ফটোগ্রাফি: "ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির সিভিল ফেস্টিভ্যাল-২০২৩" - শেষ পর্ব।
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ২১ ই অক্টোবর, শনিবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
কয়েকটি ছবিকে একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট হাজির হয়েছি। কিছুদিন আগেই আমাদের ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল ডিপার্টমেন্ট এর ফেস্টিভ্যাল হলো। ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পরে এটাই প্রথম সিভিল ডিপার্টমেন্টের ফেস্টিভ্যাল পেলাম। ফেস্টিভাল সম্পর্কে আগে একটু একটু ধারণা থাকলেও আমাদের সিভিল ডিপার্টমেন্টের ফেস্টিভ্যালের দিনে সবকিছু ক্লিয়ার হয়েছি। ফেস্টিভ্যাল মানেই বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন কিছু কেনাকাটা করা আর মজার মজার খাবার খাওয়া। ফেস্টিভ্যালে যে এতটা পরিমাণ আনন্দ হয় আসলে ফেস্টিভ্যালটা না হলে, হয়তো অজানা থেকে যেতো। আর আমাদের ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি তে সিভিল এর স্টুডেন্ট সবথেকে বেশি।
সিভিল ডিপার্টমেন্টের আয়োজিত ফেস্টিভ্যালে প্রায় বিশটা মতো স্টল দিয়েছিলো আমাদের সিভিল ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা। আমাদের ব্যাচের স্টুডেন্টদের কোন স্টল ছিল না তাই আমাদের মেইন কাজ ছিল সব স্টল গুলো ঘুরে ঘুরে দেখা আর ইচ্ছামতো খাওয়া-দাওয়া করা। আমরা বন্ধুরা মিলে প্রতিটি স্টলে ঘোরাফেরা করছিলাম আর প্রতিটি স্টল থেকেই কিছু না কিছু খাওয়া দাওয়া করেছিলাম। এই ফেস্টিভ্যালে যারা স্টল দিয়েছিলো তারা সবাই আমাদের আগের ব্যাচের শিক্ষার্থীরা, অর্থাৎ তারা সবাই আমাদের থেকে সিনিয়র ছিলো।
আজকে থেকে আমি প্রতি সপ্তাহে আপনাদের সাথে আমাদের ফেস্টিভ্যালের প্রতিটি স্টলের বিভিন্ন পণ্য দ্রব্যের ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের সাথে পর্ব আকারে শেয়ার করবো। আজকে আমি যে, স্টল থেকে বিভিন্ন পণ্যের ফটোগ্রাফি গুলো করেছি এই স্টলের নামটি ছিলো "সংগ্রাম স্টল"। এই স্টলের নামটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিলো। আজকে আমি আমাদের "ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির সিভিল ফেস্টিভ্যাল-২০২৩" - শেষ পর্বে "সংগ্রাম" স্টল থেকে বিভিন্ন পণ্যদ্রব্যের ফটোগ্রাফি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
আমার প্রথম ফটোগ্রাফি ছিলো মায়ের হাতের ঝাকানাকা পিঠা। মায়ের হাতে তৈরি যে কোন পিঠায় খেতে অনেক সুন্দর লাগে। আসলে মায়ের সাথে কারো তুলনা হয়না। যদিও আমি মায়ের হাতের তৈরি এই ঝাকানাকা পিঠা কখনো খায়নি তবে মায়ের হাতের তৈরি অন্যান্য পিঠাগুলো খেয়েছি সত্যি অন্য কোথাও এরকম সুন্দর পিঠা পাওয়া যায় না। আবার এবারে দুর্গাপুজোয় বাড়িতে গিয়ে মায়ের হাতের পিঠা খাব সেই আশায় আছি। এই স্টলে মায়ের হাতে ঝাকানাকা পিঠা প্রতিপিস ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছিলো বিক্রেতারা।
এই স্টলে দ্বিতীয় ফটোগ্রাফিটি ছিলো কুষ্টিয়ার বিখ্যাত দানাদার। দানাদার খাবারটি আমার ভীষণ পছন্দের একটি খাবার। আমি যেমনটা জাল খাবার পছন্দ করি ঠিক তেমনটাই মিষ্টি জাতীয় খাবারও পছন্দ করি অনেক। আসলে পেটুক মানুষের কাছে সব রকম খাবারই ভালো লাগে। দানাদারের ভেতরের অংশটুকু আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লাগে। এই স্টলে বিক্রেতারা প্রতি পিস দানাদার ৫ টাকা দরে বিক্রি করছিলো।
এই স্টলের আমার তৃতীয় ফটোগ্রাফিটি মায়ের হাতের ঝিনুক পিঠা। মায়ের হাতের ঝিনুক পিঠা এমন নাম অবশ্য আমি এই প্রথম বার দেখলাম। যদিও মায়ের হাতে তৈরি এ ধরনের পিঠা খাওয়া হয়নি কখনো। তবে এই স্টলে পিঠাগুলো দেখে অনেক লোভনীয় লাগছিলো। এই স্টলে প্রতি পেজ মায়ের হাতে তৈরি ঝিনুক পিঠা প্রতি পিস ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছিল বিক্রেতারা।
আমার এই ফটোগ্রাফিটি ছিলো টাঙ্গাইলের বিখ্যাত চমচম। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের বিখ্যাত চমচম অনেক নাম করা। আমিও এর আগে কয়েকবার টাঙ্গাইলের এই বিখ্যাত চমচম খেয়েছি সত্যি খুব সুন্দর লাগে। এই স্টলে টাঙ্গাইলের এই বিখ্যাত চমচম প্রতি পিস ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছিলো বিক্রেতারা।
আমার এই ফটোগ্রাফিটি হলো নোয়াখালীর বিখ্যাত পান্তয়া। নোয়াখালীর এই বিখ্যাত পান্তয়া খাবারটি দেখে অনেক লোভনীয় লাগছিলো। আমি এই খাবারটি আগে কখনো খাইনি বা নামও শুনিনি। এই স্টলে নোয়াখালীর এই বিখ্যাত পানতোয়া প্রতি পিস ৩০ টাকা দরে বিক্রি করছিলো বিক্রেতারা।
আমার এই ফটোগ্রাফিটি হলো কুমিল্লার বিখ্যাত রসমালাই। রসমালাই খাবারটি আমার অনেক পছন্দের এবং অনেক প্রিয়। রসমালাই খাবারের সাথে আমার ছোটবেলার অনেক সুন্দর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আমার বাবা যখন মাসের প্রথম দিকে চাকরির বেতন তুলতে যেতো তখন আমাকে নিয়ে যেতো আর চাকরির বেতন তুলেই মিষ্টির দোকানে নিয়ে গিয়ে পেট ভরে রসমালাই খাওয়াতো। আসলে শৈশবের এই দিনগুলো এখন বড় হয়ে অনেক বেশি মিস করি। এই স্টলের একবাটি এক কেজি রসমালাই ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছিল বিক্রেতারা।
এই স্টলে আমার সপ্তম ফটোগ্রাফি হলো কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা। যারা বাংলাদেশে আছেন কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজার নাম শোনেননি এমন লোক হয়তো খুবই কম পাওয়া যাবে। আমাদের বাড়ি যেহেতু কুষ্টিয়াতে তাই এই খাবারটি ছোটবেলায় প্রচুর পরিমাণে খেতাম যতো বড় হয়েছি এই খাবারটি খাওয়া আস্তে আস্তে ভুলে গিয়েছি। তবে ইউনিক একটি স্বাদের এই খাবারটা কুষ্টিয়াতেই পাওয়া যায় শুধুমাত্র। আমার কাছে কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা অনেক ভালো লাগে। তিল দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি এই খাজা গুলো অনেক সুস্বাদু। এই স্টলে প্রতি পিস কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করছিলো বিক্রেতারা।
আমার অষ্টম ফটোগ্রাফি হলো কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের মটকা। কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজার মতই কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের মটকা বেশ জনপ্রিয়। এই খাবারটাও ছোটবেলা থেকে আমি অনেক বেশি পছন্দ করতাম। তবে এই খাবারটি খেতে একটু দাঁতে জোর লাগতো, মানে মাড়িতে জোর লাগতো। কারণ কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের মটকা শক্ত হয়। এই স্টল এক কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের মটকা প্রতি পিস ১০ টাকা দরে বিক্রি করছিলো বিক্রেতারা।
আজকে আমাদের "ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির সিভিল ফেস্টিভ্যাল-২০২৩" - শেষ পর্বে "সংগ্রাম" স্টলের বিভিন্ন পণ্য দ্রব্যের ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আর "ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির সিভিল ফেস্টিভ্যাল-২০২৩" এই পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করার মাধ্যমে সকল পর্বগুলো শেষ করলাম।
পোস্টের ছবির বিবরন
ক্যামেরাম্যান | @aongkon |
---|---|
ডিভাইস | স্যামসাং জে-৭ প্রো |
ক্যামেরা | ১৩ মেগাপিক্সেল |
তারিখ | ৯ ই জুন ২০২৩ |
লোকেশন | গাবতলী,ঢাকা |
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
বাহ সেখানে কুষ্টিয়ার বিখ্যাত কিছু খাবারের ছবি দেখলাম সেটা দেখেই যেন বেশি ভালো লাগলো। তবে মিষ্টি জাতীয় খাবারের মধ্যে দানাদা রেসিপিটার টেস্ট সব চেয়ে বেশি লোভনীয়।
হ্যাঁ বন্ধু কুষ্টিয়ার বিখ্যাত খাবারগুলো অনেক নাম করা। আর এটা নিজের এলাকার খাবার তো তাই আর কি ভালো লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
আজ দেখছি সব বিখ্যাত খাবারের সমারোহ ছিল। তার মধ্যে আমাদের কুষ্টিয়ার খাবারই দেখছি বেশি। পিঠা, টাঙ্গাইলের চমচম, নোয়াখালীর পান্তোয়া, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, মটকা দানাদার সবকিছুই ছিল। আপনার ইউনিভার্সিটির সিভিল ডিপার্টমেন্টের ফেস্টিভ্যালের ফুড ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার হয়েছে। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
ভাই কুষ্টিয়ার বিখ্যাত খাবার দেখলে আসলে মনটা ভরে যায়। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।