"শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১১তম পর্ব"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ২৭শে ডিসেম্বর, বুধবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা। আজকে আমি আপনাদের সাথে মহা সপ্তমীতে করা ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজা দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন ছোট ছিলাম মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা এদের হাত ধরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজা দেখতাম। তারপর একটু বড় হলে বাইসাইকেলে করে বন্ধুদের সাথে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার এই চারটি দিনে পুজো দেখার পাল্লা দিতাম। আমার শৈশবের শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার সময়টা সত্যি অনেক মধুর ছিলো। আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ১১তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে ৷৷
প্রতিবছর শরৎকালের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, দুর্গাসপ্তমী,মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে "অকালবোধন" বলা হয়।
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার গমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
এই বছর শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। এটা আমাদের সবার জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
বর্তমানে তো দেখতেই পাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতির প্রবল আগ্রাসন এবং বিভিন্ন মহামারী ও যুদ্ধ লেগেই আছে। তাই বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সবার প্রার্থনা মা দুর্গা আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করুক। কারণ তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা মহাশক্তি মহামায়া।
কয়েকটি ফটোগ্রাফিকে একত্রিত করে কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
বিজয়া দশমী পূজার ফটোগ্রাফি:-
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: খোকসা কালীবাড়ি সর্বজনীন দুর্গা মন্দির
তারিখ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩
আমাদের খোকসা কালীবাড়িতে এবারে শ্রীশ্রী দুর্গা মায়ের দুটি পূজার আয়োজন হয়েছিলো। এই মূর্তিটা মেইন দুর্গা মন্দিরে, ঢুকতেই ডান পাশের একটি মন্দিরে ছিলো। এই মূর্তিটি ভেতরকার মূর্তিটি থেকেও অনেক সুন্দর ভাবে তৈরি করেছিল মূর্তির কারিগর। আমরা যারা পূজা দেখতে গিয়েছিলাম সবার কাছেই এই ছোট্ট সুন্দর দুর্গা মূর্তিটি অনেক ভালো লেগেছে। যদিও এখানে খুব একটা লাইটিং করা ছিল না তারপরেও বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: খোকসা কালীবাড়ি সর্বজনীন দুর্গা মন্দির
তারিখ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩
এই মূর্তিটি দেবাদিদেব মহাদেবের মূর্তি। সনাতন ধর্মের পুস্তক মতে দেবাদিদেব মহাদেবকে সকল দেবতার আদি বলা হয়। দেবাদিদেব মহাদেব হলেন ধ্বংসের দেবতা। তিনি সবাইকে ধংস করেন এমনটা না, তিনি শুধুমাত্র পাপীদেরকে ধ্বংস করেন। দেবাদিদেব মহাদেবের আরেকটি নাম হলো ভোলানাথ। দেবাদিদেব মহাদেব অল্পতেই তুষ্ট হয়ে যান অর্থাৎ ভক্তের ডাকে ভুলে যান তাই তার নাম ভোলানাথ। দেবাদিদেব মহাদেব বেশিরভাগ সময় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় থাকেন তিনি ভগবান নারায়ণের ধ্যান করে থাকেন। শ্রী শ্রী মহাদেবের ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বেশ ভালো লাগছে।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: খোকসা কালীবাড়ি সর্বজনীন দুর্গা মন্দির
তারিখ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩
স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাল্যকালের দৃশ্য। বাল্যকালে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ময়ূর ও গাভীদের সাথে সময় কাটাতে বেশ পছন্দ করতো। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের খুবই পছন্দের ছিল ময়ূরের পালক তাই তিনি সবসময় এটা নিজের মাথায় করে রাখতেন। আর তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন যে, ময়ূরকে ময়ূরের পালক ঘরে রাখলে কালসর্পদূর হয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাল্যকালের এই সুন্দর দৃশ্যটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল তাই আমি আমার ফোনে ক্যাপচার করে রেখেছিলাম।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: খোকসা কালীবাড়ি সর্বজনীন দুর্গা মন্দির
তারিখ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩
এই ছবিতে যে ব্যক্তিকে দেখতে পাচ্ছেন তিনি একজন সাধক মহাপুরুষ। এই ব্যক্তিটির নাম হলে লোকনাথ ব্রহ্মচারী। সাধক লোকনাথ ব্রহ্মচারী বাবাকে মহাদেবের অবতার বলা হয়। সাধক লোকনাথ বাবা সবসময়ই মহাদেবের ধ্যান করতেন। তিনি বারুদীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ১৬১ বছর জীবিত থাকার পরে দেহত্যাগ করেন। লোকনাথ ব্রহ্মচারী বাবা তার ভক্তদেরকে বলেছিলেন যে, "রনে বনে জলে জঙ্গলে যখনই বিপদে পড়িবে, আমাকে স্মরণ করিও আমি তোমাকে রক্ষা করিব।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: খোকসা কালীবাড়ি সর্বজনীন দুর্গা মন্দির
তারিখ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩
এই দৃশ্যটি বেশ করুণাদায়ক এবং এখান থেকে মানুষের অনেক কিছু শিক্ষা নেওয়ার আছে। এই দৃশ্যতে ভগবান নারায়ন তার বাহন গরুরের উপবিষ্ট হয়ে উড়ে যাচ্ছিলো। সেই সময়টাতে একটি বাচ্চা হাতি ভগবানকে দেখতে পেয়ে পুকুর থেকে পদ্মফুল নিয়ে ভগবানকে উপহার দিতে গিয়ে পায়ে কুমিরের কামড় খায় তারপরেও ভগবানের জন্য পদ্মফুল ভগবানকে অর্পণ করেন।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: খোকসা কালীবাড়ি সর্বজনীন দুর্গা মন্দির
তারিখ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩
শ্রী শ্রী নারায়ণের সেবা করছেন শ্রী শ্রী মাতা লক্ষী দেবী। সত্য যুগের সবাই শ্রী শ্রী নারায়ণ কে ভগবান হিসাবে পূজা করা হতো। তারপর ভগবানের পূর্ণ অবতার শ্রীকৃষ্ণ আসার পরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বেশি পূজা করা হয় বর্তমানে। শ্রী শ্রী মাতা লক্ষী হলেন ধন সম্পদের দেবী। শ্রী শ্রী নারায়ণ ও শ্রী শ্রী মাতা লক্ষ্মীর যুগল মূর্তি দেখে বেশ ভালো লাগছিলো।
ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: খোকসা কালীবাড়ি সর্বজনীন দুর্গা মন্দির
তারিখ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রাধারানী কুঞ্জবনে লীলা করছেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দ্বাপর যুগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ হলেন ভগবানের পূর্ণ অবতার। দ্বাপর যুগে তিনি জন্মগ্রহণ করে দুষ্টের দমন এবং সৃষ্টির পালন করেছিলেন।
আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ১১তম পর্ব"আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আবার অন্য একটি পোস্টে "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ১২তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১১তম পর্বের ফটোগ্রাফি ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)