ভ্রমণ: "ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ-১ম পর্ব"

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ- ৫ ই অক্টোবর, বৃহস্পতিবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ

আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



কভার ফটো

20231003_210349.jpg

কয়েকটি ছবিকে একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সাথে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি আশা করি আমার এই ভালোলাগাটা আজীবন থেকে যাবে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন যে, আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি। যতো বেশি ভ্রমণ করা যাবে ততই মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পাবে। আমি মনে করি প্রতিটি মানুষের মনকে সতেজ রাখার জন্য ভ্রমন করাটা বাঞ্ছনীয়।

এই বছরে আগস্ট মাসের ২৮ তারিখে আমি আর আমার বন্ধু রাহুল ঢাকা থেকে বের হয়েছিলাম পুরো সিলেট বিভাগের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় স্থানগুলো ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে। সিলেট বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। আমি আজকে থেকে পুরো সিলেট বিভাগের সৌন্দর্যময় স্থানগুলো ভ্রমণের পর্বগুলো আস্তে আস্তে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আমি আশা করি আমার ভ্রমণের পর্বগুলো আপনারদের ভালো লাগবে। আজকে আমি আমাদের ভ্রমণের "ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ" -১ম পর্ব শেয়ার করবো।

20230828_050306.jpg

অনেকদিন ধরে এই পুরো সিলেট বিভাগ ধরে ভ্রমণ করার অপেক্ষায় ছিলাম। আমাদের ইউনিভার্সিটি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেই সেই অপেক্ষার দিনটি আমাদের কাছে চলে আসে। এই পরীক্ষাটি শেষ পরে অবশ্য দুই দিন সময় নিয়ে কেনাকাটা আর লং ড্রাইভের জন্য বাইক সার্ভিসিং আর নিজেদের প্রস্তুতি সেরে নিয়েছিলাম। আগস্ট মাসের ২৮ তারিখ ভোর সাড়ে চারটার দিকে ঘুম থেকে উঠে পড়লাম দুই বন্ধু।

20230828_052049.jpg

প্রথমে ঘুম থেকে উঠেই নিজেরা ফ্রেশ হয়ে নিলাম। আর আমাদের ব্যাগ পত্র আগের দিন রাতেই সবকিছু গুছিয়ে রেখেছিলাম। ঢাকা হতে সুনামগঞ্জের দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটার মতো। আর ৩০০ কিলোমিটার পথ বাইক নিয়ে পাড়ি দিতে আমাদের সময় লাগবে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা। পথ অনেক বেশি হওয়ার কারণে খুব সকালেই বের হওয়াটা ভালো। আমরা আমাদের বাসা থেকে ঘড়ির কাটায় যখন পাঁচটা পনেরো বাজে ঠিক তখনই বাইক নিয়ে দুই বন্ধু সিলেটের সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

20230828_053240.jpg

আমরা যেহেতু দুজনেই পথ চিনি না তাই গুগল ম্যাপে পথ অনুসরণ করতে থাকি। আমার বন্ধু রাহুল বাইক ড্রাইভ করতে থাকে আর আমি পিছন থেকে পথের নির্দেশনা দিতে থাকি। খুব সকালে বের হওয়ার কারণে পথে কোন জ্যাম ছিল না। আমরা কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে পূর্বাচল ৩০০ ফিট রোড দিয়ে আগাতে থাকি। আমাদের ম্যাপে পূর্বাচল ৩০০ ফুট এক্সপ্রেস ওয়ে দিয়ে সুনামগঞ্জ অবশ্য অনেক কাছে দেখাচ্ছিলো আর সময় অনেক কম দেখাচ্ছিলো। সময় কম দেখানোর মেইন কারণ হলো রাস্তা অনেক ভাল ছিলো আর পথে কোন জ্যাম ছিল না।

20230828_065414.jpg

আমরা যেদিন বের হয়েছিলাম সেদিনে সকালে মেঘের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। চারদিকে মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশ কখন যেনো বৃষ্টি আসবে এমনটা মনে হচ্ছিলো। পূর্বাচলে ৩০০ ফিট এক্সপ্রেস ওয়ে রাস্তা পার হয়েই অন্য একটি রাস্তাতে যাওয়ার পরেই হঠাৎ ভীষণ জোরে বৃষ্টি আরম্ভ হয়ে গেলো। তারপর আমরা রাস্তার পাশে একটি ছাউনিতে বাইক থামিয়ে নিজেরা রেইনকোট পড়ে নিলাম আর আমাদের ব্যাগ পত্র সব ওয়াটার প্রুফ করে নিলাম। তারপর বৃষ্টির ভেতরেই দুই বন্ধু চলতে শুরু করলাম। মোটামুটি আধাঘন্টার মতো ড্রাইভ করার পরেই বৃষ্টির বেগ কমে গেলো। তবে বৃষ্টি হালকা পরছিল তাই আমরা রেইন কোট পড়েই চলতে থাকি।

20230828_072757.jpg

যেহেতু আমরা সকালে কোন প্রকার খাবার না খেয়েই বের হয়েছিলাম তাই ভৈরব বাজারে গিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে দুই বন্ধু মিলে খিচুড়ি আর চিকেন খেয়ে নিই। যদিও খাবারটা খেয়ে খুব একটা মজা পায় নাই তবে পেট ভরেছিলো। তারপর খাবার খেয়ে কিছুটা সময় রেস্ট করে নিলাম, আসলে বাইকে লং ড্রাইভ এর ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে নেমে কিছুটা সময় রেস্ট করাটা বেশ জরুরী। তারপর আমরা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ভেতরেই আবার চলতে শুরু করলাম।

20230828_075010.jpg

ভৈরব বাজার ছেড়ে কয়েক মিনিট আসার পরেই ভৈরব নদীর ব্রিজের উপরে বাইক থামিয়ে দুই বন্ধু মিলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে উপভোগ করে নিলাম। এটাই আসলে মোটরসাইকেল নিয়ে ভ্রমণ করার আলাদা একটা মজা। ভৈরব নদীর ব্রিজের উপরে যখন ছিলাম তখনও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো। খুব সকালে নদীর ধান্দা বাতাসে আসলে প্রাণটা জুড়িয়ে যাচ্ছিলো। উপরের ব্রিজ থেকে নদী ভরা জল দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিলো। ভৈরব নদীর জল অনেকটা পদ্মা নদীর জলের মতো ঘোলা।

20230828_075121.jpg

ভৈরব নদীর ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকটা ফটোগ্রাফি করলাম আর দুই বন্ধু মিলেও সেলফি উঠলাম। এরকম সুন্দর স্মৃতিময় মুহূর্ত ক্যামেরা বন্দি করে রাখাটা সত্যিই অসাধারণ। ভৈরব নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করার পরে আবার দুই বন্ধু সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে চলতে আরম্ভ করলাম।

আজকে ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ ভ্রমণের -১ম পর্ব এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে অন্য একটি পোস্টে চলতি পথের সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত "ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ ভ্রমণের-২য় পর্বে" শেয়ার করবো।



পোস্টের বিবরন

পোস্ট ধরনভ্রমণ
ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
ক্যামেরা১০৮ মেগাপিক্সেল
তারিখ২৮ ই আগস্ট ২০২৩
লোকেশনঢাকা, বাংলাদেশ


প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



আমি কে !

20230826_112155.jpg

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 10 months ago 

সত্যিই বন্ধু ভ্রমণটা অনেক মজার ছিল ।অনেক সকালে বাইক রাইড সাথে বৃষ্টির দেখা মিলেছিল ।অসম্ভব সুন্দর সময় পার করেছি।

 9 months ago 

আসলেই বন্ধু এই ভ্রমণটা অনেক মজার ছিলো। ভ্রমণে খুবই সুন্দর সময় পার করেছিলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 10 months ago 

ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জে ভ্রমণের প্রথম পর্ব টি পড়ে বেশ ভালো লাগলো ভাইয়া। দেখে তো মনে হচ্ছে আপনারা বেশ মজা করেছেন। গুগল ম্যাপ আমাদের বেশ ভালই সাহায্য করে। যাই হোক পরবর্তী পর্ব গুলো মনে হয় আরো বেশি ভালো হবে। শুভকামনা রইল।

 9 months ago 

আমার ভ্রমণের এই পর্বটি পড়ে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু। অবশ্যই আপু পরবর্তী পর্বগুলো আরো বেশি ভালো হবে। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 66750.09
ETH 3474.88
USDT 1.00
SBD 2.80