ভ্রমণ: বাংলাদেশ-ভারত "সীমান্ত বাজার" সুনামগঞ্জ।

in আমার বাংলা ব্লগlast year


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ- ২২ ই মে, সোমবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। কয়েক মাস আগে আমি সিলেটের সুনামগঞ্জে আমার পিসিমণির বাসায় গিয়েছিলাম আপনারা হয়তো সেটা জানেন অনেকে আজকে আমার পোস্টটি হলো বাংলাদেশ-ভারত "সীমান্ত বাজার" সুনামগঞ্জে ভ্রমণে গিয়েছিলাম তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করব। সিলেটে সুনামগঞ্জে পিসিমণির বাসায় অনেক বারই গিয়েছি অবশ্য পিসিমণির বাসায় গিয়ে বাইরে কোথাও ভ্রমন করতে খুব একটা যাওয়া হয় না। আসলে পিসিমণির বাসায় সবাই ব্যস্ত আর আমারো একা একা কোথাও যাইতে ভালো লাগেনা। তবে গতবার যখন সিলেটে গিয়েছিলাম তখন পিসেমশাইয়ের কাছে সুনামগঞ্জের "সীমান্ত বাজার" দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলাম।



কভার ফটো

20230521_131219.jpg

কয়েকটি ছবিকে একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



20221108_094308.jpg

সীমান্ত বাজার ভ্রমণের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে রেডি হয়ে সাড়ে আটটার দিকে দুইটি মোটরসাইকেল নিয়ে আমার দুই দাদা, পিসেমশাই এবং আমি মোট চারজন বের হলাম। তবে বের হওয়ার আগেই আমরা গুগল ম্যাপ থেকে ভালোভাবে লোকেশন টা দেখে নিলাম।

20221108_084531.jpg

গুগল ম্যাপে সার্চ করে দেখলাম যে দিরাই থেকে সীমান্ত বাজার অব্দি প্রায় ৮০ কিলোমিটার মতো পথ। কারন আমরা কেউই খুব একটা ভালো করে চিনি না "সীমান্ত বাজার" আমার পিসিমনির বাসায় সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভার ভেতরে। দিরাই থেকে সুনামগঞ্জে ৫০ কিলোমিটার পথ যেতে আমাদের প্রায় এক ঘণ্টার মতো সময় লাগলো। যদিও মোটরসাইকেল দ্রুত চালালে আরো অনেক কম সময় লাগে তবে আমার পিসেমশাই এবং আমার কনকদা খুবই আস্তে এবং ধীরেসুস্থে মোটরসাইকেলটা চালাই।

20221108_143314.jpg

সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে সীমান্ত বাজার প্রায় ৩০ কিলোমিটার ভেতরে। সুনামগঞ্জ থেকে আমরা সুরমা নদী পার হওয়ার জন্য আমবাড়ি নৌকা ঘাটে চলে গেলাম। নৌকা ঘাটে গিয়ে দেখলাম যে মোটরসাইকেল লোকাতে উঠানো এবং নামানো এখনো অনেক রিক্সের। আমার পিসেমশাই যেহেতু নতুন ড্রাইভার তাই নৌকাতে মোটরসাইকেল উঠানের সাহস পাচ্ছিল না। তারপর গাড়িটা আমার কাছে দিয়ে বললো যখন নৌকাতে গাড়িটা তুমি ওঠাও। তারপর আমি অনেক সাবধানতার সাথে নৌকাতে গাড়িটা উঠালাম এবং নদীপাড় দিয়ে পার দিলাম। সুরমা নদী পার হয়ে মঙ্গলকাটা বাজার দিয়ে সীমান্ত বাজারের দিকে আগাতে থাকলাম।

20221108_094533.jpg

সীমান্ত বাজারের দিকে যতই যা ছিলাম ততই যেন মনটা ভালো হয়ে যাচ্ছিল কারণ "সীমান্ত বাজার" মেঘালয়ের খুবই কাছে। দূর থেকে মোটরসাইকেলের উপর থেকে মেঘালয়ের বড় বড় পাহাড়গুলি দেখতে বেশ চমৎকার লাগছিল।

20221108_095626.jpg

মোটরসাইকেলে টানা আড়াই ঘন্টা আজ আর পরে ফেনীবিলের সীমান্ত বাজারের রাস্তায় প্রবেশ করলাম। সীমান্ত বাজারে সামনে আসতে আমাদের প্রায় এগারোটা বেজে গিয়েছিল। প্রবেশ করতেই দেখলাম যে বেশ ভালই ভীর হয়েছে আসলে বিভিন্ন রকম পণ্য নিয়ে বাজারে ঢোকার জন্য সবাই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

20221108_093637.jpg

আর সীমান্ত বাজারের ভেতরে পুরো বাজারটা ফাঁকা রয়েছে। এখানে এসে বিজিবিদের কাছে শুনলাম যে বাজার কয়টা থেকে শুরু হবে। তারা বলল যে বারোটা থেকে গেট খুলে দেবে। এখানে এসে দেখলাম যে সীমান্ত বাজারে ঢুকতে হলে বিজিবিদের পারমিশন নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে। ততক্ষণে আমরা সবাই ওখানে একটি হোটেল থেকে খাওয়া-দাওয়া করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।

তারপরে বারোটার পরে এসে দেখি যাদের কাছে বিজনেস কার্ড আছে তাদেরকে বিজিবিরা ঢুকতে দিচ্ছে। তবে এলাকার স্থানীয়রা অনেকেই দেখলাম যে বিজিবিদের কাছে শুনে ঢুকে পড়ছে কার্ড বাদেই। এটা দেখে আমরা বিজিবিদের কাছে রিকুয়েস্ট করলাম যে আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি শুধুমাত্র দেখার জন্য ঢুকতে দেওয়া যাবে কিনা! তারা বলল যে আপনারা পাশে একটু অপেক্ষা করেন। তারপর ঢুকিয়েন তবে কোন কিছু ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না।

20221108_135849(0).jpg

আমরা বিজিবিদের শর্তে রাজি হয়ে কিছুক্ষণ পরে শুধুমাত্র ভ্রমণের জন্য সীমান্ত বাজারে ঢুকলাম। সীমান্ত বাজারের ভেতরে মোবাইল ফোন অথবা ক্যামেরায় দিয়েছে কোন ধরনের ছবি তোলা নিষিদ্ধ। তাই বাজারে ভেতর থাকা অবস্থায় ফোন বের করলাম না।

বাজারের ভিতরে গিয়ে দেখলাম যে ইন্ডিয়ান ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে এসে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করছে আবার বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের পণ্য নিয়ে ইন্ডিয়ান ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করছে। আর বাজারের ভিতরে সিকিউরিটি হিসাবে বাংলাদেশের বিজিবি এবং ইন্ডিয়ান বিএসএফ কঠোর নজরদারিতে রেখেছে।

20221108_141402.jpg

তারপর বাজারের ভেতরে কয়েক ঘন্টা ঘোরাফেরা করে আবার সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সুনামগঞ্জে এসে পানসি হোটেলে সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করে আবার সেখান থেকে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

তবে এই ভ্রমণে সীমান্ত বাজারের থেকেও আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে যে দূর থেকে মেঘালয়ের পাহাড় গুলো দেখতে। এমনটা মনে হচ্ছিল যে ওখান থেকে যদি মেঘালয়ের পাহাড়ের দিকে যেতে পারতাম তাহলে অনেক বেশি শান্তি লাগতো মনের কাছে। কিন্তু বর্ডার এলাকা হওয়া সত্বে আর মেঘালয়ের পাহাড় গুলো সব ইন্ডিয়ার সরকারের হওয়ার কারণে এটা সম্ভব ছিল না। সেদিনে ভ্রমণ শেষে বাসায় আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা লেগে গিয়েছিল।



পোস্টের ছবির বিবরন

ক্যামেরাম্যান@aongkon
ডিভাইসস্যামসাং জে-৭ প্রো
ক্যামেরা১৩ মেগাপিক্সেল
তারিখ৮ ই নভেম্বর ২০২২
লোকেশনসুনামগঞ্জ, সিলেট


প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 last year 

সীমান্ত বাজার সম্পর্কে নতুন কিছু ধারণা পেলাম আপনারা আজকের এই পোস্ট পড়ে। অবশ্য বিজিবিরা কার্ড ছাড়া বাজার গেটের মধ্যে ঢুকতে দেয় না, আবার অনেককে ঢুকতে দিয়েছে বিষয়টা একটু অন্যরকম। আবার সেখানে কেনাকাটা করা যাবে না যাদের কার্ড নেই। সকাল থেকে ফ্রেশ হয়ে আপনি এই সীমান্ত বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন যা দীর্ঘ পথ এর বিষয় এবং সেখানে সুস্থ অবস্থায় উপস্থিত হতে পেরেছেন, বিস্তারিত জানতে পারলাম এবং অনেক কিছু ধারণা লাভ করলাম। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

দাদা একটু কষ্ট করে ঠিকানা দেবেন আমিও যাবো। যে সুন্দর প্রকৃতি আর আপনি এত সুন্দর করে আপনার ভ্রমনের বর্ণনা করেছেন যে একবার ঘুরে আসতে বেশ মন চাইছে। কিন্তু এটা আবার কেমন নিয়ম হলো যে বিজিবিরা কার্ড ছাড়া বাজার গেটের মধ্যে ঢুকতে দেয় না, আবার অনেককে ঢুকতে দিয়েছে? বিষয়টা একটু অন্যরকম হয়ে গেল না। আবার নাকি সেখানে যাদের কার্ড নেই তারা কেনাকাটা করতে পারবে না।

 last year 

আসলে ওদের পরিচিত হলে ঢুকতে দেয়। আর বিজনেস কার্ড ছাড়া কিছু কেনাকাটা করা যায় না, এটাই নিয়ম কারন কার্ডের মাধ্যমে সরকার কে ট্যাক্স দিতে হয়। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 59077.53
ETH 2518.13
USDT 1.00
SBD 2.48