"শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৮ তম পর্ব"
হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ৪ঠা মার্চ, সোমবার,২০২৪ খ্রিঃ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার শুভেচ্ছা। আজকে আমি আপনাদের সাথে শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমনের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজা দেখতে ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক পছন্দ করি। আমি যখন ছোট ছিলাম মা-বাবা, দাদু-ঠাকুমা এদের হাত ধরে শ্রী শ্রী মা দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে পূজা দেখতাম। তারপর একটু বড় হলে বাইসাইকেলে করে বন্ধুদের সাথে শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার এই চারটি দিনে পুজো দেখার পাল্লা দিতাম। আমার শৈশবের শ্রী শ্রী মা দুর্গা পূজার সময়টা সত্যি অনেক মধুর ছিলো। আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৮ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে ৷৷
প্রতিবছর শরৎকালের আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, দুর্গাসপ্তমী,মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। শারদীয়া দুর্গাপূজাকে "অকালবোধন" বলা হয়।
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
"শ্রী শ্রী মা দুর্গার গমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ"
এই বছর শ্রী শ্রী মা দুর্গার আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। এটা আমাদের সবার জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
বর্তমানে তো দেখতেই পাচ্ছেন বিশ্ব রাজনীতির প্রবল আগ্রাসন এবং বিভিন্ন মহামারী ও যুদ্ধ লেগেই আছে। তাই বর্তমান বিশ্ব অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সবার প্রার্থনা মা দুর্গা আমাদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করুক। কারণ তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা মহাশক্তি মহামায়া।
কয়েকটি ফটোগ্রাফিকে একত্রিত করে কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
এই বছরের শারদীয়া দুর্গাপূজাতে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম। আমাদের পাড়ার ইয়াং জেনারেশনরা মিলে আমরা বিজয়া দশমীর একদিন পরে রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুর এ গিয়েছিলাম। এই জায়গাটিতে প্রতিবছর বেশ জাঁকজমকপূর্ণ শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গা উৎসব পালিত হয়। এবারে পুজার ভিতরে অবশ্য আমাদের বাড়ি থেকে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে গিয়েছিল আমাদের পরিবারের লোকজন। আমাকেও এই জায়গাটিতে পূজা দেখতে যেতে বলেছিলো বাড়ি থেকে কিন্তু আমি পাড়ার ছেলেপেলেরা একসাথে যাবো বলে গিয়েছিলাম না। আমারা বিজয়া দশমীর একদিন পরে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, রাজবাড়ী জেলার নলিয়া জামালপুরে শ্রীশ্রী দুর্গা পূজা দেখতে যাব। আমরা এর আগেও এক বছর নলিয়া জামালপুরে পিকআপ ভাড়া করে পূজা দেখতে গিয়েছিলাম ইয়াং জেনারেশনরা মিলে। তাই এই বছরেও সবাই মিলে একটি পিকআপ ভাড়া করেছিলাম নলিয়া জামালপুরে পূজা দেখতে যাওয়ার জন্য।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার প্রথম ফটোগ্রাফির ছবিটি শ্রী শ্রী কামাখ্যা দেবীর। এই দেবীর শক্তি পিঠের নাম শ্রী শ্রী কামাখ্যা শক্তিপীঠ। এই স্থানে শ্রীশ্রী প্রজাপতি দক্ষ মহারাজের কন্যা সতীর যোনি পড়েছিলো। এই স্থানটি ভারতের গৌহাটিতে। শ্রী শ্রী কামাখ্যা শক্তিপীঠ বিশাল জাগ্রত। এখানকার পিট রক্ষকের নাম উমানন্দন।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার দ্বিতীয় ফটোগ্রাফিটি ছিল শ্রী শ্রী যোগ্যদা দেবীর। এই স্থানটি ভারতের বর্তমানে অবস্থিত। শ্রী শ্রী প্রজাপতি দক্ষ মহারাজের কন্যা সতী দেবীর ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল পড়েছিল এই স্থানে। এখানকার শক্তি পিটের নাম যোগ্যদা শক্তি পীঠ। মা কালীর ভিন্ন একটি রূপ হলো শ্রী শ্রী যোগ্যদা দেবী। এখানকার পীঠ রক্ষা করেন ক্ষীরকন্ঠ।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার তৃতীয় ফটোগ্রাফিটি শ্রী শ্রী কালিকা দেবীর। এই দেবীর মন্দিরটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত। শ্রী শ্রী প্রজাপতি দক্ষ মহারাজের কন্যা সতী দেবীর ডান পায়ের আঙ্গুল পড়েছিল এই স্থানে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এই মন্দিরটির নাম হলো কালিকা শক্তিপীঠ। এখানকার পীঠ রক্ষকের নাম নকুলেশ্বর। ভারতে বেড়াতে গেলে এই শক্তিপীঠ দর্শন করার ইচ্ছা রয়েছে।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার চতুর্থ ফটোগ্রাফিতে রয়েছে শ্রীশ্রী ললিতা দেবীর। এই শক্তি পীঠের নাম হচ্ছে প্রয়াগ শক্তিপীঠ। শ্রীশ্রী দক্ষ মহারাজের কন্যা সতী দেবীর হাতের আঙ্গুল পড়েছিল এই স্থানে। ভারতের উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদে অবস্থিত প্রয়াগ শক্তিপিঠ।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার পঞ্চম ফটোগ্রাফিটিতে রয়েছে শ্রী শ্রী জয়ন্তী দেবীর। এই দেবীর মন্দির আমাদের বাংলাদেশ সিলেটে অবস্থিত। এই শক্তিপীঠের নাম হলো জয়ন্তিয়া শক্তিপীঠ। এখানেই শ্রী শ্রী প্রজাপতি মহারাজ দক্ষের কন্যা সতী দেবীর বামজঙ্ঘা পড়েছিল। এখানকার ভৈরবের নাম হলো ক্রমোদেশ্বর। গত বছর অবশ্য সিলেটে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেছিলাম তবে জানতাম না যে, সিলেটে এই দেবীর শক্তি আছে যদি জানতাম এই জায়গাটিতে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। তবে ইচ্ছা আছে আবার যদি সিলেটে যায় এই দেবীর মন্দিরটি দর্শন করবো।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার ষষ্ঠ ফটোগ্রাফিতে রয়েছে শ্রী শ্রী বিমলা দেবী। এখানকার পীঠ রক্ষক খুব ভৈরবের নাম সংবর্ত। এই মন্দিরটি ভারতের মুর্শিদাবাদের অবস্থিত। এখানে শ্রীশ্রী প্রজাপতি দক্ষ মহারাজের কন্যার মুকুট পড়েছিল। এই শক্তি পিঠের নাম হলো কিরিটেশ্বরী শক্তিপীঠ। যেহেতু এই শক্তিপীটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত তাই যদি কখনো ভারতে যায় এ শক্তি পিঠে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।
ডিভাইস: স্যামসং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
লোকেশন:নলিয়া জামালপুর,রাজবাড়ী
তারিখ:২৬শে অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ
আমার সপ্তম ফটোগ্রাফিতে রয়েছে শ্রী শ্রী বিশালাক্ষী দেবী। এখানকার এই শক্তিপীঠের নাম হলো বিশালাক্ষী শক্তিপীঠ। এই শক্তিপীঠের অবস্থান ভারতের উত্তরপ্রদেশে। এখানে দেবীর কানের দুল পড়েছিলো। এখানকার রক্ষক ভৈরবের নাম কাল ভৈরব। এই শক্তিপীঠ একটি ভীষণ জাগ্রত শক্তিপীঠ।
আজকে আমি "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ-১৮ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আবার অন্য একটি পোস্টে "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ- ১৯ তম পর্ব" আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার "শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণ ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
অনেক দেব দেবীর ছবি দিয়ে সাজিয়েছেন আপনার আজকের শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমণের ১৮ তম পর্ব। ছবি ও ছবির বর্ণনা অনেক ভালো হয়েছে। ইয়াং পোলাপান এখন কোন উৎসবে যেতে দেখি পিকআপে করে আনন্দ করতে করতে যায়।এটা এখন ঈদ বা পুজো সর্বত্র চোখে পরে। যদিও অনেক ঝুকিপূর্ণ কিন্তু তাদের আনন্দ দেখতে আমার ভালোই লাগে। আপনারাও পিকআপে বেশ আনন্দ করেছেন। ভালো হয়েছে পোস্টটি। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
সবাই মিলে একসাথে পুজো দেখার মজাই আলাদা। অনেক সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
বাহ! আপনি তো শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমার ১৩ তম পর্ব শেয়ার করলেন। দেখে বেশ ভালই লেগেছে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। প্রতিটি ধর্মের উৎসব গুলো আমার বেশ ভালোই লাগে দেখতে। আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাই সবার উৎসব উপভোগ করি। আপনার আজকের শেয়ার করা শারদীয়া দুর্গাপূজা পরিক্রমার পর্বটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে।
অবশ্যই আপু ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আপনার মত আমিও প্রতিটি ধর্মের উৎসব অনেক বেশি উপভোগ করি। অনেক সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
দুর্গাপূজার কিছু ফটোগ্রাফি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন ।আপনি যখন ছোট ছিলেন তখন বাবা-মা দাদু ঠাকুমার সাথে পুজো দেখতে যেতেন ।যখন বড় হয়ে গেলেন তখন বন্ধুদের সাথে বাই সাইকেলে করে পূজা দেখতে যেতেন ।ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু যখন ছোট ছিলাম তখন বন্ধুদের সাথে এসআই করে পুজো দেখতে বের হতাম সেই সময়টা অনেক সুন্দর ছিল। আমার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।