ছোট গল্প পর্ব-১ \\ ১০% লাজুক খ্যাকের জন্য
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ashikur50 বাংলাদেশের নাগরিক।
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।
২৮শ্রাবণ , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
১৩আগষ্ট, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার।
বর্ষাকাল।
প্রতিটা মানুষের নির্দিষ্ট কিছু স্মৃতি থাকে সেগুলো কখনোই বলে শেষ করবার নয়। আমারও তেমনি কিছু স্মৃতি আছে তার মধ্যে একটি আপনাদের সাথে আজ শেয়ার করব। আশা করি আমার এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। তাহলে আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
প্রতিটা মানুষেরই কিছু বাহানা থাকে আমিও পড়ার কথা শুনলে বিভিন্ন বাহানা করতাম। যত বড় ভাল স্টুডেন্টই হোক না কেন তারও জীবনে একবার হলেও পড়াশোনা নিয়ে ফাঁকিবাজি করেছে। ছোটবেলা থেকেই আমার জন্য নির্দিষ্ট একটি মাস্টার ঠিক করেছিল তিনি প্রতিদিন আমাকে এক ঘন্টা করে পড়াতেন। শুধুমাত্র শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিনই আমাকে পড়াতে আসতেন। আর আমি ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়াতে বেশ ফাঁকিবাজি ছিলাম। শুধু চিন্তা থাকতো যেভাবেই হোক এই বছরটা টেনশন এ পার করতে পারলেই হয়। কিন্তু পাশ করতাম রেজাল্ট যদি একটু খারাপ হতো তাহলে তো আম্মুর হাতে মার কমন এতে কখনো ভুল থাকবেই না।
যাই হোক যে কোথায় ছিলাম সেখানে ফিরে যাই। ওই স্যার আমাকে যখন পড়াতে আসতো তখনই আমি চিন্তা করতাম কিভাবে আজকে না পড়া যায় যে কোন একটা নাটক করা যায়। কোন কোন দিন আমি পেট ব্যথার নাটক করতাম। এটা হল ছোটবেলার সবারই কমন রোগ। কোন কিছু করতে না চাইলেই সহজ নাটক হল আমার পেট ব্যথা হচ্ছে।
আমি যখন ক্লাসে পড়ে পড়ি তখন আমাদের স্কুল মাঠে বিকেল বেলা একটি ক্রিকেট ম্যাচ ছিল আমাদের পাশের এলাকার সঙ্গে। ঐদিন তিনটি ছিল শুক্রবার আর আমি আমার বন্ধুদের বলেছিলাম খেলাটা যেন শুক্রবার হয় যেন। আমি খেলতে পারি কারণ আমার আগে থেকেই তো জানা ছিল স্যার আমাকে পড়াতে আসে বিকেল বেলায়। দুঃখের বিষয় হলো ওই সপ্তাহে একদিন স্যার পড়াতে আসেননি তার কি একটা বিশেষ কারণের জন্য। এইজন্য তিনি শুক্রবারে পড়াতে আসবেন ফোন করে আমার আম্মুকে বলল আমি যেন ঠিক সময় মত বই নিয়ে বসে থাকি। আমার ক্রিকেট ম্যাচটি যখন শুরু হবে ঠিক সেই সময় স্যার আমাকে পড়াতে আসতেন। আমি সারাদিন শুধু চিন্তা করছিলাম আমি কি করবো কিভাবে আজকে পড়া বাদ দিব। শেষমেষ আমি বন্ধুদের কাছে কি বলে আসলাম তোরা খেলতে থাকিস আমি পরে আসতেছি। এটা বলে আমি সুন্দরভাবে হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে বই নিয়ে টেবিলে বসলাম এবং অপেক্ষা করতে থাকলাম স্যারের জন্য। ঠিক সময় মতো স্যার আমার বাসায় হাজির। স্যার পড়াতে আসার কিছুক্ষণ পর থেকে আমি ঘন ঘন কাজটি শুরু করলাম। কাশতে কাশতে আমার বমি হয়ে গেল। এটা দেখে স্যার ভাবলো আমি হয়তো বা অসুস্থ এই জন্য আম্মুকে ডেকে বলল আমার স্টুডেন্ট তো আজকে অসুস্থ তাহলে আজ নাই করাই। এই কথাটি শুনে আমি তো অনেক খুশি কারণ আমি আগে থেকেই প্লান করে রেখেছি স্যার আসলেই আমি অনেক কাশি দিব কেন আমার বমি হয়ে যায়। তারপরে স্যার চলে গেলেন আমি কিছুক্ষণ পরে আম্মুকে সামনে একটু অসুস্থতার নাটক করে ব্যাট বল নিয়ে চলে গেলাম খেলার মাঠে।
এভাবে যে কত কিছুতে ফাঁকিবাজি করেছি তার কোন ঠিক নেই। উপরেও সব সময় চেষ্টা করতাম সৎ ভাবে চলার এবং সবকিছুতে সঠিকভাবে চিন্তা-ভাবনা করার এজন্যই হয়তো বা মহান আল্লাহতালা আমার এই জায়গায় আছেন। যে স্যারটির সাথে বিভিন্ন ফাঁকিবাজির গল্পের কথা বললাম তিনি আমাকে ছোট থেকে মানুষ করেছেন। কিভাবে পড়তে হয় লিখতে হয় সবকিছুই আমাকে শিখিয়েছে। আমার শিক্ষার দিক দিয়ে সব থেকে বেশি অবদান ওই স্যারের। আর এই অবদানের কথা আমি কোনদিনও ভুলতে পারবো না। সে আমাকে সব সময় তার নিজের সন্তানের মত দেখতো এবং এখনো দেখেনি। হয়তোবা কিছু কিছু সময় আমাকে শাসন করেছেন দুই একবার মার খেয়েছি এটাই হয়তোবা সেই সময়ের জন্য আমার আসল ওষুধ ছিল।
এটাই ছিল আমার আজকের ছোটবেলার গল্প। আবার অন্য একদিন দেখা হবে অন্য কোন ছোটবেলার গল্প নিয়ে। আজ এখানেই শেষ করছি আল্লাহ হাফেজ।
আমার পোস্টে ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদ সবাই কে আমার পোস্ট টা পড়ার জন্য।
আমি মোঃ আশিকুর রহমান সোহাগ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ashikur50। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমি একজন মিশুক ছেলে। আমি সবার সাথে মিশতে ভালোবাসি।
আপনি ঠিক বলেছেন যে যত ভালো ছাত্রই হোক সবাই কম বেশি পড়া ফাঁকি দিয়েছে। আর আপনি তো বেশ ভালোই অভিনয় করেছিলেন স্যারের সাথে। যাক অবশেষে বন্ধুদের সাথে খেলতো পেরেছেন এটাই অনেক। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর লিখেছেন।
ছোটবেলায় পড়াশোনা হোক বা স্কুল হোক যেটাই হোক না কেন ফাঁকিবাজি থাকবেই। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি তো দেখছি ছোটবেলায় পড়ালেখায় অনেক ফাঁকিবাজি ছিলেন। আসলে ছোটবেলায় এরকম মজার মজার স্মৃতিগুলো সবার জীবনে রয়েছে। আপনি কিন্তু বড় হয়ে অভিনেতা হলে খুব ভালো হতো। কারণ আপনি যেভাবে স্যারের সাথে অভিনয় করেছেন ১০ এর মধ্যে আপনাকে দশই দেওয়া লাগে। যাইহোক মজার এই স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
ঠিকই বলেছেন আপনি ছোটবেলায় আমি অনেক ফাঁকিবাজি ছিলাম পড়াশোনায়।
ভাই আপনাকে আর এখানে কি বলবো? আমার কিছুই বলার নেই আপনাকে। আসলে ছোটবেলায় পড়ালেখায় ফাঁকিবাজি আমিও ছিলাম। এরকম ভাবে বিভিন্ন বাহানা দিয়ে খেলাধুলা করার জন্য বেরিয়ে পড়তাম। ছোটবেলায় তো সব সময় খেলাধুলার উপরেই সবার মনোযোগ থাকতো। আপনার এই পোস্টটা পড়ে আমার ছোটবেলার সেই স্মৃতিগুলোর কথা মনে পড়ে গিয়েছে। আসলে ছোটবেলার স্মৃতি গুলো ভোলার মতো না।
ছোটবেলায় আমরা সব সময় চেষ্টা করতাম কিভাবে স্কুল ফাঁকি দেয়া যায় কিভাবে পড়াশোনা ফাঁকি দেয়া যায় কিন্তু এখন অনেক কিছুই বুঝতে পারি।