ক্রিয়েটিভ রাইটিং : অভিশপ্ত খেলাঘর।

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001

১২ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।

রোজ মঙ্গলবার।


1000002963.jpg

Source

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য হাজির হলাম। নতুন নতুন ও ভিন্ন ধর্মী পোস্ট শেয়ার করতে বেশ ভালো লাগে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ক্রিয়েটিভ রাইটিং শেয়ার করবো। ভূতের গল্প কাহিনি শুনতে আমাদের কম বেশি সবারই ভালো লাগে। আমার কাছে অনেক ভালো লাগে কারন ছোট কাল থেকেই আমি এই জিনিসের প্রতি আকর্ষণ ছিলো। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে কাজে যাওয়া যাক।


2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

শীতের রাতে গ্রামের একদম শেষ মাথায় ছিল একটি পুরোনো বাড়ি। বাড়িটা অনেকদিন ধরেই খালি পড়ে ছিল। আশেপাশের লোকেরা বলত বাড়িটা অভিশপ্ত। সন্ধ্যা নামলেই সেখানে অদ্ভুত সব শব্দ শোনা যেত দরজা খুলে যাওয়ার শব্দ পায়ের আওয়াজ আর মাঝে মাঝে কারো কান্নার ধ্বনি।

রাতুল গ্রামের এক তরুণ এসব কথা বিশ্বাস করত না। সে ঠিক করল একদিন সেই বাড়িতে গিয়ে দেখবে আসল ঘটনা কী। এক শীতল পূর্ণিমা রাতে সে একা বাড়িটার দিকে রওনা হল। বাড়ির সামনে পৌঁছে রাতুল দেখল পুরোনো কাঠের দরজা আস্তে আস্তে খুলে গেল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে বাতাসের কোনও হাওয়া ছিল না।

ভেতরে প্রবেশ করতেই রাতুলের মনে হল যেন কেউ তাকে অনুসরণ করছে। অদ্ভুত একটা ঠাণ্ডা হাওয়া তার গায়ে লাগল। ঘরের মধ্যে ঢুকতেই সে দেখতে পেল দেয়ালে পুরোনো সব ছবি ঝুলছে। হঠাৎ একটি ছবির দিকে তাকাতেই রাতুল চমকে উঠল। ছবিতে ছিল এক ছোট্ট মেয়ে যার চোখ দুটো ছিল গভীর যেন এক নিঃসীম অন্ধকার।

রাতুলের শরীর ঠাণ্ডা হয়ে গেল কিন্তু সে সাহস করে এগিয়ে গেল। হঠাৎ সে শুনতে পেল নরম গলায় কান্নার শব্দ। কান্নাটা ধীরে ধীরে জোরে উঠতে লাগল। রাতুল বুঝতে পারল কান্নাটা ঠিক তার পাশ থেকেই আসছে। সে ঘুরে দেখল কিন্তু কেউ নেই। হঠাৎ সেই ছোট্ট মেয়েটা তার সামনে এসে দাঁড়াল আর তার ঠোঁটের কোণে এক নিষ্ঠুর হাসি দেখা গেল

মেয়েটা ধীরে ধীরে বলল তুমি আমার খেলা দেখতে এসেছো?

রাতুল কাঁপতে কাঁপতে বলল তুমি কে?

মেয়েটা বলল আমি এখানে অনেক দিন আগে মরে গেছি কিন্তু আমার আত্মা এখানেই রয়ে গেছে। তুমি চলে যাও নাহলে আমিও তোমার সাথে খেলা শুরু করব।

রাতুল আতঙ্কে পিছু হটে গেল। দরজার দিকে দৌড়াতে গিয়ে সে পড়ে গেল আর তার মুখোমুখি মেয়েটা হেসে উঠল। হাসিটা ছিল ভয়ংকর ঠিক যেন কোনও দানবের গর্জন।

রাতুল দৌড়াতে দৌড়াতে সেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল। গ্রামের লোকেরা পরদিন সকালে তাকে রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় পেল। তারপর থেকে রাতুল আর কখনোই সেই বাড়ির কথা কারো সামনে বলে নি।

লোকেরা বলত সেই বাড়িতে এখনো সেই মেয়ের আত্মা ঘুরে বেড়ায় আর যারা সাহস করে সেখানে যায় তাদের সাথে খেলা খেলতে চায়। কিন্তু সে এই মেয়েটির সম্পর্কে জানার জন্য অনেক খোঁজ খবর নিতে থাকে। অনেক দিন অতিবাহিত হয়ে যায় কিন্তু কেউ এর সঠিক তথ্য দিতে পারে না। এই ঘটনার কয়েক বছর কেটে যাত কিন্তু সে কোন সমাধান পাই না। অবশেষে একদিন একটা পাগলি মেয়ে মানুষের সাথে দেখা হয়। সে দেখতে অনেক ভয়ংকর ছিলো। পাগলি মেয়েটা আচমকাই রাতুলের না ধরে ডাকে আর তাকে বলে সেদিন তোমার সাথে যে খেলতে গিয়েছিললো সেটা আমার মেয়ে। এই কথা শুনে সে অনেক অবাক হয়ে যায়। রাতুল বুঝতে পারে না যে সে কিভাবে এই কথা জানলো। আসলে এই মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছিলো। তাকে একজন ছেলে খেলা খেলার নাম করে ওই বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে তাকে প্রথমে ফাসি দেওয়া হয় এর পর গলা কেটে হত্যা করা হয়। আর সেই থেকে ওই বাড়িতে এই মেয়ের আত্মা ঘুরে বেড়ায়।


সমাপ্ত


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার লেখাটি পড়ার জন্য। আশা করছি আমার লেখাই এই গল্পটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন দেখা হবে আবার নতুন কোন গল্পের মাধ্যমে। আল্লাহ হাফেজ।


পোস্টের বিষয়ক্রিয়েটিভ রাইটিং
পোস্টকারীমোহাঃ আশিকুর রহমান
ডিভাইসগ্যালাক্সি এ ১৫
লোকেশনপাবনা


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার জুগির গোফা গ্রামে বাস করি। সবুজ শ্যামলে ঘেরা আমাদের গ্রামটি দেখতে খুবই সুন্দর। আমি একজন সরকারি চাকরিজীবি। আমি চাটমোহর ফায়ার ষ্টেশনে কর্মরত আছি। বাইক নিয়ে ঘুরতে, খাওয়া দাওয়া আর ঘুমাতে বেশি পছন্দ করি। আমি বিবাহিত। আমার একটি ছেলে আছে। আমি আমার পরিবারে মা, বাবা, ভাই, স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে বসবাস করি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য। সবার জন্য দোয়া রইলো সবাই ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিনদের। যারা আমাকে শুরু থেকে সাপোর্ট করছে। আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের সকল কর্মরত সদস্যদের। লেখার ভেতর ভুল ত্রুটি হতে পরে। সেক্ষেত্রে আপনাদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । দোয়া করি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।


Logo.png

Banner.png

Sort:  
 3 months ago 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে ক্রিয়েটিভ রাইটিং শেয়ার করেছেন। আপনার এ বিষয়ে পোস্ট করে জানতে পারলাম অনেক দিনের পুরনো বাড়িতে ভূতের কারখানা ছিল। আবার এটাকে অনেকে অভিশপ্ত বলে। তো সন্ধ্যা হতে সেখান থেকে একটু ভিন্ন রকম আওয়াজ আসতো। এগুলো সত্যি শুনলেই ভয় লাগে। তাছাড়া আমাদের গ্রামে সাইজিমিয়ার বাড়িতে নাকি এমন হতো। তবে এগুলো কখনো সামনেই পড়েনি। পোস্টটি লিখে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।

 3 months ago 

আমিও কোন দিন এমনটা দেখিনি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই গঠন মূলক মতামত শেয়ার করার জন্য৷

 3 months ago 

শুনেই তো ভয় হচ্ছে, এরকম নিরিবিলি বাড়ির মধ্যে ঢোকার পরে যদি অদ্ভুত আওয়াজ আবার কখনো ঠান্ডা বাতাস এরকম অনুভব হয় তাহলে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক।

 3 months ago 

জ্বি ভাই ঠিক বলেছেন ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য।

 3 months ago 

আপনার গল্পটা শোনে অনেক ভয় লেগেছে। আসলে এমন নিরিবিলি বাড়িতে এভাবে আত্মা কথা বললে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। ছেলেটার সাহস ছিল বটে তা না হলে একা কিভাবে এমন নিরিবিলি জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিল। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর লিখেছেন।

 3 months ago 

জ্বি ভাই ছেলেটার অনেক সাহস সে সেখানে গিয়েছিলো ওই ঘরের রহস্য উদঘাটন করতে। ধন্যবাদ আপু।

 3 months ago 

আপনার লেখা অভিশপ্ত খেলা ঘর গল্পটা পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। তবে সেই ছোট্ট মেয়েটার কথা শুনে অনেক খারাপ লেগেছে। রাতুল যদিও সাহস করে সেই ঘরে গিয়েছিল। কিন্তু সে বুঝতে পেরেছিল ওখানে আসলেই আত্মা রয়েছে। তাও আবার ছোট্ট একটা মেয়ের। মেয়েটা কে এরকম ভাবে মারা হয়েছিল এটা শুনেই খারাপ লাগছে।

 3 months ago 

রাতুল সেখানে যাওয়ার কারনে এই খেলা ঘরের আসল সত্যটা জানা গেছে। আর এই ছোট একটা মেয়েকে এভাবে মেরে ফেলার কারনে সে প্রতিশোধ নিতেই সেই ঘরে ছিলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু যথাযথ মতামত শেয়ার করার জন্য।

 3 months ago 

রাতুল শেষ পর্যন্ত সেই অভিশপ্ত খেলা ঘরের রহস্য সম্পর্কে জেনেছি দেখছি। আমি তো ভেবেছিলাম ওই ঘরে ঢোকার পর তার সাথে হয়তো খারাপ কিছু ঘটবে। কিন্তু তার সাথে ওরকম কিছুই ঘটেনি। সেই ছোট্ট মেয়েটার সাথে এরকম কিছু হয়েছে, আর তাকে এত কষ্ট দিয়ে মারা হয়েছে, এটা শুনেই তো অনেক খারাপ লাগছে। মেয়েটার আত্মা মুক্তি না পাওয়ার কারণে ওখানেই থেকে গিয়েছে।

 3 months ago 

জ্বি ভাই আসলে সে তার সঠিক বিচার না পাওয়া পর্যন্ত এই খেলা ঘর থেকে মুক্তি পাবে না। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টটি পড়ে গঠন মূলক মতামত শেয়ার করার জন্য।

 3 months ago 

ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন। অভিশপ্ত খেলাঘর গল্প পড়ে ভালো লাগলো। অতিরিক্ত সাহস দেখানো উচিত নয়,এতে বড় ধরনের বিপদ হতে পারতো। তবে এটাও ঠিক রাতুল সাহস দেখিয়েছে বলে অভিশপ্ত খেলাঘর এর রহস্য জানতে পেরেছে। ছোট মেয়েটিকে এভাবে হত্যা করেছে জেনে খারাপ লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

 3 months ago 

রাতুলের সাহসের প্রশংসা করতেই হয়। তার জন্যই খেলা ঘরের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। ধন্যবাদ আপু পুরো গল্পটা পড়ে গঠন মূলক মতামত শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.18
JST 0.034
BTC 90853.98
ETH 3221.27
USDT 1.00
SBD 2.82