আসসালামু আলাইকুম
- শুক্রবার
- তারিখ-১৭-০৯-২০২১
- সিনেমা রিভিউ-(ঘানি)
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন?আশা করছি সবাই ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।বন্ধুরা আমি
@ashik333 বাংলাদেশ থেকে বলছি।বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে গ্রামীন পরিবেশ নিয়ে বানানো সিনেমা "ঘানি"নিয়ে আলোচনা করবো।অসাধারান সিনেমা যাতে উঠে এসেছে গ্রামের মানুষদের জীবনের হাল চাল কতোটা কষ্ট করে দিন পার করেছেন সেই সব বিষয়, এবং তাদের মধ্যে একতা থাকার কারনে তারা তাদের পেশাকে এগিয়ে নিয়েছে অনেক দূর। এইসব নিয়েই এই সিনেমাটি।আজ আমি এটার রিভিউ করবো আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
★ নাটক বা মুভির কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
★ ঘানি
পরিচালক: কাজী মোরশেদ
প্রযোজক: কাজী মোরশেদ
রচয়িতা: কাজী মোরশেদ
চিত্রনাট্যকার: কাজী মোরশেদ
অভিনয়ে: রাইসুল ইসলাম আসাদ,মাসুম আজিজ,আরমান পারভেজ মুরাদ,নাজনীন হাসান চুমকি,ডলি জহুর,
সুরকার: শেখ সাদী খান
চিত্রগ্রাহক: হাসান আহমেদ
সম্পাদক: সাইফুল ইসলাম
পরিবেশক: কোরাস ফিল্মস
মুক্তি: (২০০৬)
দৈর্ঘ্য: (১০৯ মিনিট)
দেশ: বাংলাদেশ
ভাষা: বাংলা ভাষা
ঘানি ২০০৬ সালে মুক্তি পাপ্ত বাংলা ভাষায় রচিত সিনেমা।এটার পরিচালনা করেছিলেন দেশের নাম করা বিখ্যাত পরিচালক কাজী মোরশেদ।২০০৮সালে এই চলচিত্রটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ১২ টি শাখায় পুরস্কার অর্জন করে।বুঝতেই পারছেন সিনেমাটি কতোটা জনপ্রিয়।
মূল চরিত্র
- রাইসুল ইসলাম আসাদ - শামসু
- মাসুম আজিজ - আফসু
- আরমান পারভেজ মুরাদ - বজলু
- নাজনীন হাসান চুমকি - ময়না
- ডলি জহুর - রোকেয়া
- আনোয়ার হোসেন - অন্ধ বাউল
- রানী সরকার
★ সারসংক্ষেপ বা মূল কাহিনীঃ
সিনেমার শুরুতে দেখা যাবে শামসু ঘানি চালাচ্ছে এবং ঘানির নিচ থেকে টপ টপ করে সরিষার তৈল পড়ছে।আফসু আর শামসু হলো আপন দুই ভাই, দুইজনেই কলুর কাজ করে মানে ঘান ভাঙায়,আফসু বয়সের ভারে কাজ করতে অক্ষম তাই শামসু একাই করে।আফসুর এক ছেলে এবং শামসুর এক ছেলে। আফসুর ছেলের নাম কুদ্দুস সে ঢাকায় সবজি বিক্রি করে। আর শামসুর ছেলে বজলু সে পরিবারের ঐতিহ্য কে ধরে রাখার জন্য নিজে যোগ দেয় ঘানি টানতে।
এদিকে আফসুর ছেলে কুদ্দুস ঢাকায় তেমন সুবিধা করতে পারছিলো না তাই সে বাসায় আসার পায়তারা করে।একদিন বাসায় আসার কথা তাই তার বাবা আফসু নদীর খেয়া ঘাটে গিয়ে বসে থাকে কিন্তু ছেলে আসে না।ছেলে অদিকে বাসায় আসার পথে হরতাল এর মধ্যে পরে যায়, হরতালে অনেক বোমাবাজি হয়। একটা বোমা কুদ্দুস এর গায়ে এসে পরে এবং কুদ্দুস মারা যায়।কুদ্দুস এর সহযোগিরা তার লাশ বাসায় দিয়ে যায়।বাবা আফসু জীবিত ছেলে কে নিতে এসে লাশ নিয়ে যান।পরিবারে নেমে আসে এক শোকের ছায়া যা সহ্য করা দায়।কুদ্দুস এর বাবা আফসু মিয়া ছেলে মরার শোকে কাতর হয়ে যান।সে প্রতিদিন খেয়া ঘাটে গিয়ে বসে থাকেন ছেলে আসবে বলে কিন্তু ছেলে আসে না।
কুদ্দুস এর মরার কিছু দিন পরে বজলু পাশের গ্রামের ময়নাকে বিবাহ করে।বিবাহের জন্য গ্রামের মাতব্বর এর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা সুধ সহ ধার নেয়।বিবাহের কিছুদিন সব ঠিকঠাক চলছিল অনেক আনন্দে দিন পার করছিলো।কিন্তু হঠাৎ গ্রামের মাতব্বর তার ধার দেওয়া টাকা নিতে আসেন।টাকা ফেরত দিতে না পারায় বজলুর কলুর বলদ টা নিয়ে যায় এবং টাকা দিয়ে নিয়ে আসতে বলে।পরে বজলুর বউ এর সোনার চুরি বিক্রি করে বলদ টা ফিরিয়ে আনে।
এর কিছুদিন পরে বজলুর কলুর বলদ টা চুরি হয়ে যায়।সংসারে অসান্তি নেমে আসে।একদিন বজলু তার মামার বাসায় যাওয়ার উদেশ্য করে বের হয়।আর এদিকে বলদ না থাকলে ঘানি চালানো যাবে না। বজলু না থাকায় বজলুর বউকে দিয়ে ঘানি টানায় বজলুর বাপ মা। কিছুদিন বাদে বজলু ফিরে আসে এবং সে দেখতে পায় তার বউ ময়না খুব অসুস্থ সে বুঝতে পারে তাকে দিয়ে ঘানি টানানো হয়েছে।এটা নিয়ে বাবার সাথে বজলুর মারামারি বেধে যায়।বজলু বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় বলদ কিনে আনার জন্য।
পাশের গ্রামের এক বাসায় বজলু বলদ চুরি করতে যায় এবং ধরা পরে এতে বজলুর অনেক মারধর করা হয়।বজলুকে বাসায় দিয়ে যায় তারা,সবাই বজলুকে ঘৃনা করতে থাকে তখন বজলু আত্তহত্বা করতে যায়।অনেক ভেবে বজলু উঠে দাঁড়ায় এরপরে সে নিজেই বলদ সেজে ঘানি টানে। এটা দেখে বজলুর বউ ময়না ঘর থেকে বাহিরে আসে, একে একে সবাই বাইরে চলে আসে।ঘানি টানতে টানতে বজলু পরে যায়। এরপরে ময়না বজলুকে সাহায্যে করার জন্য এগিয়ে যায় এবং দুজনে এক সাথে ঘানি টানে।এটা দেখে বজলুর চাচা আফসু মাটি থেকে সোজা দারিয়ে ওঠে এবং সবাই একতা হয়ে কাজ শুরু করে।
★ শিক্ষাঃ
এই চলচিত্রে অনেক বড় একটা শিক্ষা রয়েছে সেটা হলো একতাই বল।দরিদ্র পরিবারে সবাই মিলে মিশে থাকার চেষ্টা করে এবং থাকেও হাজার কষ্টের মধ্যে সবার একতা থাকলে সব পর শক্তির বিরুদ্ধে জয় পাওয়া যায়।সিনেমাটিতে এটাই দেখানো হয়েছে যখন একে একে সব কিছু শেষ তখনও তাদের মনোবল শক্ত ছিল এবং তারা একতা হয়ে জীবন যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরে।বাস্তব জীবন নিয়ে সিনেমাটি করা। বাস্তব গ্রামের অতীতের দৃশ্য গুলোকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
★ ব্যক্তিগত মতামতঃ
অত্যান্ত সুন্দর ভাবে কাজী মোরশেদ স্যার গ্রামের অতীতে ঘটে যাওয়া বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে এই ঘানি চলচিত্রের মাধ্যমে।এরকম চলচিত্র এখন পাওয়া যাবে না।প্রতিটা শিল্পির অভিনয় ছিল অতুলনীয় মনেই হয়নি এটা চলচিত্রে অভিনয় করছে তারা যেনো বাস্তবে ঘটছে সব।সবাই ছিল জাত অভিনেতা অন্ধ বাউলের ভুমিকায় আনোয়ার হোসেন দুরদান্ত অভিনয় করেছেন।মাসুম আজিজ স্যার, রাইসুল ইসলাম আসাদ অতুলনীয় তাদের অভিনয়ে আমি মুগ্ধ।
★ ব্যক্তিগত রেটিংঃ
১০/১০
★ উপরে দেওয়া নাটকের কিছু চিত্রের ছবি স্কিন শর্ট থেকে নেওয়া
★ মুভি বা নাটকের লিংকঃ
এই নামে কোন ছবি আছে কোন দিন কল্পনাও করিনি আমি।খুবই পুরনো ছবি এটা।এজন্য এই ছবিটা আমার দেখা হয়ে ওঠেনি।আপনি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।মুভিটিতে অনেকটা বাস্তবতার চিত্র ফুটে উঠেছে।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইজান।খুব সুন্দর গঠন মুলক মন্তব্য করেছেন।
ঘানি সিনেমা নিয়ে অনেক সুন্দর উপস্থাপন করেছেন।যদিও এই ধরনের মুভি আমি খুব একটা দেখি না।তবে ছবিটার রিভিউ দেখে দেখতে মন চাচ্ছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেউ অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
খুবই সুন্দর রিভিও দিছেন 🥰🥰
ধন্যবাদ আপনাকে।