চোরের দশ দিন গেরস্তের এক দিন।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু।
কেমন আছেন বন্ধুরা ?আশাকরি,ভালো আছেন। আপনাদের দোয়ায় আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে বর্তমান সময়ের পেক্ষাপট ও কাউকে ছল চাতুরিকরে ঠকালে এক সময় যে বড় বিপদে পরতে হয়,সেই বিষয়টাকে একটি ছোট গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।
Source
আজকেও বাজারের টাকা থেকে পিন্টু একটা টাকাও সরাতে পারেনি।রাগে দুঃখে তার শরীর জ্বালা করছে। এভাবে পরপর চার সপ্তাহ বাজারের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা থেকে কেয়ারটেকার পিন্টু টাকা মারতে পারল না।এতে তার প্রেমিক জীবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। লাইলির সঙ্গে তার সদ্য গজিয়ে ওঠা প্রেম প্রায় ভাঙে ভাঙে অবস্থা।
Source
প্রতি মাসে বেতনের বাইরে বাজার থেকে চুরির এই বাড়তি টাকা তার প্রেম টিকিয়ে রেখেছে। বাজারের টাকা থেকে কেয়ারটেকার পিন্টু প্রতি সপ্তাহে একটা নিদিষ্ট পরিমাণ টাকা সরিয়ে ফেলে। আর সেই টাকা দিয়ে সে লাইলির সঙ্গে দিন রাত মোবাইলে কথা বলে। তাকে স্নো,পাউডার, লিপস্টিক, নেলপলিস কিনে দেয়। মাসে আবার একবার রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। কিন্তু গত একমাস ধরে পিন্টু এসব কিছুই করতে পারছে না।কারণ বাজারের অবস্থা যে আগুন। যা-ই কিনতে যায়, তাতেই দোকানদারেরা বাড়তি দাম হাঁকায়।শাক-সবজি থেকে শুরু করে তেল,মাছ,গোস্ত সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। ফলে তার পক্ষে বাজারের টাকা থেকে আর চুরি করা সম্ভব হচ্ছে না।
Source
এভাবে চলতে থাকলে তো লাইলি চলে যাবে। এসব ভাবতে ভাবতে সে বাজার শেষ করে বাজারের থলি হাতে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বাসায় ফিরছিলো। তখন সে দেখতে পেলো একদল লোক রাস্তায় হৈচৈ করছে। মিছিল বের করেছে কিনা,কে জানে?তার ইচ্ছে ছিল তিন চার মিনিট হেঁটে সে সটকে পড়বে।কারণ দেরি হয়ে যাচ্ছে। বেলা ১২ টার মধ্যে বাজার নিয়ে বাসায় পৌঁছতে না পারলে কাজের মেয়েটা রাগারাগি করবে। সূর্যের চেয়ে যেমন বালির তাপ বেশি,তেমনি বসের চাইতে বাসার কাজের মেয়ের রাগ বেশি। হটাৎ কোথা থেকে ইট- পাটকেল ছোড়া শুরু হলো। পিন্টু এই অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে গেল। এমন অভিজ্ঞতা তার জীবনে প্রথম।যে যেদিকে পারলো ছুটে পালাল।বাজার ভর্তি ভারি ব্যাগের কারণে পিন্টু জোরে দৌড়াতে পারল না।সে আছাড় খেয়ে পরে গেল।হাতে থাকা বাজারের ব্যাগ থেকে সব জিনিস ছিটকে চারদিকে ছড়িয়ে পরল।কিছু জিনিস পরল ড্রেনে আবার কিছু জিনিস পরল ডাস্টবিনে। আশেপাশে কেউ নেই,রাস্তায় একা পিন্টু গড়াগড়ি খাচ্ছে। হাতের ঘড়ির দিকে পিন্টু তাকিয়ে দেখল ১২ টা বাজতে বেশি দেরি নেই।তাঁকে যেভাবে হউক ১২ টার আগে বাজার সদাই নিয়ে যেতে হবে। নইলে তার কপালে ১২ টা বাজবে।
Source
কিন্তু কি আর করার?রাস্তায় পরা অবস্থা থেকে সে উঠে দাঁড়াল। ভগ্ন হৃদয়ে সে খালি থলি হাতে নিয়ে বাজারের দিকে রওনা দিল।মাসের পর মাস টাকা সরিয়েছি।এবার এ মাসের বেতনের অধিকাংশ টাকা বাজার সদাই করতেই চলে যাবে। এ জন্যই জ্ঞানীজন বলেন, "চোরের দশ দিন, গেরস্তের এক দিন।"
পরিশেষে আপনাদের সবসময় ব্যতিক্রম কিছু বিষয় নিয়ে সেটাকে ক্ষুদ্র পরিসরে গল্পের মাধ্যমে প্রকাশ করে আপনাদের কিছুটা আনন্দ দেওয়া চেষ্টা। যদি ভালো লেগে থাকে তবে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন আর ভূল হয়ে থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজ এ পযর্ন্তই।
আসলে আপনার পোস্টের টাইটেল দেখেই বুঝতে পেরেছি খুব সুন্দর একটা পোস্ট হতে চলেছে। এরকম লেখা পোস্ট আমার কাছে পড়তে খুবই ভালো লাগে। আপনি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এবং শুভকামনা রইল।
এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আরো সুন্দরকরে মজার মজার পোস্ট শেয়ার করে আপনাদের পাশে থাকতে পারি।
আপনার পোস্ট পড়ে খুব ভাল লাগলো । আসলে আমরা অন্যের ক্ষতি করতে করতে নিজেরা এমন ক্ষতির মাঝে পড়ে যায় যখন আফসোস করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না ।
সব দুর্নিতির ই শেষ আছে কিছুটা আগে এবং পরে এই শুধু তফাৎ ।
আপনার এত সুন্দর উৎসাহমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।