শীতের সকালে খেজুরের রস খেতে যাওয়ার অনুভূতি (১০% লাজুক খ্যাকের জন্য)
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ashikur50 বাংলাদেশের নাগরিক।
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।
২৯ অগ্রাহায়ন, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
১৪ ডিসেম্বর , ২০২১ খ্রিস্টাব্দ
০৯ জমাদিউল আউয়াল, , ১৪৪৩ হিজরী
মঙ্গলবার।
হেমন্তকাল।
অনেকদিন থেকে আমাদের পরিকল্পনা ছিল বেশি শীত পড়লেই আমরা খেজুরের রস খেতে যাবো। শীত বেশি না হলে নাকি খেজুরের রস খেয়ে মজা নেই।
আমাদের একটা কলেজ মেসেঞ্জার গ্রুপ আছে ওইখানে আমরা সব থেকে ক্লোজ ফ্রেন্ডরা আড্ডা দেই সব সময়। আসলে ওইখান থেকে আমাদের পরিকল্পনাটা, হঠাৎ আমাদের ডিসিশন হলো আমরা কালকে ভোরবেলা খেজুরের রস খেতে যাব বাইপাস। এটা কুষ্টিয়া শহর থেকে আনুমানিক ৫ কিলোমিটার দূরে বাইপাসের পাশেই একটি মেঠো পথ ধরেই অনেকগুলো খেজুর গাছ।
যাইহোক বন্ধুদের রাতেই ফোনে সব বলা হল এবং কিছু ফ্রেন্ডের বাসা একটু দূরে থাকার কারণে রাতে আমার বাসাতে চলে আসলো। আমার সবথেকে বড় টেনশন ছিল আমি কি সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারবো, আর বন্ধুরা যদি একসঙ্গে থাকা যায় রাতে কেমন ঘুম হয় সেটা হয়তো বা আপনারা বুঝতেই পারছেন।
সারারাত আড্ডা দিলাম, গান গাইলাম অনেক মজা চিল্লাচিল্লি সবকিছুই হল। অবশেষে আমাদের মধ্যে দুইটা ফ্রেন্ড ঘুমিয়ে গেল তখন বাজে আনুমানিক তিনটা, কিন্তু আমার ফ্রেন্ড রাসেল এবং আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এখন যদি ঘুমাই আমরা দুইজন সকালে জীবনেও ঘুম থেকে উঠতে পারবো না। কারণ আমাদের রস খাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে সাড়ে পাঁচটার মধ্যে। ওইখানে অনেক ভির হয় অনেক লোক আসে অনেক জায়গা থেকে বেশি দেরি করে গেলে খেজুরের রস পাওয়া যায় না। এজন্য আমরা সারা রাত জাগলাম। তারপরে হঠাৎ ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি পাঁচটা বাজে। আমাদের মধ্যে যে দুইটা ফ্রেন্ড ঘুমাই ছিল ওই দুইটা ফ্রেন্ডকে ঢেকে তুললাম এবং আমরা সবাই ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিলাম। অনেক শীত ছিল তারপরও কিছু করার নেই আমাদের যেতেই হবে।
বাইক নিয়ে রওনা হলাম বাইপাস এর উদ্দেশ্য ।
যাওয়ার সময় অনেক শীত লাগতেছিল আর অনেক কুয়াশা ছিল ভাল ভাবে কিছুই দেখতে পারছিলাম না। ওই ভাবেই কাঁপতে কাঁপতে যেতে থাকলাম।
Device : iPhone x
What's 3 Word Location: https://w3w.co/boomerang.flatter.tugged
অবশেষে আমাদের কাঙ্খিত স্থানে পৌঁছে গেলাম। গিয়ে দেখি আমাদের আগেই অনেক মানুষ হাজির অনেক ভিড়। আমার ফ্রেন্ড রাসেল ভিড়ের মধ্যেই অনেক কষ্টে এক কলসি রস এনেছে। রসের দাম অনেক বেশি না আমাদের কাছ থেকে ২৫০ টাকা নিল। রসের সঙ্গে আরো দুইটা গ্লাস দিল আমাদের রস খাওয়ার জন্য। রস খেতেই মনে হলো আমার মুখের ভেতর বরফের টুকরো পড়তে লাগলো। এত পরিমান ঠান্ডা কিন্তু খেতে অনেক মজার।
Device : iPhone x
What's 3 Word Location: https://w3w.co/boomerang.flatter.tugged
আমার সবথেকে বেশি ভালো লাগছিল চারিদিকের পরিবেশটা। অনেক দিন হলো ভোরবেলা এমন কুয়াশা মাখা সকাল দেখিনি সাথে পাখিদের কিচিরমিচির ডাক। পাখি গুলো দেখতে খুব ভালো লাগছিল এক গাছ থেকে আরেক গাছে যাচ্ছে রস খাওয়ার জন্য। মাঝে মাঝে এক গাছে যখন দুইটা পাখি একসঙ্গে যাচ্ছে দুইজন ঝগড়া শুরু করে দিচ্ছে কিচিরমিচির শব্দে।
Device : iPhone x
What's 3 Word Location: https://w3w.co/boomerang.flatter.tugged
চারিদিকের খোলা মাঠ এবং গ্রামের মেঠোপথ এমন পরিবেশ কার না ভালো লাগে। সারা রাত ঘুমহীন ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে গেল। এমন পরিবেশে কুয়াশার ফাঁক দিয়ে আলতোভাবে সূর্যিমামার দেখা। আমার অনুভূতি আমি আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না।
Device : iPhone x
What's 3 Word Location: https://w3w.co/boomerang.flatter.tugged
খেজুর গাছের পাশেই একটি স্থানে মাটি দিয়ে অনেক বড় করে একটা চুলা বানানো হয়েছে এবং অনেক বড় একটা কড়াই আছে। এখানেই খেজুরের রস গুলো জালানো হয়। রস জ্বালাতে জ্বালাতে যখন গারো হয়ে যায় তখন অনেকেই গুড় তৈরি করে এবং পাটালি তৈরি করে। আমাদের গ্রাম বাংলা ভাষায় পাটালি বলা হয়ে থাকে। শীতের পিঠা সবসময়ই খেজুরের রসের গুড় এবং পাটালি দিয়ে বানানো হয়।
Device : iPhone x
What's 3 Word Location: https://w3w.co/boomerang.flatter.tugged
আমাদের সবথেকে দুঃখের বিষয় হলো আমরা এক কলসি খেজুরের রস নিয়েছি কিন্তু খেয়ে শেষ করতে পারলাম না। অনেক ঠান্ডা এবং বেশি খাওয়া যায় না। প্রথমে মনে হচ্ছিল আমরা এক কলসি করে একজনে খাব কিন্তু এক কলসি আমরা পাঁচজনে শেষ করতে পারলাম না।
কিন্তু আমাদের মন চাচ্ছিল না খেজুরের রস টা নষ্ট করি। তখন আমাদের পাশ দিয়ে একটা চাচা যাচ্ছিলো। আমি তাকে ডেকে বললাম আপনি কি রস খাবেন সে বলল ঠিক আছে বাবা খাওয়া যায়। আমি নিজ হাতে তাকে কলসি থেকে গ্লাসে ঢেলে দিলাম। সে হয়তো বা দুই থেকে তিন গ্লাস খাওয়ার পর বলল আমিও আর পারতেছি না বাবা, মাত্র বাড়ি থেকে তোমার চাচী আম্মা পেট ভরে ভাত খাইয়া দিছে এই অবস্থা তোমরা বললে তাই খেলাম এই বলে হাসতে হাসতে চলে গেল।
Device : iPhone x
What's 3 Word Location: https://w3w.co/boomerang.flatter.tugged
আমরাও রসের কলসিটা ফেরত দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম এটাই ছিল আমার ভোরবেলা খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতি।
আমার পোস্টে ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদ সবাই কে আমার পোস্ট টা পড়ার জন্য।
আমি মোঃ আশিকুর রহমান সোহাগ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ashikur50। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমি একজন মিশুক ছেলে। আমি সবার সাথে মিশতে ভালোবাসি।
কুয়াশার চাদরে ঘেরা সকাল সকাল খাঁটি খেজুরের রস খেতে কি মজা বলে বোঝানো যাবে না আপনি খুব সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন খেজুরের রস খাওয়ার যেটি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে আমরাও মাঝেমধ্যে খেজুরের রস খেয়ে থাকি আসলে সময় খেজুরের রস খাওয়ার মজাটাই অন্যরকম
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই
আপনি শীতের সকালে খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। আমি অনেকদিন যাবত খেজুরের রস খাই নি ।আমার কাছে খেজুর রস খেতে খুবই ভালো লাগে ।বিশেষ করে শীতের অন্যরকম অনুভূতি আমি খেজুরের রস খাওয়া। যেটা আপনি উপভোগ করলেন অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই
সত্যি যা বলেছেন। শীতকালের সকালে গাছের থেকে হাড়িতে করে রস নামিয়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। ঠান্ডার মাঝে দাঁড়িয়ে খেতে দারুন অনুভূতি কাজ করে। আমিও আগে গ্রামের দিকে থাকতে খেতাম। শীতের সকালের দারুন চিত্র শেয়ার করেছেন, অনেকদিন পরে এমন দৃশ্য দেখে ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ আপনাকে দাদা🥰
ভাই খেজুরের রস খাওয়া দৃশ্যটি দেখে মনটা খুব আনচান আনচান করছে। এভাবে রস খাইনা প্রায় ১৫ বছরের বেশি হয়ে গেছে মনে হয়। তবে আপনারা এই শীতে কাঁপতে কাঁপতে যে গন্তব্য স্থানে পৌঁছে গিয়ে খেজুরের রস খেয়েছেন সত্যিই এটা খুবই আনন্দের বিষয়। এবং সে আনন্দটুকু আমাদের সাথে ভাগাভাগি করেছেন আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল
ধন্যবাদ আপনাকে
খেজুরের রস খেতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আজকে পার শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়া অনুভূতি দেখে আজকে আবারও খাওয়ার ইচ্ছা হয়েছে। কয়েক দিন পরে খাবো। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই
বাহ ভাইয়া অনেক সুন্দর একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছেন আপনি। অনেকদিন যাবত শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়া হয়নি। তবে আপনার প্রক্রিয়া গুলো দেখে খাবার ইচ্ছা পোষণ হলো। ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে
শীতের সকালে খেজুরের রসের আলাদা একটি ফিল আসে। কুষ্টিয়া বাইপাসের এই জায়গাটা খেজুর রস খাওয়ার একটি ভালো উপযোগি। এখানে খেজুর রস খেতে প্রতিদিন অনেক লোকের সমাগম ঘটে। দুর দুরান্ত থেকে অনেক লোকই এখানে আসে রস খেতে। আমিও এই বাইপাস এ গেছিলাম অনেক বার। সত্যি আপনি খুব ভালো একটি সকাল পার করেছেন। আপনার পোষ্টটি দেখে আমার খেজুরের রস খাওয়ার ইচ্ছা জাগছে। যাইহোক সুন্দর একটি মূহুর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই
ভাইয়া অনেকদিন পর খেজুরের রস দেখলাম। দেখে তো আর লোভ সামলাতে পারছিনা। খুব খেতে ইচ্ছে করছে ভাইয়া। আমাদের এদিকে খেজুরের রস পাওয়া যায় না তাই অনেক দিন খাওয়া হয়না। ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে আপনি শীতের সকালে খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন। ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর ছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য রইল শুভকামনা।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু
রাসেল ভাইয়ের জন্য অনেক অভিনন্দন রইল উনি অনেক ভিড়ের মধ্য আপনাদের এক কুলসি রস এনে দিয়েছেন। শীতের সময় খেজুরের রস খাওয়ার মজাটাই আলাদা, কিছুদিন পূর্বে আমি আমাদের গ্রাম থেকে এক কলসি ্ রস নিয়ে খেলাম বেশ মজাদার ছিল। ভাই অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপহার দিয়েছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই
খেজুর রস আমার খুব পছন্দ। কিন্তু এইবছরে এখনো খাওয়া হয়নি। আপনার পোস্টটা দেখে ইচ্ছাটা যেন আরও জাগ্রত হয়ে উঠল😄।
এবং জায়গাটা দেখছি খুবই সুন্দর। মাটির সরু রাস্তার দুপাশে সারি সারি খেজুর গাছ বাহ অসাধারণ। এবং আরও অনেকে দেখি রস খেতে এসেছে। সর্বসমেত খুব ভালো পোস্ট ছিল। ধন্যবাদ ভাই সময়উপযোগী একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই