"শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ২য় পর্ব"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ৪ঠা নভেম্বর, শনিবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা। আজকে আমি আপনাদের সাথে মহা সপ্তমীতে করা ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজা দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন ছোট ছিলাম মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা এদের হাত ধরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজা দেখতাম। তারপর একটু বড় হলে বাইসাইকেলে করে বন্ধুদের সাথে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার এই চারটি দিনে পুজো দেখার পাল্লা দিতাম। আমার শৈশবের শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার সময়টা সত্যি অনেক মধুর ছিলো। আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ২য় পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে ৷৷
প্রতিবছর শরৎকালের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, দুর্গাসপ্তমী,মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে "অকালবোধন" বলা হয়।
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার গমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
এই বছর শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। এটা আমাদের সবার জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
বর্তমানে তো দেখতেই পাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতির প্রবল আগ্রাসন এবং বিভিন্ন মহামারী ও যুদ্ধ লেগেই আছে। তাই বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সবার প্রার্থনা মা দুর্গা আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করুক। কারণ তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা মহাশক্তি মহামায়া।
কয়েকটি ফটোগ্রাফিকে একত্রিত করে কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
মহাসপ্তমী পূজার ফটোগ্রাফি:-
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: ঢাকেশ্বরী মন্দির, ঢাকা
তারিখ: ২১ অক্টোবর ২০২৩
শ্রী শ্রী মাতা দুর্গার মূর্তি দর্শন করার পরে হর হর মহাদেব আর মা কালীর মন্দিরের সামনে আসি। মন্দিরের সামনে আসতে মনটা ভরে গেলো। এর আগেও আমি অবশ্য একবার আমার বড় দাদাদের সাথে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এসেছিলাম। তখন অবশ্য দুর্গাপুজোর সময় ছিল না, তাই হর হর মহাদেব আর মা কালীর মন্দির দর্শন করে চলে গিয়েছিলাম।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: ঢাকেশ্বরী মন্দির, ঢাকা
তারিখ: ২১ অক্টোবর ২০২৩
এই মন্দিরের সামনে আসতে দেখলাম অনেক ভক্তবৃন্দ মন্দিরের সামনে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালাচ্ছে। তারা প্রদীপ জ্বালিয়ে মনের যতো অন্ধকার আছে সব দূর করার প্রচেষ্টা করছে আর সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছে। এখানে ছোট বাচ্চা ভক্তবৃন্দ থেকে শুরু করে বৃদ্ধ ভক্তবৃন্দরাও প্রদীপ জ্বালিয়ে সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করছে।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: ঢাকেশ্বরী মন্দির, ঢাকা
তারিখ: ২১ অক্টোবর ২০২৩
তারপর আমি কিছু সময় মন্দির সামনে দাঁড়িয়ে থেকে মন্দিরে ঢোকার ঘন্টা বাজিয়ে মন্দিরে ঢুকলাম। ভিতরে ঢুকেই দেখি অনেক জায়গা আর সুন্দর মনোরম পরিবেশ। এখানে ভক্তবৃন্দরা এসে হর হর মহাদেবা শ্রী শ্রী মা কালীর প্রণাম করে। আমি এর আগের বার এসে এই জায়গাটিতে বেশ কিছু সময় বসে ছিলাম। আসলে এমন সুন্দর জায়গাতে বসে থাকলে হৃদয়ের শান্তি অনুভব হয়। যখন কারো হৃদয় অশান্ত থাকে তখন মন্দিরে এসে বসে থাকবেন অবশ্যই আপনার হৃদয় শান্তি অনুভব হবে।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: ঢাকেশ্বরী মন্দির, ঢাকা
তারিখ: ২১ অক্টোবর ২০২৩
প্রথমে ঢুকেই আমি হর হর মহাদেবের মন্দিরের সামনে চলে গেলাম। আর সেখানে গিয়ে হর হর মহাদেব কে প্রণাম জানালাম। আর আমার নিজের এবং সবার জন্য হর হর মহাদেবের কাছে প্রার্থনা করলাম। হর হর মহাদেব কে দেবাদিদেব বলা হয় অর্থাৎ সকল দেব দেবতার আদি হলেন হর হর মহাদেব।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: ঢাকেশ্বরী মন্দির, ঢাকা
তারিখ: ২১ অক্টোবর ২০২৩
তারপর আমি আবার শ্রী শ্রী মা কালী মন্দির সামনে গেলাম। এখানকার মন্দিরের সামনে দেখলাম বেশ ভালই ভীর হয়েছে। অনেক ভক্তবৃন্দ দূর দুরান্ত থেকে এসেছে মাকে প্রণাম করে প্রার্থনা করার জন্য। আমিও শ্রী শ্রী মা কালী কে প্রণাম করে প্রার্থনা করলাম।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: ঢাকেশ্বরী মন্দির, ঢাকা
তারিখ: ২১ অক্টোবর ২০২৩
হর হর মহাদেব আর শ্রী শ্রী মা কালীর মন্দিরের পাশেই দেখি দেয়ালে হনুমানজির মূর্তি খোদাই করা রয়েছে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন হনুমানজি হলেন শ্রী রামচন্দ্রের পরম ভক্ত। আর রামচন্দ্র ছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অবতার। ক্রেতা যুগে শ্রী শ্রী রামচন্দ্র লঙ্কার রাজা রাবণ বধের মাধ্যমে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে। আমি দেয়ালে খোদাই করা হনুমানজি কে প্রণাম করলাম। ক্রেতা যুগে হর হর মহাদেব হনুমানজি রূপে শ্রী শ্রী রামচন্দ্রকে সাহায্য করার জন্য আবির্ভূত হয়েছিলেন।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: ঢাকেশ্বরী মন্দির, ঢাকা
তারিখ: ২১ অক্টোবর ২০২৩
তারপর আমি হর হর মহাদেব আর শ্রী শ্রী মা কালীর মন্দিরের থেকে বেরিয়ে এসে বাইরে দাঁড়িয়ে দেখলাম চারটি মঠ বিশিষ্ট পাশেই মন্দির রয়েছে। শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী মন্দিরের এই চারটি মঠ খুবই সুন্দর লাগে আমার কাছে। দূর থেকে দেখতে এই মাঠগুলো অনেক ভালো লাগে।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: ঢাকেশ্বরী মন্দির, ঢাকা
তারিখ: ২১ অক্টোবর ২০২৩
এই মঠ মন্দিরের পেছনের দিকেই রয়েছে শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী মন্দিরের বিশাল একটি পুকুর। শ্রী শ্রী মাতা দুর্গাপূজা উপলক্ষে হয়তো ঢাকেশ্বরী মন্দিরের এই সুন্দর পুকুরটি আরো সৌন্দর্যময় করার জন্য লাইটিং করা হয়েছিলো। এবারে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের শ্রী শ্রী দুর্গা পূজা দেখতে পেলে মনের ভিতরে অনেক ভালো লাগা কাজ করতেছিলো।
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১ম পর্বের ফটোগ্রাফি ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
দেবি দূর্গার আগমন গমন কোন বাহনে হবে এটা শুভ অশুভ দিক বহন করে এটা আমি আগেও শুনেছি। ঢাকেশ্বরী মন্দির টা ঢাকার মধ্যে অনেক জনপ্রিয়। বলা হয় এই মন্দিরের নাম থেকেই ঢাকার নাম হয়েছে ঢাকা। এখানে দেখছি আরও অন্য দেবতাদের মূর্তি রয়েছে। এবং বেশ দারুণ সাজিয়েছে। আপনার পুজা পরিক্রমা টা বেশ দারুণ লাগল। চমৎকার ছিল।
হ্যাঁ ভাই ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নামের ভিত্তিতে ঢাকা নাম হয়েছে। এখানে দুর্গা মন্দিরের পাশাপাশি অনেকগুলো মন্দির রয়েছে প্রতিটি মন্দিরে অনেক সুন্দর আর সুসজ্জিত। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর কমেন্ট করার জন্য।
শারদীয় দুর্গাপূজা আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছে। তবুও দুর্গা পূজায় কাটানো আনন্দ এবং উৎসব আমাদের মাঝে বিরাজ করতেছে। শারদীয় দুর্গাপূজা বেশ সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আজকের পর্ব দেখে খুব ভালো লাগলো। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুকুরটি সৌন্দর্য বেশ অসাধারণ। প্রতিমা গুলো দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। এত চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আজকের পর্বটি দেখে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। আনন্দগুলো এভাবেই হৃদয়ে থেকে যাবে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য।