একটা ভুল ও ফুলের গল্প !! নাটকের রিভিউ
একটা ভুল ও ফুলের গল্প নাটকের রিভিউ
সবাই কেমন আছেন ? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আবারো একটি বাংলা নাটককে রিভিও করার চেষ্টা করেছি ও আপনাদের সাথে নাটকের সম্পূর্ণ কাহিনী সুন্দর ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
একটা ভুল ও ফুলের গল্প এই নাটকের গল্পটি আমার কাছে অসাধারণ মনে হয়েছে। কারণ প্রতিটি নাটকের এই ভিন্ন ভিন্ন কিছু মেসেজ রয়েছে। আজকের এই নাটকের মধ্যে রয়েছে শিক্ষণীয় কয়েকটি বিষয়। আমরা প্রায় সময় ঘরের মানুষকে ঘরে বন্দী করে বাহিরে তালা দিয়ে চলে যায়, আর এর মধ্যে হয়ে যেতে পারে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা। আর এরকম কিছু বিষয় বস্তু নিয়ে (একটা ভুল ও ফুলের গল্প) এই নাটকটি সাজানো হয়েছে। আমি আমার নিজের মতো করে এই নাটকের কাহিনী আমার পোস্টের মাধ্যমে রিভিউ করার চেষ্টা করলাম।
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য |
---|
নাটকের নাম | একটা ভুল ও ফুলের গল্প |
---|---|
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
পরিচালক | মুরসালিন শুভ |
অভিনয়ে | জিয়াউল ফারুক অপূর্ব,অর্ষা ও আরো অনেকেই। |
প্রকাশিত | ১ জুলাই ২০২৩ |
সময় | ৪২:৩৬ মিনিট |
নাটকের মূল কাহিনী শুরু |
---|
নাটকের শুরুতেই আমরা দেখতে পাই একটি বাসায় স্বামী ও তার স্ত্রী। রাতে স্ত্রী তাড়াতাড়ি শুয়ে যায় আর স্বামী তখন বাইরে বের হতে গিয়ে বলে দরজাটা ভিতর থেকে লাগিয়ে দিতে। তখন স্ত্রী বলে কাল সকালে আমার ইন্টারভিউ আছে আমি ঘুমিয়ে পড়বো। তুমি বাইরে থেকে লাগিয়ে যাও। তখন স্বামী অনেক বেশি রাগ করে কারণ সে চায় না স্ত্রী বাসার বাইরে গিয়ে জব করুক। এগুলো নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথোপকথন হয়।
এরপর সে মন খারাপ করে বাহিরে চলে যায় ও রাস্তায় একা একা হাঁটতে থাকে। ঠিক তখনই রাস্তায় কিছু ছিনতাইকারী তাকে ছিনতাই করার জন্য ধরে। ঠিক তখনই তার পরিচিত পাশের বাসার একটি মেয়ে স্কুটি নিয়ে এসে ব্যাগ থেকে একটি স্প্রে বের করে ছিনতাইকারীর মুখে স্প্রে মারে। তখন ছিনতাইকারীর হাত থেকে বেঁচে যায় সে। তারপর মেয়েটি জিজ্ঞাসা করে আপনি এত রাতে বাহিরে কেন ? তখনই তার বাসা এই প্রবলেম গুলো মেয়েটির সাথে শেয়ার করে। তখন মেয়েটি তাকে বুঝিয়ে বলে যে ভাবীকে জব করতে দেন কারণ এতে করে ভাবি মন ভালো থাকবে এবং ভালো সময় কাটবে। এমন অনেকগুলো কথা বলে ছেলেটিকে অনেক বিষয়ে বুঝায়। তারপর সে বিষয়টি বুঝতে পারে এবং মনে মনে স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয় ও তাকে সরি বলবে বলে সিদ্ধান্ত নেই।
পরদিন সকাল সকাল স্ত্রী ঘুম থেকে ওঠার আগেই স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্য সে বাহিরে তালা দিয়ে চলে যাই ফুল কিনতে। কারণ সে তার স্ত্রীকে ফুল দিয়ে সরি বলবে। তখন সে একটি ফুলের দোকানে যায় ও কিছু ফুল কিনে। সেই ফুল কিনার সময় সেখানে তার একটি ভিডিও করে রাখে যে সে কেন ফুলগুলো কিনছে ও কাকে দিবে ইত্যাদি। বাসায় ফিরে যাওয়ার পথে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। একটি মেয়ে তাকে কিছু ছবি তুলে দিতে বলে আর ছবি তুলে দেওয়ার পরে উপর থেকে কিছু একটা পড়ে মেয়ের মাথা ফেটে মেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। আর তখনই তাকে নিয়ে হসপিটালে যায় ছেলেটি। সেখানে গিয়ে সে আটকা পড়ে যায়। কারণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে মেয়েটির জ্ঞান ফিরে আশা না পর্যন্ত সে হসপিটাল থেকে বের হতে পারবেনা।
আর এদিকে হয়ে গেছে অনেক বড় কাহিনী। এদিকে ঘরে আটকা পরে থাকা স্ত্রী ভাবে সে যাতে ইন্টারভিউ দিতে না পারে সেই কারণে তাকে রুমের বাইরে তালা দিয়ে সে বাহিরে চলে গেছে। আগের দিন রাতে সে রাগ করে তার ফোনটা ভেঙে রেখেছে। কাউকে ফোন দেওয়ার মতো কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছিল না। আর ইন্টারভিউ দিতে যেতে না পেরে সে নিজে রাগে নিজের হাত কেটে ফেলে ও অজ্ঞান হয়ে বিছানায় পড়ে থাকে।
তারপর সে অনেক পরে হসপিটাল থেকে ফিরে এসে দেখে তার স্ত্রী অজ্ঞান হয়ে বিছানায় পড়ে আছে হাত কাটা অবস্থায়। তখন দ্রুত হসপিটালে নিয়ে গেলে তাকে সুস্থ করে তোলে এবং তাকে অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে যে তাকে সে ভালবেসে ফুল কিনতে গিয়েছিল আর সেখানে একটি দুর্ঘটনা ঘটে ও হসপিটালে আটক পরে যায়। ইন্টারভিউ যাতে দিতে না পারে সেই কারণে নয় কিন্তু সে কোনভাবেই সেই বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছিল না। পুরো ঘটনাটি খুলে বলার পরেও সে স্ত্রী বিশ্বাস করতে পারছিল না তারপর সে বলে তার সাথে সে আর সংসার করবে না। তারপর যে মেয়েটিকে নিয়ে হসপিটালে গিয়েছিল সেই মেয়েটিকে বাসায় আনে ও সেই মেয়েটিকে দিয়ে বলানো হয় তারপরও তার স্ত্রী তাকে বিশ্বাস করতে পারছিল না।
মাথায় অনেক বেশি রাগ নিয়ে তারা উকিলের কাছে যায় ডিভোর্সের জন্য। তখন উকিল বলে আপনারা আরো ভাবেন ও আরো চিন্তাভাবনা করে দেখেন যে আপনারা কি করবেন। যদি প্রয়োজন হয় আপনারা নিজেরা একটু সময় নেন কিছুদিন পরে চিন্তা ভাবনা করে তারপর আমার কাছে আসেন। কিন্তু তার স্ত্রী বলছে না আমি কোন ভাবেই তার সাথে সংসার করতে পারবো না। তখন উকিল মহিলাটি বলে তাহলে আপনারা শেষ বারের মতো নিজেদের মধ্যে কিছুক্ষণ কথা বলুন তারপর আমাকে জানান। এই কথা বলে উকিল মহিলাটি সিট থেকে উঠে যায় ও তারা দুজনকে একজন আরেকজনের সাথে কথা বলার সুযোগ করে দেয়।
স্বামী তার স্ত্রীর সাথে কথা বলতে চাইলেও স্ত্রী কথা না বলে ফেসবুক ভিডিও দেখতে থাকে। এরই মধ্যে চলে আসে ফেসবুকের মধ্যে সেই ভিডিওটি যখন সে ফুল কেনার সময় ফুলের দোকানদার তার কিছু ভালোবাসার অনুভূতি ভিডিও করে রেখেছিলো। তখন সে তার মনের অনুভূতিগুলো ও ভালোবাসার অনুভূতিগুলো শুনতে থাকে। সে কেন ফুলগুলো কিনেছিল, কার জন্য ফুলগুলো কিনেছিল সেই অনুভূতিগুলো সেখানে শেয়ার করেছিল। এগুলো শুনে তার স্ত্রী বুঝতে পারে যে সে সত্যিই তাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। সেদিন তার রাগ ভাঙানোর জন্যই তার জন্য ফুল কিনতে গিয়েছিলো। আর এখানেই তাদের দুজনের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সমাপ্তি ঘটে আর এখানে দুইজনের মিল হয়ে নাটকের সমাপ্তিও ঘটে।
ব্যক্তিগত মতামত |
---|
এই নাটক থেকে আমরা অনেক কিছু শিক্ষা নিতে পারি। যেমন ভালোবাসা মধ্যে কখনো ভুল বোঝাবুঝি হলে সেটাকে যাচাই বাছাই করে দেখতে হয়। যে আসলেই কি সে ভুল কিছু করেছে কিনা। নিজের অভিমানে ও নিজের ভিতরে রাগ থেকে এমন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া কখনো উচিত নয় যে সিদ্ধান্ত আপনার জীবন আমার জীবনকে নষ্ট করে দিতে পারে। একটি সংসার অনেক কষ্ট করে অনেক কিছু ত্যাগ করে আগলে রাখতে হয়। সুন্দর সংসারকে একটি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে নষ্ট করে দেওয়াটা মোটেও ঠিক নয়। ভালোবাসার মুহূর্ত গুলো বেঁচে থাকুক সারা জীবন। ভালোবাসার মানুষগুলো সুখে থাকুক মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
নাটকটির ইউটিউব লিংক |
---|
জিয়াউল ফারুক অপূর্ব,অর্ষা নাটকটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। অর্ষা তো শেষের দিকে অপূর্ব কে বিশ্বাস করতে পারছিলো না। অবশেষে ইউটিউবে ভিডিও দেখে পরে ভুল বুঝতে পারে। নাটকের গল্প আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। চমৎকার একটি নাটক রিভিউ করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। আসলে সংসার জীবনে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ছোটখাটো কথাবার্তা হতে পারে। কিংবা যেকোনো ধরনের ভুল বুঝাবুঝি হতে পারে। তাই বলে ডিভোর্সের জন্য উকিলের কাছে আশ্রয় গ্রহণ করা উচিত নয়। পূর্বের ভালোবাসার মুহূর্তটুকুও স্মরণ করা উচিত। যাহোক ,সময় পেলে অবশ্যই দারুন এই নাটকটি দেখে নিবো।