নীরব দিনের শেষে | { বাস্তব পৃথিবীর রূপদেখা }...
হেলো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ?
আমার পক্ষ থেকে সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই। দীর্ঘ একটি সময় জুড়ে যারা নিজেদের মতো করে এগিয়ে চলেছেন তাদেরকে অনেক অনেক শুভকামনা। আপনারা সবাই নিজ লক্ষ্যে এগিয়ে যান এই প্রত্যাশা করি।
আজ ১৪ই মে, ২০২৪, মঙ্গলবার। প্রতিদিন যখন জীবন থেকে পার হয়ে যায় তখন সেটিকে আমি মূল্যবান হিসেবে বিবেচনা করি। তার কারণ হলো প্রতিটি দিনই জীবনে নতুন কিছু শেখায় ও এগিয়ে নিয়ে যায় অল্প বিস্তর বেশ অনেকটা পথ। তাই সকাল থেকে সন্ধ্যা যখন পার তে শুরু করে আর রাত্রি নেমে আসে, তখন আমি বেশ খাতা - কলম ছাড়া হিসেব মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।
এই অভ্যাসটা শুরু হয় বেশ কিছু বছর আগে থেকে। তখন সবেমাত্র তারুণ্যদীপ্ত মন ঘিরে ধরেছে আর দিন যত যাচ্ছে ততই রঙচঙে জীবনকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি বাদ দিয়ে বাস্তবভিত্তিক বোধ জাগ্রত হতে শুরু করেছে। সময় পেলে হৈ হুল্লোড় বা মানুষের সাথে কথা বলে, হাসিঠাট্টা করে সময় ব্যয় করার চেয়ে একেলা বসে আপণমনে ভাবনাচিন্তা করাতেই বেশি আনন্দ আর অর্থ খুঁজে পাই।
জীবনের বেশ অনেকটা সময় যখন শহরে কাটিয়ে দিয়েছি মানুষের মাঝে যে দিকটা বেশি লক্ষ্য করেছি, তা হলো সাধাসিধে চিন্তাধারা, তাতে নতুনত্ব নেই, সৃষ্টি সুখের ভাবনা নেই, আর অবিরাম একটি নির্দিষ্ট পথে জীবনের গতি ধরে রাখার প্রয়াস আছে তাদের মধ্যে। কেউ অর্থের সন্ধানে মত্ত, দিন নেই - রাত নেই, শুধু নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্যে পৌঁছানো চাই।
শুধু যে অর্থই সম্বল, তা নয়। তাছাড়া আরো কিছু আছে, যেমন : কিভাবে অন্যকে টপকে নিজে উন্নত অবস্থানে যাওয়া যায়। আর ব্যস্ত নগরীর চিন্তাধারার চড়া স্রোতের কথা নাই বললাম, সেখানে হিংসা, পরশ্রীকাতরতা, আর কুটিলতার চর্চা জেঁকে বসে আছে মননশীলতায়।
তবে সত্যিটা এই, বিভিন্ন মানুষ নিজের মতো করে বিভিন্নরকম। কেউ নৈতিক সত্তায় ভালো আবার পরিবেশ ও মননের ভেদ মানুষকে বদলে দেয়। আমি মনে করি যদি নিজের মতো করে জীবনকে উপভোগ করা না যায়, আর তাতে কুটিলতা বেশি থাকে তাহলে বরং সুখী হওয়া যায় না, বিপরীতে দুঃখ বাড়ে।
প্রতিটি মানুষের জীবনেই সময় আসে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর, কেউ হয়তো তার কাছাকাছি যেতে পারে আবার কেউ ভুলে যায় সবকিছু। একটি দিন আসে আবার তা চলে যায় অথচ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কত কিছু ঘটে চলেছে আমরা তা জানি না।
যেহেতু একই উদ্দেশ্য জীবন বয়ে চলেছে, তাতে ফিরে দেখার কোন অবকাশ নেই।
কোন এক নিরালা বিকেলে চুপ করে বসে আছি আর বাইরে তাকিয়ে দেখছি কিভাবে মানুষগুলো নিজেদের ভেক বদলাচ্ছে। প্রকৃতিতে কোন শূন্যতা নেই আর কর্মব্যস্ত মনে এঁকে চলেছে নতুন পথের দিকে যাত্রার তাগিদ৷ বস্তুগত পাওয়ার দিকে মনোযোগ বেশি, ঠিক যেমম অর্থকড়ি, বাড়িগাড়ি আর সুখ-সমৃদ্ধি।
কাউকে দেখেছি এসব কিছু থেকেও একটি ভালো সম্পর্কে আবদ্ধ মানুষ নেই। দিন কাটে একাকী কিংবা আপনজনের সান্নিধ্য ছাড়া। প্রিয় মানুষগুলো দূরে সরে গিয়েছে সেই লোভের বশে উন্নত হতে চেয়ে। চাওয়া পাওয়ার সমুদ্রে যে পৃথিবী ঘুরপাক খাচ্ছে প্রতিনিয়ত, তার থেকে উত্তরণের উপায় কোথায় ?
যদি কারো অল্প কিছুতে সাধ না মিটে তাহলে সামনের বড় পুরস্কারে মন ভরবে না। এ হলো একদম সত্য কথা যার প্রমাণ ছড়িয়ে আছে সবখানে। সময়ের বাঁধনে একই ফ্রেমে জীবনকে বেঁধে রাখা যায় না। কিছু সময় আসে, বছর কয়েক স্থায়ী হয় যখন একাকীত্ব ঘিরে ধরে আর দিনদুপুরে ভাবনার উদয় হয় যে হয়তো আরো ভালো কিছু হতে পারতো।
একটি মানুষের ভাগ্যে সবকিছুই একরকম হয় না, ভালো অভিজ্ঞতা আর তিক্ততা থাকবেই। তাকে ধরে নিয়েই সামনে পথ চলতে হবে। যদি কেউ বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে বাস্তবজীবনে সে চরিত্রকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়াই ভালো। আর শেষমেশ দেখতে পাওয়া যায় যে, তারা কখনোই দীর্ঘ পথে সাথী হয়ে থাকে না।
যদিও আমিও চাই, কিছু মানুষ জীবনের দৃশ্যপট থেকে মুছে যাক চিরতরে, তবুও তার জন্য অনেকটা সময়, দিন-মাস-বছর অপেক্ষা করতে হয়। একসময় সবই আগের মতো হয়ে যায়।
পাল্টায় চরিত্র, ঘটনার রং, আর দৃশ্যপট। সবই থাকে ধূসর এলোমেলো আর কখনো শূন্যতা কখনো বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে সুখ দুঃখ অনুভূতি। নীড়পাতায় মৃদু ছন্দে বাজনা ওঠে পদ্মার ঢেউয়ের মতো, সময় এগিয়ে যায়। দিন দিন, প্রতিদিন ।