বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে "এক অসহায় মেয়ের আত্মকাহিনী।।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু।
রোজ-রবিবার।২১ ই,কার্তিক।১৪২৯,বঙ্গাব্দ।হেমন্তকাল।।
হ্যালো বন্ধুরা ?
আমি আনিসুর রহমান।আমার ইউজার আই ডি @anisshamim।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি “আমার বাংলা ব্লগ” এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন।আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ আমি ও ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে এক অসহায় মেয়ের আত্মকাহিনী নিয়ে হাজির হয়েছি।আসলে দুনিয়াতে প্রতিটি মানুষই চায় সুখে শান্তিতে বসবাস করতে।কিন্তু সবার ভাগ্যে সবসময় সুখ থাকে না।অনেকে তা মানতে পারে।আবার অনেকে পারে না।তাছাড়া অনেক সময় একটার পর একটা বিপদ যখন আসে।তখন নিজের আর দুনিয়াতে বেঁচে থাকার ধৈর্য থাকে না।এই গল্পের মাধ্যমে এমন একটি মেয়ের কাহিনী তুলে ধরেছি আর গল্পটি একটি বাস্তব ঘটনা উপর লিখেছি।আশাকরি,গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।
এটা বর্তমান সময় থেকে প্রায় দু'বছর আগের ঘটনা।শহরে এক পরিবারের থাকত।যে পরিবারের পাঁচ জন সদস্য ছিল মা-বাবা আর তিন বোন।বড় বোনের নাম সিয়া,মেঝো বোনের নাম রিয়া,আর তাদের ছোট বোনের নাম সোফিয়া। তারা তিনজনই খুব শান্ত স্বভাবের ছিল।তাই তাদের পরিবার খুব শান্তিতে বসবাস করছিল।দেখতে দেখতে সিয়া বড় হয়ে যায়।
তাদের বাবা একটি ফ্যাক্টরিতে কাজ করে টাকা উপার্জন করে।তারা তার বাবাকে খুব ভালোবাস।তাদের বাবা ও তাদের ভালবাসে। তাদের মা একজন গৃহিনী।একদিন সিয়ার জন্য বিয়ের সমন্ধ আসে।আর তাদের বাবা-মা চিন্তা করে যেহেতু তাদের তিন মেয়ে। তাই এক মেয়েকে বিয়ে দিতে পারলে তাদের চিন্তা একটু কমে যাবে।তাদের বড় মেয়ে সিয়ার বিয়ে হয়ে গেলে চলে যায় তার শ্বশুর বাড়ি। তখন রিয়া এবং সোফিয়া নিজের কাজগুলো নিজেই করা শিখে যায়।কারণ যখন বাসায় সিয়া ছিল,তখন ঘরের বেশিরভাগ কাজই করত সিয়া।
একদিন রিয়া যখন স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হয়, রাস্তায় তার রোড এক্সিডেন্ট হয়।সে সেখানেই মারা যায়।সোফিয়া রিয়ার চেয়ে বয়সে খুবই ছোট ছিল আর তাদের বাবা-মা ও তখন অনেক বয়স হয়েছিল।রিয়ার মৃত্যুতে সোফিয়া খুব কষ্ট পায় এবং ভেঙে পড়ে।এভাবেই দিন কাটতে থাকে আর ঐদিকে তাদের বড় বোন সিয়ার কোন খবর নেই।সে সবার থেকে আলাদা এবং স্বার্থপর হয়ে যায়।তার বাবা-মা ও সিয়ার সাথে সম্পর্ক রাখে না।
সোফিয়া বড় হয়ে যায়।কলেজে পড়ে।হঠাৎ তার বাবা স্টক করে মারা যায়।তাই কলেজের ফি দেওয়া এমনকি সংসার চালানো তার পক্ষে সম্ভব না হওয়ায় সে একটা পার্টটাইম জব করে।আর তার মা ও খুব বৃদ্ধ হয়ে গেছে।তাই তার খরচ সোফিয়াকে চালাতে হয়।মানে কোনরকম দিন কাটছে।একদিন সে তার বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বের হয়।সে রাতে যখন বাড়ি ফিরে।দেখতে পায়,তারা যে বাড়িতে থাকে সেই বাড়িটা সরকারি লোক দখল করে ফেলেছে এবং তাদের সব জিনিসপত্র বাইরে পড়ে আছে।আর তার মা ও খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
এগুলো সব ভেবে সোফিয়া নিজে ভেঙে পরেছে।কোথায় যাবে ? কি করবে ? সে কিছুই বুঝতে পারছে না।এর মধ্যেই তার মার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। সে তার মাকে হসপিটালে ভর্তি করে।হাসপাতালে ভর্তি করার পর সে জানতে পারে তার মার ব্রেইন ক্যান্সার হয়েছে।তার মার হাতে আর সময় নেই। দুদিনের মধ্যেই তিনি মারা যাবেন।মানে একটার পর একটা খারাপ অবস্থা দেখে তার ভিতরে মানসিক চাপ আরও বেড়ে যায়।সে হতাশ হয়ে যায়।
তার আর কিছুই করার নেই।সে ভাবতে থাকে।সে কিছুই বাঁচাতে পারলো না।এ কথা ভাবতে ভাবতে সোফিয়া যখন রাস্তায় বের হয় খাবার কেনার জন্য, তখন একটি গাড়ির সাথে ধাক্কা খায়।সেখানে অজ্ঞান হয়ে যায়।সেখানে কিছু লোক তাকে নিয়ে হাসপাতালে যায়।যখন তার জ্ঞান ফিরে তখন সে হাসপাতালের বেডে শুয়ে ছিল।
হঠাৎ সোফিয়ার তার মার কথা মনে হয়। যাকে হাসপাতালে ভর্তি করে রেখেছিল।তাড়াতাড়ি ছুটে সে তার মার কাছে আসে।ততক্ষণে তার মা এ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। হাসপাতালের বারান্দায় তার মায়ের দেহটা পরে আছে।এবার সে একেবারেই একা হয়ে গেছে। তার দুচোখে অজস্র পানি ঝরছে। এবার সে নিজেকে আর সামলিয়ে রাখতে পারছে না।সে আত্মহারা হয়ে যায়।একপর্যায়ে সোফিয়া হাসপাতালের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে।
আমার পরিচিতি
আমি আনিসুর রহমান। আমার স্টিমিট আইডি @anisshamim।আমার জন্মস্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে।আমি বাংলা ভাষার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করি এবং বাঙালি হিসেবে নিজেকে খুব গর্বিত মনেকরি।ভ্রমন করা আমার খুব সখ।তাছাড়া সময় পেলেই কবিতা লিখা এবং মজার মজার রেসিপি তৈরি করা।গল্পের বই পড়তে ও খুব ভালো লাগে।অন্যের কষ্টে নিজেকে বিলিয়ে দিতে খুব ভালোলাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আপনার এই গল্পটা পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। তবে আপনার এই গল্পটা কি সত্যি গল্প নাকি বাস্তব ঘটনা বুঝতে পারছি না। সোফিয়া মেয়েটির জন্য খুব খারাপ লাগলো। একটা মানুষের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যায় তখন হয়তো তারা আত্মহত্যার পথটাই বেছে নেয়। এই গল্পে সোফিয়ার জীবনেও ঠিক তেমনটাই হয়েছে। বড় বোন কেমন মানুষ যে তাদের সাথে আর কোনো যোগাযোগই রাখলো না। সে কি বেঁচে আছে নাকি মরে গিয়েছে তাও বুঝতে পারলাম না। ধন্যবাদ সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
বড় বোন বেঁচে আছে।তবে বেশি ভালো নেই।আর ঘটনাটি আমার এক বন্ধুর দূরের আত্মীয়র।আসলে ঘটনাটা শুনে আমার ও খুব খারাপ লেগেছিল। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।
আসলে ভাইয়া গল্পটা পড়ে অনেক বেশি খারাপ লাগলো ৷ ছোট একটি সুখি পরিবার সময়ের সাথে কি হযে গেলো ! তবে এই পরিবারের বড় মেয়ের প্রতি একটু বেশিই রাগ হচ্ছে , সে পারতো তার মা এবং ছোট বোনটার পাশে একটু দারাতে ৷ সে পাশে থাকলে হয়তো একটা প্রাণ বাঁচতো ৷ তবে আসলেই এতো খারাপ পরিস্থিতি কখনো মেয়ে নেওয়া যায় না ৷ যে কেউ এমন খারাপ পরিস্থিতিতে পড়লে আত্মহত্যাই করবে ৷
গল্পটা পড়ে খুব কষ্ট লাগলো।আমরা অনেকে মনে আমরা আমাদের জায়গা থেকে অনেক দুঃখী,কিন্তু চারদিকে তাকালে বুঝা যায় মানুষ কত অসহায়।আচ্ছা বড় বোনটা কেন এমন সার্থপর হলো?যাই হোক হয়ত সৃষ্টিকর্তা ধৈর্য্যর পরীক্ষা নিচ্ছে সোফিয়া উপর।ভালো লিখেছেন।ধন্যবাদ।
এত ডার্ক স্টোরি মেনে নিতে পারছিনা কিছুতেই। সোফিয়ার জীবনে কিছুই তো ভালো হল না। ওদের বড় বোন যদি একটু পরিবারটার পাশে দাঁড়াতো তবে এমন হত না। কিন্তু এটা কি হল? আমি ভাবলাম গাড়ির সাথে যখন ধাক্কা খেয়েছে তখন হয়তো কোন যুবক আসবে তার জীবনে এবং তার জীবন পাল্টে যাবে। ভীষণ ডার্ক লাগছে।
এত ডার্ক স্টোরি মেনে নিতে পারছিনা কিছুতেই। সোফিয়ার জীবনে কিছুই তো ভালো হল না। ওদের বড় বোন যদি একটু পরিবারটার পাশে দাঁড়াতো তবে এমন হত না। কিন্তু এটা কি হল? আমি ভাবলাম গাড়ির সাথে যখন ধাক্কা খেয়েছে তখন হয়তো কোন যুবক আসবে তার জীবনে এবং তার জীবন পাল্টে যাবে। ভীষণ ডার্ক লাগছে।
আহ। সোফিয়ার জন্য খারাপ লাগছে খুব। তবে সে ভুল করেছে। আত্নহত্যা কখনো মুক্তির পথ হতে পারেনা। মানুষ এর জীবনে বিপদ আসবেই। তবে সেই বিপদ সামলে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে আমাদের। সোফিয়ার বড় বোন একদমই ভালো কাজ করেনি। আমার মনে হয় সব কিছুর জন্য দায়ী বড় বোন।
হা ভাই, এটা ঠিক আত্মহত্যা কখনও মুক্তির পথ নয়।তবে এত অল্প বয়সের মেয়েকে কে বোঝাবে।যদি তার বড় বোন তার পাশে আসতো হয়তোবা এমনটি হত না।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া সবার জীবনের সুখ থাকে না। সুখ দুঃখ মিলিয়ে মানুষ কেউ কেউ দুঃখে সহ্য করতে পারে আবার কেউ কেউ দুঃখে ভেঙে পড়ে। এটা কি সত্য ঘটনা বুঝতে পারলাম না। এরকম ঘটনা পৃথিবীতে ঘটে বড় বোন কেন ওদের সাথে সম্পর্ক রাখল না কোনো কারণ ছাড়া এরকম কি সম্ভব নাকি মেয়ে হয়ে বাবা-মার খোঁজ রাখে না, বোনদের খোঁজ রাখে না। সত্যি ঘটনাটা হৃদয়বিদারক।
বড়বোনের শশুর বাড়ির লোক তাদের সাথে যোগাযোগ করা নিষেধ করে দিয়েছিল। তার স্বামীটাও ভালো ছিল না।অবশ্য বড় বোন এসেছিল।যখন সোফিয়াও দুনিয়া ছেড়ে চলে গিয়েছিল।আসলে দুনিয়াতে অনেক কিছুর উত্তর আমাদের জানা নেই। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।
গল্পটা পড়ে অনেক খারাপ লাগল। আসলে আমরা অনেক সময় ভাবিযে আমরা অসুখি কিন্তু তা নয়। আমাদের চারপাশে তাকালে দেখা যায় আমাদের থেকে ও অনেক অসুখি মানুষ রয়েছে। সত্যিই তো ভাইয়া আমাদের সমাজেও এমন অনেক স্বার্থ পর ভাই ও বোন রয়েছে। হয়তো সৃষ্টিকর্তা সোফিয়াকে পরিক্ষা করছিলেন কিন্তু সোফিয়ার মারা যাওয়ার ঘটনাটা শুনে অনেক খারাপ লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে দারুণ লিখেছেন।