"শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৯ তম পর্ব"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ৮ই মার্চ, শুক্রবার,২০২৪ খ্রিঃ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা। আজকে আমি আপনাদের সাথে শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমনের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজা দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন ছোট ছিলাম মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা এদের হাত ধরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজা দেখতাম। তারপর একটু বড় হলে বাইসাইকেলে করে বন্ধুদের সাথে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার এই চারটি দিনে পুজো দেখার পাল্লা দিতাম। আমার শৈশবের শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার সময়টা সত্যি অনেক মধুর ছিলো। আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৯ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে ৷৷
প্রতিবছর শরৎকালের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, দুর্গাসপ্তমী,মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে "অকালবোধন" বলা হয়।
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার গমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
এই বছর শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। এটা আমাদের সবার জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
বর্তমানে তো দেখতেই পাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতির প্রবল আগ্রাসন এবং বিভিন্ন মহামারী ও যুদ্ধ লেগেই আছে। তাই বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সবার প্রার্থনা মা দুর্গা আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করুক। কারণ তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা মহাশক্তি মহামায়া।
কয়েকটি ফটোগ্রাফিকে একত্রিত করে কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
এই বছরের শারদীয়া দুর্গাপূজাতে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম। আমাদের পাড়ার ইয়াং জেনারেশনরা মিলে আমরা বিজয়া দশমীর একদিন পরে রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুর এ গিয়েছিলাম। এই জায়গাটিতে প্রতিবছর বেশ জাঁকজমকপূর্ণ শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গা উৎসব পালিত হয়। এবারে পুজার ভিতরে অবশ্য আমাদের বাড়ি থেকে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে গিয়েছিল আমাদের পরিবারের লোকজন। আমাকেও এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে যেতে বলেছিলো বাড়ি থেকে কিন্তু আমি পাড়ার ছেলেপেলেরা একসাথে যাবো বলে গিয়েছিলাম না। আমারা বিজয়া দশমীর একদিন পরে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুরে শ্রীশ্রী দুর্গা পূজা দেখতে যাব। আমরা এর আগেও এক বছর নলিয়া জামালপুরে পিকআপ ভাড়া করে পূজা দেখতে গিয়েছিলাম ইয়াং জেনারেশনরা মিলে। তাই এই বছরেও সবাই মিলে একটি পিকআপ ভাড়া করেছিলাম নলিয়া জামালপুরে পূজা দেখতে যাওয়ার জন্য।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার প্রথম ফটোগ্রাফির ছবিটি শ্রী শ্রী সর্বানি দেবীর। এই দেবীর শক্তি পিঠের নাম শ্রী শ্রী কন্যাকুমারিকা শক্তিপীঠ। এই স্থানে শ্রীশ্রী প্রজাপতি দক্ষ মহারাজের কন্যা সতীর পিঠ পড়েছিলো। এই স্থানটি ভারতের তামিলনাড়ুতে অবস্থিত। এখানকার পীঠ রক্ষকের নাম নিমিষ ।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার দ্বিতীয় ফটোগ্রাফিটি ছিল শ্রী শ্রী সাবিত্রী দেবীর। এই স্থানটি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের কুরুক্ষেত্র অবস্থিত। শ্রী শ্রী প্রজাপতি দক্ষ মহারাজের কন্যা সতী দেবীর গোড়ালির হার পড়েছিল এই স্থানে। এখানকার শক্তি পিটের নাম কুরুক্ষেত্র শক্তিপীঠ। এই কুরুক্ষেত্রই স্থানটি ভীষণ নামকরা এখানে মহাভারতের পাণ্ডব আর কৌরবদের ভেতরে যুদ্ধ হয়েছিল। আর এই যুদ্ধে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পান্ডবদের পক্ষে ছিলো এবং শেষ পর্যন্ত পাণ্ডবরা জয়লাভ করেছিল । এখানকার পীঠ রক্ষা করেন অশ্বনাথ।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার তৃতীয় ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী গায়ত্রী দেবীর। এই দেবীর মন্দিরটি ভারতের রাজস্থানে অবস্থিত। শ্রী শ্রী প্রজাপতি দক্ষ মহারাজের কন্যা সতী দেবীর করগ্রন্থি পড়েছিল এই স্থানে। এই মন্দিরটির নাম হলো মনিবন্ধক শক্তিপীঠ। এখানকার পীঠ রক্ষকের নাম সর্বানন্দ ।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার চতুর্থ ফটোগ্রাফিতে রয়েছে শ্রীশ্রী মহালক্ষী দেবীর। এই শক্তি পীঠের নাম হচ্ছে মহালক্ষী দিবা শক্তিপীঠ । শ্রীশ্রী দক্ষ মহারাজের কন্যা সতী দেবীর গ্রীবা পড়েছিল এই স্থানে। এই মন্দিরটি আমাদের বাংলাদেশের সিলেটে অবস্থিত। আবার যদি কখনো সিলেটে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যায় অবশ্যই এই মন্দিরের দেবতা দর্শন করার চেষ্টা করবো।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার পঞ্চম ফটোগ্রাফিটিতে রয়েছে শ্রী শ্রী দেহবর্ভা দেবীর। এই মন্দিরটি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের বীরভূমের বোলপুরে অবস্থিত । এই শক্তিপীঠের নাম হলো কঙ্কালীতলা শক্তিপীঠ। এখানেই শ্রী শ্রী প্রজাপতি মহারাজ দক্ষের কন্যা সতী দেবীর অস্থি পড়েছিল। এখানকার ভৈরবের নাম হলো রুরু।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার ষষ্ঠ ফটোগ্রাফিতে রয়েছে শ্রী শ্রী কালী দেবী। এখানকার পীঠ রক্ষক খুব ভৈরবের নাম অসিতাঙ্গ । এই মন্দিরটি ভারতের মধ্যপ্রদেশে অবস্থিত। এখানে শ্রীশ্রী প্রজাপতি দক্ষ মহারাজের কন্যার নিতম্ব পড়েছিল। এই শক্তি পিঠের নাম হলো কালমাধব শক্তিপীঠ। আমাদের বাংলাদেশেও বিভিন্ন জায়গায় দেবী কালীর পূজা করা হয়।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার সপ্তম ফটোগ্রাফিতে রয়েছে শ্রী শ্রী নর্মৃদা দেবী। এই শক্তিপীঠের অবস্থান অমরকন্টক মধ্য প্রদেশ ভারত। এখানকার শক্তি পিঠের নাম সোন্দশ শক্তি পীঠ। এখানে দেবীর ডান নিতম্ব পড়েছিলো।। এই শক্তিপীঠ একটি ভীষণ জাগ্রত শক্তিপীঠ।
আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৯ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আবার অন্য একটি পোস্টে "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ২০ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
দাদা একটা কথা কি দূর্গাপুজো ছোট্ট বেলার মতো আনন্দ এখন আর লাগে না ৷ তখনকার সময় মনের ভেতর এক অন্য অনুভুতি খেলা করছিল ৷ বাবা ,কাকা, দাদা দিদিমার সাথে হাত ধরে ঠাকুর দেখার বাহানা আহা ৷জীবন কত অদ্ভুত তাই না ৷ কিন্তু এখন কত বড় তবুও সেই সময়ের মতো লাগে না ৷ যা হোক দূর্গাপুজো কাটানো মুহুর্ত আলোকচিত্র ফটোগ্রাফি সবমিলে দারুন ছিল৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এতো চমৎকার একটি ব্লগ উপস্থাপনা করার জন্য ৷
একদম সত্য কথা বলেছেন দাদা, দুর্গাপূজাতে এখন আর ছোটবেলার মতো আনন্দ পাই না। তারপরেও প্রতি বছর সবার সাথে সুন্দর সময় কাটানোর চেষ্টা করি। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্য প্রকাশ করে পাশে থাকার জন্য।