শিক্ষা সমালোচনা | [মেধাপাচার] | আমরা কতটুকু চিন্তিত ?

🗓️📌 তারিখ :১৬.০৭.২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।

সুস্বাগতম বন্ধুগণ।

আসসালামু আলাইকুম/ আদাব।
সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন আর বেশ সুন্দর সাবলীলভাবে দিন কাটছে। দীর্ঘ বেশ কিছুদিন বৃষ্টিবাদলা হওয়ার পর এখন রৌদ্রের তেজ তেমন একটা নেই। মোটামুটি শান্ত, পরিচ্ছন্ন আবহাওয়া বিরাজ করছে আর সে কারণে প্রকৃতির মাঝেই ফিরে এসেছে একটি সমভাবাপন্ন অবস্থা, বর্ষা পেরিয়ে যখন শরতের আগমন ঘটবে তখন বৃষ্টির মাঝখানে বিঘ্নিত দশাও থাকবে না।

আজকের লেখায় আমি সাধারণভাবে কিছু অভিমত ব্যক্ত করবো। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর সমালোচনা ও বিচিত্র দিক তুলে ধরা স্বভাবসুলভভাবেই আমার একটি অভ্যাস। লেখালেখির মাঝে যদি কিছু দিক বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দিকনির্দেশনা বা বুদ্ধিবৃত্তিক সমাধান প্রকাশ করা যায়, তাহলে তা সুন্দর একটা সমাধান নিয়ে আসে।

Src

বিগত কয়েকদিন বাঙালি সমাজে ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন বিষয়ে নানা বৈষম্য, অব্যবস্থাপনা, কতক মান্ধাতার আমলের বিষয়গুলো নিয়ে নিজের কিছু কথা বলেছিলাম। তার মধ্যে শিক্ষা ও তার বিভিন্ন দশা, হাল - অবস্থা তুলে ধরেছিলাম। তারপর বাঙালি হিসেবে কিংবা বাংলাদেশী জাতীয়তার শ্রেণির মধ্যে পড়ে যখন দেখলাম নানা ক্ষেত্রে বঞ্চনা প্রবঞ্চনার মাত্রা ক্রমেই বেড়েছে, তার সংস্কারে তেমন উদ্যোগ গ্রহন করা হয় নি তখন হতাশা বেড়েই চললো।

শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলায় কি ঘটছে বা বিজ্ঞ বুদ্ধিজীবি শ্রেণি, নীতিনির্ধারক মহল কি ভাবছে আর কি কি বিষয় ঘটে চলেছে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা শতভাগ সবাইই জানি, কোন কোন ক্ষেত্রে এখনো আমরা উন্নত বিশ্বের ধারে কাছে পৌঁছাতে পারি নি। তার জন্য আক্ষেপ হয় বটে, তার চেয়েও বড় বিষয় আমরা মেধাবী শ্রেণির মানুষদের ভালোভাবে মূল্যায়ন করতে পারি নি।

ইউরোপের আদলে আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রের নানা বিষয় সংস্কার করেছি, কিছু ক্ষেত্রে অন্ধ অনুকরণ করেছি আর বাকি দিকে নিজ দেশের স্বকীয়তা, ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও স্বদেশী ঐতিহ্য লালন করেছি। তবে শিক্ষায় যখন রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো, নানা দুষ্কৃতিকারী প্রবেশ করলো তখন আর অবক্ষয়ের কিছু বাকি থাকলো না।

একটি জনসমাজ মেধাবী প্রজন্মদের হাত ধরে বেড়ে ওঠে,সমাজের পরিবারগুলো আর রাষ্ট্রীয় নানা ক্ষেত্রে উন্নতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। কিন্তু যখন মেধাবীদের মূল্যায়ন করা হয় না, তখন ব্যাক্তি হিসেবে কষ্ট পরিশ্রম করে মেধাকে শাণিত করা প্রজন্ম নিজস্ব ব্যাক্তিকেন্দ্রীক উন্নতির পথ খোঁজে।

Src

আমি আজ বলতে চাই মেধাপাচার নিয়ে। এই শব্দটির সাথে আমাদের পরিচয় বেশ বহুকাল আগে থেকে। যারা নিজ মেধার মূল্যায়ন পায় না, দেশ ও সমাজ পদে পদে ক্ষতিগ্রস্থ করতে থাকে আর বঞ্চিত মুখগুলো খোঁজে মুক্তির উপায়। ইউরোপের বিশ্বিবদ্যালয়গুলো প্রাপ্য যারা তাদেরকে ন্যয্য অধিকার দিতে কুণ্ঠাবোধ করে না। উন্নত জীবন আর সুবিধায় তারা এ দেশ থেকে বিদেশ-পরদেশে খুঁজে নেয় প্রকৃত মেধার মূল্যায়ন আর উন্নত জীবনযাত্রার স্বাদ।

সব বিষয় আর অবমূল্যায়নের একটি পরম্পরা থাকে, গল্পের পেছনেও গল্প থাকে, তার আগেও কোন ঘটনা যা ভিত রচনা করে মূল পর্বের। আমরা অনেক ক্ষেত্রে কিছু মানুষকে দোষারোপ করি তারা বড্ড বেশি স্বার্থপর, তবে আদলে তারা তা নয় যদি ভেতরের ইতিহাস আর প্রকৃত সত্যটা বেরিয়ে আসে।

মধ্যবিত্ত শ্রেণি বাংলায় সবসময়ই একটি অসুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। তাদের আর্থিক যোগান খুব বেশি নেই, সুযোগের সচ্ছলতা নেই আর ভবিষ্যতের পাথেয় নির্মাণের একটি টান খুব বড় হয়ে দেখা দেয় একটা সময়। সংগ্রামমুখর জীবনের একটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে, তা হাল ছেড়ে দিতে জানে না। বোঝে না পরাজয় কি জিনিস !

এভাবেই অনেক না বলা গল্প রচিত হয় আর উঠে আসে কিছু সফল মুখ যারা নিজেদের ব্যাপারে অনেক কিছু বলা এড়িয়ে যায়, ঢাকা পড়ে কীভাবে তারা দিনের পর দিন বুনে চলেছিল স্বপ্ন আর তার পথ ধরে এক সময় নিজ গন্তব্যে পৌঁছে যায়। মেধা পাচার শব্দটি শুনতে খারাপ লাগে, কিন্তু আদতে তার অনেক কিছুই আমরা জানি না যা ঘটে চলে নিরবধি আর ব্যাক্তি মুক্তি পায় বঞ্চনা থেকে।

Src

আজ এ পর্যন্তই। লেখাটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করার ইচ্ছা রাখি। অনেক সত্য ও বাস্তবতা উঠে আসবে এর মাধ্যমে এ আশা করি। তবে কিছু সমালোচনা নৈর্ব্যক্তিক হবে যা নিরেট অনেকগুলো সত্যকে তুলে ধরে বেড়ে উঠবে। সর্বোপরি সবাইকে ধন্যবাদ ধৈর্য্য ধরে লেখার জন্য।

আপনারা বাংলাদেশের এই মুহুর্তে বিপদাপন্ন অধিকার আদায়ী মানুষের জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন এই প্রত্যাশা রাখি । একটি বিশেষ শ্রেণির শকুনদের থেকে এ সমাজ মুক্তি পাক- এই বাসনা ব্যক্ত করি। দেখা হবে পরবর্তী কোন দিন।

ধন্যবাদ।

নিজের সম্পর্কে কিছু কথা