এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে "আমার দ্বিতীয় দিন"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ৬ ই নভেম্বর, রবিবার, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আজকে আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।গত সপ্তাহে আমি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমার প্রথম দিনের কথা শেয়ার করেছিলাম আপনাদের সাথে। আজকে আমি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে "আমার দ্বিতীয় দিনের" কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
আমার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম দিন ঘুরে আসার মোটামুটি এক সপ্তাহের মাথায় আবারও যেতে হয়েছিল। কারণ সেই ক্যান্সার রোগীর আরো একটি অপারেশনের প্রয়োজন ছিল আর সেই অপারেশনে রোগীর শরীরে রক্তস্বল্পতায় থাকার কারণে ডক্টর আগেই রক্ত যোগাড় করে রাখতে বলেছিল। তাই ক্যান্সার রোগীর ছোট ভাই রক্তের বিষয়টি আমার কাছে কয়েকদিন আগেই ফোন করে জানিয়েছিল যে O+ রক্তের খোঁজ করতে হবে যেভাবেই। রক্তের গ্রুপ যেটাই হোক না কেন প্রয়োজনের সময় রক্ত খুঁজে পাওয়াটা খুবই দুষ্কর। রোগীর রক্ত এবং আমার নিজের রক্ত ভিন্ন হওয়ার কারণে আমি নিজে রক্ত দিতে না পারলেও রক্ত যোগাড় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমি ঢাকা শহরে নতুন আসার কারণে সবার সাথে সে রকম পরিচিত ছিলাম না। গ্রাম থেকে এসে ঢাকা শহরে রক্ত জোগাড় করাটা খুবই কঠিন একটি কাজ। কারণ রক্ত দেওয়ার ডোনার খুবই কম পাওয়া যায়।
তারপরেও চেষ্টা চালিয়ে যা ছিলাম যতোটুকু পরিচিত আছে তাদের ভেতর থেকে। অবশেষে রক্ত দেওয়ার ঠিক আগের দিন এলাকার এক বড় ভাইয়ের সাথে রক্ত জোগাড় করার বিষয় নিয়ে কথা হল। সেই বড় ভাই ঢাকায় ই একটি বেসরকারি চাকরি করে, তিনি রক্তের খোঁজ করতে তার এক কলিগ O+ রক্ত দিতে রাজি হয়। সেই কলিগ ভাইটা জীবনের প্রথম রক্ত দিতে প্রস্তুত ছিল। আমি নিজেও জানি, জীবনের প্রথম রক্ত দেওয়ার সময় একটু ভয়ের কাজ করে। কারন আমারও জীবনের প্রথম রক্ত দিতে একটু ভয় ভয় লাগছিল, তবে রক্ত দেওয়াটা খুবই সহজ, শুধু আত্মবিশ্বাস থাকলেই চলে। O+ রক্তটা খুঁজে পেয়ে অনেক ভালো লাগছিল, কারণ নিজে দিতে না পারলেও খুঁজে দেওয়াটা অনেক বড় একটি বিষয়। তারপর পরের দিন বিকাল ০৪ : ০০ টার দিকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমার দ্বিতীয় দিনে সেই বড় ভাই ও তার কলিগ এবং আমি তিনজন একসাথে যাই রক্ত দেয়ার জন্য।
আমরা এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরো রোগীর ছোট ভাই এসে আমাদেরকে সেই ক্যান্সার রোগীর কোয়ার্টারে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে রোগীকে দেখার পরে রোগীর ছোট ভাই আমাদেরকে আবার ব্লাড নেওয়ার রুমে নিয়ে যায় এবং বাইরে থেকে ডোনারকে গ্লুকোজ ড্রিঙ্ক সহ অন্যান্য খাবার খাওয়ানো হয়। সেখানে আমাদের ডোনারের থেকে প্রথমে হালকা রক্ত নিয়ে অনেক রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করে, ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা লেগে যায়।
তারপর সকল পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে সন্ধ্যার পরে ডোনারের থেকে রক্ত নেয়ার আগে হাসপাতাল থেকে ডোনারকে আগে গ্লুকোজ ড্রিঙ্ক খাওয়ার জন্য দিয়েছিল। সেগুলো ডোনার খাওয়ার পরে রক্ত নেয়া শুরু করে। আমাদের ডোনার প্রথমবার রক্ত দিলেও তার আত্মবিশ্বাস খুবই ভালো ছিল, আমাদের ডোনার সুস্থ এবং সবল ছিল।। তারপর সেখান থেকে রক্ত দেয়া সম্পূর্ণ করার পরে রোগীর ছোট ভাই ডোনারকে আবারো ডাব কিনে এনে খাইতে দেয়। এদিকে আমাদেরকে আবার ঢাকায় ফিরে আসতে হবে, রাতে তখন ৮ টা পার হয়ে গেছে। তারপর তখন আমরা তিনজন তাদেরকে বিদায় বলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম কিন্তু খুব জ্যাম থাকার কারণে ঢাকায় আসতে আসতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। সেদিন বাসায় আসতে আসতে প্রায় রাত দশটা বেজে গিয়েছিল। তবে এভাবে মানুষকে সাহায্য করার ভেতরে আলাদা একটা আনন্দ অনুভূতি আছে।
পোস্টের ছবির বিবরন
ক্যামেরাম্যান | @aongkon |
---|---|
ডিভাইস | স্যামসাং জে-৭ প্রো |
ক্যামেরা | ১৩ মেগাপিক্সেল |
লোকেশন | সাভার, ঢাকা |
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আ এনাম মেডিকেল কলেজে আমার দ্বিতীয় দিনের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমার তৃতীয় দিনের ব্লগটি আমি আপনাদের সাথে পরবর্তীতে শেয়ার করব। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
@aongkon
এর আগেও আপনি আপনার পোস্টের মাধ্যমে আপনার এলাকার সেই ক্যান্সার রোগীর কথা বলেছিলেন। উনার জন্য রক্ত জোগাড় করতে আপনি বেশ কষ্ট করেছেন বুঝতেই পারছি। আসলে অনেক সময় প্রয়োজনীয় রক্ত জোগাড় করা কঠিন হয়ে পড়ে। যাইহোক অন্য কারো মাধ্যমে হলেও রক্ত যোগাড় করতে পেরেছেন এটাই সবচেয়ে বড় কথা। আসলে বিপদের সময় আপনার একটুখানি সাহায্য করা সেই রোগীর পরিবারের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আসলে শহর অঞ্চলে একটুখানি পরিচিত মুখ দেখলেও অনেক ভালো লাগে।
হ্যাঁ আপু রক্ত জোগাড় করাটা খুবই কষ্টের একটি কাজ। কারণ খুব কম লোকই রক্তের ডোনার। তারপরেও রক্ত যোগার করতে পেরে খুবই ভালো লাগছিল। আমার পোস্টটি সম্পূর্ণরূপে ভরে মন্তব্য করায় আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। আমার বাংলা ব্লগে আপনার ব্লগিং জার্নি শুভ হোক এটাই কাম্য করি।
ভাইয়া প্রয়োজনের সময় রক্ত না পাওয়া যে কতটা কষ্টের তা আসলে যে বিপদে পড়ে সেই বুঝে । যাই হোক আপনার কলিগ ভাই যে রক্ত দিতে রাজি হলো সেটা শুনে আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। এবং উনি সুস্থ আছেন শুনে বেশ ভালো লাগলো। আপনার কলিগকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।আসলে এভাবে বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুভূতিটাই অন্যরকম।
হ্যাঁ আপু বিপদের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আমাদের দায়িত্ব কর্তব্যের ভিতরে পড়ে। কাউকে বিপদের সময় সাহায্য করার ভেতর আনন্দ এবং অনুভূতি লুকিয়ে থাকে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।