"শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-২৫ তম পর্ব"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ১০ ই এপ্রিল, বুধবার,২০২৪ খ্রিঃ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা। আজকে আমি আপনাদের সাথে শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমনের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজা দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন ছোট ছিলাম মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা এদের হাত ধরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজা দেখতাম। তারপর একটু বড় হলে বাইসাইকেলে করে বন্ধুদের সাথে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার এই চারটি দিনে পুজো দেখার পাল্লা দিতাম। আমার শৈশবের শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার সময়টা সত্যি অনেক মধুর ছিলো। আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-২৫ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে ৷৷
প্রতিবছর শরৎকালের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, দুর্গাসপ্তমী,মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে "অকালবোধন" বলা হয়।
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার গমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
এই বছর শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। এটা আমাদের সবার জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
বর্তমানে তো দেখতেই পাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতির প্রবল আগ্রাসন এবং বিভিন্ন মহামারী ও যুদ্ধ লেগেই আছে। তাই বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সবার প্রার্থনা মা দুর্গা আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করুক। কারণ তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা মহাশক্তি মহামায়া।
কয়েকটি ফটোগ্রাফিকে একত্রিত করে কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
এই বছরের শারদীয়া দুর্গাপূজাতে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম। আমাদের পাড়ার ইয়াং জেনারেশনরা মিলে আমরা বিজয়া দশমীর একদিন পরে রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুর এ গিয়েছিলাম। এই জায়গাটিতে প্রতিবছর বেশ জাঁকজমকপূর্ণ শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গা উৎসব পালিত হয়। এবারে পুজার ভিতরে অবশ্য আমাদের বাড়ি থেকে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে গিয়েছিল আমাদের পরিবারের লোকজন। আমাকেও এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে যেতে বলেছিলো বাড়ি থেকে কিন্তু আমি পাড়ার ছেলেপেলেরা একসাথে যাবো বলে গিয়েছিলাম না। আমারা বিজয়া দশমীর একদিন পরে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুরে শ্রীশ্রী দুর্গা পূজা দেখতে যাব। আমরা এর আগেও এক বছর নলিয়া জামালপুরে পিকআপ ভাড়া করে পূজা দেখতে গিয়েছিলাম ইয়াং জেনারেশনরা মিলে। তাই এই বছরেও সবাই মিলে একটি পিকআপ ভাড়া করেছিলাম নলিয়া জামালপুরে পূজা দেখতে যাওয়ার জন্য।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার প্রথম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী জগদ্বন্ধু। শ্রী শ্রী জগবন্ধু ১৮৭১ সালে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার ডাহাপাড়া গ্রামে তার পিতার কর্মস্থলে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রী শ্রী জগবন্ধুর যখন ১৪ মাস বয়স তখন মা মারা যায় এবং যখন পাঁচ বছর বয়স তখন বাবা মারা যায়। শ্রীশ্রী জগবন্ধু একজন বৈষ্ণব, সমাজ সংস্কারক ধর্মগুরু ও লেখক। নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের প্রতি বিশেষ সহানুভূতি প্রকাশের জন্য তিনি জগবন্ধু উপাধি লাভ করেন। শ্রী শ্রী জগত বন্ধু ১৯২১ সালে দেহ ত্যাগ করেন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আবার দ্বিতীয় ফটোগ্রাফিটি হলো শ্রী শ্রী স্বামী ব্রহ্মানন্দ। শ্রী শ্রী স্বামী ব্রহ্মানন্দ ১৮৬৩ সালে ভারতের বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের প্রধান ও প্রিয় শিষ্য হলেন শ্রী শ্রী স্বামী ব্রহ্মানন্দ। তিনি ছিলেন একজন প্রসিদ্ধ বাঙালি সন্ন্যাসী। স্বামী বিবেকানন্দের মৃত্যুর পরে রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালনা করতেন। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব নিজের ভাব সন্তানের মতো করে দেখতেন শ্রী শ্রী স্বামী ব্রহ্মানন্দকে। শ্রী শ্রী স্বামী ব্রহ্মানন্দ ১৯২২ সালে দেহ ত্যাগ করেন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আবার তৃতীয় ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর। শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর ১৮৬০ সালে বাংলাদেশের ফরিদপুরে (তৎকালীন ব্রিটিশ ভারত) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন হিন্দু ধর্মগুরু ও সাধক হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তার পিতা ছিলেন একজন তন্ত্রসাধক তাই তিনি অল্প বয়সে রামায়ণ মহাভারত সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর ১৮৪৯ সালে দেহ ত্যাগ করেন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার চতুর্থ ফটোগ্রাফি টি শ্রী শ্রী স্বামী প্রণবানন্দ। শ্রী শ্রী স্বামী প্রণবানন্দ ১৮৪১ বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলায় (তৎকালীন ব্রিটিশ ভারত)জন্মগ্রহণ করেন। শ্রী শ্রী স্বামী প্রণবানন্দ সনাতন হিন্দু ধর্মের প্রচার, তীর্থ সংস্কার, সমাজ সংস্কার ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত ছিল। শ্রী শ্রী স্বামী প্রণবানন্দ ১৮৯৬ সালে দেহত্যাগ করেন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার পঞ্চম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী স্বামী বিবেকানন্দ। শ্রী শ্রী স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৬৩ সালের পশ্চিমবঙ্গের আধনা কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। শ্রী শ্রী স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক,লোখক। শ্রী শ্রী স্বামী বিবেকানন্দ ছিল শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের প্রধান শিষ্য। হিন্দু ধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসাবে প্রচার করার মূলে রয়েছে শ্রী শ্রী স্বামী বিবেকানন্দ। শ্রী শ্রী স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কে ছোটবেলায় অনেক গল্প বলেছি তিনি ছিলেন একজন উদার মনের দানবীর। শ্রী শ্রী স্বামী দ্বিবেকানন্দ ১৯০২ সালে দেহত্যাগ করেন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার পঞ্চম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী সাধক বামাক্ষ্যাপ। শ্রী শ্রী সাধক বামাক্ষ্যাপা ১৮৩৭ সালের ভারতের বীরভূমে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ভারতীয় হিন্দু সাধক ও তান্ত্রিক। শ্রীশ্রী সাধক বামাক্ষ্যাপা ছিলেন শ্রী শ্রী তারা মায়ের পরম ভক্ত। শ্রীশ্রী তারা মা কে আমাকে তিনি বড় মা বলে ডাকতেন। মন্দিরের কাছে শ্মশান ঘাটে তিনি সাধনা করতেন। শ্রী শ্রী সাধক বামাক্ষ্যাপা ১৯১১ সালে দেহত্যাগ করেন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার সপ্তম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র। শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বাংলাদেশের পাবনা জেলার হেমায়েতপুর গ্রামে (তৎকালীন ব্রিটিশ ভারত) জন্মগ্রহণ করেন। শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ সংগঠনের উদ্ভাবক। শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের আশ্রমে আমি অনেকবার গিয়েছি। শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ১৯৬৯ সালে ভারতের ঝাড়খন্ডে দেহ ত্যাগ করেন।
আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-২৫ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আবার অন্য একটি পোস্টে "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ২৬ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
শারদীয় দুর্গাপূজা আমাদের দেশের একটি অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। আর দূর্গা পূজা উপলক্ষে আপনার লেখাটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। একই সাথে আপনার পোষ্টের বিভিন্ন প্রকারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুবই সুন্দর লাগছে। চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমরা দুর্গাপূজাতে অনেক বেশি আনন্দ উল্লাস করি।অনেক সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।