চা পানের বিরতি ও শর্টকাট সমাচার ☕🍺

সবাইকে সালাম/ আদাব ও মোবারকবাদ জানাই, আরো যারা কাছে কিংবা দূর দূরান্ত থেকে যুক্ত আছেন এই মঞ্চটিতে। আশা করি বরাবরের মতো সকলেই ভালো, সুস্থ সুন্দর ও নির্ঝঞ্ঝাট একটি মুহুর্ত পার করে চলেছেন। প্রতিদিনের উন্নতি, সুখ ও আনন্দ বয়ে আসুক জীবনে ও ভাবনায়, এই মনোষ্কামনা করি পরিশেষের সম্ভাষনে।

অতঃপর, নতুন এই সময়ের মাঝে আজকের লেখার মূল পর্বে প্রবেশ করা যাক তবে দেরি না করে।

মানুষের জীবনে সবসময়ই নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হয়, আর তার সঙ্গে চলার পথে বাধা থাকবেই । এটি একটি সত্য ও নির্ঘাত বাস্তবতা ; কিন্তু দেখা যায় প্রায়শই আমরা বুঝতে পারি না বিষয়টি কতটা গভীরে নিয়ে যেতে থাকে যখন আমরা খুঁজতে থাকি কি করে সরলপথে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়।

প্রায় অধিকাংশ মানুষ থাকে যারা আরামপ্রিয় বা শর্টকাটে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পছন্দ করে। আমি আরামপ্রিয় বটে কিন্তু দ্বিতীয়টি নই। বন্ধুগন, আপনারাও কি তার মধ্যে যেকোন একটির মধ্যে পড়েন ? হা, হা। হতে পারে কেউ দুটোই বা যেকোন একটি বা কোনটিই নয়। এ সমাজে পরিশ্রমী ও নিজ নিয়তির ব্যপারে একনিষ্ঠ এমন মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।

Src

সেদিন রাস্তা দিয়ে হাঁটছি আর একটি বাজার পেরিয়ে কিছু সুপার শপের পাশ দিয়ে চলছি। বিকালবেলা হলে আমার একটি দৃঢ় অভ্যাস দাঁড়িয়ে গেছে, অল্প বিস্তর যেটুকু সময়ই পাওয়া যায় তার মধ্যে সূর্য ডোবার আগে বা আলো যেটুকুই থাকুক - তার মধ্যে হেঁটে হেঁটে কিছু সময় শরীরস্বাস্থের দিকে খেয়াল করে কিছুক্ষণ ভ্রমন করা।

আর নিজ বাসভূমির মধ্যে যে স্থানটা শহরের সবচেয়ে জনাকীর্ণ স্থান লোকসমাগম বেশি হয়ে চলে আর ব্যস্ততা বেশি সে স্থানটা এড়িয়ে চলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। নিরবিলি হাঁটার জন্য শহরতলীর যে স্থানটাতে মানুষজনের ভীড় কমে গিয়েছে আর তারই সাথে সবুজে ঘেরা শ্যামলীমা বইতে শুরু করেছে, কিছু অরণ্য, বিটপীর সারি - সেখানেই স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজে পাই।

তেমনি বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম, পথে একটি চা দোকানের থেকে প্লাস্টিকে মোড়ানো এক কাপ লিকারযুক্ত চা কিনে কয়েকশ গজ দূরের একটি বসার মতো মাচায় গিয়ে বসলাম। আমি যে ধাঁচের মানুষ, তাতে সারা শহরজুড়ে, যে শহরেই যাই না কেন - প্রথম কয়েকদিন খোঁজ করি কোথায় সবচেয়ে ভালো চা পাওয়া যায়।

দামী বা বাহারি চা পছন্দ নয়, কেন জানি মনে হয় যারা চা পান করে ( কেউ কেউ একেবারে চা পান করে নি জীবনে এমন মানুষও আছে) তাদের সবারই একটি পারফেক্ট টেস্ট থাকে। আমারও তাই বেছে বেছে শহরের সবগুলো টি স্টলের চা পরখ করে শেষে আবিষ্কার করলাম শহরতলীর চায়ের দোকানটিই সেরা।

নে কম্প্রোমাইজ এট অল !

তো যাই হোক। সেদিন আরাম করে বসে চায়ে চুমুক দিয়েছি, তখনই কিছুটা দূরে দেখতে পেলাম একটি ছেলে বোধ হয় ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থী বা উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থী, অঙ্ক কষছে। হঠাৎ দেখি সে সমাধান খুঁজে বের করে নিচ্ছে কিভাবে শর্টকাটে সল্ভ করা যায় সহজ থেকে কঠিন অঙ্ক।

Src

আমিও বেশ দূর থেকে বিষয়টি নিয়ে ভাবছি। সবার ভাবনায় এত শর্টকার্ট কেন ? কেউ রাতারাতি ধনী হতে চায়, জিম করা ব্যক্তি কয়েকদিনের ব্যায়ামের পরই দারুন বডি বিল্ডার হতে চায়, কেউ আয়নার সামনে গিয়ে বাইসেপ্স পেশির অবস্থা দেখতে চায়। তা ও শর্টকাটের ব্যায়ামে।

শেষে ট্রেন্ডের মারপ্যাঁচে পড়ে আমিও শর্টকাটে গরম চায়ের কাপ খানা এক চুমুকে নিঃশেষ করতে চাইলাম। কিন্তু, পারলাম না, কারণ তাহলে এতে সেই শর্টকাটেই জিভ পুড়ে যেতে পারে! 😃 কি আর করার এ চিন্তা ঝেড়ে ফেললাম আর তারপর বাড়ির পথ ধরলাম।

বাড়িতে ফিরে আসতে আসতে বুঝতে পারলাম, জীবনে অন্তত পরিশ্রম ও সফলতা পাওয়ার লম্বা রাস্তায় যাওয়া ছাড়া ভালো পথ নেই। সবকিছু অল্প পরিশ্রমে অর্জন হয় না। শচীন টেন্ডুলকার ভারতের একজন কিংবদন্তি ক্রিকেটার, উনি বলেছিলেন,

সফলতার জন্য কোন শর্টকাট নেই।

২০ বছর ক্রিকেট খেলেই ১০০ শতকের স্বাদ নিতে হয়। তার আগে হলে প্রকৃত অর্থ আর হক জন্মায় না। যে ব্যক্তি কথাটি বললেন, তিনি নিজেই তার প্রকৃষ্ট উদাহরন।

ধন্যবাদ। দেখা হচ্ছে পরবর্তী কোন দিনে। সে পর্যন্ত ভালো থাকবেন ও নিজেকে সুস্থ রাখবেন, এ প্রত্যাশা রাখি।

১০% সাই-ফক্স ও ৫% এবিবি-স্কুল বেনিফিসিয়ারি