"শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-২৩ তম পর্ব"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ২ রা এপ্রিল, মঙ্গলবার,২০২৪ খ্রিঃ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা। আজকে আমি আপনাদের সাথে শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমনের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজা দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন ছোট ছিলাম মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা এদের হাত ধরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজা দেখতাম। তারপর একটু বড় হলে বাইসাইকেলে করে বন্ধুদের সাথে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার এই চারটি দিনে পুজো দেখার পাল্লা দিতাম। আমার শৈশবের শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার সময়টা সত্যি অনেক মধুর ছিলো। আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-২৩ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে ৷৷
প্রতিবছর শরৎকালের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, দুর্গাসপ্তমী,মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে "অকালবোধন" বলা হয়।
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার গমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
এই বছর শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। এটা আমাদের সবার জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
বর্তমানে তো দেখতেই পাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতির প্রবল আগ্রাসন এবং বিভিন্ন মহামারী ও যুদ্ধ লেগেই আছে। তাই বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সবার প্রার্থনা মা দুর্গা আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করুক। কারণ তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা মহাশক্তি মহামায়া।
কয়েকটি ফটোগ্রাফিকে একত্রিত করে কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
এই বছরের শারদীয়া দুর্গাপূজাতে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম। আমাদের পাড়ার ইয়াং জেনারেশনরা মিলে আমরা বিজয়া দশমীর একদিন পরে রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুর এ গিয়েছিলাম। এই জায়গাটিতে প্রতিবছর বেশ জাঁকজমকপূর্ণ শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গা উৎসব পালিত হয়। এবারে পুজার ভিতরে অবশ্য আমাদের বাড়ি থেকে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে গিয়েছিল আমাদের পরিবারের লোকজন। আমাকেও এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে যেতে বলেছিলো বাড়ি থেকে কিন্তু আমি পাড়ার ছেলেপেলেরা একসাথে যাবো বলে গিয়েছিলাম না। আমারা বিজয়া দশমীর একদিন পরে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুরে শ্রীশ্রী দুর্গা পূজা দেখতে যাব। আমরা এর আগেও এক বছর নলিয়া জামালপুরে পিকআপ ভাড়া করে পূজা দেখতে গিয়েছিলাম ইয়াং জেনারেশনরা মিলে। তাই এই বছরেও সবাই মিলে একটি পিকআপ ভাড়া করেছিলাম নলিয়া জামালপুরে পূজা দেখতে যাওয়ার জন্য।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার প্রথম ফটোগ্রাফিটি নলিয়া জামালপুরের প্যান্ডেলের ভেতরের দৃশ্য। নলিয়া জামালপুরের প্যান্ডেলের ভেতরে বেশ দারুন সাজসজ্জা করেছিল। রাতে প্যান্ডেলের সাজসজ্জা ও বিভিন্ন কালারের লাইটিং গুলো দেখতে ভীষণ ভালো লাগছিল। এই ছোট লেকের জলে বিভিন্ন রংয়ের আলোগুলো এসে প্রতিফলিত হচ্ছিল। আমরা শক্তিপীঠ গুলো দেখে এসে এই লেকের পাশে বেশ কিছু সময় দাঁড়িয়ে এখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করেছিলাম।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আবার দ্বিতীয় ফটোগ্রাফিটি হলো মেট্রোরেল। এ সময়ে ঢাকাতে নতুন মেট্রোরেল চালু হয়েছিল। আর সেই মেট্রোরেলের আদলেই এখানে একটি কাঠের মেট্রোরেল তৈরি করেছিল এখানকার শিল্পীরা। এই মেট্রো রেলের ভেতরে আবার পৃথিবীতে আসা বিভিন্ন মহাপুরুষ ও মনীষীদের মূর্তি দর্শনের ব্যবস্থা ছিল।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আবার তৃতীয় ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী স্বামী আয়াপ্পা। হিন্দু ধর্মের আত্মনিয়ন্ত্রণের দেবতা হিসাবে শ্রী শ্রী স্বামী আয়াপ্পা বেশ পরিচিত, বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু ও কেরালায় ভীষণ জনপ্রিয়। শ্রীশ্রী স্বামী আয়াপ্পা ছিলেন একজন সুদর্শন ব্রহ্মচারী। ভারতের কেরালায় আয়াপ্পান মন্দির রয়েছে।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার চতুর্থ ফটোগ্রাফি টি শ্রী শ্রী আদি শঙ্করাচার্যের। শ্রী শ্রী আদি শঙ্করাচার্য একজন দার্শনিক হিসেবে বেশ পরিচিত ছিল। তার শিক্ষার মূল কথা ছিল আত্মা ও ব্রহ্মার সম্মিলন, তিনি ব্রহ্মাকে নির্গুণ হিসাবে দেখতেন। শ্রী শ্রী আদি শঙ্করাচার্য দশনামী সম্প্রদায় ও অদ্বৈত বেদান্তের প্রতিষ্ঠাতা।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার পঞ্চম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী গনেশ পাগলার ভাস্কার্য। আমাদের বাংলাদেশের মাদারীপুরে শ্রী শ্রী গনেশ পাগলার জন্মস্থান। মাদারীপুরে ১৯০৫ সালে শ্রীশ্রী গণেশ পাগলার শিষ্যরা ৩৬৫ বিঘা জমির উপর শ্রী শ্রী গণেশ পাগলা সেবা আশ্রম প্রতিষ্ঠিত করে।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার পঞ্চম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী মাধবেন্দু পুরির ভাস্কর্য। শ্রী শ্রী মাধবেন্দু পুরি ছিলেন একজন বৈষ্ণব। মাধবেন্দু পুরীকে শ্রী শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর আন্দোলনের প্রাথমিক অনুপ্রেরণা কারী হিসাবে মনে করা হয়। তিনি চৈতন্য মহাপ্রভুর পূর্বে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের নীতি প্রচার করেছিলেন বলে এ ধারণা করা হয়। শ্রীশ্রী মাধবেন্দু পুরীর গুরুদেব ছিলেন শ্রী শ্রী লক্ষ্মীপতি তীর্থ।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার সপ্তম ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর। শ্রীশ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু ভারতের নবদ্বীপের ব্রাহ্মণ পরিবারের শ্রী শ্রী মাতা শচী দেবীর গৃহে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রীশ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর পিতৃ নিবাস বাংলাদেশের সিলেটের গোপালগঞ্জ উপজেলার দত্তরাইল গ্রামে। শ্রী শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুকে শ্রীরাধা-কৃষ্ণের প্রেমাবতার বলা হয়। শ্রীশ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু একজন পরম বৈষ্ণব। তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে। মহামন্ত্র জপ করতে নির্দেশ দিয়ে গেছেন।
আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-২৩ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আবার অন্য একটি পোস্টে "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ২৪ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
শৈশবে কাটানো মুহূর্তগুলি আসলেই অনেক আনন্দের হয়ে থাকে।তাছাড়া আপনার পূজা দেখার অনুভূতি পড়ে ভালো লাগলো।দারুণ বর্ননা দিয়েছেন দাদা,আর প্রত্যেকটি অসাধারণ ভাস্কর্য আলাদা আলাদা চরিত্র প্রকাশ করে।যেগুলো দেখে মুগ্ধ হলাম,ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ দিদি শৈশবের কাটানো পুজো দেখার মধ্যেও সত্যিই অনেক সুন্দর ছিল। আমার ফটোগ্রাফি গুলো আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।