"টিকিট কেলেঙ্কারি"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ২৭ ই মার্চ, বুধবার, ২০২৪ খ্রিঃ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। ঢাকা থেকে বেশ কিছুদিন হল গ্রামের বাড়িতে এসেছি গ্রামীণ পরিবেশে এসে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করছি। যদিও বর্তমানে দিনগুলো অনেক ব্যস্ততায় কাটছে তারপরেও বেশ ভালোই আছি। আমি বেশিরভাগ সময়ই ঢাকা থেকে বাইকে করে যাওয়া আসা করি। সব সময় চেষ্টা করি আমি আর আমার বন্ধু রাহুল বাইকে করে চলাফেরা করার। সত্যি বলতে বাইকে করে ঘুরতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। এর আগের বার যখন আমি বাইকে করে বন্ধু আর বড় ভাইরা মিলে একসাথে ফিরছিলাম তখন টিকিট নিয়ে আমাদের সাথে ফেরিঘাটে একটা ঘটনা ঘটেছিল আমি এখন সেই ঘটনায় আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আমার আর আমার বন্ধু রাহুলের যখনই ঢাকাতে থাকতে ইচ্ছা করে না তখনই বাড়িতে চলে আসি বাইক নিয়ে। আমরা দুজনেই বাইক নিয়ে ঘোরাফেরা করতে ভীষণ পছন্দ করি। আমাদের এলাকাতে যারা স্টিমিটে কাজ করে বন্ধু আর বড় ভাইয়েরা সবাই বাইক লাভার। কিছুদিন আগে এক বন্ধু আর বড় ভাই চাকরি পরীক্ষার জন্য বাইক নিয়ে ঢাকাতে আমাদের মেসে গিয়েছিল। তাদের চাকরির পরীক্ষা আর আমাদের ইউনিভার্সিটি মিডটার্মের শেষ পরীক্ষা ছিল একই দিনে। তাই আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিজে একসাথে বাইক নিয়ে বাড়ি যাবো।
আমাদের সবার পরীক্ষা শেষ করেই বিকালের দিকে ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিই। সেদিনে জ্যাম কম থাকায় ঢাকা থেকে আমরা পাটুরিয়া চলে আসি খুব তাড়াতাড়ি। পাটুরিয়া ঘাটে টিকিট কাউন্টারে আসার পরে আমি আর বন্ধু রাহুল যে, বাইকে ছিলাম সেটা ছিল আগে আর আমাদের পেছনের বাইকে ছিল আবার আরেক বন্ধু আর এক বড় ভাই। পাটুরিয়া ফেরিঘাটে সাধারণত টিকিট কাউন্টার থেকে আনসার সদস্যরা টিকিট বিক্রি করে। প্রথমে আমার বন্ধু মোস্তফা একটি গাড়ির টিকিটের জন্য ১৪০ টাকা দিলো। তারপর আমিও আমাদের বাইকটার জন্য আরো ১৪০ টাকা দিলাম আনসার সদস্যের কাছে।
তারপর আমরা পদ্মা নদী পার হয়ে দৌলতদিয়াতে যাওয়ার জন্য ফেরিঘাটে গেলাম। আমরা ফেরিঘাটে গিয়েই দেখি যে একটি ফেরি লোড দিচ্ছে। আর গেটে সেখানকার অবস্থানরত কর্মচারীরা টিকিট চেক দিচ্ছে। আর বন্ধু রাহুল বাইক ড্রাইভ করছিলো তাই আমাকে বলল যে, টিকিট নিয়ে রেডি কর। তখন আমি বন্ধু রাহুলকে বললাম আমার কাছে তো আনসার সদস্য টিকিট দেয় নাই আমি শুধুমাত্র ১৪০ টাকা দিয়েছি। আমাদের বন্ধু মস্তফা টিকিট নিল তাই আমি আমি আনসার সদস্যের কাছে কোন টিকিট চাইনি। তখন বন্ধু রাহুলকে বললাম গাড়ি একটু স্লো কর ওরা আসুক ওদের কাছে আমাদের টিকিট আছে।
তারপর একটু দাঁড়াতেই ওদের গাড়িটিও চলে আসলো। তখন আমি ওদের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম আমাদের টিকিট কি তোদের কাছে দিয়েছে? তখন ওরা বলল না তো আমরা শুধুমাত্র আমাদের টিকিটটা নিয়ে এসেছি। কিন্তু আমি এটা ভেবে নিয়েছি যে, আমরা টাকা দুই জায়গা থেকে দিলেও টিকিট একজনের কাছেই দিয়েছে। তখন আমি বন্ধু রাহুলকে বললাম তাহলে গাড়ি ঘুরিয়ে টিকিট কাউন্টারে যাই, ওরা হয়তো টিকিট দিয়ে দেবে। বন্ধু রাহুল তখন বলল যে, আমাদেরকে টিকিট না দিলেও তো কিছু করার থাকবে না। আমি তখন বন্ধু রাহুলকে আশ্বস্ত করলাম যে, এত তাড়াতাড়ি তো ভুলে যাওয়ার কথা নয় যে টিকিট তারা দেয় নি আমাদেরকে। কারণ এই ঘটনাটা ঘটেছে তিন থেকে চার মিনিট হলো।
আর মানুষের মস্তিষ্ক এতটা খারাপ দেয় নাই যে, মানুষ তিন চার মিনিটের আগের কথা পর্যন্ত ভুলে যাবে। যাই হোক আমরা খুব তাড়াতাড়ি ফেরিঘাট থেকে টিকিট কাউন্টারে ফিরে গেলাম। আমরা যে আনসার সদস্যের কাছে টাকা দিয়েছিলাম টিকিট নেয়ার জন্য তার কাছে বললাম যে, আপনি তো শুধুমাত্র একটি টিকিট দিয়েছেন কিন্তু আমরা তো দুইটি টিকিটের টাকা দিয়েছিলাম। তখন তার প্রথম করা ছিল আপনাদের কাছে কি কোন প্রমাণ আছে ? আমি তখন বললাম যে এখানে তো প্রমাণ থাকার কিছুই নাই আর সিসিটিভি ফুটেজ ও নেই। আমরা যদি টিকিট আপনার কাছ থেকে নিয়ে যেতাম তাহলে আবার এই তিন চার মিনিটের ভেতরেই ফেরত আসতাম না কষ্ট করে।
আমরা প্রথম গাড়ী থেকে ১৪০ টাকা দিয়েছি আর দ্বিতীয় গাড়ি থেকে ১৪০ টাকা দিছি। আপনি শুধুমাত্র আমাদের দ্বিতীয় গাড়িতে টিকিট দিয়েছেন কিন্তু প্রথম গাড়িতে টিকিট দেন। আমরা যেহেতু একসাথে এসেছিলাম আমরা ভেবেছিলাম যে, আপনি দ্বিতীয় গাড়িতেই একবারে দুইটি টিকিট দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমরা ফেরি ঘাটে গিয়ে জানতে পারলাম যে আপনি শুধুমাত্র একটি টিকিট দিয়েছেন। যেহেতু আমি প্রথম গাড়িতে ছিলাম টিকিট নিইনি এবং কত টাকার নোট দিয়েছি এবং কত টাকা আপনি ব্যাক দিয়েছেন আমার সবকিছুই মনে আছে। আমাদের এখানে একটা ভুল ছিল প্রথমে টাকা দিয়ে টিকিটটা তার কাছ থেকে বুঝে নেওয়া। কিন্তু সবাই মিলে গেলে এরকম ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার।
তারপর তাদের ভেতরেই একজন আপনি টাকা মিলায়ে দেখেন যে ঠিক আছে কিনা যদি টাকা বেশি থাকে তাহলে তাদের টিকিট দিয়ে দিয়েন। যাই হোক তার কথা শুনে তখন আনসার সদস্য টাকা গোনা শুরু করলো টাকা গুনা শেষ করে বলল যে, আমার টাকা ঠিক আছে সবকিছুই। আপনারা যদি এখন আমার থেকে টিকিট নেন তাহলে আমার ১৪০ টাকা লস হবে। এই কথাটা শুনে সত্যি মনের ভিতর ভীষণ খারাপ লাগছিল। কারণ আনসার সদস্যের গুনাহ ডাকাতে ১৪০ টাকা বেশি অবশ্যই হবে কারণ আমরা একটি টিকিট না নিয়েই চলে গেছি আমাদের স্পষ্ট মনে আছে। আমাদের মনে থাকলেই তো আর সেটা সবাইকে দেখাতে পারছি না প্রমাণ হিসাবে।
তারপর আমি বন্ধু রাহুলকে বললাম যে, যেহেতু আনসার সদস্য বলে ফেলেছে যে তার ১৪০ টাকা লস হবে যদি আমরা এই টিকিটটি নিই এখন আমাদের উচিত হবে এ টিকিট না নেওয়া। কারণ সৃষ্টিকর্তা বলে একজন আছে বিচারটা তিনিই করবেন। তখন আমরা আনসার সদস্যকে বললাম যে, সমস্যা নেই আমরা আরো ১৪০ টাকা দিচ্ছি আপনি একটি টিকিট দেন। সে আনসার সদস্যর কাছ থেকে আরও ১৪০ টাকা দিয়ে টিকিট নিলাম কিন্তু মনটা ভীষণ খারাপ ছিল। সেদিনে সেই আনসার সদস্যের ব্যবহারটা সত্যি একদম ভালো লাগেনি আমাদের কারোরই।
এখানে টিকিটের মাত্র ১৪০ টাকাটা বড় বিষয় নয়, বিষয়টা হচ্ছে মানুষের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস টা দিন দিন কমেই যাচ্ছে। যদিও আজকে আমাদের উচিত ছিল যে, প্রথমে টাকা দিয়ে টিকিটটা তার কাছ থেকে বুঝে নেওয়া। সত্যি বলতে আমি টিকিট কাউন্টারে থাকা আনসার সদস্যের উপর বিশ্বাস করেছিলাম যে, উনি হয়তো টিকিটটা ফেরত দিয়ে দেবে কারণ অবশ্যই তার কাছে ১৪০ টাকা ও ১ টি টিকিট বেশি থাকার কথা। আনসার সদস্যের কথামতো সেদিনে উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে পারলে টিকিট ফেরত পাইতাম। কিন্তু প্রমাণটা ছিল আমাদের সবার মস্তিষ্কে তাই প্রমাণটা দেখাতে পারিনি।
পোস্টের বিবরন
পোস্টের ধরন | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪ |
ক্যামেরা | ১০৮ মেগাপিক্সেল |
লোকেশন | কুষ্টিয়া |
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
এক টল দুইবার দিয়েছো তোমরা। আসলে এটা তোমাদের ভুল ধারণা ছিল এজন্য এমন একটা ঘটনা ঘটেছে। যাইহোক পরবর্তীতে এরকম ঘটনা আর ঘটার কোন সম্ভাবনা নেই। টিকিট কেলেঙ্কারি নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট লেখার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ বন্ধু এক টল দুইবার দেয়া পড়েছে। আমরা ভুল করেছিলাম তার থেকে টিকিট সাথে সাথে বুঝে না নিয়ে। এরকম ঘটনা আশা করি আর পরবর্তীতে ঘটবে না। অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।