রিভিউ দেয়া হয় না। এই নাটকটি আমি বেশ খানিকটা দেখেছিলাম পরে ঝগড়াঝাঁটি দেখে আর দেখিনি। তবে মনে হচ্ছে নাটকটি শেষে গিয়ে ভালই হয়।সময় করে শেষটুকু আবার দেখতে হবে মনে হচ্ছে। আর এটা ঠিকই বলেছেন অন্যের জিনিস না দেখে নিজের যতটুকু আছে সেটুকু নিয়ে ভালো থাকতে হয় তবেই সংসারে সুখ আসে।
একদম ঠিক অন্যের দিকে না তাকিয়ে নিজের যা আছে তাই নিয়ে সুখে থাকাটাই হচ্ছে জীবনের বড় পাওয়া। আপু আপনি খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দিয়েছেন। এই নাটক এখনও দেখা হয়নি তবে আপনাদের রিভিউ পড়ে বুঝতে পারছি এর কাহিনী খুব সুন্দর।সময় পেলে অবশ্যই দেখবো। ধন্যবাদ।
আপু এই নাটকটা আমিও দেখেছিলাম আসলে বাংলা নাটক গুলো দেখতে আমার খুব ভালো লাগে তাই আমি প্রায় সময় নাটক দেখ। কিন্তু কেন যেন নাটকের রিভিউ কখনো আমার দেওয়া হয়নি। তবে আপনার নাটকের রিভিউটা পড়ে খুব ভালো লাগলো আপনি খুব সুন্দর করে বিস্তারিতভাবে পুরো নাটকটি তুলে ধরেছেন। আপু এটাও ঠিক লিখেছেন সংসার জীবনে সুখী হওয়াটাই বড় বিষয়। নাটক সম্বন্ধে আপনার ব্যক্তিগত মতামতটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
এরকম বাংলা নাটক গুলো দেখতে আমার কাছে ভালো লাগে আপু। এই বছর ঈদ উপলক্ষে অপূর্ব ভাইয়ার অনেক সুন্দর কিছু নাটক বেরিয়েছে। আমি মোটামুটি সবগুলো দেখার চেষ্টা করেছি। এই নাটকের সঙ্গে আপনার ব্যক্তিগত মতামত জেনে অনেক ভালো লাগলো আপু। ধন্যবাদ আপনাকে
ঈদ উপলক্ষে অনেক নাটক বের হয়েছে যার মধ্যে অপূর্বের নাটক একটু বেশি রিলিজ হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বের হওয়া অপূর্বের কয়েকটা নাটক আমি দেখেছিলাম যার মধ্যে এই নাটকটি ও ছিল। আপনি বেশ সুন্দরভাবেই নাটকটার মূল কাহিনী তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন আমাদের মাঝে। আসলেই সংসারের সুখের জন্য স্বামী ভালো মানুষ ও ভালো মানসিকতার মানুষ এটা হচ্ছে মূল বিষয়। কার কি আছে এবং কে কি করছে এটা নিয়ে সংসারে বিভিন্ন রকম ঝগড়া না করাই ভালো। খুবই সুন্দর ভাবে ঈর্ষা নাটকটির রিভিউ সম্পূর্ণটা লিখে তুলে ধরলেন। ভীষণ ভালো লেগেছে আবারও নতুন করে আপনার রিভিউ পোস্টের মাধ্যমে নাটকটি দেখে এবং পড়ে।