"সুনামগঞ্জের লাকমাছড়া ভ্রমন-১ম পর্ব"

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago (edited)


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ-৪ঠা ফেব্রুয়ারি, রবিবার,২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



কভার ফটো

কয়েকটি ছবিকে একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আজকে আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। প্রতিনিয়ত আপনাদের সামনে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনারা অনেকে জানেন যে, আমি গত বছরে আগস্ট মাসের শেষের দিকে সিলেটে ভ্রমণে বেরিয়েছিলাম। এই ভ্রমণটা আমার জীবনের সবথেকে বড় একটি ভ্রমণ ছিলো। আর এই ভ্রমণ থেকে আমি অনেক জ্ঞানলাভ করতে পেরেছি। আসলে মানুষের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার ও প্রয়োজন হয় আর মানসিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি ভ্রমণ করা আর জ্ঞান লাভ করা। এর আগে আমি সুনামগঞ্জ মিনি কক্সবাজার ভ্রমণ, পদ্মবিল ভ্রমণ, ফ্লাওয়ার গার্ডেন ভ্রমণ, সুনামগঞ্জের হাওর বিলাস ভ্রমণ, শিমুলবাগান ভ্রমণ ১ম ও ২য় পর্ব, অ্যাডভেঞ্চার জাদুকাটা নদী ভ্রমণ সুনামগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খোঁজে ১ম পর্ব, ২য় পর্ব, ৩য় পর্ব‌ও ৪র্থ পর্ব, সুনামগঞ্জের নীলাদ্রি লেক- ১ম পর্ব ও ২য় পর্ব, সুনামগঞ্জের লাকমাছড়ার পথে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আর আজকে আমি "সুনামগঞ্জের লাকমাছড়া ভ্রমণ-১ম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

আমরা লেবু ড্রিংকস এর দোকানে বসে লেবুর শরবত খেলাম সবাই এবং এই দোকানদারের সাথে বেশ কিছু সময় গল্প করলাম। এই দোকান থেকে লাকমাছড়া পৌঁছাতে আরো ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার পর্যন্ত ও হেঁটে যেতে হবে। আমাদের কাছে যেহেতু বাইক রয়েছে তাই এটা নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই আমাদের বাইকগুলো ওনার দোকানের পাশে রাখলাম এবং হেলমেট ও ব্যাগ গুলো ওনার দোকানে রেখে দিলাম।

যাইহোক আমরা যে দোকানদারের থেকে লেবু ড্রিংকস খেয়েছিলাম এই দোকানটারটা সত্যিই অনেক বেশি ভালো ব্যক্তি। তা না হলে আমাদের মত অপরিচিত লোকের ব্যাগ রাখার দায়িত্বটা কখনোই নিতো না। হয়তো দোকানদার যদি ব্যাগ না রাখত আমাদের ব্যাগগুলো কাঁধে করে বালু আর ঝর্ণার জলের উপর দিয়ে অনেক কষ্ট করে কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া আসা লাগতো। তবে ব্যাগের ভিতরে গুরুত্বপূর্ণ কোন কিছু থাকলে সেটা অবশ্যই সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।

আমরা সব কিছু রেখে লাকমাছাড়ার দিকে বালুর আর ঝর্ণার জলের পথ দিয়ে সামনে এগোতে থাকলাম। প্রচন্ড রোদের ভিতরে অবশ্য হাঁটতে বেশ কষ্ট হয়েছিল তখন সময়টা ছিল পৌনে দুইটা। সকালে ঘুম থেকে উঠে সারাদিন বাইক জার্নির পর সত্যিই হাঁটতে একদমই মন চাচ্ছিলো না। কিন্তু প্রকৃতি দেখার জন্য হলেও তো আমাদের সবাইকে হেঁটে মেঘালয় পাহাড়ের খুব নিকটে যেতে হবে। আমরা লাখ মাসের আর খুব কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই দেখলাম যে, দুইটা ছেলে বালির উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝর্নার জলের ভেতরে বেশ খেলা করছে।

এই দুইটা ছেলের খেলা করাই দেখে সত্যি শৈশবের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো আমরাও এক সময় এদের মতই জলের ভেতর খেলা করতাম। আমি আর আমার বন্ধু রাহুল ওদের খেলা করার বেশ কয়েকটি ফটোগ্রাফি করলাম সত্যি ছবিগুলো বেশ সুন্দর হচ্ছিলো। তারপর আমি এই দুইটা ছেলেকে ডাক দিয়ে ওদের নাম জিজ্ঞাসা করলাম এবং জানতে পারলাম যে, এদের একজনের নাম রাহুল। আর একজনের নামটা অবশ্য এখন আমার মনে নেই। তবে আমার বন্ধু রাহুলের নামের সাথে মিলে যাওয়ায় বেশ কিছু সময় ওর সাথে গল্প করলাম।

যে দুইজন বালির উপর বয়ে যাওয়া ঝরনার জলের উপর এভাবে সুন্দর খেলা করতেছিল এদের দুজনের বাড়ি লাকমাছড়া ঝর্ণার পাশেই। তাদের থেকে জানতে পারলাম দুজনেই ছোটকালের বন্ধু এবং বাড়িও তাদের পাশাপাশি। আর দুজনেই একসাথে লেখাপড়া করে। এই দুজনের সাথে আমি আর আমার বন্ধু রাহুল অনেকটা সময় কাটালাম এবং বেশ মজা করলাম। বিশেষ করে জলের উপরে ওদের ডিগবাজি দেওয়া আমার কাছে সত্যিই অসাধারণ লেগেছে।

তারপর আমরা আর একটু আগাতেই মেঘালয় পাহাড়ের বেশ কাছাকাছি চলে গেলাম। সত্যি বলতে লাকমাছড়ার পরিবেশটা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। আমি অবশ্য প্রথমের দিকে ভেবেছিলাম যে, লাকমাছড়া ঝর্ণাটি বাংলাদেশের সীমান্তের ভেতরে। কিন্তু আমরা জায়গাটিতে গিয়ে বুঝতে পারলাম যে, লাকমাছড়া ঝর্ণাটা মেঘালয় পাহাড়ের বেশ ভেতরে। তবে ঝরনা দেখতে না পারলেও পাথরের উপর দিয়ে ঝর্নার জলের স্রোত বয়ে যাওয়া দেখতে ভীষণ ভালো লাগছিলো।

লাকমাছাড়ার মেঘালয় পাহাড়ের নিচ দিয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের আন্তর্জাতিক সীমানা রেখা দেখতে পেলাম। যদিও এই জায়গাটিতে ইন্ডিয়ান বিএসএফ অথবা বাংলাদেশী বিজিবি ছিল না। কিন্তু সাইনবোর্ড এর উপর সুন্দরভাবে লিখে দেওয়া ছিলো যে, এই সীমানারেখা অতিক্রম করা নিষেধ এবং আদেশ ক্রমে কর্তৃপক্ষ। তাই আমরা এটা দেখে আর সামনের দিকে আগাতে যায়নি। তাই আমরা আমাদের বাংলাদেশের ভিতরে যে, সুন্দর অংশটুকু আছে সেটুকুই উপভোগ করা সিদ্ধান্ত নিই।

সুনামগঞ্জের লাকমাছড়া ভ্রমণ- ১ম পর্বটি আজকে পর্যন্তই শেয়ার করলাম পরবর্তী একটি পোস্টে ২য় পর্ব আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।



পোস্টের ছবির বিবরণ


ডিভাইস: স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন: সুনামগঞ্জ, সিলেট
তারিখ: ৩০ শে আগস্ট ২০২৩



প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



আমি কে !

20230826_112155.jpg

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 5 months ago 

বাহ আপনার পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে আপনি অনেক অনেক জায়গা করেছেন। এটা ঠিক বলেছেন ভ্রমণ করলে অনেক কিছু জানা যায় এবং জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। সত্যি ডিগবাজ খাবার সে ছবিগুলো কিন্তু খুবই চমৎকার লেগেছে। আপনার ভ্রমণ গল্প শুনে খুবই ভালো লাগলো।

 5 months ago (edited)

বাচ্চাদের ডিগবাজি দেখতে আসলেই বেশ সুন্দর লাগছিল তাই আমরা সেখানে কিছু সময় অপেক্ষা করেছিলাম। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

আজকে আপনি আবার সুনামগঞ্জের লাকমাছড়া ভ্রমণ পোস্ট শেয়ার করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। এর আগের পর্বগুলো আমি দেখেছিলাম বেশ ভালো ছিল। বিশেষ করে দোকানদারের কাছে আপনাদের বাইক ব্যাগগুলো রেখে গিয়েছেন দেখে আরো ভালো লাগলো। আসলে এখনো এরকম মানুষ পাওয়া যায় এটা চিন্তা করেই বেশ ভালো লাগলো। তাছাড়া আপনারা হেঁটে গিয়ে বেশ সুন্দর সুন্দর ছবিও তুলেছেন। আজকের পোস্টটি পড়ে অনেক ভালই লাগলো পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 5 months ago 

আসলে আমরা যে দোকানদারের কাছে ব্যাগ এবং বাইকগুলো রেখেছিলাম তিনি অনেক ভালো ছিলেন। লাকমাছড়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেশ সুন্দর উপভোগ করেছিলাম আমরা। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57173.66
ETH 3067.89
USDT 1.00
SBD 2.39