"সুনামগঞ্জের লাকমাছড়া ভ্রমণ-২য় পর্ব"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ-৮ই ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার,২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
কয়েকটি ছবিকে একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম যে, লাকমাছড়া তে আসলে তেমন কোন সৌন্দর্যই নেই। কিন্তু এই জায়গাটিতে যাওয়ার পর আমাদের ধারণায় পাল্টে গেছে। আমরা মোটামুটি হাফ কিলোমিটার মতো রোদের ভেতরে হেঁটে এই জায়গাটিতে পৌঁছেছিলাম। প্রচন্ড রোদের ভিতর হেঁটে এসে এমন সুন্দর প্রাকৃতিক জায়গা দেখলে আসলে হৃদয় ভরে ওঠে। এখানে চারপাশে শুধু সবুজ মেঘালয় পাহাড় আর পাহাড়ের নিচের গিরিখাত দিয়ে বেয়ে আসছে লাকমাছড়া ঝর্ণার জল।
আমাদের হৃদয় মুহূর্তেই প্রশান্তিতে ভরে উঠলো। আমরা মোটামুটি ৫০০ মিটার মতো যে, পথেহেঁটে এসেছিলাম পুরোটাই ছিল বালির পথ আর ঝর্ণার জল বেয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু এই জায়গাটিতে পুরোটাই পাথরের উপর দিয়ে লাকমাছড়া ঝর্ণার জলের স্রোত যাচ্ছে। এই জায়গাটিতে যাওয়ার পর আমার বড় দাদা তো সাথে সাথেই স্যান্ডেল খুলে লাকমাছড়া ঝর্ণার স্রোতের পানির ভেতরে নেমে গেল।
তারপর শুরু হয়ে গেলো বিভিন্ন স্টাইলে ছবি উঠা। এই জায়গাটিতে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে ঝর্ণার জলের প্রচন্ড স্রোত। এই প্রচন্ড স্রোতে মোটামুটি হাঁটুপানি পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা যাচ্ছিল তার একটু নিচে নামলে মনে হচ্ছিল যে, স্রোত ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিচ্ছে। এই জায়গাটিতে অবশ্য অনেকে এসে দেখছিলাম যে, গোসল করতেছে কিন্তু আমরা গোসল করার প্ল্যানিং করে এসেছিলাম না বলে একটু আফসোস করতে হয়েছিলো। কারণ ঠান্ডা জলে গোসল করতে খুব ইচ্ছে করছিলো।
তারপরেও এই জায়গাটিতে ঝর্না স্রোতের জলের ভেতরে নেমে দাঁড়িয়ে থাকতে ভীষণ ভালো লাগছিলো। যেহেতু আমরা এই জায়গাটিতে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছিলাম তাই বেশি একটা ফটোগ্রাফি না করে জলের ভেতরে ঘুরে ঘুরে এখনকার মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করছিলাম। তারপর হঠাৎ করে এই মাথায় একটা বুদ্ধি চলে আসলো। তখন ভাবলাম যে, কয়েকটা পাথর গুছিয়ে স্রোতের ভেতরে একটা উঁচু টাওয়ার বানায়।
যে কথা সেই কাজ সাথে সাথেই চ্যাপ্টা ধরনের ৭-৮টা পাথর জোগাড় করে ফেললাম। তবে এ ধরনের চ্যাপ্টা পাথর খুঁজতে আমাকে বেশ কয়েক মিনিট সময় লেগেছিল। কারণ অনেক পাথরের ভিতর এ ধরনের চ্যাপ্টা পাথর খুঁজে পাওয়াটা বেশ মুশকিল। তারপর শুরু করলাম তার বানানোর কাজ। যে জায়গাটিতে সব থেকে বেশি স্রোত সেই জায়গাতে চলে গেলাম। তারপর এমন একটা বড় পাথর খুজলাম যেটা আগে থেকেই সেখানেই শক্ত ভাবে রয়েছে আর তার উপর দিয়ে ঝর্না স্রোত বেড়ে যাচ্ছে।
তারপর আমি শুরু করলাম টাওয়ার বানানোর কাজ। প্রচন্ড স্রোতের ভেতর অবশ্য টাওয়ার বানানোর সময় কয়েকবার টাওয়ার ভেঙে পড়েছিল এবং আমার চ্যাপ্টা পাথর বেশ কয়েকটা হারিয়ে গিয়েছিল। আবার অবশ্য নতুন চ্যাপ্টা পাথর খুঁজে এনে কাজ চালিয়ে যেতে হয়েছিল। শুধুমাত্র এই টাওয়ার বানানোর জন্যই আমি আধা ঘন্টার উপরে ব্যয় করেছিলাম এই জায়গাটিতে। তারপর অনেকটা কষ্টের পরে আমার জোগাড় করা ছয়টি পাথর দিয়ে টাওয়ারটা বানালাম।
তারপর ভাবলাম যে আরেকটা যদি পাথর দিতে পারতাম তাহলে মোট সাতটা পাথর দিয়ে বানাতে পারলে একটু মনের কাছে বেশি ভালো লাগ। আমি আরেকটি ছোট গোল পাথর খুঁজে আনলাম। কিন্তু এত কষ্ট করে ছয়টি পাথর দিয়ে বানিয়েছি এর উপরে আরো একটি পাথর দিতে একটু ভয় ভয় লাগছিল কারণ যদি আবার ভেঙ্গে যায়! তারপর অনেক সাবধানতা অবলম্বন করে সাত নাম্বার পাথরটিও টাওয়ারের সাথে যুক্ত করতে পারলাম। সত্যি বলতে এই টাওয়ারটি বানানোর পরে মনের ভিতর অনেক ভালো লাগা কাজ করছিল মনে হচ্ছিল যে, কোন একটা কঠিন কাজে সাকসেসফুল হয়েছি। কারণ প্রচন্ড স্রোতের ভেতরে এভাবে টাওয়ার বানানো টা অতটা সহজ নয়, যতটা আমি টাওয়ার বানানোর প্রথমে ভেবেছিলাম।
সুনামগঞ্জের লাকমাছড়া ভ্রমণ- ২য় পর্বটি আজকে পর্যন্তই শেয়ার করলাম পরবর্তী একটি পোস্টে ৩য় পর্ব আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: সুনামগঞ্জ, সিলেট
তারিখ: ৩০ শে আগস্ট ২০২৩
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
সুনামগঞ্জের লাকমাছড়া জায়গায় ঘুরতে গিয়ে দারুন সময় অতিবাহিত করছেন। আপনি ঠিক বলেছেন মানুষের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার ও প্রয়োজন হয় আর মানসিক সুস্থতার জন্য এমন সুন্দর জায়গায় ঘুরতে গেলে শরীর ও মন দুটোই ভালো হয়ে যাবে। আপনি প্রকৃতির অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। মেঘালয় ও ঝর্না স্রোতের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
সত্য কথা বলতে ভাইয়া সুনামগঞ্জ এত সুন্দর আমি কখনোই জানতাম না, আমি সুনামগঞ্জে গিয়েছিলাম ওখানে ছিলাম কিন্তু এত সুন্দর সুন্দর দৃশ্য মিস করেছি এবার যদি যায় সম্পূর্ণ দৃশ্য ঘুরবো এবং আপনি অনেক সুন্দর করে বিস্তারিতভাবে মুহূর্তগুলো তুলে ধরেছেন, আমার ভীষণ ভালো লাগলো।
যখনই কাউকে দেখে নতুন কোন কিছু বিষয় সম্পর্কে আমাদের মাঝে পোস্ট শেয়ার করেছে বা ভ্রমণ করতে গিয়ে সেই বিষয়ে ধারণা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছে এ থেকে কিন্তু আমরা নতুন কোন কিছু দেখাও জানার সুযোগ পেয়ে যায়। আজকে আপনি নতুন একটি জায়গা সম্পর্কে আমাদের মাঝে ধারণা দিয়েছেন তাই খুবই ভালো লাগলো আমার। আশা করব এভাবে আরো অনেক কিছু আমাদের মাঝে তথ্য তুলে ধরবেন আর নতুন স্থান দেখার সুযোগ করে দিবেন।
আপনি সুনামগঞ্জের লাকমাছড়া ভ্রমণ করতে গিয়েছিলেন, দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লাগলো। আপনি সেখানে গিয়ে পাথর দিয়ে টাওয়ার বানানোর চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু প্রচন্ড বাতাসের কারণে আপনার পাথরের তৈরি করা টাওয়ার ভেঙ্গে যাচ্ছিলো। আপনি আমাদের মাঝে অসাধারণ একটি ভ্রমণ কাহিনী তুলে ধরেছেন।
হ্যাঁ ভাই সুনামগঞ্জে লাকমাছাড়া ভ্রমণ অনেক সুন্দর ছিল আমাদের জন্য। আসলে ভাই পাথরে বানানো টাওয়ারটি বাতাসের কারণে নয় জলের স্রোতের কারণে ভেঙে যাচ্ছিল বারবার। সুন্দর সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করে বাসায় থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
সুনামগঞ্জে কখনোই যাওয়া হয়নি৷ তবে এই স্থানে ভ্রমন করার আমার অনেক ইচ্ছে রয়েছে৷ সময় পেলে অবশ্যই এই স্থানে ভ্রমন করে আসবো৷ আপনি আজকে এই স্থানে ভ্রমণ করার খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন ও সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। এই ভ্রমণের মধ্য দিয়ে আপনার কাছ থেকে এই জায়গা সম্পর্কে অনেক ধারণা পেয়ে গেলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ।
যদি তেমন সময় হয় অবশ্যই সুনামগঞ্জে এগিয়ে ঘুরে আসবেন আশা করি বেশ ভালো লাগবে। আমার পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করে সবসময় পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
সুনামগঞ্জ জায়গাটি তো দারুন।আপনার ফটোগ্রাফি গুলো জাস্ট চমৎকার লাগছে।অনেক গুলো পাথর জড়ো করে বেশ সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন।ভালো লাগলো পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু সুনামগঞ্জ জায়গাটা অনেক সুন্দর জায়গা। পাথর দিয়ে একটা টাওয়ার বানিয়েছিলাম সুন্দর করে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।