সুস্বাদু ও মজাদার "ময়দা ও চিনি দিয়ে মুচমুচে রসালো পাতা পিঠা "।।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু
হ্যালো বন্ধুরা
কেমন আছেন?
আমি আনিসুর রহমান।আমার ইউজার আই ডি @anisshamim।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি “আমার বাংলা ব্লগ” এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন।আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ আমি ও ভালো আছি।শীতের আগমনী বার্তায় অনেক জায়গায় পিঠা খাওয়ার উৎসব শুরু হয়ে গেছে।আজ আমি আপনাদের মাঝে এমন একটি পিঠা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি যা শীত ও গ্রীষ্ম দুই সময়েই তৈরি করে খাওয়া হয়। বিশেষকরে বাসায় মেহমান আসলে বা নতুন জামাই আসলে এ ধরনের পিঠা রেসিপি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়ে থাকে।রেসিপিটি হচ্ছে ময়দা ও চিনি দিয়ে মুচমুচে রসালো পাতা পিঠা।আসলে পাতা পিঠা বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে।পাতা পিঠা রেসিপিটি দেখতে যেমন সু্ন্দর লাগছিলো তেমনি খেতেও খুব সুস্বাদু হয়েছিল।অবশ্য যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য আমার তৈরি করা পাতা পিঠার রেসিপিটি খেতে একটু সমস্যা হতে পারে। এছাড়া আশাকরি, সকলেরই রেসিপিটি ভালো লাগবে।
উপকরণের তালিকা
ক্রমিক নং | উপকরণের নাম | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | ময়দা | ২ কাপ |
২ | চিনি | ১ কাপ |
৩ | তেল | ২ টেবিল চামচ |
৪ | লবণ | স্বাদমতো |
৫ | লেবু | ১ টুকরো |
৬ | পানি | পরিমাণ মতো |
উপকরণের ছবি
রেসিপির প্রস্তুত প্রণালীর প্রতিটি ধাপ নিচে তুলে ধরা হলোঃ
প্রথম ধাপ
প্রথমে একটি বোলে ময়দা নিয়ে স্বাদমতো লবন দিয়ে নিবো।
দ্বিতীয় ধাপ
এরপর তেল ও পরিমাণ মতো পানি দিয়ে নিবো।
তৃতীয় ধাপ
এরপর ময়দা গুলিয়ে একটি ডো বানিয়ে দশ মিনিটের জন্য রেখে দিবো।
চতুর্থ ধাপ
এরপর সিরা বানানোর জন্য চুলাতে একটি করাই বসিয়ে এক কাপ চিনির সাথে দেড় কাপ পানি দিয়ে নিবো।
পঞ্চম ধাপ
নেড়েচেড়ে সিরাটার বলক তুলে নিবো।সিরাটা ফুটে উঠার দুই-তিন মিনিট পর সিরাটা হয়ে যাবে।এরপর একটু লেবুর রস দিয়ে নিবো যাতে সিরাটা ঠান্ডা হবার পর জমাট বেধে না যায়।এরপর করাইটাকে নামিয়ে একটি জায়গায় রেখে দিবো।
ষষ্ঠ ধাপ
দশ মিনিট পর ডোটাকে নিয়ে আরো কিছুক্ষন মথে নিবো। অল্প একটু ডো নিয়ে বাকিটুকু ডেকে রেখে দিবো।আর এই ডোটাকে প্রথমে গোল করে,পরে একটু ময়দা ছিটিয়ে লম্বাটে একটা রুটি বানিয়ে নিবো।এরপর একটা চাকু দিয়ে চারপাশ কেটে নিবো।
সপ্তম ধাপ
পিঠার ডিজাইন দেওয়ার জন্য মাঝ বরাবর কেটে নিবো।এরপর আবারও অর্ধেকটার মাঝ বরাবর কেটে নিবো।এর ফলে প্রতিটা সমান হবে এবং ভাজার সময় প্রতিটা অংশ একসাথে ভাজা হবে।
অষ্টম ধাপ
কেটে নেওয়ার পরে অর্ধেকটার দুইপাশে পানি লাগিয়ে নিবো। বাকি অর্ধেকটা এর মধ্যে রেখে হাত দিয়ে চেপে নিবো।এরপর আবারও ভাজ দিবো।এভাবে একটি পিঠা বানানো হয়ে যাবে।বাকি পিঠাগুলো এভাবে বানিয়ে নিবো।
নবম ধাপ
এরপর চুলাতে একটি ফ্রাইপ্যান বসিয়ে সয়াবিন তেল দিয়ে নিবো।
দশম ধাপ
এরপর বানানো পাতা পিঠাগুলো তেলের মধ্যে দিয়ে দিবো।
একাদশ ধাপ
এরপর মিডিয়াম আঁচে পিঠাগুলো এপিঠ ও ওপিঠ করে ভালো করে ভেজে নিবো।
শেষ ধাপ
এরপর ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে আগে থেকে তৈরি করে রাখা চিনির সিরার মধ্যে গরম পিঠা দিয়ে দুই -তিন মিনিটের মতো রেখে দিয়ে আবার তুলে নিবো।অবশ্য আপনার চাইলে সিরা ছাড়াও এই পিঠা খেতে পারেন।এভাবেই তৈরি হয়ে গেল ময়দা ও চিনি দিয়ে মুচমুচে রসালো পাতা পিঠা রেসিপিটি।
পরিবেশন
পরিশেষে আমি চেষ্টা করেছি সুস্বাদু ও মজাদার করে ময়দা ও চিনি দিয়ে মুচমুচে রসালো পাতা পিঠার রেসিপিটি তৈরি করে আপনাদের মাঝে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য। জানি না কতটুকু পেরেছি।আমার তৈরি করা ময়দা ও চিনি দিয়ে মুচমুচে রসালো পাতা পিঠার রেসিপিটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে,তবে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।আপনাদের উৎসাহমূলক মন্তব্য আমাকে আরো নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
ফটোগ্রাফির বিবরণ
Photographer | @anisshamim |
---|---|
Device | Google Pixel 4a |
আমার পরিচিতি
আমি আনিসুর রহমান। আমার স্টিমিট আইডি @anisshamim।আমার জন্মস্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে।আমি বাংলা ভাষার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করি এবং বাঙালি হিসেবে নিজেকে খুব গর্বিত মনেকরি।ভ্রমন করা আমার খুব সখ।তাছাড়া সময় পেলেই চিত্রাঙ্কন করা, কবিতা লিখা এবং মজার মজার রেসিপি তৈরি করা।গল্পের বই পড়তে ও খুব ভালো লাগে।অন্যের কষ্টে নিজেকে বিলিয়ে দিতে খুব ভালোলাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
পিঠাটা দেখতে বেশ সুন্দর। আসলেই অথিতি কিংবা জামাই আপ্যায়নে এই পিঠা দিয়ে করা হয় জেনে নিলাম।যাদের ডায়বেটিস আছে তারা শিরা ছাড়া খাবে তাহলেই তো হবে।পিঠাটা দেখতে সুন্দর। খেতেও অনেক মজা,আমি একবার খেয়েছিলাম।যাই হোক মজার একটি রেসিপি দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
হা আপু যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য সিরা বানানো দরকার নেই। এতে সময় ও খরচ দুটোই কম লাগবে এবং ডায়াবেটিস রোগীরা ও খেতে পারবে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু, সহযোগিতা মূলক মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।
শীতকাল এলেই মজার মজার পিঠা খেতে ইচ্ছে করে। আপনার তৈরি করা পাতা পিঠা দারুন হয়েছে ভাইয়া। পিঠাগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে খেতে খুব ভালো হয়েছিল। যদিও আমি খুব একটা পিঠা তৈরি করতে পারি না। তবে চেষ্টা করব ভাইয়া। ধন্যবাদ এই রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু, এত সুন্দর ও চমৎকার মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।
এই পিঠাগুলো একসময় আমার ঠাকুরমা বানাতো। শীতকাল হলে আমাদের গ্রামের বাড়িতে পিঠে পুলির আসর বসতো। অনেকটাই মুচমুচে হওয়ার কারণে এই পিঠাগুলো বরাবরই আমার খুব পছন্দের।দেখতেও খুব সুন্দর হয়েছে।🙂
দাদা,এই পিঠা দেখে নিশ্চয়ই আপনার ঠাকুরমার কথা মনে পরেছে।আর আমার ও খুব ভালো লেগেছে আপনার ঠাকুরমা এই পিঠা বানাতো জেনে।অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা, এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
শীত মানেই হচ্ছে পিঠাপুলির উৎসব। আর শীতের আগমন বার্তা নিয়ে আসার সাথে সাথেই পিঠার রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছেন আমাদের মাঝে। আপনার মুচমুচে পাতার রসালো পিঠা দেখে খুবই খেতে ইচ্ছে করছে। যদিও আগের মত পিঠা খাওয়ার সেই স্বাদ জাগে না। কিন্তু এই পিঠা খাওয়ার জন্য কত পিটা খেয়েছি তার কোন হিসাব নেই। আপনার এত সুন্দর রসালো পাতার পিঠার রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
হা ভাইয়া ঠিক বলেছেন,শীতে বিভিন্ন রকমের পিঠার উৎসব দেখা যায়।পিঠা খেতেও খুব দারুণ লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া, এত সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।
এখন তো বাংলা ব্লগে রেসিপির পোস্ট প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে দুই একটা উঁকি দেয়। আমার সত্যি কথা বলতে আমার রেসিপি পোস্ট পড়তে বেশি ভালো লাগে। আপনার রেসিপিটি দেখে খুবই ভালো লাগছে। আপনি খুবই ইউনিক রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেন। আপনার রেসিপিটি দেখে আমিও বাসায় ট্রাই করবো। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
হা আপু,এটা ঠিক ইদানীং আগের মতো রেসিপি পোস্ট খুব একটা দেখা যায় না।অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর ও চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
আপনি শ্বশুরবাড়ি গেলে বুঝি আপনার শাশুড়ি আপনাকে এরকম পিঠা খাইয়ে জামাই আপ্যায়ন করে। রসালো পাতা পিঠা আমি আগে কখনো খাইনি তবে মনে হচ্ছে পিঠাটি খুবই মজা লাগবে কারণ চিনি শিরায় ডুবানো হয়েছে। পিঠাটি দেখতে আসলেই ভালো লাগছে পাতার মতো মনে হচ্ছে। শিখে নিয়েছি আমি আমিও একদিন বানিয়ে খাবো ইনশাআল্লাহ।
কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার শাশুড়ি আমাকে এই পিঠা দিয়ে কখনও আপ্যায়ন করেনি আপু।কিন্তু আমার বোন জামাই বাসায় আসলে দেখতাম আমার মা ও দাদি মিলে বিভিন্ন পিঠার মধ্যে এই পিঠা ও বানিয়ে দিত।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আমাদের এদিকে এই পিঠাকে বলা হয় তারখাজা।এর নকশা করাটা বেশ জটিল।আপনি খুবই সুন্দরভাবে সহজেই নকশা করার প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করেছেন।ধন্যবাদ ভাইয়া দারুন একটি পিঠার রেসিপি বর্ণনা করার জন্য।
আসলে একেক জায়গায় নামের পার্থক্য হতে পারে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ময়দা ও চিনি দিয়ে মুচমুচে রসালো পাতা পিঠা টা দেখতে চমৎকার লাগছে। খেতে নিশ্চিত মজা হয়েছে। শীতের সময়ে পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায় চতুর্দিকে। আমার কাছে মনে হয় সবসময় যদি শীত থাকতো তাহলে সবসময় শীতের পিঠা গুলো খাওয়া যেত। এইরকম পিঠা একবার একটা মেলায় গিয়ে খাওয়া হয়েছিল। তাছাড়া বাড়িতে তৈরি করে কখনো খাওয়া হয়নি। বানানোর প্রসেস সমৃহ অনেক সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
আমাদের দেশের যে অবস্থা,সবসময় শীত হলে ভীষণ বিপদের পরতে হতো।তখন কিন্তু বিপদে পরে পিঠা খাওয়ার কথা ভুলে যেতেন ভাই।ঠিক কিনা ভাই?
ময়দা ও চিনি দিয়ে মুচমুচে পাতা পিঠা দেখে খেতে ইচ্ছা করছে। ঠিক বলেছেন এগুলো নতুন অতিথি আসলে বা নতুন জামাইদের জন্য খুব সুস্বাদু একটি নাস্তা। আপনার তৈরির ধাপগুলো দেখে শিখে নিলাম একদিন তৈরি করার চেষ্টা করব। পিঠাগুলো সত্যিই অনেক লোভনীয় লাগছে । সুস্বাদু একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হা আপু,বাসায় একদিন তৈরি করে খেয়ে দেখবেন। খুব মজা পাবেন।
ওয়াও কি চমৎকার পাতা পিঠা তৈরি করলেন। আমি আজকে প্রথম পাতা পিঠার নাম শুনলাম। এই পিছটি কে আমরা অন্য একটি নামে চিনি। কিন্তু আপনারা পাতা পিঠা বলে ডাকেন দেখে আরো ভালো লাগলো। বিশেষ করে ময়দা আর চিনি দিয়ে তৈরি করার কারনে খেতে ভীষণ ভালো লাগে এই পিঠাটা। অনেকটা ক্রিস্পি এবং মুচমুচে হয়। আপনার পিঠা তৈরি টা আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু, এত সুন্দর ও চমৎকার মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু