এক অদ্ভুত দানবের খপ্পরে পড়ে, তারপর ? [পর্ব-০১]

আমার সহযোগী লেখক ও ব্লগারবৃন্দ,

আসালামু আলাইকুম / আদাব। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা প্রিয় এই কমিউনিটিতে যুক্ত আছেন, আর যারা ভারতীয় বাংলা তথা পশ্চিমবঙ্গ থেকে সংযুক্ত আছেন - প্রত্যেককেই বিশেষভাবে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা নিবেদন করি। পাশাপাশি, আশা করি আপনারা সুস্থ ও ভালো আছেন।

আজ, বিশেষ একটি ক্রান্তিলগ্নে এসে নানা আশঙ্কা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে এসে লিখতে চলেছি। সঙ্কট ও নানা ঝুটঝামেলা যদিও জীবনের একটি বড় অংশ, যার ব্যাপ্তি বিভিন্ন রকমের ও বৈচিত্র্যময় তার প্রকাশ ও ভঙ্গিমা, তবুও এসব কিছুকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে চলতে পারার মাঝেই লুকিয়ে থাকে জয়ী হওয়ার মর্ম।

আমরা হয়তো কেউই বিপদ ও ভালোমন্দ যা ভাগ্য কিংবা নিয়তির মধ্যে লুকিয়ে থাকে তার থেকে নিজেকে অতিক্রম করে যেতে পারবো না। কিন্তু সাহস ও ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারলে অনেক চড়াই উতরাই ও বাধাবিপত্তি সহজে নিজ মনোবল ভঙ্গ করা কিংবা আশাহত করে জয়ী হওয়া থেকে রোধ করতে পারবে না। এটাই হলো - বিজয়ী হওয়ার ভেতরের কথা ।

Src

যা হোক, আজ আমি আপনাদের সামনে একটি গল্প উপস্থাপন করবো। এটির চরিত্রায়ন ও কাহিনীকল্প সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও বানোয়াট, যা বাস্তব জীবনের কারো সাথে মিলে গেলে তা হবে সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত ও অজানা। আশা করি আপনারা ব্যাপারটিকে গল্প হিসেবেই সীমাবদ্ধ করে রাখবেন।

একটি পর্ব বা কয়েকটি পর্বেও গল্পটি বিস্তৃত হতে পারে, সে ব্যাপারে আগে থেকে বলা সম্ভব নয়। তো চলুন, আর দেরি না করে গল্পের ভেতরে প্রবেশ করি।

প্রারম্ভ

১.

চারদিকে সুনশান নীরবতা বিরাজ করছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে, বিকেলের পর যতটুকু আলো অবশিষ্ট থাকে তা মিলিয়ে যাওয়ার একটি স্বাভাবিক ছন্দ থাকে। বিকেল ৬ টা বেজে ১৫ মিনিট দেখাচ্ছে রাজুর হাতঘড়িটিতে। দুপুরের চটজলদি আহারের পর সে একবার নিউমার্কেটের রাস্তায় গিয়ে একটি চায়ের ফ্লাস্ক কিনে নিয়ে আসার জন্য বাসা থেকে বের হলো। চারদিকে কোলাহলের নগরী যেন স্বাভাবিক যে গমগমে ভাব তার পুরোটা তান ও লয় হারিয়ে ফেলেছে।

রাজু রিকশা চড়ে বসে আছে, সুরসুর করে অন্যান্য যানবাহনের পাশ দিয়ে তা এগিয়ে চলেছে অল্প অল্প করে রাস্তা পার হয়ে। কখনো রাস্তার বাঁক মাঝখানটায় গোল হয়ে ফিরে গিয়েছে চৌরাস্তার মোড়ে, সেখান দিয়ে আরেকটি লেন। সে বাইরে দেখতে পেয়েছে মানুষের চলাচল আগের তুলনায় অনেক কম, সবাই জরুরি কাজ ছাড়া রৌদ্রহীন এ দুপুরে তেমন বাইরে বেরোচ্ছে না। দূর থেকে যেন মনে হয় সবাই অন্য কোথাও চলে গিয়েছে।

Src

রাজু সারি সারি সাজানো দোকানগুলোর সামনে নেমে রিকশাওয়ালাকে একটি নোট গুঁজে দিল। তারপর ধীরে ধীরে হেঁটে ক্রোকারিজের দোকানে ঢুকে পড়লো। দোকানীরা সবে মাত্র দুপুরের খাবার খেয়েছে আর দোকানে ছোট বাচ্চা ছেলে প্রহরায়। মূল দোকানি আসামাত্রই বাচ্চাটি সরে পাশের টুলে বসলো।

রাজু অনেকগুলোর মধ্যে থেকে দেখে দেখে সবচেয়ে ভালোটি বেছে নিল। ফ্লাস্কটির ডিজাইন ও কালার তার পছন্দ হয়েছে। দামও বেশ তার বাজেটের মধ্যে, সে দামদস্তুর চূড়ান্ত করে তারপর ব্যাগে করে রওয়ানা হলো। বাড়ির কাছাকাছি এলে দেখা হলো তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাফির সাথে। তারা দুজনে একসাথেই কালেজে পড়তো, পার্ক স্ট্রিটের চায়ের দোকানের আড্ডা, একত্রে ফুটবল মাঠে খেলা, তারপর বিকেলে নদীর ধারে ঘুরতে যাওয়া তাদের নিত্যকার বিষয়ই ছিল।

এখন অবশ্য যখন তাদের দুই বন্ধুর গন্তব্য আলাদা তাই তারা বাস্তবে ব্যক্তি জীবনে ততটা আলাদা নয়, বন্ধুত্বের যে জায়গাটা মানুষের খালি থাকে অনেকটা সময় পার হয়ে গেলে। তাদের বেলায় এ বিষয়টি মোটেই ঘটতে পারে নি। বরং দূরত্ব বাড়ার সাথে বন্ধুত্ব বেড়েছে ক্রমেই।

রাজু যখন বাড়ি পৌঁছাল তখন বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে। তারা আলাপ করছে নতুন একটি দানব এসেছে শহরে। এটি ঘাপটি মেরে বসে আছে নদীর ধারে যেখানে একটি ঘন জঙ্গল আবৃত হয়ে রয়েছে। দানবটি দিনের বেলা মানুষ জড়ো হলে, একত্র হলে ছোঁ মেরে ধরে নিয়ে যায়। তারপর দানবও দেখা দেয় না, সে মানুষটিও উধাও - একদম নিরুদ্দেশ। এভাবে চলতে লাগলো বেশ কয়েকদিন।

অদৃশ্য হয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা একদুই করে কয়েকদিন পর দশের কোঠায় এসে ঠেকলো। লোকজন, ছেলে বুড়ো নানান শ্রেণির মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত, তারা নিজেদের ও অন্যান্যদের নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক জীবন নিয়ে চিন্তিত। কেউ শান্তিতে নিশ্চিন্ত মনে বাইরে বেরোয় না, তার পাশাপাশি দানবের ছায়া দেখলেই লুকিয়ে পড়ে, কেউ ছাতার নিচে গা ঢাকা দেয়।

Src

রাজু আর নাফি গল্প করছে, কিভাবে এ ঘটনাটি ঘটে যাচ্ছে আর দানবটিই বা কে, কোথা থেকে এলো। তারা দুজন ঠিক করলো যেভাবেই হোক, দানবের হদিস বের করতে হবে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়ে তারা সামনের দিকে অগ্রসর হবে। তবে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, এবং নানা শঙ্কা ও ভয় যে দানা বাঁধতে শুরু করেছে তা তারা হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে গেল।

সন্ধ্যার পর তারা রাজুর বাসায় চা পান করলো। তারপর বাইরের দক্ষিণ দিকে বর্ধিত ইংরেজ আমলের কায়দায় বানানো ব্যালকনিতে আরাম করে চেয়ারে বসে বাকি প্ল্যান পরিকল্পনা করে ফেললো। তাদের একমাত্র চিন্তা কিভাবে দানবের আবাস ও মূল শক্তি সম্পর্কে ধারণা নেয়া যায়। এর জন্য রেকি করা আর পিঠে দুটি রাইফেল লোড করে নেয়া তারা বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করলো। তাতে অন্তত প্রাণে বাঁচা যাবে আর হামলার থেকে রক্ষা করাও সম্ভব হবে।

[ মুলতুবি ]

ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য আমন্ত্রণ রইলো। দেখা হবে আগামী কোন পর্বে। ততক্ষণে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন । 💐🌼

১০% সাই-ফক্স ও ৫% এবিবি-স্কুল বেনিফিশিয়ারি

পোস্টের ধরণ	সাহিত্য
শিরোনাম	এক অদ্ভুত দানবের খপ্পরে পড়ে, তারপর ?
বিষয়	রূপকাশ্রয়ী গদ্য
প্রসঙ্গ/উপক্রম	আধো বাস্তবতা, আধো কল্পনা
ফোরাম	আমার বাংলা ব্লগ

নিজের সম্পর্কে কিছু কথা