"শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-২৪ তম পর্ব"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ৭ ই এপ্রিল, শনিবার,২০২৪ খ্রিঃ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা। আজকে আমি আপনাদের সাথে শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমনের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজা দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন ছোট ছিলাম মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা এদের হাত ধরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজা দেখতাম। তারপর একটু বড় হলে বাইসাইকেলে করে বন্ধুদের সাথে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার এই চারটি দিনে পুজো দেখার পাল্লা দিতাম। আমার শৈশবের শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার সময়টা সত্যি অনেক মধুর ছিলো। আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-২৪ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে ৷৷
প্রতিবছর শরৎকালের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, দুর্গাসপ্তমী,মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে "অকালবোধন" বলা হয়।
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার গমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
এই বছর শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। এটা আমাদের সবার জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
বর্তমানে তো দেখতেই পাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতির প্রবল আগ্রাসন এবং বিভিন্ন মহামারী ও যুদ্ধ লেগেই আছে। তাই বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সবার প্রার্থনা মা দুর্গা আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করুক। কারণ তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা মহাশক্তি মহামায়া।
কয়েকটি ফটোগ্রাফিকে একত্রিত করে কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
এই বছরের শারদীয়া দুর্গাপূজাতে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম। আমাদের পাড়ার ইয়াং জেনারেশনরা মিলে আমরা বিজয়া দশমীর একদিন পরে রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুর এ গিয়েছিলাম। এই জায়গাটিতে প্রতিবছর বেশ জাঁকজমকপূর্ণ শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গা উৎসব পালিত হয়। এবারে পুজার ভিতরে অবশ্য আমাদের বাড়ি থেকে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে গিয়েছিল আমাদের পরিবারের লোকজন। আমাকেও এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে যেতে বলেছিলো বাড়ি থেকে কিন্তু আমি পাড়ার ছেলেপেলেরা একসাথে যাবো বলে গিয়েছিলাম না। আমারা বিজয়া দশমীর একদিন পরে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুরে শ্রীশ্রী দুর্গা পূজা দেখতে যাব। আমরা এর আগেও এক বছর নলিয়া জামালপুরে পিকআপ ভাড়া করে পূজা দেখতে গিয়েছিলাম ইয়াং জেনারেশনরা মিলে। তাই এই বছরেও সবাই মিলে একটি পিকআপ ভাড়া করেছিলাম নলিয়া জামালপুরে পূজা দেখতে যাওয়ার জন্য।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার প্রথম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর। শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী ভারতের ২৪ পরগনা জেলার কচুয়া গ্রামে একটি ব্রাহ্মণ পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর পিতা ছিলেন একজন সপ্তসাধক। লোকনাথ ব্রহ্মচারী ছিলেন তার পিতা-মাতার চতুর্থ সন্তান। তিনি বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী নামেও পরিচিত। শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী একজন হিন্দু সিদ্ধপুরুষ। শ্রীশ্রী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী ছিলেন ত্রিকালদর্শী। শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একজন পূজনীয় ব্যক্তি। বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার বারদীতে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী বাবার আশ্রম রয়েছে। শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী একশত ষাট বছর বয়সে নিজের দেহত্যাগ করেন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আবার দ্বিতীয় ফটোগ্রাফিটি হলো শ্রী শ্রী ভগবান গাঙ্গুলী বাবা। শ্রী শ্রী ভগবান গাঙ্গুলি বাবার জীবনের সঠিক তথ্যটি আমার জানা নেই তবে এতোটুকু জানি যে, শ্রী শ্রী ভগবান গাঙ্গুলি বাবা শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারীর গুরু হন। আপনারা কেউ শ্রী শ্রী ভগবান গাঙ্গুলী বাবার সম্পর্কে জেনে থাকলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আবার তৃতীয় ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী তৈলঙ্গ স্বামী। শ্রীশ্রী তৈলঙ্গ স্বামীর জন্ম ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে। শ্রীশ্রী তৈলঙ্গ স্বামীকে জীবন তো শিব বলা হয়। আধ্যাত্মিক শক্তির জন্য শ্রী শ্রী তৈলঙ্গ স্বামীর বেশ খ্যাতি আছে। কিছু অভিকরণ অনুসারে শ্রী শ্রী তৈলঙ্গ স্বামী ২৮০ বছর পর্যন্ত জীবিত ছিলো। তার ভক্তরা তাকে শিবের অবতার হিসেবে বিবেচিত করতো। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ রামকৃষ্ণ তাকে বারাণসীর চলমান শিব হিসেবে উল্লেখ করেছিলো।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার চতুর্থ ফটোগ্রাফি টি শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের সাধন পদ্ধতির নাম ছিল মাতুয়াতুল। বৈষ্ণব বাড়িতে জন্ম হওয়ার কারণে তিনি হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে অনেক জ্ঞান লাভ করেছিলেন। শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর পিছিয়ে পড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য অনেক সামাজিক কর্মকাণ্ড করে গেছেন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার পঞ্চম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী বেণীমাধব ঘোষাল। শ্রীশ্রী বেণীমাধব ঘোষাল জন্মগ্রহণ করেন ১৭৩০ সালে। শ্রীশ্রী বেণীমাধব ঘোষালের জীবনী সম্পর্কে আমার কোন ধারনা নেই আপনারা জেনে থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। শ্রীশ্রী বেণীমাধব ঘোষালের মৃত্যুর কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার পঞ্চম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী ভক্ত রামপ্রসাদ সেন। শ্রীশ্রী ভক্ত রামপ্রসাদ সেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের এক তান্ত্রিক বৈদ্যব্রাহ্মণ পরিবারে। তিনি ছিলেন মা কালীর সাধক। শ্রী শ্রী ভক্ত রামপ্রসাদ সেনের মাধ্যমেই শ্যামা সঙ্গীতের সূচনা হয়। নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র শ্রী শ্রী রামপ্রসাদ সেনের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার সপ্তম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব একজন বাঙালি যোগ সাধক, ধর্মগুরু ও দার্শনিক। আধুনিক শিষ্য সমাজ ও ভক্ত ও সমাজে তিনি ভগবানের অবতার রূপে পূজিত হন। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের স্ত্রীর নাম সারদা দেবী। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব শ্রী শ্রী মা কালীর পরম ভক্ত।
আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-২৪ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আবার অন্য একটি পোস্টে "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ২৫ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
শৈশবের স্মৃতি সবসময়-ই মধুর।আপনি রাজবাড়ীর
শারদীয়া দুর্গাপূজা থেকে খুবই সুন্দর সুন্দর ভাস্কর্য ক্যাপচার করেছেন।আসলে বিভিন্ন অবতারের ছবি দেখে খুবই ভালো লাগলো, তাছাড়া বর্ণনাও ছিল দারুণ।এইসব সাধকের জীবনী আমাদেরকে সবসময় শিক্ষা দেয়,ধন্যবাদ দাদা।
সত্যি বলেছেন দিদি এইসব সাধকদের জীবনী আমাদেরকে সব সময় ভালো কিছু শিক্ষা দেয়। অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।