"শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-৯ম পর্ব"

এবারে দুর্গাপূজাতে বিজয়া দশমীতে সন্ধ্যার পরে আমাদের খোকসা উপজেলার কেন্দ্রীয় মন্দিরে পূজা দেখতে গিয়েছিলাম। খোকসা উপজেলার ভিতর সবথেকে বেশি ধুমধাম করে পূজা হয় খোকসা কালীবাড়ির এই দুর্গা মন্দিরে। এই মন্দিরের আরসিসি গেট দেখতে ভীষণ সুন্দর। নেপালের একটি মন্দিরের গেটের আদলে এই গেটটি করা হয়েছে। রাতের বেলাতে গেটটি দেখতে বেশ সুন্দর দেখায়। বাংলাদেশের ভেতরে মন্দিরগুলোতে আজ পর্যন্ত যতটি আরসিসি গেট দেখেছি তার ভিতরে এই গেটটি সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে। এই গেটের ডিজাইনার ছিলেন আমার শ্রদ্ধেয় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দাদা দিলীপ কুমার সেন।

আমরা আরসিসি গেটের ভিতরে ঢুকতেই দেখি‌ দুর্গাপূজার ব্যানার দিয়ে আরও একটি সুন্দর গেট তৈরি করা। আর আরসিসি গেট থেকে শুরু করে মন্দির পর্যন্ত রাস্তায় বিভিন্ন আলপনা আঁকা রয়েছে। এসব আলপনা গুলো দেখতে ভীষণ সুন্দর লাগছিল রাতের রংবেরঙের আলোতে। এই গেট থেকে মন্দির পর্যন্ত জুনি ভাল্ব দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়েছিলো। বিজয়া দশমীর দিন হওয়াতে লোকজনের ভিড় একটু কম ছিলো। কারণ নবমীর দিনে সব থেকে বেশি মানুষ পূজা দেখতে বের হয়। আর দশমীর দিনে নিজেদের পাড়া বা গ্রামের মন্দিরগুলোতেই মানুষ পূজা দেখে।

আমার এই ফটোগ্রাফিটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও রাধা দেবীর দোলনায় দোল খাওয়ার দৃশ্য। খোকসা কালী বাড়ীর মেইন দুর্গা মন্দির পাওয়ার আগেই রাস্তার দুপাশ দিয়ে ছোট ছোট মন্দির বানিয়ে বিভিন্ন দেব-দেবতার মূর্তি দিয়ে সাজানো ছিলো। যদিও এই মন্দিরে কোন থিম পূজা হয়না তারপরে ও আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।

আমার এই ফটোগ্রাফিতে শ্রী শ্রী রাধা দেবী তার সখীদের কে নিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অপেক্ষায় অপেক্ষারত রয়েছে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন বাসুদেব আর দেবকির সন্তান। কিন্তু পালন সূত্রে যশোদা ও নন্দের পুত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। প্রতিদিন ভালোবাসার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্য রাধারানী তার সখীদেরকে নিয়ে এভাবেই অপেক্ষা করতেন।

আমার এই ফটোগ্রাফিতে শ্রী শ্রী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও রাধা দেবী তার সখীদের কে নিয়ে নৌকায় উঠে নৌকা বিলাস করছে। এখানকার মূর্তিগুলোর কারিগর অনেক সুন্দরভাবে প্রতিটি দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছেন।

আমার এই ফটোগ্রাফিতে শ্রীশ্রী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও রাধা দেবী দোলনায় বসে প্রেম বিনিময় করছে। এই দোলনাটি তৈরি করেছিল স্টিলের স্ট্রাকচার দিয়ে। এজন্য সাথে একটি সুতা লাগানো ছিলো ভক্তবৃন্দরা এসে এই সুতা ধরে টান দিয়ে দোলনায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও রাধারানীর দোল খাওয়াচ্ছিলেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও রাধারানীর দোলনায় বসে থাকার দৃশ্য দেশ সুন্দর লাগছিল তাই আমি ফোনে ক্যাপচার করে রেখেছিলাম।

আমার এই ফটোগ্রাফিটি খোকসা কালীবাড়ি সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের মাতা দুর্গার অপরূপ দৃশ্যের ফটোগ্রাফি। আমাদের খোকসার অন্যান্য মন্দিরগুলো দুর্গামূর্তি তুলনায় এখানকার মূর্তিটি একদম ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি করা হয়েছে। এই মূর্তিটির কারিগর ছিলেন সুকুমার বিশ্বাস। আমাদের পাড়ার দুর্গামূর্তিটিও এই একই কারিগর বানিয়েছে।

আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ৯ম পর্ব"আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আবার অন্য একটি পোস্টে "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ১০ম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-৯ম পর্বের ফটোগ্রাফি ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।

VOTE@bangla.witness as witness