ভ্রমণ:- "সুনামগঞ্জের লাকমাছড়ার পথে"

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago (edited)


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ-৩রা ফেব্রুয়ারি, শনিবার,২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



কভার ফটো

কয়েকটি ছবিকে একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আজকে আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। প্রতিনিয়ত আপনাদের সামনে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনারা অনেকে জানেন যে, আমি গত বছরে আগস্ট মাসের শেষের দিকে সিলেটে ভ্রমণে বেরিয়েছিলাম। এই ভ্রমণটা আমার জীবনের সবথেকে বড় একটি ভ্রমণ ছিলো। আর এই ভ্রমণ থেকে আমি অনেক জ্ঞানলাভ করতে পেরেছি। আসলে মানুষের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার ও প্রয়োজন হয় আর মানসিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি ভ্রমণ করা আর জ্ঞান লাভ করা। এর আগে আমি সুনামগঞ্জ মিনি কক্সবাজার ভ্রমণ, পদ্মবিল ভ্রমণ, ফ্লাওয়ার গার্ডেন ভ্রমণ, সুনামগঞ্জের হাওর বিলাস ভ্রমণ, শিমুলবাগান ভ্রমণ ১ম ও ২য় পর্ব, অ্যাডভেঞ্চার জাদুকাটা নদী ভ্রমণ সুনামগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খোঁজে ১ম পর্ব, ২য় পর্ব, ৩য় পর্ব‌ও ৪র্থ পর্ব, সুনামগঞ্জের নীলাদ্রি লেক- ১ম পর্ব ও ২য় পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আর আজকে আমি "সুনামগঞ্জের লাকমাছড়ার পথে" ভ্রমণ কাহিনী আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

সুনামগঞ্জের নীলাদ্রি ভ্রমণ শেষ করে আমাদের পরবর্তী উদ্দেশ্য ছিল টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ করার। টাঙ্গুয়ার হাওর যেহেতু ভ্রমন করতে আমাদের অনেক সময়ের প্রয়োজন হবে তাই আমরা একটু আগে আগেই নীলাদ্রি থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে উদ্দেশ্যে টেকেরঘাটের দিকে রওনা দেই। দুপুরের প্রচণ্ড রোদের ভেতরে নীলাদ্রি ভ্রমণ করে সবাই বেশ ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম। তবে পাহাড়ের পাশ দিয়ে বাইকে করে জার্নি করার সময় মনের ভিতর অনেক ভালো লাগা কাজ করে।

টেকেরঘাটে যাওয়ার সময় নীলাদ্রি পার হয়েই লেবুর ড্রিংকসের দোকানের সামনে বাইক থামিয়ে সবাই একটু রেস্ট নিলাম। তারপর একটু রেস্ট নেয়ার পরে সবার জন্য লেবুর ড্রিঙ্কসের অর্ডার দিলাম। কারণ প্রচন্ড গরম আর রোদের ভিতর লেবুর ড্রিংকসটা সত্যি বেশ উপকারী। যাইহোক লেবু ড্রিংকস খেয়ে দোকানদারকে টাকা দিয়ে তারপর বন্ধু রাহুলের বাইকে উঠতে গিয়েছি তখন দেখি যে আমার ব্লু কাট চশমাটা পকেটে নেই।

তখন মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল অবশ্য ব্লুকাট চশমাটা হারানোর পেছনে কারণ ছিল যে, ব্লু কাঠ চশমাটা পকেটে রেখে সানগ্লাসটা চোখে দিয়েছিলাম। নীলাদ্রি লেকের পাশের বাজারে যেহেতু ছিলাম তাই বন্ধু রাহুলের থেকে বাইক নিয়ে চশমাটা খুঁজতে বের হলাম। অল্প একটু পদাতিক্রম করার পরে দেখি যে, আমার ব্লু কাট চশমাটা পড়ে রয়েছে। যাইহোক চশমাটা পাওয়ার পরে মনের ভিতর বেশ ভালো লাগছিল। কারণ চোখের সমস্যার কারণে ডাক্তার দেখিয়ে চশমাটা নিয়েছিলাম তাই প্রতিনিয়ত এই চশমাটা ব্যবহার করাটা বেশ জরুরী ছিলো।

চশমাটা পাওয়ার পরেই বেশি দেরি না করে আমরা সোজা চলে যাই টাকের ঘাটে। নীলাদ্রি থেকে টেকেরঘাট বেশি দূরে না পাশাপাশি কয়েক কিলোমিটার মতো। এই টেকের ঘাট থেকে নৌকা নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ করে তাহিরপুর বাজারে নেমে আমরা আমাদের গন্তব্যে যাবো এমনটা প্ল্যানিং করেছিলাম। আমরা টেকের ঘাটে দুপুরের সময় গিয়ে দেখি যে, মাত্র কয়েকটি নৌকা ঘাটে বাঁধা রয়েছে। টেকের ঘাটে নৌকা ঘাটে কিছু সময় অপেক্ষা করার পর মাত্র একজন নৌকার মাঝি আসলে এবং আমরা তার সাথে কথা বললাম।

আমরা প্রথমে নৌকার মাঝির সাথে কথা বলে একটু অবাক হলাম কারণ আমরা নৌকার দাম যেমনটা বাইরে থেকে শুনেছিলাম বা ইউটিউবে ভিডিও দেখে জেনেছিলাম তার থেকে অনেক টাকা বেশি চাচ্ছিলো। আসলে মেইন কারণটা ছিল দুপুর আর এই দুপুরের সময়ে নৌকা ঘাটের সব মাঝিরা বাসায় খাইতে যায় আর এই জন্যই ঘাটে কোন নৌকা থাকে না বললেই চলে। এখানকার নৌকার মাঝি আমাদের কাছে চাচ্ছিল দুই হাজার টাকা নৌকা ভাড়া আর আমরা ইউটিউবে ভিডিও দেখেছিলাম সেখানেই বলেছিল যে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকার ভিতরে নৌকা ভাড়া হয়ে যায়।

তারপর স্থানীয় একজন আমাদেরকে বলল যে, আপনারা একটু সময় অপেক্ষা করেন দুপুরের দিকে নৌকার মাঝিরা খাবার খাইতে বাসায় যায় একটু পরেই আবার চলে আসবে তখন নৌকা ভাড়া অনেক কম লাগবে। আমরা এই স্থানীয় ব্যক্তিটির কথা শুনে পাশের একটি দোকানে গিয়ে চা বিস্কুট খেতে খেতে দোকানদারের সাথে বিভিন্ন রকম গল্প শুরু করলাম। তখন দোকানদার আমাদেরকে বলল যে, আপনারা দুপুরের সময় এখানে বসে না থেকে পাশেই আর একটি পর্যটন কেন্দ্র আছে লাকমাছড়া সেখানে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।‌ এখান থেকে দুই কিলোমিটার হবে অনেক সুন্দর একটি জায়গা গেলেই বুঝতে পারবেন।

তারপর আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, এখানে বসে থেকে সময় নষ্ট না করে লাকমাছরা থেকে ঘুরে এসে তারপরে আমরা নৌকা ভাড়া করে টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ করবো। তারপর আমরা বাইক নিয়ে বের হয়ে গেলাম লাকমাছড়ার উদ্দেশ্যে মোটামুটি দুই কিলোমিটার মত পথ যেতে আমাদের বেশি সময় লাগলো না। তারপর সেখানে গিয়ে দেখি কয়েকটি লেবু ড্রিংকস এর দোকান রয়েছে। আমরা আবার সবাই মিলে এই লেবু ড্রিংকসের দোকান থেকে লেবু ড্রিংকস খেলাম।

সুনামগঞ্জের লাকমাছড়া ভ্রমণ কাহিনী পর্বটি পরবর্তী একটি পোস্টে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো



পোস্টের ছবির বিবরণ


ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: সুনামগঞ্জ, সিলেট
তারিখ: ৩০ শে আগস্ট ২০২৩



প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



আমি কে !

20230826_112155.jpg

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 5 months ago 

সুনামগঞ্জ ভ্রমণ নিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। একঘেয়েমী থেকে নিস্তার পেতে মাঝে মাঝে ভ্রমণ দাওয়াই হিসেবে কাজ করে। অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুনামগঞ্জ।সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন ভ্রমণের।খুটি নাটি সব তুলে ধরেছেন। ছবি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে,পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 5 months ago 

মনের একঘেয়েমি থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য মাঝেমাঝে প্রকৃতির মাঝে ভ্রমণ করাটা জরুরী। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 5 months ago 

নদীতে চলাচল নতুন কোন স্থানে ভ্রমণ এই সমস্ত বিষয়গুলো আমার খুবই ভালো লাগে। আজকে আপনি আমাদের মাঝে সুনামগঞ্জের বিশেষ কিছু জায়গা দৃশ্য ব্লগের মাধ্যমে শেয়ার করেছেন দেখে অনেক অনেক ভালো লাগলো। পাশাপাশি ওই জায়গার বিশেষ কিছু দেখার সাথে সাথে বর্ণনা খুঁজে পেলাম।

 5 months ago 

আমি চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে ভ্রমন পোস্টটি আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 5 months ago 

পর্যায়ক্রমে সুনামগঞ্জের প্রতিটা পর্বই উপভোগ করছি যাইহোক দুপুরের প্রচন্ড রোদে নীলাদ্রি ভ্রমণ করেছিলে। যেহেতু তখন গরমের মৌসুম ছিল তাই ড্রিংস পান করেছিলে যাই হোক সুন্দর সুন্দর জায়গার দৃশ্যগুলো সম্পর্কে রিভিউ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ বন্ধু।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

পর্যায়ক্রমে সুনামগঞ্জের ভ্রমণের প্রতিটা পর্বের সুন্দর উপভোগ করছো যেন ভালো লাগলো বন্ধু। সুন্দর সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 5 months ago 

সুনামগঞ্জ ভ্রমণ করতে গিয়েছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। টাঙ্গাইল হাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন কারণ আপনারা ওখানেও ঘুরতে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেখলাম। বিশেষ করে যেতে যেতে সবাই অনেক ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার কারণে লেবুর ড্রিঙ্কস খেলেন দেখলাম। তাছাড়া এরকম জার্নি করলে বেশ ক্লান্ত লাগে। কিন্তু আপনারা তাও চেষ্টা করেছেন ওখানে যাওয়ার জন্য। বিশেষ করে নৌকার মাঝি আপনাদের কাছ থেকে বেশ অনেকটাই দাম চেয়েছে। আসলে এরকম অনেক জায়গায় হয়ে থাকে দুপুরে নৌকা কম থাকার কারণে তারা হঠাৎ করে দাম বাড়িয়ে ফেলে। কিন্তু যারা না জানে তারা হুট করে চলে যায়। আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো।

 5 months ago 

হ্যাঁ আপু দুপুরের সময় হওয়ার কারণে নৌকার মাঝি আমাদের থেকে নৌকা ভাড়াটা অনেক বেশি চাচ্ছিলো। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57062.81
ETH 3068.42
USDT 1.00
SBD 2.43