স্বার্থের ভীড়ের মাঝে | [ ১০% সাইফক্স, ৫% এবিবি স্কুল বেনিফিশিয়ারি ]

🗓️📌 তারিখ : ০৫.০৭.২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার।

সুপ্রিয় কমিউনিটি বন্ধুগণ,

কেমন আছেন সকলে ? আশা করি ভালোই আছেন অথবা ভালো থাকার চেষ্টা করে চলেছেন অবিরত। জীবন ও সময়ের নানা অনিশ্চয়তার বেড়াজালে সবসময় আমরা ভালো থাকতে পারি না। ঘটে চলে অভিপ্রেত, অনভিপ্রেত নানা ঘটনা যার সাথে তাল মিলিয়ে কখনো আমরা পেরে উঠি, কখনো তার নির্দিষ্ট সন্তুষ্টিতে সামনে এগোতে পারি না।

তবু মানুষের জীবন থেমে থাকার জন্য সৃষ্টি হয় নি, এই পৃথিবীতে কিংবা মহাবিশ্বে স্থিতির কোন স্থান নেই। কখনো যখন আমরা কোন একটি ঘটনা নিয়ে খুব বেশি বিচলিত হই, তখন কমে যায় কর্মস্পৃহা, মনের আকাঙ্ক্ষা আর তার সাথে কর্মোদ্যোগ। এটি ধীরে ধীরে মানুষকে আলস্যের দিকে নিয়ে যায়, যার ফলে সঠিক দিকে ভবিষ্যত দিশা লাভ করে না।

আজকের লেখায় যে বিষয়টি সামনে নিয়ে আসবো, তার পেছনে কিছু আড়ম্বর অত্যাবশ্যকভাবেই বেড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন দিকের পর্যবেক্ষণে যেটি উপলব্ধি করতে পেরেছি যে, যখন মানুষ খুব বেশি একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে ভাবনার মধ্যে উপনীত হয় তখন তা ঘুরেফিরে চিন্তা চেতনায়, মননশীলতায় আর প্রতিফলন হিসেবে কাজের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়।

Src

খুব করে যে বিষয়টি এ সময়ে এসে মনে দাগ কেটে চললো, তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার তেমন অবকাশ পাই না। বিস্তর একটি সময় জুড়ে যখন দেখতে পেলাম মানুষ আজকাল স্বার্থপরতার গন্ডির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে বেশি, ব্যাক্তি জীবনের সুখ জুটিয়ে নেওয়ার ফায়দায় ভেসে চলেছে, তখন কিছুটা হতাশ হই।

প্রায় অনেকটা সময় জুড়েই প্রযুক্তি, শিল্প -বিপ্লব, নগরায়ণ আর তার ঢল নামার শতাব্দী ব্যাপী আয়োজন লক্ষ্য করেছি। ধীরে ধীরে যেমন কাঁচা রাস্তার সড়ক রূপ পরিবর্তন করে পাকা চুনপাথরের প্রশস্ত সড়কে রূপ নিল, তার সাথে দিক দিক থেকে মানুষের আসা যাওয়ার ব্যস্ততা বেড়েই চলতে থাকলো। গড়ে উঠলো হাসপাতাল, ব্রীজ, ইমারত, ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্মশালার দক্ষযজ্ঞ।

এক কাল, যুগ, রাজত্বের পরিবর্তন পার হয়ে গড়ে উঠলো ব্যস্ততার একটি ক্রীড়াক্ষেত্র যেখানে পিছনে ফিরে তাকাবার অবসর সবার হয়ে ওঠে না। যার যার নিজস্ব কাজকর্ম রয়েছে আর তার সাথে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ যার শেষ গিয়ে ঠেকে সন্ধ্যার পরে। তখন অফিস আদালত ছুটি হয়ে গিয়েছে, যানবাহনের ঢল বেড়ে দ্বিগুন তিনগুণ হয়ে গিয়েছে।

এভাবেই কিছু আন্তরিকতা আর মুক্তমনা সরল জীবন যাপন প্রবেশ করে গিয়েছে ব্যস্ততম ইট পাথরের নগরে। চার দেয়ালের সারি সারি অল্প জায়গা জুড়ে বেশি স্থান দখল করে রাখা ইমারত শিখিয়ে চলে কীভাবে মানুষ একে অপরের মাঝে লাভ লোকসান গণনা করে চলছে।

ব্যবসায়িক দিকে কারো দিন ভালো যাচ্ছে তো অন্যদিকে কারো হাটে হাড়ি ভেঙে যাওয়ার জোগাড় করার আয়োজন সারা হলো।

Src

স্বাভাবিক জীবনের ধর্ম এই, যখন বাস্তবতার প্রলেপ আরেকটু গভীর সুকঠিনভাবে স্পর্শ করে চলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই আন্তরিকতার খোলা জানালায় ঢাকা পড়ে চাদর, তারপরে জানালার গ্লাস কিংবা কবাট, ভাগ হয়ে যায় সৌহার্দ্য। স্বার্থপরতার ডালা দিগন্তজুড়ে প্রবাহমান, কারো জন্য গন্ডিটি বিস্তৃত আর কারো জন্য তার সরলতা আছে।

তবে বেশ অবাক লাগে যখন সেই স্বার্থপরতার গন্ডিই মানুষকে কাছে নিয়ে আসে, পরস্পর একে অপরের দিকে। বন্ধু শত্রুর ব্যবধান ঘুচিয়ে যায় আর ঐকতান স্রোতে আলাদা পথ একই গন্তব্যের খোঁজ করে চলে। এমন দৃশ্যায়ন আজকের দিনের নয়, সে বহুকাল আগের সময় ধরে ঘটে চলেছে, শুধু বদলেছে চরিত্র আর ঘটমান কাল।

তবে কখনো স্বার্থ তার নিজস্ব দেয়াল পাশ কাটিয়ে বেড়ে চলে নিঃস্বার্থের ঘরে, যখন চাওয়া পাওয়ার আকাঙ্খা কমে গিয়ে শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। মানুষ একতার খোঁজ করে, তার থেকে পরিতৃপ্তি পায় আর সেই তৃপ্ততাই তো অনুভবের দরজাকে প্রশস্ত করে।

Src

ভাবনার পরিধি শেষ হতে চায় না। তাকে থামাবারও সাধ্যি নেই মানুষের। তবুও কিছু সময় ভাবনাকে শুধু নিত্যদিনের লেনাদেনার মাপকাঠিতে ফেলে ছাঁচবদ্ধ পুনরাবৃত্তির খুব বেশি উৎকৃষ্টতা দেখি না। কারণ প্রতিদিনের কাজ শেষ হয়ে যখন দিন ফুরিয়ে চলে, ঘটনাপ্রবাহ মানুষকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে চলে।

এমন বাস্তবতায় যারা শুধু সামনের দিকে তাকিয়ে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে চলে, তারা শেষটায় সমস্যাহীন গন্তব্যে পৌঁছে যায়, চোখ মেলে তাকিয়ে দেখা হয় না পিছনে রয়ে গেছে স্মৃতি আর গল্পের ভাঁজ। আমি তাদের দলে নই,তাই কিছু সময় লেখা হয়ে ঝরে পড়ে তার কিছু ফিরিস্তি, কেউ পড়ে যায় - কেউ তার সন্ধানের পাশ দিয়ে বয়ে যায়। এখানেই সার্থকতা ।

অবসান ।

নিজের সম্পর্কে কিছু কথা

(