দেখো ঐ মুক্তির দীপ্তিশিখা ঘনিয়ে আসে... 🪔🔥

সুপ্রিয় পাঠক ও বন্ধুগণ ,

আপনাদের সবাইকে আবারো আরেকবার আমার এই বাংলা ভাষায় নিবেদিত বিশেষ ব্লগটিতে স্বাগতম জানাই। সবাই সুস্থ, সুন্দর ও ভালো আছেন এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করি। প্রতিদিনের জীবনে সুস্থতা ও নিবিষ্টচিত্তে নিজ কাজে মনোনিবেশ করতে পারা আর অল্প অল্প করে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যেই বড় একটি প্রাপ্তিযোগ আছে।

এ ব্যাপারে সর্বোপরি নিজ ভাগ্যের জন্য একটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করাই যায়। সত্যি বলতে কি আমরা খুব বেশি চাওয়া পাওয়ার গন্ডির ভেতরে আবদ্ধ থাকতে চাই। কারো ক্ষেত্রে অর্জন করার জিঘাংসা একটু বেশি, কারো কম। তবে সবকিছুর শেষে এসব কিছু গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে না, বরং কিভাবে জীবনে নিজের জন্য নিয়তিতে যা নির্ধারিত আছে সেক্ষেত্রে পূর্ণতা আনা যায়, তাই মূখ্য বিবেচ্য বিষয়।

আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো নিজের একটি চিন্তাধারাপ্রসূত অভিমত, যা একটি জাতীয় জীবনের মুক্তি ও সামগ্রিক একটি আকাঙ্খা বাসনাকে তুলে ধরবে। প্রায়শই আমরা ভাবনায় নিমজ্জিত হই, কথা বলি কিংবা প্রকাশ করি নিজের ব্যাক্তিগত কিংবা একটি গোষ্ঠীগত স্বার্থ, তা কিভাবে বেড়ে উঠবে আর অর্জিত হবে। কিন্তু, এ বিষয়টি তার থেকে কিছুটা বাইরে।

Src

মানুষের জীবনের প্রতিটা পরতে পরতে সংগ্রাম লেগে থাকে, তা সে ছোট কি বড় যেকোন অর্জনই হোক। কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, নানা অসুবিধা ও ক্ষেত্রবিশেষে হুমকির মুখে পড়তে হয় তার হাল ধরে এগিয়ে যাবার কালে। তবু কেউ একাগ্রচিত্তে হাল না ছেড়ে এগিয়ে যায়, আবার কেউ শেষটা না দেখে অন্য কোথাও মনোনিবেশ করে।

জুলুম ও অধিকার, সংগ্রাম ও ত্যাগ এ শব্দগুলো বেশিরভাগ সুবিধাবঞ্চিত, নিষ্পেষিত মানুষের নিয়তি যা অনেকগুলো বছর ধরে চলে এসেছে। কখনো দেখা যায় কোটি মানুষ জিম্মি হয়ে পড়ে গুটিকয়েক ব্যাক্তিবিশেষের ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছার কাছে। ক্ষমতা একটি মধুমাখা লোভের বস্তু যার প্রয়োজনে তা লুফে নিতে গিয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করে। বিবেকবোধকে অন্ধ করে দেয়।

এ মধুর অন্বেষণে ভালো মন্দ, উচিত -অনুচিতের পার্থক্য ভুলে বসে থাকে মানুষ। ক্ষমতালিপ্সা সবার মাঝেই, সব মানুষের ভেতরেই কমবেশি জাগ্রত থাকে, যেহেতু তা ইন্দ্রীয়গত একটি বিষয়। কিন্তু ততটা কি কেউ অন্ধ হয়ে যেতে বসে যখন ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে গিয়ে মানবিকতা বর্জিত হয়ে পশুত্ব গ্রাস করে বসে ?

জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিত্বরা বলে গেছেন, দুর্নীতির কথা। তা কিভাবে মানুষকে প্রভাবিত করে যখন পাওয়ার এসে তাতে বিদ্যুতায়িত করে। যুগে যুগে অনেক ইতিহাস, ঘটনা পরম্পরা, মুছে যাওয়া স্মৃতির সীমানা ছাড়িয়ে কালজয়ী রূপ পেয়েছিল। মানুষ সেসবের সবগুলো পুনরায় মনে রাখে নি। একটি কথার ধুয়া ধ্বনিত হয় এই সময়ে এসে, যে কতটা সত্য সে বাণী, কতটা বাস্তব আজি এ সঙ্কটে,

ক্ষমতা মানুষকে স্বাভাবিকভাবে দুর্নীতিগ্রস্থ করে, অতিরিক্ত ক্ষমতা চরমভাবে দুর্নীতিগ্রস্থ করে।

Src

দুচোখ মেলে তাকিয়ে দেখেছি হাহাকার, কোথাও পলাশের ফুল ফুটেছে আর রক্তলাল হয়ে সয়লাব সমস্ত মনপ্রাণ, বাংলার আকাশ বাতাস যা স্বাভাবিকভাবেই স্বচ্ছ শ্যামল, তার মাঝখানটায় ক্ষতচিহ্ন পড়ে রয়েছে। এ-ই কি বাংলার কলঙ্কের দাগ, এ-ই কি শোষিত মানুষের জীবনের মুক্তির রং, যা বাঙালিসত্তার পুরোটা ধারণ করে জাতিকে করেছে মহান, আত্নত্যাগে আর সমহিমায়।

চোখের যে ভাষা থাকে, তা সবাই পড়তে জানে না। রাস্তার ধারে অসহায় শিশু কাঁদছে, আরেকদিকে দিব্যি আরামে কেউ সেদিকে না চেয়ে ভ্রুক্ষেপহীন অভিলাষে নিজের পথে ধাবমান হয়ে রয়েছে। ভীড়ের মাঝে যে শহরটা জাদুর শহর হয়ে দিব্যি তার স্বভাবের ব্যস্ততার লেশ ধরে রেখে চলেছে, তাতে শত শত আত্নার চোখের জল বিচ্ছিন্নভাবে রয়ে গেছে অগোচরে, পাষানসম রূঢ়তায়, নিদারুণ বাস্তবতায়।

মুখখানি অদৃশ্য শক্তিতে বাঁধা আছে, কথাগুলো জড়িয়ে যায় দ্বিধায়, আটকে যায় এক অজানা শঙ্কায় আর ভয়ে। কোন এক পোষাকি মনুষ্যত্বহীনরা এসে জুলুমের ডালা সাজিয়ে দিয়ে যাবে। কালোর বদলে লাল রঙে ছেয়ে পড়েছে সবটায়, যেদিকে দুচোখ যায়। এ কি পলাশের কৃষ্ণচূড়ায় ফাগুন ধরায় এসেছে, বিষাদের করুণা প্রবলভাবে পুরোটা পৃথিবী জুড়ে ?

Src

ঝড়ের রাতে কখনো কি ঠাহরে ওঠা যায় সন্ধ্যাবেলার মৃদুমন্দ বাতাসে যে লেখা আছে হল্লা হাওয়ার আগমনী সুর, আরো কিছুক্ষণ দখিন দিকের থেকে বাতাস বইছে অহরহ, যেন একেবারে কোন বিরাম নেই ?

কিন্তু, অল্প অল্প করে সে আগমনী সুর বেড়ে উঠতে থাকে, একসময় তা ভারী হয়ে ওঠে। লালের এই অন্তরের ব্যথা সেই একদিনের অপেক্ষায়, সেই একদিনে লাল গোলাপের কাঁটা সমস্ত চাঁদের আলোয় ঢেকে গিয়ে প্রবল বর্ষণে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে দম্ভ, অহংকার, মিথ্যা বাহাদুরি আর নিপীড়নের অবসান, বৈষম্যের নিশাবসান।

তাইতো, রাত্তিরের পর রাত্তির গেয়ে যায় গান, কিছু সুকরুণ ব্যথায় মোড়ানো, চাপা কষ্টগুলো আর কোথাও রাখার নেই, তবুও শুধু আসমান পানে দোয়া আর আশীর্বাদ শত অশ্রুঝরা মানুষের যারা হারানোর বেদনায় দিন গুনে চলে। দেখা হবে জীবনের পরে প্রিয় মানুষটির সাথে আবার কোন এক নতুন ভোরে, মহাকালের প্রহরে।

ধৈর্য্য ধরে লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকুন এই প্রত্যাশা করি। দেখা হবে নতুন কোন এক দিনে, সে পর্যন্ত অবসান।

১০% সাই-ফক্স ও ৫% এবিবি-স্কুল বেনিফিশিয়ারি