"চৈত্র মাসের শিব পূজা"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ১০ ই মে, শুক্রবার, ২০২৪ খ্রিঃ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
কয়েকটি ফটোগ্রাফি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি বেশ কিছুদিন হলেও ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে এসেছি এখানে এসে গ্রামীণ প্রকৃতিতে অনেক সুন্দর সময় উপভোগ করছি। ঢাকা শহরের রোবোটিক জীবন যাপন আমার একদমই ভালো লাগেনা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় গ্রামীণ জীবন আমার ভীষণ ভালো লাগে। তাইতো যখনই সুযোগ পায় তখনই গ্রামীণ প্রকৃতিতে ফিরে আসি। জীবনকে সুন্দরভাবে উপভোগ করতে হলে অবশ্যই গ্রামে থাকতে হবে। কথায় আছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ১২ মাসে ১৩ পার্বণ হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অনেক দেব-দেবতা আর পূজা করে থাকে তাই সারা বছর পূজা, উৎসব অনুষ্ঠান এগুলো চলতেই থাকে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বাংলা বছরের শেষ মাস অর্থাৎ চৈত্র মাস ধরে শিবের পূজা করে থাকে। গতবার যখন আমি বাড়িতে আসছিলাম তখন চৈত্র মাস চলছিলো। হঠাৎ দুপুরের সময় ঢাকঢোল পিটিয়ে সন্ন্যাসীরা শিব ঠাকুরকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করলো।
অনেকদিন পরে সন্ন্যাসী আর শিব ঠাকুরকে দেখে মনের ভেতর ভীষণ ভালো লাগছিলো। এই সন্ন্যাসী দলের একজন ছিলো মধ্যবয়সী আর বাকি সবাই ছিল শিশু কিশোর। এইসব শিশু কিশোর সন্ন্যাসীদের ধর্মপরায়ণতা দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছিলাম সেদিন। কারণ প্রচন্ড রোদ্রের দুপুরে এভাবে শিব ঠাকুর কে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ানো সহজ কথা নয়।
যে সময়টাতে মানুষজন প্রচন্ড তাপদাহের কারণে ঘর থেকেই বের হতো না সে সময়টাতে শিব ঠাকুর কে নিয়ে প্রতি বাড়িতে বাড়িতে ভিক্ষা করা দেখে মুগ্ধ হয়ে ছিলাম। আর এসব সন্ন্যাসীদের পুরো একমাস অর্থাৎ চৈত্র মাস ধরেই শিব ঠাকুরকে নিয়ে এভাবে বাড়িতে বেড়াতে ঘুরে বেড়াতে হয় আর পূজা অর্চনা করতে হয়।
আমরা যখন বয়সে ছোট ছিলাম তখন আমাদের গ্রামেও শিব ঠাকুরের এরকম পূজা করা হতো। কিন্তু আমাদের গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠরা আস্তে আস্তে শিব ঠাকুরের এই পূজা বাদ দিয়ে দেয়। সত্যি বলতে এই পূজাটি আমাদের কাছে অনেক ভালো লাগতো। তখনকার সময়ে চৈত্র মাসের দুপুরে সারাদিন শিব ঠাকুর কে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতাম আর ভিক্ষা করতাম।
সেদিনই আমাদের বাড়িতে আসা ছোট ছোট বাচ্চা সন্ন্যাসীদেরকে দেখে অতীতের স্মৃতির কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যতগুলো পূজা রয়েছে তার ভিতরে অন্যতম কঠিন পূজা চৈত্র মাসে শিব ঠাকুরের পূজা। যেসব সন্ন্যাসীরা চৈত্র মাসের শিব ঠাকুরের এই পূজা করে থাকে তারা চৈত্র মাস ধরে ধর্মীয় অনেক নিয়ম শৃঙ্খলার ভিতরে জীবন যাপন করে।
এসব সন্ন্যাসীদের প্রতিদিন উপোস থেকে সারাদিন গ্রামে গ্রামে শিব ঠাকুর কে নিয়ে ভিক্ষা করে সন্ধ্যার পরে এসে শিব ঠাকুরের পূজা সমাপ্ত করে তারপর উপোস ভঙ্গন করতে হয়। সারাদিন ভিক্ষা করে যা কিছু পাওয়া যায় সেসব দিয়েই দিনশেষে শিব ঠাকুরের পূজা করা হয়। আমাদের বাড়ি থেকে শিব ঠাকুরের পূজার জন্য চাল, ডাল, তেল, সবজি, টাকা এসবের সাথে সাথে নারিকেল ফল দিয়েছিলাম।
আমরা যখন ছোটবেলায় চৈত্র মাসে শিব ঠাকুরের এই পূজা করতাম আর গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভিক্ষা করতাম তখন যাদের বাড়িতে নারিকেল গাছ থাকতো তাদের কাছে নারিকেল ফল ভিক্ষা চাইতাম। তারপর সে বাড়ির মানুষ নারিকেল ফল ভিক্ষা দেওয়ায় রাজি হলে নিজেরা সাথে সাথেই নারিকেল গাছে উঠে যেতাম তারপর গাছ থেকে নারিকেল পারতাম।।
এখনো গ্রাম বাংলার অনেক মানুষ চৈত্র মাসের শিবপূজার এই ঐতিহ্যটা ধরে রেখেছে দেখে অনেক ভালো লাগে। প্রতিটি মানুষের উচিত নিজেকে সৃষ্টিকর্তার কাছে সমর্পণ করা।
পোস্টের ছবির বিবরন
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪ |
---|---|
ক্যামেরা | ১০৮ মেগাপিক্সেল |
তারিখ | ৭ ই এপ্রিল ২০২৪ খ্রিঃ |
লোকেশন | কুষ্টিয়া |
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
আমি প্রায় লক্ষ্য করে থাকি আপনি আপনাদের ধর্মের বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পর্কে আমাদের মাঝে পোস্ট শেয়ার করে থাকেন এবং আমাদের জানার সুযোগ করে দেন। ঠিক তেমনি আজকে আবারো একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন এবং অনেক কিছু জানতে পারলাম এর চৈত্র মাসের শিব পূজা সম্পর্কে। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাই আমি আমাদের বিভিন্ন ধর্মে অনুষ্ঠান সম্পর্কে আমার বাংলা ব্লগে পোস্ট করি। অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
চৈত্র মাসের শিব পূজা দেখে অনেক ভালো লাগলো। পূজা হলে অনেক ভালো লাগে। আর আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে পূজা সম্পর্কে জানতে পারলাম। যদিও এই বিষয়গুলোতে ধারণা নেই। তবে আপনার পোস্ট দেখে ভালো লেগেছে।
এসব পূজা সম্পর্কে একটু ধারণা লাভ করতে পারলেন জেনে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য।
এখনো যে চৈত্র মাসে শিব পুজোর প্রথা গ্রামে প্রচলিত আছে, জেনে বেশ ভালো লাগলো। আমাদের গ্রামে এটাকে দোল পুজো বলতো। তবে আমি অবাক হলাম, এই বাচ্চারা সারাদিন না খেয়ে এত রোদের ভিতর ঘোরাঘুরি করছে তাই দেখে! যাইহোক, অনেকদিন পর সেই ছোটবেলার স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠলো আপনার পোস্ট দেখে।
এই পুজোটাকে অনেকেই অনেক ধরনের নামে চেনে। অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।