আজ শিক্ষার ইতিবৃত্ত তুলে ধরছি । | নিবন্ধ | { এপিসোড -১ }

🗓️📌তারিখ :১১.০৭.২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার।

সুপ্রিয় পাঠক ও বন্ধুগণ,

আপনাদের সবাইকে আবারো আরেকবার আমার এই বাংলা ভাষায় নিবেদিত বিশেষ ব্লগটিতে স্বাগতম জানাই। সবাই সুস্থ, সুন্দর ও ভালো আছেন এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করি।

বিদ্যাশিক্ষা ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জ্ঞানার্জনের মধ্যে একটি বড় তফাত থেকে যায় সবসময়। আমরা যদিও প্রায়শই স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ও নানা কোর্সভিত্তিক কাগুজে বিদ্যার্জনকেই মূল শিক্ষার অংশ হিসেবে ধরে নেয়, কিন্তু আদতে তা একটি সীমাবদ্ধ বিষয় যা জ্ঞান গঠনে একটি বড় ভূমিকা রেখে চলে।

একটি শিশু যখন বড় হতে থাকে, সে তার আশেপাশের প্রকৃতি থেকে শিখতে চেষ্টা করে। অনুমান ও অনুকরণ একটি বড় হাতিয়ার যেটাকে ব্যবহার করে রপ্ত করার চেষ্টা করে কীভাবে তার চারপাশের মানুষ বিভিন্ন রকম কাজকর্ম করে চলেছে। যদিও শিশুরা ভুল করে, কিন্তু এর মধ্যে দিয়ে একসময় সঠিকভাবে কোন কিছু করতে পারদর্শীতা অর্জন করে।

Src

শিক্ষা ও জ্ঞানার্জনের কোন নির্দিষ্ট গন্ডি নেয়, বাধাধরা রীতি বা নিয়ম নেই, যাকে ধরে কেউ জ্ঞানী হওয়ার বা সুশিক্ষা লাভ করার জন্য মনোনিবেশ করতে পারে। আমি মনে করি, প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহুর্তেই মানুষ নতুন কিছু শিখে চলেছে, বাস্তবতা আর পৃথিবীর নানা উপকরণ পদ্ধতির দিক তুলে ধরেছে, যাদের ইন্দ্রীয় গুণ ভালো, তারা অহরহ নতুন কিছু শেখার পাশাপাশি সৃষ্টিশীল কিছু তৈরি করে তার প্রয়োগ করে চলেছে।

সমাজের নানা দিকের ওপর দৃষ্টিপাত করে ও একটি পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া শেষ করে যখন বুঝতে পেরেছি যে, আমরা বাঙালিরা অধিকাংশ সময়ই ভুল করে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও সার্টিফিকেট অর্জনকে নিজেদের জ্ঞানী জাহির করা, প্রামাণ্য হিসেবে সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে বড়ত্বের পরিচায়ক হিসেবে তুলে ধরতে উদগ্রীব হই। এটি কিন্তু শেষমেশ ভালো ফল বয়ে আনে না।

বেশ আফসোস বোধ করি যখন দেখতে পাই কিছু প্রতিবেশী অভিভাবক তার ছেলেমেয়েদের ভালো মার্কস পাইয়ে দেয়ার জন্য বারবার শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান বদলে চলেন। কখনো এই জায়গায় তো কখনো অন্য কোন স্কুলে যেখানে ভালো রেকর্ড ও সুনাম রয়েছে। সার্টিফিকেট অর্জন যাদের কাছে বড় হয়ে ধরা দেয়, প্রকৃত শিক্ষার চেয়ে প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়াটাই শেষ কথা, তারা দিনশেষে প্রথাগত পথেই অর্জনের ঝুলি দেখতে পায়।

আদতে সৃষ্টিশীলতায় আমরা কতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছি তা ভেবে দেখা দরকার।

Src

প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতার যুগে নানা বৈজ্ঞানিক উপকরণ, অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার আর নানা প্রযুক্তি টুলস শিশু কিশোরদের নতুন দিগন্তে উদ্ভাসিত করে তুলতে পেরেছে। এখন তথ্য প্রাপ্তি ও শিক্ষার উপকরণের কোন অভাববোধ হয় না যতটা বিগত শতাব্দীতে দেখা যেত। তার ফলে এখন অবারিত সুযোগ রয়ে গিয়েছে, যারা সদব্যবহার করতে জানে, তারাই প্রকৃত সাফল্যের দেখা পেতে পারে।

ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি , ছেলেমেয়েদের নিজ পাঠ্যক্রম ও কারিকুলামের শিক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখা উচিত হবে না। কারণ যদি তারা পারিপার্শ্বিকতা ও মানুষদের থেকে শিখতে না পারে, তাহলে জ্ঞানার্জন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এটি কখনোই করা উচিত নয়, অথচ আমাদের এই ভৌগোলিক পরিমন্ডলে তা-ই বেশি করে হচ্ছে।

প্রায়শই যখন দেখতে পাই, গতানুগতিক শিক্ষা থেকে বেরিয়ে এসে যখন শিক্ষার্থীরা বাস্তবজীবনে প্রবেশ করে তখন সীমিত পরিসরের চাকরিবাকরি জুটিয়ে নিতেই তারা হিমশিম খায় । পশ্চিমা বিশ্বের তুলনায় ভালো উদ্যোক্তা তৈরি করতে আমরা সক্ষম হই না, তার কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রেড, কিংবা মার্কস অর্জন করাই তাদের কাছে শেষ কথা, যার হাত ধরে শেষ পর্যন্ত একটি সৃষ্টিশীল মন গড়ে ওঠে না।

Src

উপরন্তু যখন নানা অনাচার দেখা যায় শিক্ষানীতিতে, কখনে সরকারি সিদ্ধান্ত বোঝা হয়ে দাঁড়ায় তখন শিক্ষা ব্যবস্থার অবনমন ঘটে, যা উন্নতিকে ত্বরান্বিত করে চলে। এতে করে লাভের লাভ কিছুই হয় না, বরং সম্ভাবনা গুলো ঝরে পড়তে থাকে।

আমি প্রাথমিকভাবে তার কিছুই ঘটুক তা চাই না, তবে নাগরিক সমাজকে এ ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করতে হবে। যদি এগিয়ে যেতে হয় সামনের দিকে তাহলে শিক্ষার এই সংস্কার যুগোপযোগী ও নৈষ্ঠিক হতে হবে। তাহলেই দেশ ও সমাজ এগিয়ে যাবে।

ধন্যবাদ।

নিজের সম্পর্কে কিছু কথা

(