"শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৬ তম পর্ব"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ১৬ই ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার,২০২৪ খ্রিঃ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা। আজকে আমি আপনাদের সাথে শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমনের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজা দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন ছোট ছিলাম মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা এদের হাত ধরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজা দেখতাম। তারপর একটু বড় হলে বাইসাইকেলে করে বন্ধুদের সাথে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার এই চারটি দিনে পুজো দেখার পাল্লা দিতাম। আমার শৈশবের শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার সময়টা সত্যি অনেক মধুর ছিলো। আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৬ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে ৷৷
প্রতিবছর শরৎকালের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, দুর্গাসপ্তমী,মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে "অকালবোধন" বলা হয়।
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার গমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
এই বছর শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। এটা আমাদের সবার জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
বর্তমানে তো দেখতেই পাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতির প্রবল আগ্রাসন এবং বিভিন্ন মহামারী ও যুদ্ধ লেগেই আছে। তাই বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সবার প্রার্থনা মা দুর্গা আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করুক। কারণ তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা মহাশক্তি মহামায়া।
কয়েকটি ফটোগ্রাফিকে একত্রিত করে কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
এই বছরের শারদীয়া দুর্গাপূজাতে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম। আমাদের পাড়ার ইয়াং জেনারেশনরা মিলে আমরা বিজয়া দশমীর একদিন পরে রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুর এ গিয়েছিলাম। এই জায়গাটিতে প্রতিবছর বেশ জাঁকজমকপূর্ণ শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গা উৎসব পালিত হয়। এবারে পুজার ভিতরে অবশ্য আমাদের বাড়ি থেকে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে গিয়েছিল আমাদের পরিবারের লোকজন। আমাকেও এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে যেতে বলেছিলো বাড়ি থেকে কিন্তু আমি পাড়ার ছেলেপেলেরা একসাথে যাবো বলে গিয়েছিলাম না। আমারা বিজয়া দশমীর একদিন পরে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুরে শ্রীশ্রী দুর্গা পূজা দেখতে যাব। আমরা এর আগেও এক বছর নলিয়া জামালপুরে পিকআপ ভাড়া করে পূজা দেখতে গিয়েছিলাম ইয়াং জেনারেশনরা মিলে। তাই এই বছরেও সবাই মিলে একটি পিকআপ ভাড়া করেছিলাম নলিয়া জামালপুরে পূজা দেখতে যাওয়ার জন্য।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার প্রথম ফটোগ্রাফির ছবিটি মহিষ-মর্দিনী দেবীর। এই শক্তি পীঠটি অবস্থিত পাকিস্তানের করাচিতে। শ্রীশ্রী প্রজাপতি দক্ষ মহারাজের কন্যা সতী দেবীর ত্রিনেত্র পড়েছিল এই স্থানে। এই শক্তি পিঠের নামকরণ করা হয়েছিল করবীর শর্করা শক্তিপীঠ। আর এখানকার ভৈরব ছিল ক্রোধীশ। আমার এই ফটোগ্রাফিটি ছিলো শ্রী শ্রী সতী দেবীর ৫১ টি খন্ডের ভিতরে তৃতীয় ফটোগ্রাফি।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার দ্বিতীয় ফটোগ্রাফিটি ছিল সুগন্ধা শক্তি পিঠের শ্রীশ্রী সুগন্ধা দেবীর ফটোগ্রাফি। শ্রী শ্রী প্রজাপতি দক্ষ রাজার কন্যা সতী দেবীর নাকের অংশ পড়েছিল এই স্থানে। বাংলাদেশের বরিশালের গৌরী নদীতে অবস্থিত সুগন্ধা শক্তিপীঠ। এই শক্তি পীঠটি ভীষণ জাগ্রত। এখানকার ভৈরবের নাম ত্র্যম্বক। শ্রী শ্রী মা কালীর ভিন্ন একটি রূপ হলো শ্রী শ্রী সুগন্ধা দেবী।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার তৃতীয় ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী মহামায়া দেবীর ফটোগ্রাফি। এই মহামায়া দেবীর মন্দিরের অবস্থান ভারতের কাশ্মীরের শ্রীনগরে। এটি ভারতের জম্মু-কাশ্মীর শাসিত অঞ্চল। এই মন্দিরের নাম অমরনাথ মন্দির। এখানে শ্রীশ্রী প্রজাপতি দক্ষ রাজার কন্যা সতীর দেহের গলার অংশ পড়েছিলো। এখানকার ভৈরবের নাম হলো ত্রিসন্ধেশ্বর।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার চতুর্থ ফটোগ্রাফিতে রয়েছে শ্রীশ্রী অম্বিকা দেবী। এখানকার শক্তিপীঠের নাম হলো জ্বালামুখী শক্তিপীঠ। এই জায়গাটি ভারতের হিমাচল প্রদেশে অবস্থিত। এখানে প্রজাপতি দক্ষ মহারাজের কন্যা সতী দেবীর জিহ্বা পড়েছিলো। এখানকার ভৈরবের নাম হলো উন্মুত্ত ভৈরব।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার পঞ্চম ফটোগ্রাফিটিতে রয়েছে শ্রী শ্রী ত্রিপুরা মালিনী দেবী। এই দেবীর মন্দির ভারতের পাঞ্জাবে অবস্থিত। এই শক্তিপীঠের নাম হল জলন্ধর শক্তিপীঠ। এখানেই শ্রী শ্রী প্রজাপতি মহারাজ দক্ষের কন্যা সতী দেবীর প্রথম স্তন পড়েছিলো। এখানকার ভৈরবের নাম হলো ধীষন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার ষষ্ঠ ফটোগ্রাফিতে রয়েছে শ্রী শ্রী মহাশিরা দেবী। এখানকার পিঠ রক্ষক খুব ভৈরবের নাম কপালী। এই মন্দিরটি নেপালের কাঠমুন্ডর পশুপতিনাথ মন্দিরের পাশেই গুহ্যেশ্বরী মন্দির নামে খ্যাত। এই মন্দিরের রক্ষক ভৈরবের নাম কপালী।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার সপ্তম ফটোগ্রাফিতে রয়েছে শ্রী শ্রী দাক্ষায়নী দেবী। এখানকার এই শক্তিপীঠের নাম মানষ শক্তিপীঠ। এই শক্তিপীঠের অবস্থান তিব্বতের মানষ সরবরে। এখানে দেবীর ডান হস্ত পড়েছিলো। এখানকার রক্ষক ভৈরবের নাম অমর। এই শক্তিপীর একটি ভীষণ জাগ্রত শক্তিপীঠ। এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নিয়মিত শ্রী শ্রী মাতা দাক্ষায়নী দেবীর পূজা করে থাকেন।
আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৬ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আবার অন্য একটি পোস্টে "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ১৭ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
ধারাবাহিক ভাবে শারদীয়া দুর্গাপূজার ছবি নিয়ে-১৬ তম পর্বে সুন্দর কিছু ছবি শেয়ার করেছেন। প্রতিটি ছবিওই সুন্দর হয়েছে।্বেশ ঝকঝকে উজ্বল। ভালো লেগেছে প্রতিটি ছবির বর্ণনা। এই বর্ণনা থেকে দেব-দেবী সম্পর্কে অবগত হতে পারছি। সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।
ফটোগ্রাফি গুলো আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।আপনার জন্য এত সুন্দর ঠাকুর দেখতে পেলাম।আপনি অনেক সুন্দর করে সব ঠাকুরের নাম সহ তুলে ধরেছেন।
সুন্দর সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
শ্রী শ্রী দূর্গা পূজা উপলক্ষে তাহলে অনেকগুলো প্রতিমাই দেখা হয়েছে।আজ তার ১৬ তম পর্বতে বেশকিছু শক্তিপীঠের আদলে করা প্যান্ডেল এর ছবি প্রকাশ করেছো। বেশ ভালো লাগলো, কিছুটা অন্যরকমই যেন। আগামী পর্বগুলো শীঘ্রই দেখতে পারবো আশা করছি।
অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিদি। অবশ্যই খুব শীঘ্রই আগামী পর্বগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব।