"শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ১৪ তম পর্ব"

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ- ৭ই ফেব্রুয়ারি, বুধবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ

আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা। আজকে আমি আপনাদের সাথে শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমনের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজা দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন ছোট ছিলাম মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা এদের হাত ধরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজা দেখতাম। তারপর একটু বড় হলে বাইসাইকেলে করে বন্ধুদের সাথে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার এই চারটি দিনে পুজো দেখার পাল্লা দিতাম। আমার শৈশবের শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার সময়টা সত্যি অনেক মধুর ছিলো। আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৪ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।



শ্রী শ্রী মা দুর্গার প্রণাম মন্ত্র🙏

ওঁ সৰ্ব্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্ব্বার্থসাধিকে।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে ৷৷



প্রতিবছর শরৎকালের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, দুর্গাসপ্তমী,মহাষ্টমী, মহানবমীবিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে "অকালবোধন" বলা হয়।



শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন

"শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"

"শ্রী শ্রী মা দুর্গার গমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"

এই বছর শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। এটা আমাদের সবার জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।

বর্তমানে তো দেখতেই পাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতির প্রবল আগ্রাসন এবং বিভিন্ন মহামারী ও যুদ্ধ লেগেই আছে। তাই বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সবার প্রার্থনা মা দুর্গা আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করুক। কারণ তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা মহাশক্তি মহামায়া।



কভার ফটো

কয়েকটি ফটোগ্রাফিকে একত্রিত করে কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



এই বছরের শারদীয়া দুর্গাপূজাতে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম। আমাদের পাড়ার ইয়াং জেনারেশনরা মিলে আমরা বিজয়া দশমীর একদিন পরে রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুর এ গিয়েছিলাম। এই জায়গাটিতে প্রতিবছর বেশ জাঁকজমকপূর্ণ শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গা উৎসব পালিত হয়। এবারে পুজার ভিতরে অবশ্য আমাদের বাড়ি থেকে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে গিয়েছিল আমাদের পরিবারের লোকজন। আমাকেও এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে যেতে বলেছিলো বাড়ি থেকে কিন্তু আমি পাড়ার ছেলেপেলেরা একসাথে যাবো বলে গিয়েছিলাম না। আমারা বিজয়া দশমীর একদিন পরে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুরে শ্রীশ্রী দুর্গা পূজা দেখতে যাব। আমরা এর আগেও এক বছর নলিয়া জামালপুরে পিকআপ ভাড়া করে পূজা দেখতে গিয়েছিলাম ইয়াং জেনারেশনরা মিলে। তাই এই বছরেও সবাই মিলে একটি পিকআপ ভাড়া করেছিলাম নলিয়া জামালপুরে পূজা দেখতে যাওয়ার জন্য।

শ্রীশ্রী প্রজাপতি দক্ষ রাজার মহাযজ্ঞে শুধুমাত্র হর হর মহাদেব এবং মাতা সতী ব্যতীত সবাইকেই নিমন্ত্রণ করা হয়েছিলো। শ্রীশ্রী মতা সতী তার পিতা প্রজাপতি দক্ষ রাজার মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনুমতি না পেয়ে শ্রীশ্রী মহাকালীর রূপ ধারণ করেন। শ্রীশ্রী মহাকালীর রূপ দেখে ভয়ভৃত হয়ে মহাদেব শ্রী শ্রী মাতা সতী কে তার পিতৃগীয় অর্থাৎ শ্রী শ্রী প্রজাপতি দক্ষের আলয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। শ্রী শ্রী মাতা সতীর যতটি রূপ রয়েছে তার ভিতরে মহাকালীর রূপ সব থেকে ভয়ংকর রূপ।

তারপর শ্রী শ্রী মাতা সতী মহাদেবের পরম ভক্ত ভঙ্গি আর নন্দীকে সাথে নিয়ে তার পিতৃগৃহে অর্থাৎ শ্রী শ্রী রাজা প্রজাপতি দক্ষের আলয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। নন্দী আর ভঙ্গি হল মহাদেবের সবথেকে বড় ভক্ত এরা দুজন মহাদেবের সাথে কৈলাস পর্বতেই সব সময় থাকে।

এখানে আমি আর আমার পাড়া-প্রতিবেশী শ্যামল দাদা। আমি যখন ঢাকা থেকে গ্রামে যাই শ্যামল দাদার সাথে সব থেকে বেশি সময় ঘুরে বেড়ায়। সত্যি বলতে আমাদের দুজনের রসায়নটা অনেক বেশি ভালো যদিও শ্যামল দাদা আমার থেকে চার-পাঁচ বছরের বড় হয় তারপরেও দুজনের অনেক ভালো সম্পর্ক। নলিয়া জামালপুরে একসাথে পুজো দেখার সময়ে দুজনে সেলফিতে ক্যামেরা বন্দি হয়েছি।

এটাই হলো শ্রী শ্রী প্রজাপতি দক্ষ রাজার মাহাযজ্ঞ। আর এই মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল দক্ষ রাজার রাজপ্রাসাদে। আর এই মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে সকল দেব-দেবতা থেকে শুরু করে মনি ঋষিগণ উপস্থিত ছিলেন। তবে এই অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র উপস্থিত ছিলেন না শ্রী শ্রী দক্ষ রাজার কন্যা সতী দেবী ও তার জামাতা হর হর মহাদেব। কারণ তাদেরকে তিনি এই মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণ পাঠায়নি।

কিন্তু মাতা সতী তাদেরকে কি কারনে নিমন্ত্রণ পাঠানো হয়নি তার জন্যই নন্দী এবং ভঙ্গি কে নিয়ে এই মহাযজ্ঞে উপস্থিত হয়। মাতা সতী এবং নন্দী ভঙ্গি এই মহাযজ্ঞে উপস্থিত হওয়ার পরেই শ্রীশ্রী প্রজাপতি রাজা দক্ষ তাদেরকে নিয়ে অনেক কটু কথা বলে এবং বিনা নিমন্ত্রনে এই মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে আর আসার জন্য অপমান করেন এবং শ্রী শ্রী মাতা সতীর স্বামী হরো হরো মহাদেব কে নিয়ে নানান ধরনের খারাপ মন্তব্য করেন।

শ্রীশ্রী মাতা সতী নিজের স্বামী হর হর মহাদেবের নামে তারই পিতা শ্রী শ্রী প্রজাপতি দক্ষের খারাপ মন্তব্য শুনে নিজেকে অগ্নিতে আহুতি দেয় অর্থাৎ অগ্নিতে নিজের প্রাণ ত্যাগ করেন।

তারপর নন্দি ও ভিঙ্গি শ্রীশ্রী প্রজাপতি দক্ষ রাজার মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠান ত্যাগ করে কৈলাস পর্বতে গিয়ে হর হর মহাদেবের কাছে শ্রী শ্রী মাতা সতীর দেহত্যাগের ঘটনা বর্ণনা করেন।

আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৪ তম পর্ব"আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আবার অন্য একটি পোস্টে "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ১৫ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।



পোষ্টের ছবির বিবরণ

ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশননলিয়া জামালপুর, রাজবাড়ী
তারিখ২৬শে অক্টোবর ২০২৩


প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



আমি কে !

20230826_112155.jpg

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।

সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57062.81
ETH 3068.42
USDT 1.00
SBD 2.43