"শারদীয়া দূর্গা পূজা পরিক্রমণ- ৮ম পর্ব"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ১২ই ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা। আজকে আমি আপনাদের সাথে বিজয়া দশমীতে করা ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজা দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন ছোট ছিলাম মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা এদের হাত ধরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজা দেখতাম। তারপর একটু বড় হলে বাইসাইকেলে করে বন্ধুদের সাথে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার এই চারটি দিনে পুজো দেখার পাল্লা দিতাম। আমার শৈশবের শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার সময়টা সত্যি অনেক মধুর ছিলো। আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ৮ম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে ৷৷
প্রতিবছর শরৎকালের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, দুর্গাসপ্তমী,মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে "অকালবোধন" বলা হয়।
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার গমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
এই বছর শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। এটা আমাদের সবার জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
বর্তমানে তো দেখতেই পাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতির প্রবল আগ্রাসন এবং বিভিন্ন মহামারী ও যুদ্ধ লেগেই আছে। তাই বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সবার প্রার্থনা মা দুর্গা আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করুক। কারণ তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা মহাশক্তি মহামায়া।
কয়েকটি ফটোগ্রাফিকে একত্রিত করে কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
বিজয়া দশমী পূজার ফটোগ্রাফি:-
প্রতিবছর শারদীয়া দুর্গাপূজাতে বিজয় দশমীর দিনে আমাদের নিজের গ্রামের মন্দিরে থেকেই সবার সাথে বিজয়া দশমী উপভোগ করি। বিজয়া দশমী হলো দুর্গাপুজোর দশম তম দিন বা শেষ দিন। আমাদের গ্রামের দুটি পাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মিলে গ্রামের এই শারদীয় দুর্গোৎসব করে থাকি। যদিও আমাদের পাড়ার এই শারদীয়া দুর্গা উৎসবটি খুব একটা পুরনো নয়। আমাদের পাড়ায় শারদীয় দুর্গোৎসবের এই পূজাটি শুরু হয়েছে ২০১৬ সাল থেকে।
আমাদের পাড়ার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ২০১৬ সালের আগে বিভিন্ন জায়গাতে গিয়ে বিজয় দশমীর দিনে পূজা দেখতো। বিজয় দশমীর দিনে বাইরে গিয়ে পূজা দেখতে খুব একটা মজা হয় না বলেই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় আমাদের পাড়ায় দুর্গা পুজো করার। আসলে আমরা বাইরে যতই ঘুরে ঘুরে পূজা দেখি না কেন নিজের পাড়ার মন্দিরে যতটা আনন্দ হয় অন্য কোথাও এতটা আনন্দ হয় না।
বিজয় দশমীর দিনে সিঁদুর খেলার মাধ্যমে প্রথমে আনন্দ উৎসব শুরু হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বী মা-বোনেরা শ্রী শ্রী মা দুর্গার সিঁদুর পরিয়ে দেন এবং সেই সিঁদুর নিয়ে একে অপরকে পরিয়ে দেয়। এই মুহূর্তটা আমার কাছে প্রতিবছরই অনেক বেশিই ভালো লাগে। সবার ভিতরে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য এই উৎসবটি আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লাগে।
আমাদের গ্রামের দুই পাড়ার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মিলে যেহেতু এই শারদীয়া দুর্গা উৎসবটি পালন করে থাকি। তাই বিজয় দশমীর দিনেও সবাই একসাথে হয়ে অনেক আনন্দ করে থাকে। প্রতি বছরই আমাদের পাড়ার পূজায় বিজয় দশমীর দিনে ছোট থেকে শুরু করে বড় পর্যন্ত কমিটি অথবা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি এক কালারের গেঞ্জি প্রদান করে থাকে। এবারে পূজাতে আমাদের পাড়ার এমবিবিএস ডাক্তার প্রভাত মন্ডল এই গেঞ্জি প্রদান করেছিল সবাইকে।
আমাদের পাড়ায় ইয়াং জেনারেশনের ছেলেপেলে প্রচুর পরিমাণে। তাই আনন্দটাও অনেক বেশি পরিমাণে করে থাকি। আমরা যখনই যেখানে যায় না কেন সবাই একসাথে যায়। আমরা জানি আনন্দটা সবাই মিলে একসাথে কিভাবে ভাগ করে নিতে হয়। বিজয় দশমীর দিনে প্রতিবছর সবাই দুপুর ১২ঃ০০ টার ভিতরে নতুন গেঞ্জি পড়ে মন্দিরে চলে আসি।
আর মন্দিরে আসার পরেই শুরু হয়ে যায় ছবি তোলা আর আরতি করা। প্রতিবছরে এই বিজয় দশমীর দিনে মন্দিরে আসার পর একবার ছবি তোলা শুরু হয়ে গেলে আর থামাথামির কোন সিস্টেম নেই। তবে সবার সাথে এরকম সুন্দর মুহূর্তের ছবি উঠতে বেশ ভালই লাগে আমার কাছে। আসলে এই ছবিগুলো স্মৃতি হয়ে রয়ে যাবে চিরকাল। আমাদের সবাইকেই একদিন এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে কিন্তু এই সুন্দর মুহূর্তের ছবিগুলো থেকে যাবে স্মৃতি হয়ে।
আমার কাকাতো ভাই আদিত্য বিশ্বাস বেশ ধর্ম পরায়ণ। শ্রী শ্রী মা দুর্গার প্রতি তার ভালোবাসাটা অনেক। আপনারা দেখুন এই ছবিতে কতটা ভক্তিভরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাকে প্রণাম করছে। পিতা মাতার দেওয়া সঠিক শিক্ষা প্রতিটি শিশুকে সুন্দর করে তোলে। প্রতিটি শিশুর ভেতরে এই ধর্মীয় জ্ঞান থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। তাহলে প্রতিটি শিশু তার সৃষ্টিকর্তার বিশ্বাস করবে।
আমার কাকাতো ভাই সার্থক বিশ্বাস এ বছরে পূজার দিনে বেশ মজা করেছে। যদিও আমার কাকা অর্থাৎ সার্থকের বাবা সিঙ্গাপুরে থাকলে ও আরো বেশি মজা করতে পারতো। তারপরেও আমাদের বাড়ির সবাই আমরা সার্থককে অনেক আগলে রাখি। আমাদের বাড়ির সবার ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু হলো সার্থক। আমি যখনই বাড়িতে যাই আমি সব সময় ওকে কোলে করে নিয়ে ঘুরে বেড়াই। আসলে ছোট বাচ্চাদেরকে ভালবাসতে আমার সবথেকে বেশি ভালো লাগে। এবারে দুর্গাপূজাতে বিজয় দশমীর দিনে অনেক বেশি মজা পেয়েছি।
আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ৮ম পর্ব"আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আবার অন্য একটি পোস্টে "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ৯ম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
পোষ্টের ছবির বিবরণ
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:কুষ্টিয়া
তারিখ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-৮ম পর্বের ফটোগ্রাফি ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon